শীতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির

আসসালামু আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় শীতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির, শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার ইত্যাদি আরো শীতে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার নিয়ে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
শীতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনি আপনার ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল প্রানোবন্ধক ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই সম্পন্ন পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।

ভূমিকা

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সৌন্দর্য ও ফর্সা করার প্রোডাক্ট রয়েছে।এ সকল প্রোডাক্টে কি সকল উপাদান ন্যাচারাল ও ঘরোয়া ভাবে তৈরি? কখনোই না, এগুলো ন্যাচারাল উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় না। ফলে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও কখনো মারাত্মক ক্ষতির সৃষ্টি হয়।

এজন্য আমি আপনাদের জন্য খুব সহজে ন্যাচারাল ঘরোয়া সামান্য কিছু উপকরণ দিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা কিভাবে বৃদ্ধি করবেন, ত্বকের জন্য মশ্চারাইজার কিভাবে তৈরি করবেন, রুক্ষ শুষ্ক ও তেলাক্ততা ত্বক থেকে কিভাবে দূর করবেন, রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের কি কি যত্ন নেবেন,ত্বককে কিভাবে হাইড্রেট করবেন,
কিভাবে ন্যাচারাল ভাবে নিজের ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা ভাব বের করবেন ইত্যাদি সকল বিষয় নিয়ে সম্পূর্ণ পোজ জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে অবশ্যই আপনি আপনার ত্বকে সকল সমস্যা দূর করতে পারবেন এজন্য সম্পূর্ন পোস্ট করার বিশেষ ভাবে অনুরোধ রইলো।

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার

অন্যান্য ঋতুর তুলনায় শীতে আমাদের ত্বকের প্রয়োজন বাড়তি ময়শ্চারাইজার। শীতল আবহাওয়ায় ত্বক দ্রুত প্রভাবিত হয়ে উজ্জ্বলতা হারায়। ঘরোয়া উপকরণ ব্যবহার করে খুব সহজেই ত্বকের হারানো উজ্জ্বলা ফিরিয়ে আনা যায়। শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার গুলো চলুন জেনে নি।

ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপকরণ মধুর ময়শ্চেরাইজার ত্বকের উজ্জলতা ফেরাতে বেশ কার্যকারী।

  • ২ চামচ মধু ও ১ চামচ লেবু ভালো করে মিশ্রিত করে পেস্ট তৈরি করে গোসলের আগে ও ঘুমানোর পূর্বে ব্যবহার করলে ত্বকের হারানো উজ্জলতা খুব দ্রুত ফেরানো সম্ভব। সপ্তাহের ৩ থেকে ৪ বার ব্যবহার করলে অবশ্যই ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন।২ চামচ মধু ও ২ চামচ টক দই পেস্ট তৈরি করে ত্বকে ভালো করে ম্যাসাজ করুন।
  • ফলে ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পাবে এবং মৃত কোষগুলো সতেজ হবে ।এতে আপনি আপনার হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন।২ চামচ মধু ,১ চামচ হলুদ ও ১চামচ চিনির পেস্ট তৈরি করে গোসলের আগে ও ঘুমানোর পূর্বে।
  • সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়।২ চামচ মধুর সাথে অর্ধেক কলা বা ৪ টুকরো পাকা পেঁপের পেস্ট ভালো করে মিশ্রিত করে পেস্ট তৈরি করে সপ্তাহে২ থেকে ৩ দিন ব্যবহার করলে অবশ্যই উপকৃত হবেন।
উপরোক্ত ময়শ্চেরাইজার গুলো ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি ও এতে কোন কেমিক্যাল বা ক্ষতিকার পদার্থ নেই এবং ব্যবহৃত উপকরণগুলো আমাদের ঘরে খুব সহজে পাওয়া যায় এবং এগুলো ব্যবহার বিধি ও সহজ সুতরাং এগুলো আপনি নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারেন।এতে আপনার ত্বকের মৃতকোষ গুলো সতেজ ও ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পাবে ফলে আপনি আপনার ত্বকের হারানো লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন ইনশাআল্লাহ।

শীতে ত্বকের যত্নে ক্রিম না ঘরোয়া পদ্ধতি

ত্বকের সমস্যা আমাদের সারা বছর জুড়েই থাকে। তবে শীতে তুলনামূলক একটু বেশি। শীতে আমাদের ত্বক উস্ক-শুষ্ক, নির্জন হয়ে ফেটে যায় ইত্যাদি আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যাগুলোর সমাধান করার জন্য আমরা শীতে ত্বকের যত্নে ক্রিম না ঘরোয়া পদ্ধতি উপকরণ ব্যবহার করব।

অনেক সময় আমরা এই সমস্যাগুলো দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকি যা পরবর্তীতে আমাদের ত্বকের আরো বেশি ক্ষতি সৃষ্টি করে। আমাদের শরীর অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় ত্বক বেশি সেনসিটিভ ও কোমল হয়ে থাকে যা বেশি ক্ষতিকর পদার্থ সহ্য করতে পারে না।
বাজারে যেসব শীতের ক্রিম বিক্রয় করা হয় আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ মিশ্রিত থাকে কিনা, আমরা জানি না তাতে কেমিক্যাল বা বিষাক্ত পদার্থ মিশ্রিত থাকে কিনা জানি না। অনেক সময় এই কেমিক্যাল যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করে আমাদের ত্বকের অনেক বেশি ক্ষতি হয়।

ঘরোয়া উপকরণ যেহেতু প্রাকৃতিক ন্যাচারাল সেহেতু কেমিক্যাল বা বিষাক্ত পদার্থ থাকে না।ফলে এতে আমাদের ত্বকের আসল উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্য বেরিয়ে আসে।ঘরোয়া উপকরণগুলো আমরা দেখে বুঝে বাছাই করে নিতে পারি এবং খুব সহজে ঘরে বসে ত্বকের জন্য ন্যাচারাল ক্রিম তৈরি করতে পারি।

যেমন ঘরোয়া উপকরণ হিসেবে আমরা পাকা পেঁপের পেস্ট, পাকা কলার পেস্ট, মধু ও টক দইয়ের পেস্ট, মধু ও হলুদের পেস্ট, আলুর পেস্ট ,মসুর ডালের পেস্ট ইত্যাদি ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে আমরা আমাদের কোমল ত্বকের যত্ন নিতে পারি যা সম্পূর্ণ কেমিক্যাল বা বিষাক্ত পদার্থ মুক্ত।

শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার ঘরোয়া উপায়

আমাদের শরীরের উপরের স্তর হলো ত্বক যা একেকজনের একেক রকমের হয়ে থাকে। কারো শুষ্ক কারো তেলাক্ত কারো বা মিশ্র। সকল ঋতুতেই আমাদেরকে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কিন্তু শীতে আমাদের একটু বেশি বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। 

শুষ্ক ত্বক, শীত যেন শুষ্ক ত্বকের জন্য এক অভিশাপ। শুষ্ক ত্বকে হাত-পা ফেটে যাওয়া,চামড়া ওঠা, নির্জন হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা লেগে থাকে। শীত এমনিতেই আবার ত্বকে উস্ক শুষ্ক ও নির্জন করে তোলে। চলুন জেনে নিই শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার ঘরোয়া উপায়-

বেশি পানি পান করাঃ অন্যান্য ঋতুর তুলনায় শীতে আমরা পরিমাণে কম পানি পান করি।ফলে যাদের শুষ্ক ত্বক তাদের ত্বকের শুষ্ক আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। হাত-পা ,ঠোঁট ফেটে যাওয়া ,ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ,ত্বকের চামড়া উঠা,ত্বকে নির্জন করে তোলা ইত্যাদি সমস্যা তৈলাক্ত ত্বকে না হলেও শুষ্ক ত্বকে তা অনেক বেশি দেখা দেয়।আমরা জানি পানি আমাদের শরীর ও ত্বকে সতেজ রাখে।শুধু শীতেই নয় শুষ্ক ত্বক উজ্জীবিত সতেজ ও লাবণ্যময় রাখার জন্য ডাবের পানি বা বেশি বেশি পানি পান করতে থাকতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর পর পানি দিয়ে মুখ ধুতে হবে। সব সময় খেয়াল রাখতে হবে ত্বকের আদ্রতা যেন না হারায়। এতে ত্বকের নির্জীবতা ও শুষ্কতা দূর হবে।

ঘরোয়া স্ক্রাবঃ শুষ্ক ত্বকের শুষ্কতা দূর করার জন্য অনেক সময় স্ক্রাব বেশ কার্যকারী হয়। ঘরোয়া বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি করা যায় এ স্ক্রাব যেমন লেবু ও চিনি দিয়ে তৈরি স্ক্রাব বা দুধের সর বা টক দই ও মসুর ডালের ক্র্যাব। মসুর ডাল ,মধু ও কাঁচা হলুদের স্ক্রাব ও অনেক কার্যকারী।

তৈলাক্ত পদার্থঃ শুষ্ক ত্বকে যাদের তিলাক্ত পদার্থ শুট করবে। তারা ঘরোয়া উপায়ে জলপায়ের তেল বা অলিভ অয়েল ২ থেকে ৫ মিনিট ভালো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন এতে ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়ে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

পাকা পেঁপে ও পাকা কলাঃ ১টি ছোট পাকা কলা ভালো করে পেস্ট তৈরি করে ১ চামচ মধু ও ১ চামচ অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন। মুখ ধুয়ে মিশ্রণটি ভালো করে মুখে লাগিয়ে নিন ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহারে আপনার ত্বকের মৃত কোষগুলো ও শুষ্কতা দূর হবে। একইভাবে ৬ থেকে ৭ টুকরো পাকা পেঁপের পেস্ট তৈরি করে ১ চামচ মধু ও ১ চামচ অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

শীতে ত্বকের তেলাক্ততা দূর করার ঘরোয়া উপায়

আমাদের সকলের ত্বকে সেবাসিয়াস নামক গ্রন্থি থাকে। এই সেবাসিয়াম গ্রন্থি সেবাম নামক একটি পদার্থ তৈরি করে যা ত্বকে তৈলাক্ত করে। সেবাম হলো চর্বি জাতীয় তৈলাক্ত পদার্থ যা আমাদের ত্বকে মশ্চারাইজার ও রক্ষা করে এবং চুলকে সতেজ ও প্রানোবন্ধক রাখে।

তৈলাক্ত জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া ,মানসিক টেনশন , হরমোনাল পরিবর্তন ইত্যাদি কারণে অতিরিক্ত সিয়াম সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত সেবাম আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। সেবাম ত্বকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্রে জমে থাকে সেখান থেকে ব্রণের ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়। যার সমাধান করা অনেক জটিল ও ব্যয়বহুল। তবে ঘরোয়া উপায়ে আমরা খুব সহজে তৈলাক্ততা দূর করতে পারি। চলুন জেনে নিই শীতে ত্বকের তেলাক্ততা দূর করার ঘরোয়া উপায়-

ক্ষারীয় সাবান বা ফেসওয়াশ ব্যবহার না করাঃ আমাদের শরীরের উপরের অংশ হলো ত্বক। সকল ধুলাবালি আমাদের এই ত্বকের গিয়ে জমা হয়। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই ধুলাবালি অনেক বেশি ক্ষতিকর। এই ধুলাবালি থেকেই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় যেমন ব্রণ ও ক্ষতের ,কালো ভাব ,চিপ চিপে ভাব ও মেস্তা ইত্যাদি। এই সমস্যা থেকে সমাধানের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো কিছুক্ষণ পরপর মুখ ধৌতো করা। বেশি ক্ষারীয় জাতীয় সাবান বা ফেসওয়াশ ব্যবহার না করা।

তৈলাক্ত দূর করার বেশ কার্যকারী উপায় হলো ঘরোয়া প্যাক। ঘরোয়া বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে আমরা এ প্যাক তৈরি করতে পারি।

মসুরের ডালঃ মসুরের ডাল ,কাঁচা হলুদ ও টক দই বা দুধের সর ভালো করে মিশ্রিত করে প্যাক তৈরি করে আধাঘন্টা বা ২০ মিনিট শুকানো পর্যন্ত রেখে ধুয়ে ফেলুন এতে ত্বকে চিপ চিপে ভাব ও কালো ভাব খুব সহজেই দূর হবে।কমলালেবুর খোসার প্যাক ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে খুবই কার্যকরী।

কমলা লেবুর খোসাঃ ৪ চামচ কমলা লেবুর খোসার গুঁড়ো ,১ চামচ মধু্‌,১ চামচ কাঁচা হলুদ বাটা ও টক দই বা দুধের সর ১ চামচ ভালো করে মিশ্রিত করে প্যাক তৈরি করুন শুকানো পর্যন্ত মুখে রেখে দিন ।হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন।সপ্তাহে ৩ থেকে ৪বার ব্যবহারে অবশ্যই আপনার ত্বকের তৈলাক্ততা দূর হবে এবং আপনার ত্বক উজ্জ্বল মসৃণ ও লাবণ্যময় হবে।

বেসনঃ বেসন এমন এক ধরনের উপকরণ যাকে বলা হয় প্রাকৃতিক ফেসওয়াশ। বেসন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী।বেসন এর সাথে সামান্য পরিমাণ দুধের সর মিশ্রিত করে বা এর সাথে ২ চামচ মধু মিশ্রিত করে প্যাক তৈরি করুন। সপ্তাতে ২-৩ দিন ব্যবহার আপনি আপনার ত্বকের পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন। এটি খুব তাড়াতাড়ি ও সহজে ব্যবহার করা যায়।

অ্যালোভেরা বা কৃত্তিকাঞ্চনঃ অ্যালোভেরা বা কৃত্তিকাঞ্জন হল সকল ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী একটি উপাদান। এলোভেরার জেল তৈরি করে আমরা শুধু মুখে ম্যাসাজ করতে পারি অথবা ১ চামচ মধু মিশ্রিত করে ত্বকের ম্যাসাজ করতে পারি। এটা আমাদের ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি করে। ফলে ত্বক তার আসল উজ্জ্বলতা ফিরে পায় এছাড়াও আমরা অ্যালোভেরা জেল তৈরি করে উষ্ণ গরম পানির সাথে ১ চামচ মধু মিশ্রিত করে খেতে পারি এতে আমাদের ভেতর থেকে ত্বকের উজ্জ্বলতা বেরিয়ে আসেবে।

টমেটোঃ টমেটো আমাদের ত্বকের ছোট ছোট ছিদ্র থেকে ময়লা বের করতে সাহায্য করে। টমেটোতে থাকা উপাদান আমাদের ত্বককে টানটান করতে সহায়তা করে। একটি টমেটোর পেস্ট তৈরি করুন ,১ চামচ চিনি মিশ্রিত করে প্যাক তৈরি করুন এবং ভালো করে ত্বকে ম্যাসাজ করুন।শুকিয়ে গেলে উষ্ণ পানি দিয়ে মুখ ধৌত করুন।

শীতে রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্ন

এই কর্মব্যস্ততার জীবনে সারাদিন আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার কোন সুযোগ পাই না। বাকি থাকে শুধু রাত। শীতে যা আরো কঠিন হয়ে পড়ে। রাতে ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে খুব সহজেই আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি। চলুন জেনে নেই শীতে রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্ন গুলো কি কি-

মুখ ধৌত করাঃ সকালে উঠে আমরা বিভিন্ন কর্মে ঘর থেকে বের হই বের হওয়ার আগে আমরা সামান্য মেকআপ ব্যবহার করে থাকি। রাত্রে আমরা যখন ঘরে ফিরি অবশ্যই আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্য স্থায়িত্ব রাখার জন্য প্রথমে ভালো করে মুখ ধৌত করতে হবে। ফেসওয়াশ হিসেবে আমরা ৪ চামচ বেসন ও ১ চামচ মধু মিশ্রিত করে ধুয়ে ফেলতে পারি।। এতে আমাদের ত্বক কখনোই তার উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্য হারাবে না।

অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরা জেল তৈরি করে মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করে আমরা সারারাত রাখতে পারি এবং সকালে তা ধুয়ে ফেলতে পারি।এতে ত্বক সারারাত সতেজ ও আদ্রতা পাবে।ফলে ত্বক শুষ্ক ও নির্জন হওয়ার ভয় থাকবে না। ত্বক সব সময় টানটান ও লাবণ্যময় থাকবে।

শসার প্যাকঃ শশা ত্বকের জন্য খুব উপকারী যা ত্বককে শুষ্ক হতে রক্ষা করে ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। অর্ধেক শসার পেস্ট তৈরি করে ১ চা চামচ মধু ভালো করে মিশ্রিত করে প্যাক তৈরি করুন। ২০ থেকে ১৫ মিনিট রাখার পর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধৌত করুন । এতে ত্বক সতেজ ও উজ্জীবিত থাকবে।

টক দই বা দুধের সরের প্যাকঃ টক দই বা দুধের সর আমাদের ত্বককে লাবণ্যময়ী ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য বেশ কার্যকারী।দুধের সর বা টক দইয়ের সাথে ১ চামচ মধু মিশ্রিত করে ব্যবহার করুন। আপনি তৎক্ষনিক বুঝতে পারবেন আপনার ত্বক কোমল ও নমনীয় হয়ে গিযেছে।

শীতে ত্বক হাইড্রেট করার উপায়

শীতে আমাদের ত্বক হাইড্রেট ও কোমল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। অন্যান্য ঋতুর তুলনায় শীতে আমাদের ত্বকের আদ্রতা দ্রুত হারায়। শীতে ত্বক হাইড্রেট করার উপায় নিম্নে দেয়া হলো।

প্রচুর পানি পানঃ পানি আমাদের শরীর ও ত্বকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যা শীত বা অন্যান্য কোন ঋতু হোক না কেন। আমাদের শরীরের দুই তৃতীয়াংশ পানি তারা গঠিত। যা প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ গ্লাস পানি পানের মাধ্যমে পূরণ হয়। পর্যাপ্ত পরিমান পানি পানের মাধ্যমে আমাদের শরীর ও ত্বকের নানাবিদ রোগ দূর হয়। পানি ত্বকে সতেজ কোমল ও হাইড্রেট রাখে।

শীতের শাকসবজিঃ শীতে প্রচুর পরিমাণে নতুন নতুন শাকসবজি চাষ করা হয়। এ শাকসবজিতে রয়েছে আমাদের সারা শীত জুড়ে ত্বকের সকল সমস্যার সমাধান। যেমন

বাঁধাকপি ও ফুলকপিঃ বাঁধাকপি ও ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন সি ও প্রোটিন যা আমাদের ত্বক ও শরীরকে নরম ও হাইড্রেট করতে বেশ কার্যকরী।শীতের মৌসুমী সবজি হওয়ায় শীত থাকা অবস্থায় প্রতিদিন পাওয়া যায়। এগুলো সালাদ ও সবজি আকারে রান্না করে ও খাওয়া যায়।

পালং শাকঃ পালং শাককে বলা হয় আয়রন ও মিনারেলের প্রধান উৎস। শীত মৌসুম আসার সাথে সাথে সতেজ ও তরতাজা পালং শাকে বাজার ভরপুর হয়ে থাকে। আমরা জানি আমাদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন একটি করে শাক রাখা উচিত।
আর সেই শাক যদি হয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে,ওজন কমাতে,আয়রনের ঘাটতি মেটাতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও ত্বককে সতেজ করতে ইত্যাদি গুণের অধিকারী তাহলে অবশ্যই আমরা সেই শাক আমাদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন রাখবো।

টমেটো গাজরঃ টমেটো ও গাজর শীত আগমনের সাথে সাথে টাটকা ও তরতাজা পাওয়া যায়। গাজর ও টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন "সি"ও ভিটামিন "এ"।টমেটো ও গাজরের পেস্ট তৈরি করে নিয়মিত ত্বকে লাগালে ত্বক টানটান,উজ্জ্বলতা ও নরম হয়। এছাড়া একটি আপেলের চাইতে ২ গুন পুষ্টি প্রদান থাকে টমেটোতে।

শীতের মৌসুমী ফলঃ শীতে প্রচুর পরিমাণে ফল উৎপন্ন হয় যা আমাদের ত্বকের ও শরীরের শীত জনিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমনকমলা, বর্তমানে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে কমলা দেশীয় উৎপন্ন হচ্ছে ।কমলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীর ও ত্বকে তরতাজা প্রাণবন্ধক ও সতেজ করে তোলে।

কমলা রসঃ কমলার রস করে অথবা কমলার খোসার পেস্টে সাথে ১ চা চামচ মধু ভালো করে মিশ্রিত করে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করলে ,ত্বকের উজ্জ্বলতা কখনোই হারাবে না।জলপাই শীতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও টক জাতীয় ফল।

জলপাইঃ জলপাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন "সি" ভিটামিন"ই" ও ভিটামিন "এ"। যা আমাদের শরীরের রোগ জীবাণু ধ্বংস করে,উচ্চ রক্তচাপ কমায়,ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বক সতেজ ও ক্যান্সার জাতীয় প্রাণঘাতী রোগ হতে রক্ষা করে।

আমলকিঃ আমলকিকে বলা হয় ভিটামিন "সি"-এর রাজা। এর দ্বারা আমরা বুঝতে পারছি যে আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন "সি"।যা আমাদের শরীর,চুল ও ত্বকের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে,চুল ওঠা বন্ধ করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা ও লাবণ্যময় করে তোলে এবং এর ফল খেতে অনেক সুস্বাদু।

শীতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির

আমরা আমাদের ত্বকে সব সময় সুন্দর ও ফর্সা দেখতে চাই ,তা যে কোন ঋতু বা মৌসুম হোক না কেন। তবে বিশেষ করে শীতের মৌসুমে আমাদের ত্বক বেশি ক্ষতি সম্মুখীন হয়।উস্ক শুষ্ক,ফেটে যাওয়া, চামড়া ওঠা, কুঁচকে যাওয়া ইত্যাদি নানা রকমের সমস্যা। ইত্যাদি সমস্যা এড়িয়ে শীতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির তা নিম্নে দেয়া হলো-

পানি পান করাঃ পানি আমাদের ত্বকে ভেতর থেকে সতেজ ও ফর্সা করতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরে পানির ঘাটতি হলে ত্বক রুক্ষ, খসখসে ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। ত্বকে স্থায়ীভাবে ফর্সা ও প্রানোবন্ধক রাখতে আমরা অবশ্যই বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করব।

মশ্চারাইজারঃ আমাদের ত্বককে স্থায়ীভাবে ফর্সা ও উজ্জ্বল রাখতে নিয়মিত ঘরোয়া বিভিন্ন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। শীতে ত্বকের বাড়তি খেয়াল হিসেবে ময়শ্চারাইজার খুবই কার্যকারী।ঘরোয়া মশ্চারাইজার হিসেবে প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদান যেমন শুধু মধু ব্যবহার করতে পারি এছাড়াও ২ চামচ মধুর সাথে ১ চামচ চিনির মশারাইজার ব্যবহার করতে পারি। পাকা পেপে বা পাকা কলার সাথে ১ চামচ মধুর ময়শ্চেরাইজার ব্যবহার করতে পারি।

গরম পানিতে গোসল না করাঃ শীতে আমাদের গরম পানি দিয়ে গোসল করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। এতে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর হয়। কিন্তু গরম পানি ত্বকের জন্য বেশ ক্ষতিকর। গরম পানি ত্বকের রুক্ষ ও ত্বকের আদ্রতা কেড়ে নেয়। জন্য বাসায় আমাদের কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে।

এছাড়াও গোসলের পূর্বে বিভিন্ন প্রকার অয়েল ব্যবহার করতে পারি যেমন অলিভ অয়েল,জলপাই তেল ও কাস্টার অয়েল ইত্যাদি অয়েল দিয়ে মাসাজ করলে ত্বকের সার্কুলেশন বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে।

উপরোক্ত সকল ঘরোয়া উপকরণগুলো ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই প্রথমে হাতে অল্প জায়গায় ব্যবহার করে তারপর ত্বকের লাগাবেন কারণ তো উপকরণে আপনার এলার্জি ও থাকতে পারে।

লেখক এর মন্তব্য

রাইট বাটন আজকে এ পোস্টটির মাধ্যমে শীতে আপনার ত্বককে সকল প্রকার সমস্যা থেকে দূরে রেখে ত্বককে সতেজ নরম উজ্জ্বল ও প্রাণবন্তক রাখার কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আশা করি উপরোক্ত সম্পন্ন পোষ্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করে তাদের ত্বকের উজ্জ্বল ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সহায়তা করুন।এমন আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন, আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url