আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম

আলিবাবা নামটির সঙ্গে হয়তো আমরা অনেকেই পরিচিত কিন্তু আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম বা আলিবাবা অনলাইন শপিং বাংলাদেশ এ কিভাবে করতে হয় হয়তো আমরা অনেকেই তা জানি না। আলিবাবা বিশ্বের অন্যতম একটি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস।
আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং সঠিক নিয়মে আলিবাবা থেকে পণ্য কিনতে পারবেন।

ভূমিকা

বর্তমান যুগ অনলাইন ও ডিজিটাল যুগ। আর এই অনলাইন, ডিজিটাল ও স্মার্ট দেশে আলিবাবা সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না। আলিবাবা হচ্ছে একটি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস যেখানে বিশ্বের যে কোন দেশের রপ্তানি কারো তাদের পণ্যের তালিকা আলিবাবার মাধ্যমে বিষের সকল মানুষের কাছে প্রদর্শন করে থাকে।
হয়তো আপনি তাদের মত একজন যিনি আলিবাবা থেকে পণ্য কিনতে চান কিংবা আলিবাবা সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য বা ইতিহাস বা আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা কে ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চান। এজন্যই আজ আমি আপনাদের মাঝে এ পোস্টটির মাধ্যমে এ প্রশ্নের উত্তরগুলো দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়বেন এবং অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

আলিবাবা এর জনক কে? আলিবাবা ডট কম কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়

আলিবাবা বিশ্বের অন্যতম ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস ও অনলাইন রিটেলারস. ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে আলিবাবা ক্লাউড কম্পিউটিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট, অনলাইন পেমেন্ট, ইন্টারনেট সার্ভিস, মিডিয়া অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট ও হেলথ এন্ড স্পোর্টস ইত্যাদি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। যারা বিশ্ব অর্থনীতি ও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি সম্পর্কে ধারণারা রাখেন।

তারা হয়তো জানেন না আলিবাবা এর জনক কে? আলিবাবা ডট কম কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিশেষ ধনীদের ভেতরে তার অবস্থান কত। আলিবাবার জনক বা কর্ণধার জ্যাক মা ১৯৯৯ সালে মাত্র ১৮ জন কর্মচারী নিয়ে এই প্রতিষ্ঠান চালু করে। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানের মোট কর্মচারীর সংখ্যা এক লাখ বিশ হাজার বর্তমানে চীনের শীর্ষ ধনীর তালিকায় রয়েছে আলিবাবার কর্ণধার জ্যাক মা এবং তার প্রতিষ্ঠান বিশ্বের সেরা ১০ টি প্রতিষ্ঠানের ভেতরে একটি।

আলিবাবা এর অর্থ কি? আলিবাবা কোম্পানির চেয়ারম্যান কে?

অনেকেই হয়তো জানতে চান আলিবাবা এর অর্থ কি? আলিবাবা কোম্পানির চেয়ারম্যান কে? আলিবাবা বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের ভেতরে একটি। আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা মূলত ভারতীয় নাটক আলিবাবা চল্লিশ চোর থেকে এই নামটি রাখেন। সেখানে আলিবাবা অর্থ বোঝানো হয়েছিল চোর।

আপনি যদি আলিবাবার ইসলামী অর্থ বাংলা করতে চান তাহলে এর অর্থ হয় মহান নেতা। আলিবাবার জনক বা কর্ণধার হচ্ছে জ্যাক মা এবং এবং এই প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ২০২৩ সালে নতুন চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে নিযুক্ত করা হয় জোসেফ ও উকে।

আলিবাবা কোন দেশের কোম্পানি

বিশ্বের কমবেশি সকল মানুষই আলিবাবা নামের সঙ্গে পরিচিত রয়েছেন। আলিবাবা কোন দেশের কোম্পানি হয়তো আমরা অনেকেই তা জানিনা. আলিবাবা বর্তমানে ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস ছাড়াও আরো বিভিন্ন খাতে তার ব্যবসা রয়েছে। আলিবাবা মূলত চীনের সবচেয়ে বড় কোম্পানি।

আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা চীনের শীর্ষ ধন এবং বিশ্বের ধনীদের তালিকায় তার অবস্থান ১০। এছাড়াও বিশ্বের শীর্ষ দশটি প্রতিষ্ঠানের ভেতরে তার কোম্পানির রয়েছে। আলিবাবা চীনের প্রতিষ্ঠান হলেও কমবেশি সকল দেশে এ প্রতিষ্ঠানের ব্রাঞ্চ রয়েছে।

আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা কোথায়?

আলিবাবার প্রতিষ্ঠা জ্যাক মা প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা বা প্রযুক্তি নিয়ে চলাফেরা মানুষের কাছে ২০ জনপ্রিয় একটি মুখ। প্রায় তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। তবে বেশ কিছু কারণে বর্তমানে তাকে জনসম্মুখে একেবারে দেখা যায় না এর কারণ চীনা সরকারের সাথে বিভিন্ন ধরনের বিপাকের জড়িত। তাহলে আপনি বলতে পারেন আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা কোথায়?

জ্যাক মা গত বছরের নভেম্বর মাসে এন্ড গ্রুপের এ্যান গ্রুপের ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের আইপি স্থগিত করায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও চীনা সরকার আলিবাবা প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন ধরনের তদন্ত যেমন বিশ্বাসঘাতকতা ওয়াদা ভঙ্গ ইত্যাদি শুরু করেছে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের মতভেদ উঠেছে গণমাধ্যমে। একটি রিপোর্ট অনুসারে এ সকল কারণ ছাড়ো আরো বিভিন্ন কারণে বর্তমানে জ্যাক মা সপরিবারে জাপানি বসবাস করছি।

আলিবাবা ইতিহাস-জ্যাক মা এর জীবন কাহিনী

আলিবাবার প্রতিষ্ঠায় এবং চেয়ারম্যান জ্যাক মা জ্যাক মা চীনের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি বর্তমানে জ্যাক মায়ের সম্পদের পরিমাণ ২৫০০ কোটি ডলার। আলিবাবাতে তার ৭.৮ স্ট্যাটাসে এবং পেমেন্ট প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান আলীপেতে তার প্রায় স্ট্যাটাসের পরিমাণ প্রায় ৫০%।আলিবাবা ইতিহাস-জ্যাক মা এর জীবন কাহিনী মূলত এক নায়কের মত।আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা মা এক মধ্যবৃত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে।
কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় দুইবার ফেল করেন এবং অনিবার চাকরি পেতে ব্যর্থ হন জনপ্রিয় ফার্স্ট ফুড প্রতিষ্ঠান kfc তে একবার চাকরির জন্য এপ্লাই করে কিন্তু সেখানেও তিনি সফল হননি। ইন্টারনেট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করেও তিনি সফল হয়নি আলিবাবা তার তৃতীয় অনলাইন প্রতিষ্ঠান।

জন্ম ও শৈশবের ঘটনা: ১৯৬৪ সালে পশ্চিম চীনের ওয়ান টু প্রদেশে জন্মগ্রহণ করে। তিন সন্তানের ভেতরে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় তার এক বড় ভাই ও এক ছোট বোন ছিল জ্যাক মা যে সময় বেড়ে ওঠে সে সময় চিনে কমিউনু জুমের দ্বাপর ছিল। পশ্চিমা দেশের সঙ্গে চীনের তেমন ভালো সম্পর্ক ছিল না। 

ফলে পরিবারের আর্থিক অবস্থা ও তেমন ভালো ছিল না জ্যাক মা এর বাদ্যযন্ত্র সহকারে গান এর মাধ্যমে মানুষদের গল্প শোনাতেন এবং তার বিনিময়ে টাকা পেত তা দিয়ে তাদের সংসার চলত। তবে মাওযেদন এর সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিষয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

২০০৯ সালে চীনা লেখক জন ইয়ং সেন জ্যাক মা এর জীবনী দেখেন যেখানে সেখানে তিনি উল্লেখ্য করেন জ্যাক মা এর দাদা ছিলেন চীনের জাতীয়তাবাদী দলের একজন স্থানীয় অফিসার। চেয়ারম্যান জ্যাক মা জাতীয়তাবাদী দলকে হারানোর পর মা এর দাদাকে কমিউনিক্স পার্টির শত্রু হিসেবে ধরা হয় এবং মৃত্যু দন্ডে বর্ণিত করা হয়।

মায়ের পরিবার এবং তার আত্মীয়রা এ সময়টা বেশ কষ্টে কাটিয়েছিলেন। জ্যাক মা ছোটকালে স্কুলের ছাত্র এবং বিভিন্ন ছেলেদের সাথে মারামারিতে প্রায় জড়িয়ে পড়তো। জ্যাক মান ঝিঝি পোকা বেশ পছন্দ ছিল তিনি জিজিপোকার লড়াই এবং ঝিঝি পোকা ধরা বেশ পছন্দ করতেন। তিনি জিজি পোকা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতেন এবং তাদের আকার আকার ও শব্দ শুনে বুঝতে পারতেন এটি কোন ধরনের।

একটি অবাক করা বিষয় হচ্ছে তৎকালীন সময়ে প্রাচীন চীনে জিঝি পোকা ধরা বেশ জনপ্রিয় একটি শখ ছিল সকলের। তবে চেয়ারম্যান মা এর সময়ই এটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৬ সালে মা এর বয়স ১২ বছর। ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ওয়ান জু প্রদেশ ভ্রমণ করেন। ফলে অঞ্জু প্রদেশ বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ১৯৭৬ সালে মাউ এর মৃত্যুর পর অন্ধ্রপ্রদেশে ভ্রমণের সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে যায়।

সেসময় মা প্রতিদিন সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠতেন হেঁটে কিংবা সাইকেলে করে মঞ্জুর প্রধান হোটেলে চলে যেতেন এবং বিদেশে ভ্রমণকারীদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথাবার্তা বলার চর্চা করতেন এভাবে তিনি দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ফ্রি ফ্রি টুরিস্ট গাইড হিসেবে কাজ করেন এবং অনেকের সাথে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক তৈরি করেন।

যেভাবে তার একটি বিদেশি পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ হয় এবং তাদের আমন্ত্রণে তিনি অস্ট্রেলিয়া ভ্রমন করেন। এ ভ্রমণের ফলে তার বিদেশ সম্পর্কে ধারণা পুরোটাই বদলে যায় এক ওয়াশিংটনের সাক্ষাৎকারে মা বলেন আমি বিশ্ব সম্পর্কে যা পড়েছি এবং আমার বাবা-মার কাছ থেকে যা শুনেছি বিদেশ সম্পর্কে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা ছিল সম্পূর্ণটাই আলাদা।

জ্যাক মা ছাত্র হিসেবে মোটেও ভালো ছিলেন না কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় তিনি দুইবার ফেল করেন এবং তৃতীয়বার পাস করার পর তিনি ওয়ান যুগ টিচার ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান তার ভাষায় এটি ছিল চীনের সবচেয়ে নিম্নমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি।

যাইহোক ১৯৮৮ সালে তিনি গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করেন কলেজে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী চান ইয়াং এর সঙ্গে তার পরিচয় পরিনয় এবং গ্রাজুয়েশন কমপ্লিটের পর তারা বিয়ে করে। মা সম্পর্কে তার স্ত্রী বলেন তিনি হ্যান্ডসাম নয় তবে তিনি এমন কিছু কাজ করতে পারে যা হ্যান্ডসাম মানুষ করতে পারে না এর জন্যই আমি তাকে অনেক বেশি পছন্দ করি।

চাকরি ও ব্যর্থতার গল্প: গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর স্থানীয় একটি কলেজে পাঁচ বছর ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা করেন। তখন তার বেতন ছিল মাসে ১৫ ডলার। এ সময় তিনি স্থানীয় একটি হোটেল এবং পুলিশের চাকরিতে আবেদন করে তবে সেখানেও তিনি ব্যর্থ হন।

ব্যবসা: এমন অবস্থায় জ্যাক মা সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি ব্যবসা করবেন সে পরিকল্পনা অনুসারী তিনি একটি অনুবাদ প্রতিষ্ঠান গঠন করেন তবে এখান থেকে তার আর্থিক কোন উন্নতি হয় না। তিনি টাকার জন্য রাস্তায় মাল টানাটানির কাজ করতেন। ১৯৯৫ চীনা একটি প্রতিষ্ঠানে অনুবাদক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ করার সুযোগ পান।

মজার বিষয় হলো সে প্রতিষ্ঠান মা কে টাকা তো দেয়নি উল্টো মা কে বন্দুক দেখায়। তবে এখান থেকে তার লাভ হয়েছিল কারণ এখান থেকেই তিনি ইন্টারনেট সম্পর্কে জানতে পারেন। মা এর এক বন্ধু শিয়াটলি তাকে ইন্টারনেট সম্পর্কে ধারণা দেয় তখনই তার মাথায় ব্যবসার একটি আইডিয়া আসে।

তখন তিনি লক্ষ্য করেন অনলাইনে চীন কিংবা বিয়ার তালিকা নেই তখন তিনি চিনে ফিরে এসে তিনি একটি লিস্টিং সাইড গড়ে তুললেন এবং সরকারের কাছে বিক্রি করে দেন। এর ফলে তিনি চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন চাকরি শেষ করে তিনি চীনে ফিরে আসেন এবং তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেন আলিবাবা ডট কম।
তিনি তার বন্ধুদের কাছ থেকে ৬০ হাজার ডলার ধার নিয়ে আলিবাবা ডট কম নামে একটি বি টু বি প্ল্যাটফর্ম চালু করলেন। চীনের রপ্তানি কারকরা যেখানে তাদের পণ্যের তালিকা দিতে পারবেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন মানুষের রপ্তানিকারকদের সাথে যোগাযোগ করে পণ্য ক্রয় করতে পারবে।

চীনের অর্থনীতিতে তখন বিশাল পরিবর্তন ঘটেছে ইন্টারনেট এবং চীনের মানুষের কাছে ইন্টারনেট বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই সময় বেজিং এর ইউনিভার্সিটি অফ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এন্ড ইকোনমিক্স চায়না রিসার্চ সেন্টার For capital এর ম্যানেজমেন্ট এর পরিচালক অর্থনৈতিক বিদ ফিং চিং পেইং এর ভাষ্যমতে সেসময় চীনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ জোগাড় করা ছিল কষ্টকর তাদেরকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করে চলতে হতো।

আলিবাবা এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়ায় খুবই তাড়াতাড়ি আলিবাবা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ১৯৯৯ সালের সালের অক্টোবর মাসে আলিবাবা গোল্ড ম্যান সিক্স থেকে পাঁচ মিলিয়ন ডলার এবং সফট ব্যাংক থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পান জ্যাক মা প্রতিষ্ঠান নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন।

২০০৫ সালে ইয়াহু আলিবাবা ডট কম এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে ৪০% স্টেজ কিনে নেয় যা আলিবাবা ডট কম এর জন্য বিশাল অর্জন ছিল। চীনের বাজারে তখন alibaba.com এর সঙ্গে ই বি এর হাটাহাটি লড়াই। এই বিনিয়োগের ফলে ইয়াহু ও আলিবাবা ডট কম দুজনেই লাভবান হন। ২০১৩ সালে জ্যাক মা সিইও পথ থেকে সরে দাঁড়ান তবে নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ওই বছরে সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের আলিবাবার প্রাথমিক গণ প্রস্তাবনা ছাড়া হয় যা বাকিটা শুধুই ইতিহাস। আলিবাবার এই ঐতিহাসিক সাফল্যে যুক্তরাষ্ট্রের সিএনজি সাক্ষাৎকারে জ্যাক মা বলেন আজ আমরা মানুষের টাকা নয় তাদের বিশ্বাস অর্জন করেছি। 

জ্যাক মা কর্মচারীর চোখে কেমন: আলিবাবার সাফল্যের পেছনে রয়েছে জ্যাক মার ব্যক্তিত্ব তিনি মেধাবী ও পরিশ্রমী ব্যাক্তিদের পছন্দ করতেন এবং তাদের সাহায্য করতেন তার প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ এবং তার আচরণ অনেক মেধাবীদের কেউ আকৃষ্ট করে। জ্যাক মা আলিবাবার অফিসেও সব সময় হালকা পরিবেশ তৈরি রাখার চেষ্টা করতেন।

আলিবাবা প্রথম লাভের মুখ দেখার পর জ্যাক মা তার সকলকর্মচারীদের সিলি স্ট্রিং এর স্প্রে কেন উপহার দেন। কাজে যেন উৎসাহ আসে এজন্য মা সব সময় তার কর্মচারীদের নিয়ে ব্যায়াম করতেন। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আলিবাবার আইপিও সাফল্যে পরে প্রতিষ্ঠানটি য়াং জু হেড কোয়াটারে এক বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানে আলিবাবার এক কর্মচারী তার প্রিয়সিকে এ অনুষ্ঠানে বিয়ের জন্য প্রপোজ করে।

মা তার কর্মচারীদের বলেন কর্মচারীরা তার অর্জিত সম্পদ মহৎ কাজে ব্যয় করবে এবং মানুষের জীবন বদলে দেবে এমনটি তিনি তাদের কাছে আশা করেন। প্রটার আরেসমেন্ট আলিবাবার প্রথম দিকের একজন কর্মচারী তার লেখা একটি বইয়ে তিনি আলিবাবাতে কর্মরত অবস্থায় আলিবাবার পরিবেশ এবং জ্যাক মার কথা উল্লেখ করেছেন।

এই বইটিতে তিনি জ্যাক মা সম্পর্কে বিভিন্ন উদ্ধৃতি দিয়েছেন তার চোখে জ্যাক মা একজন অত্যন্ত মজার ও নরম মনের মানুষ। এছাড়াও তিনি বলেন তার দুর্বলতা হচ্ছে তিনি অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে তাকে বিভিন্ন ধরনের কঠিন পরিস্থার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।

জ্যাক মার পারিবারিক জীবন: যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে আলিবাবা সাফল্য ও সম্পত্তির পরিমাণ আরো বেড়েছে। বর্তমানে জ্যাক মা চীনের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি কিন্তু তার চলাফেরায় বা দৈনন্দিন চলাফেরায় প্রাচুর্যের জৌলুষ নেই. জ্যাক মার প্রিয় শখ কুংফু বই পড়া,  তাইজি যা এক ধরনের মার্শাল আর চর্চা।

তিনি চীনের জনপ্রিয়র অভিনেতা জেটলির সঙ্গে বিভিন্ন সময় তাইজি প্রমোট করে থাকেন। যেখানে তিনি যান না কেন তার সঙ্গে একজন তাইজি প্রশিক্ষক নিয়ে যান। বর্তমানে বিভিন্ন ধনী ব্যক্তিরা তার পরিবার নিয়ে মিডিয়ার সামনে আসে কিন্তু জ্যাক মা একজন শীর্ষ ধনী ব্যক্তি হয়েও তার পরিবার সম্পর্কে তথ্য নেই এছাড়াও বর্তমানে তার কোন ব্যক্তিগত স্ক্যান্ডাল নেই।  তিনি তার স্ত্রী ও এক ছেলে এবং এক মেয়ে নিয়ে বেশ সুখে আছেন। তার ছেলে বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালোফোর্নিয়ায় পড়াশোনা করছে।

আলিবাবা কি বাংলাদেশে পাওয়া যাবে?

আলিবাবা কি বাংলাদেশে পাওয়া যাবে? এমন প্রশ্ন যদি আপনার মনে থাকে তাহলে চলুন এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর জেনে নেই। আলিবাবা একটি বিশাল ই কমার্স প্রচেষ্টা। বর্তমানে আলিবাবা "দারাজ বাংলাদেশ" কে কিনে নেয়। দারাজ বাংলাদেশ এই ওয়েবসাইটে একটি বিদেশি বা গ্লোবাল ট্যাব রয়েছে যেখান থেকে আপনি বিদেশি যে কোন পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। চীনা বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর ওপরে বিভিন্ন ধরনের ছাড় ক্যাশব্যাক ডেলিভারি ইত্যাদি সুবিধা রয়েছে।

আপনি যদি অল্প পরিমাণে পণ্য আলিবাবা থেকে কিনতে চান তাহলে আপনার ব্যাপক খরচ হবে এবং একটি দুটি পণ্যের জন্য আলিবাবা ডট কম নয় আপনি যদি একটি থেকে দুইটি অথবা তিনটি পণ্য কিনতে চান তাহলে আপনি আলী এক্সপ্রেস ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন।

আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম

আলিবাবা হল চীনের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস যেখান থেকে আপনি বিভিন্ন ধরনের পণ্য যেমন- মোবাইল ল্যাপটপ ক্যামেরা ক্লোজ ও ইলেকট্রিক সামগ্রী ইত্যাদি ক্রয় করতে পারবেন। আজ আমি আপনাদেরকে আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো চলুন জেনে নিই-

আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-১: প্রথমে আপনার ফোনের কিংবা ল্যাপটপের প্লে স্টোর থেকে আলিবাবা ইনস্টল করে নেবেন। আলিবাবা ডট কম ইনস্টল হয়ে আসলে ওপেন করবেন।


আলী বাবা থেকে পণ্য কেনার ধাপ-2: প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল হয়ে করে আলিবাবার মূল ওয়েবসাইটে ঢুকে যাবেন আপনার সামনে এমন একটি ইন্টারফেস আসবে। এরপর My Alibaba এই অপশনে ক্লিক করবেন।

আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-3: এই অপশনে ক্লিক করলে আপনার সামনে এমন একটি ইন্টারফেস আসবে যেখান থেকে আপনাকে Sign in or Register অপশনে ক্লিক করতে হবে। এই অপশনে ক্লিক করার অর্থ আপনি আলিবাবাতে একটি অ্যাকাউন্ট করছেন সেখান থেকে আপনি খুব সহজেই পণ্য কিনতে পারবেন।


আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-4: এরপর আপনার কাছে জানতে চাইবে আপনি গুগল থেকে ইমেইলের মাধ্যমে না ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার অ্যাকাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন। আপনি যদি ইমেইলের মাধ্যমে গুগল থেকে একাউন্ট খুলতে চান তাহলে সেই অপশনে ক্লিক করবেন।


আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-৫: এরপর আপনার সামনে এমন একটি বক্স আসবে যেখান থেকে আপনি Home অপশনেক্লিক করবেন।


আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-6: এবার আপনি যে পণ্যটি কিনতে যাচ্ছেন সে পণ্যটি সার্চ করুন। ধরুন আপনি BOYA Mic কিনতে চাচ্ছেন তাহলে সেটি লিখে সার্চ করবেন এবং পণ্যটি অর্ডার করার জন্য Start Order অপশনে ক্লিক করুন।


আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-7: এরপর আপনি পণ্যটি কয়টা কিনতে চান অর্থাৎ কোয়ান্টিটি কয়টি তা দিবেন যদি আপনি একটি কিনতে চান তাহলে একটি দিবেন এবং দুইটি কিনতে চাইলে দুইটি অর্থাৎ আপনি কতটি কিনতে চান সেখানে সেই সংখ্যা বসাবেন এবং এবং অর্ডারটি চালু করার জন্য পুনরায় Start Order অপশনে ক্লিক করবেন।


আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-8: আপনি পণ্যটি কোন অ্যাড্রেসে নেবেনঅর্থাৎ আপনার এড্রেস আলিবাবা ডট কম জানতে চাইবে এবং আপনার সামনে এমন একটি ইন্টারফেস আসবে যেখানে আপনাকে Add shipping address অপশনে ক্লিক করতে হবে।


আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-9: আপনি যখন Add shipping address অপশনে ক্লিক করবেন তখন আপনার সামনে আপনার ডিটেল চাইবে অর্থাৎ আপনার মোবাইল নম্বর আপনার আপনার গ্রামের নাম, পোস্ট অফিস ইত্যাদি এছাড়াও আপনি কোথায় পণ্যটি ডেলিভারি নিবেন ই তাদের সকল তথ্য দেওয়ার পর Save অপশনে ক্লিক করবেন।


আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-10: সকল তথ্য দেওয়ার পর আপনার কাছে জানতে চাইবে আপনি কিভাবে পণ্যটির দাম দিতে চান অর্থাৎ পেমেন্ট করতে চান এজন্য আপনাকে Proceed to pay অপশনে ক্লিক করতে হবে।

আলিবাবা থেকে পণ্যকে কেনার নিয়ম ধাপ-11: Proceed to pay অপশনে ক্লিক আপনার সামনে বিভিন্ন পেমেন্ট করার মাধ্যম দেখাবে।আপনি অনলাইন যে মাধ্যমে পেমেন্ট করতে চান সে অপশনটি ক্লিক করে ADD A NEW CARD TO PAY অপশনে ক্লিক করবেন।


আলিবাবা থেকে পণ্য কেনার নিয়ম ধাপ-12: এরপর আপনি যে মাধ্যমে পেমেন্ট করবেন সে মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য আপনার কাছে বিভিন্ন তথ্য চাইবে অর্থাৎ আপনার কার নম্বর আপনার প্রথম নাম আপনার শেষ নাম ইত্যাদি আরো বিভিন্ন তথ্য পুরো করার পর আপনি PAY NOW অপশনে ক্লিক করবেন। এই অপশনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার পেমেন্ট সম্পূর্ণ হয়ে যাবে এবং আপনার পণ্যটি ১০ থেকে ১৫ দিনের ভেতরে আপনার দেওয়া এড্রেসে চলে আসবে।

আলিবাবা অনলাইন শপিং বাংলাদেশ

আলিবাবা থেকে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায় বিধায় আমরা বাংলাদেশিরা অনেকে পণ্যগুলা কিনতে চায় কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কিভাবে আলিবাবা অনলাইন শপিং বাংলাদেশ থেকে করব হয়। আলিবাবা একটি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস যেখানে বিভিন্ন ধরনের রপ্তানিকারকরা তাদের পণ্যের তালিকা দেখায় এবং বিভিন্ন দেশের মানুষ সে পণ্যগুলো কেনার জন্য অর্ডার করে থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকেও আমরা খুব সহজেই আলিবাবা থেকে অনলাইনে শপিং করতে পারব। উপরে আমি খুব সহজ এবং কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে জানিয়েছি কিভাবে আলিবাবা থেকে অনলাইনে শপিং করবেন। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে সহজ পদ্ধতি।

লেখকের মন্তব্য

রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাকে বিশ্বের সেরা দশটি অনলাইন ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস এর মধ্যে একটি আলিবাবা থেকে কিভাবে বাংলাদেশ থেকে পণ্য ক্রয় করবেন তার নিয়ম সম্পর্কে সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি উপরোক্ত সম্পন্ন পোস্টে পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে অনলাইনে আলিবাবা থেকে শপিং করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানিয়ে সহায়তা করুন। এমন আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত করুন, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url