শীতে পা ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
আসসালামু আলাইকুম, আজকের আলোচ্য বিষয় শীতে পা ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে, শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ ও প্রতিকার, গোড়ালি ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় ইত্যাদি আরও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্ট করার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটা সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং অবশ্যই কোমল ও মসৃণ গোড়ালি পাবেন।
ভূমিকা
শীত আগমনের সাথে সাথে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও পায়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তবে আমরা অনেকেই পায়ের সমস্যায় বেশি ভুগে থাকি যেমন গোড়ালি শক্ত হয়ে যাওয়া, রুক্ষ শুষ্ক হয়ে যাওয়া, ফেটে যাওয়া, ক্ষত সৃষ্টি হওয়া, মৃত কোষ, ক্ষতস্থান হতে বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ করা ইত্যাদি আরো অনেক।
যা মূলত আমাদের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির অভাবে হয়ে থাকে। এজন্য আমি আপনাদের জন্য কিভাবে কি ধরনের ভিটামিন খেয়ে পা ফাটা দূর করবেন এর চিকিৎসা প্রতিকার ঘরোয়া কিছু সহজ উপকরণ দিয়ে পা ফাটা দূর করা কিছু ক্রিমের নাম ও হোমিও ঔষধের মাধ্যমে কিভাবে সহজেই পাখাটা দূর করবেন তা সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
শীতে পা ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
আমাদের শরীরে সকল ধরনের পুষ্টি প্রোটিন ও ভিটামিনের প্রয়োজন এর অভাব দিলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি এবং দ্রুত বিভিন্ন রোগ আক্রমণ করতে পারে। এছাড়া আমাদের শরীরে অভাব দেখা দিলে ঠোঁটপাড়া ফাটা থেকে শুরু করে ত্বক পায়ের গোড়ালি চুল ওঠা এটাতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। আজ আমি শীতে পা ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে তা আপনাদের জানানোর জন্য নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করলাম-
ভিটামিন বি ৩-আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশকে সতেজ রাখতে ভিটামিন বি ৩ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া আমাদের মস্তিষ্ক বিকাশ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য ভিটামিন বি ৩ অত্যন্ত প্রয়োজন। এর ঘাটতি দেখা দিলে আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে চামড়া উঠে বা ফেটে যায়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানি সৃষ্টি হয়,স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায় ও মাঝে মাঝেই ডায়রিয়া রোগের সম্মুখীন হতে হয়।
ভিটামিন সি-ভিটামিন সি আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে গেলে দ্রুত ক্ষত সারাতে, ত্বক ও চুল উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর ঘাটতি দেখা দিলে দ্রুত চুল পড়ে যাওয়া, নতুন চুল না গজানো, মুখের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া চুলের স্কফে ঘা হয়ে রক্তক্ষরণ হওয়া,ক্ষতস্থান সহজে না শুকানো , দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়া,হাত ও পায়ের চামড়া ফেটে রক্ত বের হওয়া,শরীরের রক্তশূন্যতা ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
ভিটামিন ই- আমাদের ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ও কোষ গুলো সুস্থ ও সচল রাখতে ভিটামিন ই ইমিউন সিস্টেম অত্যন্ত প্রয়োজন। ভিটামিন ই কে ডক্টর দের মতে বিউটি সিক্রেট বলা হয়। কারণ এর ঘাটতিতে ত্বকের রুক্ষতা শুষ্কতা ফেটে যাওয়া বলে রেখা কালচে ভাব ব্রণ মেস্তা ইত্যাদিত্বকের যত রকমের সমস্যা রয়েছে তার সকল এই ভিটামিনের অভাবেই হয়ে থাকে। এর জন্য সকল ডক্টরদের মতে ত্বকের কোন সমস্যা সৃষ্টি হলে ভিটামিন এ জাতীয় খাদ্য বেশি বেশি খান সকল সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
পানি শূন্যতাঃপানি আমাদের শরীরের অঙ্গের সকল অংশ সতেজ রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। অনেক সময় পানি স্বল্পতার কারণে আমাদের হাত পা ঠোট ইত্যাদি সকল স্থানের চামড়া শুষ্ক হয়ে পড়ে এছাড়া চুল ও সম্পূর্ণ শরীর প্রাণহীন হয়ে যায়। আমরা অনেকেই শীতে পানি কম খায় ফলে পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়ার সমস্যা আমাদের বেশি শীতে দেখা দেয়। এজন্য আমরা অবশ্যই শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সকল ঋতুতে নিজের শরীরকে সুস্থ সবল ও ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে বেশি পানি পান করব।
এছাড়া শরীরে আইরন ক্যালসিয়াম ও জিংক জাতীয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি থাকলে পায়ের গোড়ালি ফেটে যায় এবং রুক্ষ-শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে থাকে।
শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ ও প্রতিকার
পা ফাটা আমাদের জন্য অনেক বেশি লজ্জার একটি বিষয়। এ থেকে আমরা সকলেই নিস্তার পেতে চাই। কিন্তু কি কারনে আমাদের পায়ের গোড়ালি ফেটে যায় তা কি আমরা জানি। এজন্য আজ শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো-
শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত
- পায়ের গোড়ালি ফাটা অনেক সময় কারো জেনেটিক ভাবে হয়ে থাকে যেমন মা-বাবা, চাচা, ভাই ইত্যাদির বংশে কারো থাকলে তা সহজে ভালো হয় না।
- ফাটাস্থানে সব সময় হাত দিলে বা চুলকানোর ফলে দ্রুত ভালো হয় না।
- অল্প ফাটা স্থানের চামড়া গুলো টেনে তোলার চেষ্টা করলে।
- ধুলোবালি যুক্ত পা প্রতিদিন পরিষ্কার না করলে।
- পায়ে বিভিন্ন ধরনের লোশন, ক্রিম বা মশ্চারাইজার ব্যবহারের পরে পরিষ্কার না করা।
- অপরিষ্কার জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করলে।
- যে সকল ব্যক্তির গোড়ালি ত্বক একটু বেশি মোটা।
- বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির অভাব থাকলে।
- দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এমন কাজ করলে।
- যে সকল ব্যক্তির অতিরিক্ত ওজন।
- বয়সের পরিবর্তন হওয়ার অনেক সময় গোড়ালি ফাটে।
- জুতার তলা শক্ত হলে।
- শুষ্ক জলবায়ু বা শীতল আবহার কারণে।
- সঠিক সাইজের জুতা না পড়লে।
- নিয়মিত গরম পানিতে গোসল করলে।
- শরীরে পানি শূন্যতা বা কম পরিমাণে পানি পান করলে।
- শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন ভিটামিন সি ই ডি ও বি ৩ ইত্যাদির ঘাটতি থাকলে।
- এছাড়া শরীরে ক্যালসিয়াম ঘাটতি পা ফাটার অন্যতম কারণ।
- যে সকল ব্যক্তির ডায়াবেটিসজনিত রোগ রয়েছে তাদের স্নায়জনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণে পায়ের আদ্রতা কমে আসে ফলে পা ফেটে যায়।
- এক্সিমা রোগ থাকলে ত্বকের বিভিন্ন স্থান ফেটে যায় বিশেষ করে পায়ের গোড়ালি।
- যে সকল ব্যক্তি সোরিইয়াসিস রোগ রয়েছে তাদের হাতের ও পায়ের তালুর চামড়া উঠে থাকে তবে পায়ের গোড়ালি ফাটা রোগ বেশি হয় যা অনেকদিন পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী থাকে।
- স্যাঁতস্যাঁতে বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকলে।
- পা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখা।
- যে সকল ব্যক্তির পায়ের গোড়ালি অংশের ত্বক শুষ্ক।
শীতে পায়ের গোড়ালির ফাটার প্রতিকার
- একবার পা ফেটে গেলে যেহেতু তা সহজে ভালো হতে চায় না এর জন্য পায়ের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে।
- পা সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও ধুলাবালি মুক্ত রাখতে হবে।
- ফাটা স্থান বেশি ঘষা বা নাড়া যাবে না।
- ব্যাকটেরিও বিভিন্ন ধরনের জীবাণু দূর করার জন্য উষ্ণ গরম পানি ভেতরে লেবু চিপে পা কিছুক্ষণ ডুবে রাখতে পারেন।
- পা ফাটা দূর করার জন্য আমরা মধু ব্যবহার করতে পারি। মধু আমাদের পায়ের জন্য মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। কুসুম গরম পানি ও মধু একসাথে মিশ্রিত করে পায়ে ধীরে ধীরে মাসাজ করলে খুব সহজেই শক্ত চামড়াগুলো পরিষ্কার হয়ে যায়।
- আপনার ত্বক অনুযায়ী ডক্টরের পরামর্শ মোতাবেক ওয়েনমেন্ট বা বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
- তবে বেশিরভাগ ডাক্তার ১০% স্যলিসাইলিক এসিড জাতীয় অয়েন্টমেন্ট বা ক্লোবিটাসল দিয়ে থাকেন যা ব্যবহার করে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
- তবে এগুলো অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে ব্যবহার করবেন কারণ অনেক সময় পায়ের গোড়ালি বিভিন্ন রোগের সংকেত দেয়।
- অনেক সময় আমরা ঘরোয়া ভাবে এ পা ফাটা দূর করি যা অনেক কার্যকারী তবে বেশি রক্তপাত হলে ঘরোয়া মশ্চেরাইজার ব্যবহার না করে ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে ঔষধ সেবন করতে হবে।
- প্রতিদিন হাঁটাচলার মাধ্যমে পায়ের রক্ত চলাচল ও সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখবেন।
- মাঝে মাঝে পা উষ্ণ গরম পানি দিয়ে পা পরিষ্কার করবেন।
- খালি পায়ে হাঁটাচলা কখনো করবেন না।
- গোসলের পর অবশ্যই মশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন।
- সপ্তাহে বা মাসে একবার হলেও ফুট মাসাজ বা পেডিকিউর করাবেন।
আরো পড়ুনঃপোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায়
আমরা অনেকে শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় খুঁজে থাকি। তবে সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণে অনেক ক্ষতির ভেতরে পড়ে যায়। এজন্য আজ আমি খুব সহজ উপায় ও উপকরণ দিয়ে ঘরোয়া ভাবে খুব সহজেই পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করার বিস্তারিত কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। নিম্নে উক্ত বিষয়ে আলোচনা করা হলো-
অ্যালোভেরার রসঃঅ্যালোভেরার জেল পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করতে বেশ কার্যকারী। এলোভেরা তে থাকা এন্টি সেপটিক আমাদের পায়ের শুষ্কতা ও রুক্ষতা দূর করে পা নরম ও ক্ষত মুক্ত করতে সহায়তা করে। এর জন্য এলোভেরার জেল পায়ে নিয়মিত ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভালো করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
লেবুর রসঃ পায়ের রুক্ষতা ও কালচে ভাব দূর করতে লেবু বেশ কার্যকরী। এর জন্য একটি লেবু রস বের করে পায়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মাসাজ করার পর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে পায়ের গোড়ালি ফাটা খুব সহজে দূর হয়ে যাবে।
নারিকেল তেলঃ নারিকেল তেল আমাদের পা নরম ও শুষ্ক চামড়া দূর করতে বেশ সাহায্য করে। এর জন্য নিয়মিত নারকেল তেল আমরা ময়েশ্চারাইজার হিসেবে রাত্রে ঘুমানোর আগে বা যে কোন সময় ১৫ থেকে .২০ মিনিট পায়ের গোড়াতে ম্যাসাজ করে নিতে পারি। এতে আপনার পায়ের গোড়ালি কখনো ফেটে যাবে না।
কাজুবাদাম পেস্টঃ পায়ের গোড়ালি নরম মসৃণ রুক্ষ ও শুষ্কমুক্ত রাখতে নিয়মিত কাজু বাদামের পেস্ট পায়ে লাগাতে পারেন। এজন্য কয়েকটি কাজু কাজুবাদাম নিয়ে পেস্ট তৈরি করে সারারাত পায়ে লাগিয়ে রাখুন এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন দেখুন পায়েররুক্ষতা শুষ্কতা ও ফেটে যাওয়া দূর হয়ে গিয়েছে।
গ্লিসারিন ও গোলাপ জলঃ দ্রুত সময়ের ভেতরে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করতে চাইলে হাফ চামচ গ্লিসারিন এক চামচ গোলাপ জল এর সঙ্গে হাফ চামচ পরিমাণে মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। ২০ থেকে ২৫ মিনিট হালকাভাবে মাসাজ করুন পরিবর্তন আপনি নিজেই দেখতে পাবেন।
বেকিং সোডাঃ উষ্ণ গরম পানির ভেতরে তিন থেকে চার চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট উক্ত পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন। নিয়মিত কয় দিন ব্যবহার করলে পায়ের কালচে ভাব ও রুক্ষতা শুষ্কতা দূর হয়ে যাবে।
বেসনের প্যাকঃ বেসন যেমন আমাদের মুখের ত্বকের জন্য বেশ কার্য করি তেমনি পায়ের গোড়ালির খসখসে রুক্ষতা শুষ্কতা প্রাণহীনতা দূর করতে বেশ কার্যকরী। এর জন্য দুই থেকে তিন চামচ বেসন এক চামচ মধু ও দুই চামচ টক দই ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। নিয়মিত সকালে বাঘ ঘুমানোর পূর্বে ব্যবহারে অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
পেঁয়াজের রসঃ পেঁয়াজের রয়েছে প্রচুর পরিমানে দস্তা মেগা নিয়ে ফসফরাস ভিটামিন "এ", "ই", "সি" এছাড়া আমাদের শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ বা টক্সিন বের করার মত সকল উপাদান যা আমাদের রক্ত প্রবাহ মাত্রা সঠিক রাখি। রিয়াজের ভালো করে পেজ তৈরি করে এর ভেতরে এক চামচ মধু ও এক চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে ফাটা স্থানে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভালো করে মাসাজ করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন নিয়মিত ব্যবহারে খুব সহজেই দূর দূর হবে ফাটার দাগ ও ফাটা গোড়ালি।
দুধের সর ও মধুঃদুধের সর ও মধু আমাদের ত্বকের জন্য কতটা উপকারিতা আমরা সকলে জানি। এই উপকরণ দুটি আমাদের পায়ের গোড়ালির ফাটা ভাব দূর করতেও বেশ কার্যকারী ভূমিকা রাখে। এর জন্য এক চামচ বেসনের সঙ্গে দুই চামচ দুধের সর এক চামচ মধু ও হাফ চামচ হলুদ বাটা ভালো করে মিশে পেস্ট তৈরি করে ফাটা স্থানে ভালো করে মাসাজ করতে থাকুন। এতে খুব দ্রুত ও সহজেই পায়ের কালচে ভাব,মৃত কোষ ও ফাটা দূর হয়ে যাবে।
কলার পেস্টঃ অর্ধেক পাকা কলা ভালো করে পেজ তৈরি করে নিন এর ভেতরে সামান্য পরিমাণে নারিকেল তেল ও এক চামচ দুধের সর মিশিয়ে ভালো করে পেস্ট তৈরি করুন। ফাটা স্থানে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। নিয়মিত কয়েকদিন ব্যবহারে বেশ ভালো ফলাফল পাবেন।
ভিটামিন ই ক্যাপসুলঃ তিন থেকে চারটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে তেল বের করে নিন এর সাথে এক চামচ পরিমাণে পেট্রোলিয়াম জেলি ভালো করে মিশিয়ে রাত্রে ঘুমানোর আগে ফাটা স্থানগুলোতে লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন খুব সহজে আপনার পায়ের গোড়ালি বা ফাটা স্থান নরম ও মসৃণ হয়ে গিয়েছে।
মোমবাতির মোমঃ সরিষার তেল ও মোম ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং উক্ত পেস্ট ফাটাস্থানে ঘুমানোর পূর্বে লাগিয়ে রেখে দিন। দেখবেন খুব সহজে পাখাটা ছেড়ে গিয়েছে।
তিলের তেলঃ নিয়মিত তিলের তেল পায়ের গোড়ালিতে ব্যবহার করলে খুব সহজে পা ফাটা থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। নিয়মিত ব্যবহার করলে কখনোই পা ফাটা হবে না।
শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটলে কি ব্যবহার করবো?
শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটলে কি ব্যবহার করবো? আমাদের মনে অনেকেরই এই প্রশ্ন। এ প্রশ্নের সঠিক ও সহজ উপায় জানতে সম্পন্ন পোস্টে পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো। নিম্নে উক্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
বিভিন্ন ধরনের তেল ব্যবহার করে খুব সহজেই পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করা সম্ভব। এই তেল গুলো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। নিম্নে তেল গুলোর নাম দেওয়া হল-
আরো পড়ুনঃতল পেটের চর্বি কমানোর উপায়
- অলিভ অয়েল
- তিলে তেল নারিকেল তেল
- সরিষার তেল
- বাদামের তেল
- ভেজিটেবল অয়েল
- কালোজিরার তেল
- আমান্ড অয়েল
- লেফেন্ডার অয়েল
- জোজোবা অয়েল
এছাড়া পা ফাটা দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন যেমন-
- এলোভেরা জেল ও মধুর পেস্ট
- গ্লিসারিন ও বেসনের পেস্ট
- কাজু বাদামের পেস্ট
- হলুদ ও মধুর পেস্ট
- দুধের সর ও মধুর পেস্ট
- ভ্যাসলিন,লেবুর রস ও মধুর পেস্ট
- পাকা কলা ও মধুর পেস্ট
- কলা অ্যাভোকাডো ও নারকেল তেলের পেস্ট
- লেবুর রস,ভেসলিন ও মধুর পেস্ট
- চালের গুঁড়ো বাদামের তেল বা অলিভ অয়েল মধু ও আপেল সিডারের পেস্ট
- জোজোবা অয়েল ও ওটমিল এর পেস্ট
খাদ্য তালিকায় যে সকল পুষ্টি উপাদান রাখবেন
- ক্যালসিয়াম
- আয়রন
- ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড
- জিংক
- ভিটামিন ই
- ভিটামিন সি
- ভিটামিন ডি
- মিনারেল
- ভিটামিন বি৬
এছাড়া নিয়মিত দুধ জাতীয় খাবার, মুরগির মাংস শাকসবজি কলিজা সীমের বিচি ডিম মৌসুমী ফল ও সামুদ্রিক মাছ খাদ্য তালিকায় রাখবেন।
পা ফাটা দূর করার ক্রিম বাংলাদেশ
আপনি পা ফাটা দূর করার ক্রিম বাংলাদেশ এর চাচ্ছেন এবং সঠিক ক্রিম সম্পর্কে জানতে না পারলে আমাদের পোস্টটি সম্পন্ন করুন। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের পা ফাটার ক্রিম রয়েছে। তবে এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক তথ্য যা আপনার ত্বক ও শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন জানতে বিভিন্ন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কে দেখাতে পারেন। এছাড়া বাজারে কিছু পা টার ঔষধ বা ক্রিম রয়েছে এগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারেন যেমন-
- হিট গার্ড
- বোরো প্লাস
- হিমালয় ফুট কেয়ার
- রেমি পা ফাটা
- ইমুরিয়া ২৫
- ক্র্যাক হিল
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
পা ফাটা দূর করার ক্রিম এর নাম
আমরা অনেকেই পা ফাটা দূর করার ক্রিম এর নাম জানতে চাই। শীতকালে আমরা বেশিভাগ এই ক্রিমের নাম সম্পর্কে জানতে চাই বা ব্যবহার করি। কারণ শীতের আদ্রতা আমাদের ত্বককে রুক্ষ শুষ্ক করে ফাটার মত রোগ সৃষ্টি করে। এ পা ফাটা থেকে মুক্তি জন্য চলুন জেনে নেই কি কি ক্রিম ব্যবহার করবেন-
খাদি জ্যাকমিন এন্ড গ্রিন টি হারবাল ফুট ক্রিম
আমরা যারা অতিরিক্ত পা ফাটা নিয়ে ভুগছি তারা এই ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্রিমটি খুব সহজেই পায়ের রুক্ষতা শুষ্কতা ও মৃত কোষ দূর করতে পারে এবং পায়ের গোড়ালি নরম মসৃণ ও প্রানো বন্ধক করে তোলে। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে বা গোসলের পূর্বে ব্যবহার করুন।
হেলমেট ক্রেকড ভিলাস রিপেয়ার স্পেশালিস্ট ক্রিম
এই ক্রিমটি শুধুমাত্র পায়ের গোড়ালের ফাটা দূর করতে ব্যবহার করা হয় যা বেশ কার্যকারী। দ্রুত সময়ের ভেতরে পায়ের ফাটা অংশ ও কালচে ভাব দূর করার জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন।
হিমালয়া ওয়েলনেস ফুট কেয়ার ক্রিম
পায়ের রক্তক্ষরণ অতিরিক্ত ব্যথা দূর করতে এটি বেশ কার্যকরী। নিয়মিত ঘুমানোর পূর্বে ব্যবহারে পায়ের মসৃণতা ও কোমলতা বাড়বে।
পতঞ্জলি ক্র্যাক হিলক্রিম
এই ক্রিমটি পায়ের রুক্ষতা শুষ্কতা প্রাণহীনতা ও ফাটলের ফলে যন্ত্রণা দূর করতে বেশ কার্যকরী তা প্রমাণিত হয়েছে। নিয়মিত ঘুমানোর আগে ব্যবহারে আপনার পায়ের গোড়ালি তার প্রাণ, কোমলতা ও মসৃণতা ফিরে পাবে
ভাদি হারবাল ফুট ক্রিম
অনেকে আছেন যারা হারবাল জাতীয় পণ্য ব্যবহার করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাদের জন্য পা ফাটা দূর করতে বেশ কার্যকারী ক্রিম এটি। ব্যবহারে খুব সহজেই এবং দ্রুত সময়ের ভেতরে পায়ের রুক্ষতা, শুষ্কতা কালচে ভাব দূর করতে সক্ষম হবে
পা ফাটার হোমিওপ্যাথি ঔষধ
শীত আগমনের সাথে সাথে আমাদের অনেকে পা ফাটা জনিত রোগ দেখা দেয়। যা কখনো কখনো মারাত্মক হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য আমাদের অবশ্যই এ বিষয়ে সতর্ক যত্নবান হতে হবে। আমরা অনেকেই আছি যারা হোমিও ওষুধ খেতে বেশি পছন্দ করি অন্যান্য ওষুধের তুলনায়। তাদের জন্য পা ফাটার হোমিওপ্যাথি ঔষধ সম্পর্কে নিম্ন আলোচনা করা হলো-
পেট্রোলিয়ামঃ শীত আমাদের শরীর থেকে আর্দ্রতা কেড়ে নিয়ে শরীরকে শুষ্ক ও প্রাণহীন করে তুলে এজন্য আমরা এই ওষুধটি খেতে পারি। যে সকল ব্যক্তির অধিক শীত অনুভূত হয়, রুক্ষ মেজাজ, পায়ের তলা ঘেমে যায় ও বগলে প্রচুর দুর্গন্ধ হয় এ সকল ব্যক্তির হাত-পা ত্বক ফেটে গেলে এই ঔষধ বেশ কার্যকরী।
গ্রাফাইটিসঃ যে সকল ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে শীত লাগে এবং হাত-পা দ্রুত ফেটে যায় রুক্ষ-শুষ্ক ত্বক এবং ফাটা স্থান হতে ক্ষতের সৃষ্টি হয় তাদের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন।
এনাকারডিয়াম অক্সিডেন্টালঃ এ সকল ব্যক্তির মনে অনেক সন্দেহ, সবসময় দুইটি সত্তা বহন করে, অনেক বেশি দুর্বল, মমতাহীন ইত্যাদি ব্যক্তিত্বের ব্যক্তির পা ফাটা রোগ হলে ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন।
সতর্কতাঃ চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ঔষধ খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
লেখক এর মন্তব্যঃ
লাইন বাটন আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে শীতে আপনার পা ফাটার জনিত যত সমস্যা রয়েছে তার সমাধান হিসেবে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আশাকরি উপরেও তো সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে আপনিও উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আমার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করে তাদের পা ফাটা জনিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিয়ে সহায়তা করুন। এমন আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন, আসসালামু আলাইকুম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url