পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
আজকের আলোচ্য বিষয় পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়, দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়, দাঁতের ক্ষয় রোগ কেন হয়? দাঁতের পোকা বের করার গাছ ইত্যাদি আরও বিভিন্ন বিষয়ে নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনার দাঁতের যত প্রকারের সমস্যা রয়েছে সকল সমস্যার সমাধান অবশ্যই পাবেন। এছাড়া নিম্ন দেওয়া সকল উপদেশগুলো মেনে চললে অবশ্যই সুস্থ সবল ও মজবুত দাঁত পাবেন।
ভূমিকা
দাঁতের যন্ত্রণা বা ব্যথা কতটা আমরা মোটামুটি সকলেই জানি। দাঁতের যন্ত্রণা যত বেশি এর চিকিৎসা ও তার চেয়েও বেশি কষ্টদায়ক ও যন্ত্রণাময়। এজন্যই আজ আমি আপনাদের জন্য ঘরোয়া ভাবে খুব সহজে দাঁতের বিভিন্ন প্রকার সমস্যা যেমন মাড়ি ফুলে যাওয়া, মাড়ি দিয়ে রক্ত বের হওয়া, নড়বড়ে দাঁত,দাঁতে পোকা হওয়া, বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ,ক্ষয় হয়ে যাওয়া, ফাঁকা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করেছি।
আরো পড়ুনঃতল পেটের চর্বি কমানোর উপায়
কিভাবে পোকা দাঁতের ব্যথা কমানো যায়, দাঁতের ক্ষয় দূর করতে খুব সহজেই, কি গাছ দিয়ে দাঁতের পোকা বের করতে পারবেন ইত্যাদি। এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইল।
পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
দাঁতের ব্যথা যেমন যন্ত্রণাময় বা অতিরিক্ত ব্যথা দায়ক তেমনি এর চিকিৎসা ও অনেক বেশি ব্যথা দায়ক ও যন্ত্রণাময়। এজন্য আজ আমি আপনাদের জন্য পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় ও সহজ কিছু উপাদান নিয়ে এসেছি। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
নুন পানির কুলকুচিঃনুন ও উষ্ণ গরম পানি পোকা দাঁতের ব্যথা নিরাময় বেশ কার্যকারী উপায়। উষ্ণ গরম পানি মুখের ভেতরে যতক্ষণ পারেন রাখুন। এছাড়া এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানির ভেতরে এক চামচ নুন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। কিছুক্ষণ পরপর দিনে তিন থেকে চার বার এভাবে কুলকুচি করুন।
লবঙ্গ তেলঃঅ্যান্টিসেপটিক ও অ্যানেস্থেটিক উপাদান রয়েছে লবঙ্গ তেলে, যা দাঁতের ব্যথা খুব দ্রুত নিরাময়ে করতে পারে। আক্রান্ত স্থানে তুলার সাহায্যে তিন থেকে চার ফোঁটা লবঙ্গে তেল নিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট আক্রান্ত স্থানে ধরে রাখুন। এভাবে দিনে তিন থেকে চারবার করুন দেখবেন ব্যথা নিরাময় হয়ে গিয়েছে।
রসুনঃযেকোনো প্রকার ব্যথা নিরাময় করতে পারে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা রসুনে প্রাকৃতিক ভাবে রয়েছে। একটি রসুনের কোয়া একটি লবঙ্গ ও ১ চিমটি নুন ভালো করে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে ধরে রাখুন। এভাবে দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করুন। দ্রুত ব্যথা নিরাময় হয়ে যাবে।
পেপারমেন্ট টি ব্যাগঃপেপারমেন্ট সাধারণত কোন স্থানকে ঠান্ডা অনুভূতি ও ফোলা ভাব দূর করতে ব্যবহার করা হয়। পোকা জনিত দাতে ব্যথা হলে সেখানে ফুলে যায় এবং ঠান্ডা অনুভূতি দিলে আরাম পাওয়া যায়। এজন্য উক্ত স্থানে পেপারমেন্ট টি ব্যাগ ব্যবহার করে আরাম নিতে পারেন।
হাইড্রোজেন পারোক্সাইডঃহাইড্রোজেন পারোক্সাইড হল অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। এটি আক্রান্ত স্থানের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে ব্যথা কমায়। পানি যতটুকু নিবেন হাইড্রোজেন পারক্সাইড ও ততটুকু একসাথে ভালো করে মিশিয়ে মুখের ভেতরে .২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড রাখুন। এভাবে দিনে দুই থেকে তিন বার করলে মুখের ভেতরে সকল জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে।
লবণ ও গোলমরিচঃহাফ চামচ লবণ দুই থেকে তিনটি গোলমরিচ এর ভালো করে পেস্ট তৈরি করে ব্যথা স্থানে ১ থেকে ২ মিনিট রাখুন। দেখবেন পোকা দাঁতের ব্যথা ও ফোলা খুব সহজেই দূর হয়ে গিয়েছে
পেঁয়াজঃপেঁয়াজে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল,অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল,অ্যান্টিসেপটিক মুখের ভেতরের সকল জীবাণু ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ব্যথা নিরাময় করে।
হিংঃদ্রুত বা তাড়াতাড়ি দাঁতের ব্যথা কমাতে চাইলে হাফ চামচ হিমের গুড়া সাথে হাফ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দাঁতে লাগান।
পেয়ারা পাতাঃদাঁত মজবুত দাঁতের ব্যথা দাঁতের পোকা দূর করতে বেশ উপকারী। দাঁতে ব্যথা হলে দুই থেকে তিনটি কচি পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খান এর রস ব্যথা স্থানে প্রবেশ করে আরাম দেবে।
ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্টপঃভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট শুয়ে থাকা অ্যান্টিসেপটিক খুব সহজে দাঁতের ব্যথা দূর করতে পারে। একটি তুলোতে তিন থেকে চার ফোটা ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট নিয়ে ব্যথা স্থানে ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এভাবে দিনে তিন থেকে চারবার করলে খুব সহজে ব্যথা এবং ফোলা দূর হবে।
দুর্বার ঘাস রসঃছোটবেলায় দাঁতে ব্যথা হলে দাদী নানীরা দুর্বার ঘাস তুলে তার রস খেয়ে নিতে বলতো। এতে খুব সহজে এবং দ্রুত দাঁতের ব্যথা কমে যেত। আপনার দাঁতকে মজবুত ও দাঁতে ব্যথা দূর করতে চাইলে দুর্বার ঘাসে রস খেতে পারেন।
আইস কিউবঃএকটি কাপড়ের ভিতরে কয়েকটা আইস কিউব রেখে ব্যথা স্থানে লাগাতে পারেন এতে ব্যথা কিছুটা কমে আসবে।
দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়
বর্তমানে দাঁতে ছিদ্র,পোকা লাগা,ক্ষয় হয়ে যাওয়া,ইত্যাদি সমস্যা সকল মানুষের হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য আজ আমি দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে বিস্তারিত নিম্ন আলোচনা করব-
বিভিন্ন রকমের ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস সংক্রমণের কারণে দাঁতে গর্ত বা ছিদ্র হয়ে যায়। যা মূলত দাঁতের খাবার আটকে থাকা,ব্রাশ না করা,মুখের বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি না মানা,বিভিন্ন প্রকারের পুষ্টির ঘাটতি ইত্যাদির কারণে হয়ে থাকে।
দাঁতে গর্ত হওয়ার সাথে সাথে তা বন্ধ করার জন্য অবশ্যই ডেন্টাল কেয়ারে যাবেন। কারণ এটা অবহেলা করলে ধীরে ধীরে ছিদ্র স্থান আরো বেশি গভীর হয়ে তীব্র যন্ত্রণা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় এইগুলো চিকিৎসা করাও অনেক জটিল হয়ে যায়। এজন্য ছিদ্র হওয়ার সাথে সাথে রুট ক্যানেল বা দাঁতের মুকুট বসিয়ে নেবেন।
দাঁতের গর্ত দূর করার প্রতিকার
দাঁতের গর্ত দূর করার প্রতিকার সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
- মিষ্টি জাতীয় বা চিনি যুক্ত খাবার, বাইরের ফাস্টফুড, অম্ল যুক্ত বিভিন্ন খাবার কফি ও চা ইত্যাদি খাবার কম খান।
- প্রতিদিন নিয়মিত দুই বেলা ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- কোন খাবার খাওয়া শেষে অবশ্যই কুলি করবেন।
- দাঁতের ফাক পরিস্কার করার জন্য সুতো বা ফ্লস ব্যবহার করুন।
- ধূমপান জাতীয় দ্রব্য খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিন।
- মাসে একবার দাঁতের চেকআপ করান।
- মাঝেমাঝে বা নিয়মিত মেসওয়াক করতে পারেন।
- নিমের গাছের ডাল দিয়ে নিয়মিত মেসওয়াক করলে সহজে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু দূর হয়।
- সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন পেয়ারের কচিপাতা দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন।
দাঁতের পোকা দূর করার ঘরোয়া উপায়
দাঁতে পোকা বের করার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের উপায় অবলম্বন করে থাকি। কিন্তু কোনটিতে ও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। এজন্য আজ আমি দাঁতের পোকা দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে বিস্তারিত নিম্নে আলোচনা করেছি-
নারিকেল তেলঃখুব সহজে এবং ঘরোয়া ভাবে দাঁতের পোকা দূর করার জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। একটি তোলার সাহায্যে চার থেকে পাঁচ ফোঁটা নারিকেল তেল নিয়ে ব্যথায় স্থানে১০থেকে ১৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এভাবে দুই থেকে তিনবার করুন। দিনে তিন থেকে চারবার করলে অবশ্যই দাঁতের পোকা বেরিয়ে আসবে।
ভিটামিন ডিঃদাঁতের বিভিন্ন রকমের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত ভিটামিন ডি জাতীয় খাদ্য খান। ভিটামিন ডি জাতীয় খাদ্য দাঁতকে মজবুত ও দাঁতের কাভিটি প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
লেবুঃলেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক এসিড যা ব্যথা নিরময়ে এবং শরীরের বিভিন্ন জীবাণু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করতে বেশ কার্যকারী ভূমিকা রাখে। দাঁতের কাভিটি দূর করার জন্য একটি লেবু অর্ধেক করে চিবিয়ে খান।
গ্রিন টিঃগ্রিন টি আমাদের মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুকে ধ্বংস করে। গ্রিন টি এর সাথে এক চামচ লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খান এতে মুখের ভেতরের জীবাণু ধ্বংস হয়ে যাবে।
ডিমের খোসাঃডিমের খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম ও খনিজরা দাঁতের ভেতরের পোকা বা দাঁতকে শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে। প্রথমে হাফ কাপ পানিতে ডিমের খোসা ভালো করে সিদ্ধ করে এর গুঁড়ো তৈরি করুন। গুঁড়ো তৈরি হয়ে গেলে এর সাথে এক চামচ বেকিং সোডা যোগ করুন। মেশানো হয়ে গেলে উক্ত পাউডার দিয়ে ভালো করে দাঁত ব্রাশ করুন ফলে দাঁতের ভেতরের পোকা ও জীবাণু সহজে ধ্বংস হয়ে যাবে।
পেয়ারার পাতাঃপেয়ারার পাতাতে রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল যা আমাদের দাঁতের ক্যাভিটি রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কচি তিন থেকে চারটি পেয়ারার পাতার রস তৈরি করে গরম পানির ভেতরে দিন। পানি উষ্ণ গরম হলে কুলকুচি করুন। এভাবে দিনে তিন থেকে চার বার করলে খুব সহজে ক্যাভিটি দূর হয়ে যাবে।
লিকোরিস রোডঃদাঁতের পোকা বের করতে রুট ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য প্রথমে এক টুকরো লিকোরিস রুট নিয়ে তার পাউডার তৈরি করুন এবং দাঁত ব্রাশ করার মত ব্রাশ করুন। এভাবে দুই থেকে তিন মিনিট করলে খুব সহজে তাদের পোকা বেরিয়ে আসবে এবং দাঁতের ব্যথা দূর হয়ে যাবে
নিম পাতাঃনিমপাতা আমাদের শরীরে এন্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিসেটিক হিসেবে কাজ করে। দাঁতের পোকা, বিভিন্ন ধরনের জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে নিমপাতা ব্যবহার করুন। চার থেকে পাঁচটি নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে পেস্ট তৈরি করে ব্যাথা স্থানে চেপে ধরুন এতে দাঁতের পোকা বেরিয়ে আসবে এবং ব্যথা নিরাময় হবে।
দাঁতের ক্ষয় রোগ কেন হয়?
আমাদের দৈনন্দিন অস্বাস্থ্যকর খাবার ও দাঁতের প্রতি যত্ন না নেওয়ার কারণে মূল্যবান এই দাঁতের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হচ্ছে যা হয়তো আমরা বুঝতে পারছি না। আজ আমি দাঁতের ক্ষয় রোগ কেন হয়? তা নিয়ে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা করব-
দীর্ঘক্ষণ দাঁত ব্রাশ ও জোরে জোরে ব্রাশ করলেঃদীর্ঘক্ষণ এবং জোরে জোরে ব্রাশ খুলে দাঁতের ওপরের স্তর এনামেল খুব সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে দাঁতের ওপর অংশ পাতলা হয়ে যায় এতে আপনি সহজে ঠান্ডা বা গরম পানি খেতে পারেন না, কোন কিছু খেতে গেলে দাঁতে ব্যথা করে বিশেষ করে দাঁত ক্ষয় হয়ে যায়। এজন্য আমাদের অবশ্যই এমন ব্রাশ নির্বাচন করতে যেন তা নরম হয়।
অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যাসিডিক খাবার খাওয়াঃঅতিরিক্ত পরিমাণে এসিড জাতীয় খাবার যেমন কমলার রস কোমল পানীয় সোডা চকলেট ইত্যাদি। এ সকল অ্যাসিডিট যুক্ত খাবার আমাদের দাঁতের এনামেল কে সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত করে ফেলে। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই অ্যাসিডিট জাতীয় খাবার বর্জন করতে হবে বা খাওয়ার পরে অবশ্যই কুলকুচি বা দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
দাঁতকে অতিরিক্ত সাদা করার চেষ্টাঃআমরা অনেকেই আছি যারা দাঁতকে ধবধবে সাদা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকি যেমন দাঁতে ব্লিচিং করা। এভরিথিং করার ফলে দাঁতের উপরের স্তর এনিমেল পাতলা হয়ে যায় এবং দাঁত সহজে ক্ষয় হয়ে যায়।
গরম খাবারের সাথে ঠান্ডা পানিও খাওয়াঃআমরা যখন কোন খাবার গরম খেয়ে থাকি তখন আমাদের দাঁতের উপরের স্তর এনামেল গরম হয়ে যায় এরপর সাথে সাথে যদি ঠান্ডা জাতীয় পানিও খেয়ে থাকি তখন এনামেলে ফাঁকা বা ফাটল দেখা দেয়। গরমের সাথে সাথে ঠান্ডা অনুভূত হওয়ার কারণে মূলত দাঁতের ক্ষয়ের সৃষ্টি হয়।
ভুল টুথপেস্ট ব্যবহারঃআমরা অনেকে দাঁতকে ধবধবে ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের টুথপেস্ট ব্যবহার করে থাকি যা আমাদের দাঁতের ক্ষয় এর সৃষ্টি করে। এজন্য দাঁত কে ঝকঝকে করার জন্য নয় বরং তাকে সুস্থ রাখার টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। যে সকল টুথপেস্টে ফ্লোরাইট যুক্ত উপাদান রয়েছে সে সকল টুথপেস্ট বা ভেষজ টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।
দাঁত দিয়ে বোতলের চিপি খোলার অভ্যাসঃঅনেকে দেখাতে চায় তার দাঁত কতটা শক্ত ও মজবুত। যার ফল হিসেবে অনেক সময় দাঁত ভেঙে যায়, ফেটে যায় বা দাঁতে ফাটল দেখা দেয় অনেক সময় দাঁতে ক্ষয়ের সৃষ্টি হয়। নিয়মিত এটি করার অভ্যাস থাকলে দাঁতের আয়ু কমে যায়।.
নিয়মিত দাঁত ব্রাশ বা ফ্লসিং না করাঃনিয়মিত প্রতিদিন ২ বার ব্রাশ করার ফলে দাঁতের ভেতরে থাকা জীবাণু বেরিয়ে আসে এবং দাঁত মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হয়। সেই সঙ্গে খাবার খাওয়ার পরে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাদ্য ফ্লসিং এর সাহায্যে বের করে ফেলতে হবে। নিয়মিত দুইবার ব্রাশ ও ফ্লসিং না করলে এই খাবারগুলো দাঁতের ফাঁকে আটকে থেকে পচে যায় এবং দাঁতে পোকার সৃষ্টি হয়।
বছরে অন্তত একবার দাঁত পরীক্ষা করাঃআমাদের সকলের উচিত বছরে অন্তত একবার হলেও ডেন্টাল সার্জনকে নিজের দাঁত দেখানো। এবং দাঁতে বিভিন্ন ধরনের গর্ত ফাঁকা ইত্যাদি বন্ধ করে নেওয়া। এতে দাঁতের আয়ু বৃদ্ধি পায়।
দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় কি?
দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় কি? আমরা অনেকেই জানতে চাই এবং সেটা যেন ঘরোয়া ভাবে খুব সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যায়। এজন্য আজ আমি আপনাদের জন্য দাঁতের ব্যথা কমানোর কিছু ঘরোয়া উপকরণের নাম বলবো যেগুলো দিয়ে খুব সহজ তাদের ব্যথা কমাতে পারবেন।
- লবণ পানির কোলকুচি
- লবঙ্গ তেল বা লবঙ্গ
- হিং
- রসুন
- পেপারমেন্ট টি ব্যাগ
- নিম পাতা
- লিকোরিস রোড
- ডিমের খোসা
- লেবু
- ভিটামিন ডি
- নারিকেল তেল
- আইস কিউ
- দুর্বার ঘাস রস
- ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট
- পেয়ারা পাতা
- পেঁয়াজ
- লবণ ও গোলমরিচ
- হাইড্রোজেন পারোক্সাইড
উপরোক্ত সকল উপাদান গুলোই দাঁতের ব্যথা কমাতে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া এগুলো উপাদান আমাদের দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান,দাঁত মজবুত ও দাঁতের আয়ু বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি সহায়তা করে।
দাঁতের পোকা বের করার গাছ
আমরা দাঁতের পোকা বের করার জন্য কত কিছু না খেয়ে থাকি। আজ আমি আপনাদের জন্য গাছের উপকারিতা বলব যা শুধু আপনার দাঁতের পোকা বের করবে না বরং দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সহজে দূর করবে। দাঁতের পোকা বের করার গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
আকন্দ ফুলের গাছ
- দাঁতের পোকা বের করা গাছের নাম হল আকন্দ ফুলের গাছ। এই গাছ রাস্তা পথে অনেক পাওয়া যায়। দাঁতের প্রচন্ড ব্যথা হলে এই গাছের রস তুলায় ভিজিয়ে উক্ত স্থানে চেপে ধরুন দ্রুত ব্যথা কমে যাবে।
- পা মচকে যাওয়া খুব সহজে দূর করতে পারে আকন্দ গাছের পাতা। এর পাতা দিয়ে ব্যাথা স্থানে গরম সেক দিলে ব্যথা দ্রুত কমে।
- কোন পোকা মা করে কামড়ালে উক্ত স্থানে অনেক বেশি জ্বালা করে। এই জ্বালা দ্রুত ঠান্ডা করার জন্য আকন্দ পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
চিচ্চিরে বা আপাঙ্গাং গাছ
দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া দাঁতে পোকা দাঁত মজবুত নড়বড়ে দাঁত শক্ত করতে ইত্যাদি সমস্যাগুলো খুব সহজে দূর করতে পারে চিচ্চিরে বা আপাঙ্গাং গাছের শেকর। নিয়মিত সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন এই গাছের শিকড় দিয়ে দাঁত মাজলে অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
লেখকের মন্তব্য
রাইট বটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনার দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে সুস্থ সবল ও মজবুত রাখার কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আশা করি উপরোক্ত সম্পন্ন পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করে তাদের দাঁত সুস্থ সব মজবুত রাখতে সহায়তা করুন। এমন আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন, আসসালামু আলাইকুম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url