প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নেব

আপনি যদি বিদেশে যেতে চান এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব কিংবা বিদেশ থেকে ফেরত এসে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হাউজ লোন নিতে চান এবং এ সম্পর্কে ছাড়াও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নেব
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং সঠিক নিয়মে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ওদের নিয়ে বিদেশে যেতে পারবেন।

ভূমিকা

বর্তমানে বিদেশে বৈধভাবে সরকার বিভিন্ন অনেক লোক প্রেরণ করছেন। তবে অনেকে এমন রয়েছেন যারা অর্থের অভাবে বিদেশে কর্মের জন্য যেতে পারছেন না। এর জন্যই বাংলাদেশ সরকার কর্তৃত্ব প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ২০১০ সালে গঠিত হয়।
এর জন্য আজ আমি আপনাদের মাঝে যে সকল মানুষ কর্ম কিংবা শিক্ষা কিংবা ব্যবসার জন্য বিদেশে যেতে চান এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে কিভাবে লোন নিবেন লোন নিতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন, কত মেয়াদে এবং কি পরিমান সুদে ঋণ নেবেন এ সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

এছাড়াও বিদেশে বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও যে মাধ্যম হতে আপনি বিদেশ ভ্রমণ করেছেন তার দ্বারা বিভিন্ন লাঞ্ছনার কারণে দেশে ফেরত এসেছেন তারা কিভাবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কর্মসংস্থান গঠন করবেন, পরিবারের জন্য বাড়ির নির্মাণ করবেন ইত্যাদি বিষয়ে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি করলে অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

প্রবাসীদের বিশেষ করে আর্থিক সুবিধার্থে বাংলাদেশ সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত করে।আমরা অনেক প্রবাসী রয়েছি যারা জানিনা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? প্রবাসী ব্যাংক ২০১০ সালে গঠিত হয়েছিল ১ মিলিয়ন টাকা দিয়ে যার ৯৫ ভাগ টাকা ছিল প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড থেকে এবং বাকি ৫% এসেছিল সরকার হতে।

এটি একটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক যা মূলত প্রবাসীদের আর্থিক সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 2011 সালের 20 এপ্রিল ঢাকার কলম্ব প্রসেসের চতুর্থ সম্মেলনে ব্যাংকটি উদ্বোধন করেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কোথায় আছে

যারা প্রবাসী রয়েছেন তাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কোথায় আছে তা জানা অত্যন্ত জরুরী কারণ এ ব্যাংক মূলত প্রবাসীদের আর্থিক সুবিধা প্রদানের জন্য গঠন করা হয়। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শাখা মূলত সকল জেলায় রয়েছে তবে আপনার যদি এ সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকে তাহলে তাদের ওয়েবসাইট www.pkb.gov.bd ও ইমেইল info@pkb.gov.bd প্রবেশ করে তাদের শাখা কোথায় কোথায় রয়েছে এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে পারেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হেল্পলাইন

আপনি যদি একজন প্রবাসী হন এবং বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার জানার দরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হেল্পলাইন নম্বর, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রধান কার্যালয়। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ৭১-৭২ ইস্কাটন গার্ডেন রোড, ইস্কাটন, ঢাকা -১০০০।

প্রবাসী করলেন ব্যাংকের সাহায্যে যোগাযোগ করার জন্য আপনি তাদের ওয়েবসাইট-www.pkb.gov.bd এবং ইমেইল এড্রেস- info@pkb.gov.bd এছাড়াও তাদের প্রধান কার্যালয়ের হেল্প ডেক্স নম্বর- + ৮৮-০২-৪৮-৩২২-৮৭৩। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এর সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে আপনি আপনার আর্থিক সমস্যা কিংবা যেকোনো ধরনের সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসী কিংবা বিদেশ ফেরত অথবা বিদেশ যাওয়া ইত্যাদি ব্যাক্তিদের ঋণ প্রদান করে থাকে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ রয়েছে অর্থাৎ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের তিন ধরনের লোন প্রদান করে থাকে-

  • অভিবাসন ঋণ।
  • পুনর্বাসন ঋণ।
  • বঙ্গবন্ধু অভিবাসন বৃহত্তর পরিবার ঋণ।
অভিবাসন ঋণ: প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক মূলত বৈধভাবে কোন ব্যক্তি বিদেশে যেতে চাইলে বিভিন্ন কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট জমার মাধ্যমে এই ঋণ প্রদান করে থাকেন। এই ঋণের পরিমাণ এক লক্ষ থেকে তিন লক্ষ পরিমাণে হয়ে থাকে।

পুনর্বাসন ঋণ: আপনি যদি বৈধভাবে বিদেশ ভ্রমণ করে থাকেন এবং বিভিন্ন হয়রানি যেমন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক অথবা নিয়োগ দাতা কর্তৃপক্ষ হতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে দেশে ফেরত আসেন তাহলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক আপনার বিভিন্ন ডকুমেন্ট ও তথ্যাবলী যাচাই-বাছার মাধ্যমে আপনাকে পুনর্বাসন ঋণ প্রদান করবে।

আপনি যদি স্বাবলম্বী ও কর্মসংস্থার সৃষ্টির ইচ্ছা পোষণ করেন তাহলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক আপনাকে সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ 50 লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করবে তবে আপনার যদি কোন প্রকার জামিনদার না থাকে তাহলে আপনাকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করবে।

বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহত্তর পরিবার ঋণ: আপনি যদি বৈধভাবে বিদেশে চাকরি কিংবা ব্যবসার জন্য ভ্রমণ করে থাকেন তাহলে আপনার পরিবারের যে কোন সদস্য যেমন মা বাবা ভাই বোন কোন দাদা দাদী স্ত্রী সন্তান ইত্যাদি আত্মীয়-স্বজন বঙ্গবন্ধুর বৃহত্তর পরিবার ঋণ গ্রহণ করতে পারবে।

উনার পরিবারের যে কোন সদস্যকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করতে পারবে তবে জামিনদার সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকার লোন নিতে পারবে। তবে পাঁচ লক্ষের বেশি যদি ঋণ গ্রহণ করতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে ঋণ সমমূল্য সম্পত্তির রেজিস্ট্রি মর্টগেজ ব্যাংকের কাছে জমা রাখতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন

প্রবাসী ব্যাংক প্রবাসীদের সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষায় বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে যেমন- শিক্ষা ঋণ, ব্যবসার ঋণ, শনির্ধারণ ঋণ, মেডিকেল ঋণ, প্রাদেশিক উন্নয়ন ঋণ, বাড়ি উন্নয়ন কিংবা বাড়ি নির্মাণ ঋণ ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে।
খুব সহজ আবেদন পদ্ধতি ও কম সুদে প্রবাসীরা যেন তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে এই লক্ষ্যেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কাজ করে থাকে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সকল জেলায় রয়েছে আপনি আপনার নিকটস্থ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অফিসে গিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন ফরমটি সরাসরি নিতে পারেন ব্যাংকে থাকা অফিসারদের সাথে আপনার লোন বিষয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলতে পারেন।

তবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইনে পূরণ করার কোন পদ্ধতি নেই এটি আপনি সংগ্রহ করে নিজে কিংবা তাদের অফিসে কর্মরত কর্মচারীদের সহায়তা নিয়ে পূরণ করতে পারেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন আবেদন ফরম

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন আবেদন ফরমটি আপনি তাদের ওয়েবসাইট http://www.pkb.gov.bd/কিংবা “probashi kallyan bank loan form” হতে সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও আপনার নিকটস্থ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে সরাসরি অফিসে গিয়ে ফরমটি সংগ্রহ করতে পারবেন।

ফর্মটিতে আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করবেন যেমন আপনার আর্থিক অবস্থা, আপনার পাসপোর্ট এর ফটোকপি, এন আইডি কার্ডের কপি, ভিসা প্রমান পত্র ইত্যাদি এছাড়াও আপনার আর্থিক অবস্থার প্রমাণপত্র হিসেবে আপনার যে কোন ব্যাংকের স্টেটমেন্ট, পেমেন্ট স্লিপ, ট্যাক্স রিটার্ন সার্টিফিকেট, গ্যারান্টি তথ্য ইত্যাদি কাগজপত্র সংগ্রহ করুন। সকল কাগজপত্র এবং তথ্যগুলো একত্রে সংগ্রহ করে আবেদন ফরম এর সাথে যুক্ত করে ব্যাংকে জমা দিন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে?

যারা প্রবাসী রয়েছে তারা আর্থিকভাবে সুবিধা পেতে কিংবা বিদেশে যেতে কিংবা বিদেশ থেকে আসার পর নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন তারা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। কারণ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের সকল সুবিধা এবং তাদের চিন্তাভাবনা করেই বাংলাদেশ সরকার তৈরি করেছেন।

তবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের লোন নেওয়ার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই কিছু তথ্য জানা দরকার যার ভেতরে অন্যতম হচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে? আপনার যদি এ বিষয়ে কোনো ধারণা না থাকে তাহলে সম্পন্ন। চলুন জেনে নেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে-

  • লোন আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি ছবি।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র/এন আই ডি একটি ফটোকপি।
  • আপনার বর্তমান এবং স্থানীয় ঠিকানার এছাড়াও আপনার পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের এক কপি
  • লোন আবেদনকারীর পাসপোর্ট, ভিসা, ম্যানপাওয়ার স্মার্ট কার্ড ও লেবার কন্ট্রোল প্রেসার যদি থাকে ইত্যাদি সকল ডকুমেন্টের এক কপি ফটোকপি।
  • যে কোন ব্যাংকের স্টেটমেন্ট, পেমেন্ট স্লিপ, ট্যাক্স রিটার্ন সার্টিফিকেট ইত্যাদি ব্যক্তিগত আয়কর সংক্রান্ত প্রমাণ জমা দিতে হবে।
  • আপনি যদি কোন ব্যাংক কিংবা এনজিও অথবা প্রতিষ্ঠান হতে পূর্বে কোন প্রকার লোন বা ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেই লোন সংক্রান্ত সকল ডকুমেন্ট ও প্রমাণ জমা দিতে হবে।
  • আপনি যদি পুনর্বাসন লো নিতে চান তাহলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে আপনি যে প্রকল্প উন্নয়ন করতে চান তার সকল তথ্যসহ দুই বছরের আয়কর ও ব্যয় বিবরণের প্রয়োজন হবে।
  • বিদেশ হতে প্রত্যাগমন সংক্রান্ত ডকুমেন্ট ও তথ্যবলির প্রয়োজন হবে।
  • ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনি যে প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ব্যবসা করছেন সেই স্থানের ভাড়া, লিগেল চুক্তি পত্র জমা দিতে হবে।
  • আপনি যদি কোন স্থান হতে ব্যবসার জন্য কোন প্রকার প্রশিক্ষণ করে থাকেন তাহলে সে স্থান হতে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
  • লোন আবেদনকারীর গ্যারেন্টার হিসেবে দুই জন জামিনদারের প্রয়োজন সেই জামিনদারের পাসপোর্ট, ছবি, এনআইডির পরিচয় পত্র, স্থানীয় ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা এবং পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেট ইত্যাদি সকল ডকুমেন্টের এক কপি করে ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
  • লোন আবেদনকারীর জামিনদারের দুইজনের যেকোনো একজনের যেকোনো ব্যাংকের তিনটি চেক পাতা এবং অবশ্যই স্বাক্ষরকৃত।
  • আবেদনকারী কে অবশ্যই লোন গ্রহণের পূর্বে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের যেকোনো শাখায় হিসাব খুলতে হবে অর্থাৎ একাউন্ট খুলতে হবে।
  • ঋণের পরিমাণ অবশ্যই নির্ধারণ করতে হবে আপনার যদি নতুন ভিসা হয় তাহলে আপনাকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে ঋণ প্রদান করবে এবং আপনার ভিসাটি রি এন্ট্রি ভিসা হয় তাহলে আপনাকে সার্বিক দুই লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করবে।
  • আপনাকে অবশ্যই ঋণের মেয়াদ নির্ধারণ করে নিতে হবে। আপনার যদি নতুন ভিসা হয় তাহলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ তিন বছর এবং রিএন্টি ভিসার ক্ষেত্রে আপনাকে সর্বোচ্চ দুই বছর মেয়াদী ঋণ পরিশোধের জন্য সময় নির্ধারণ করে দেবে।
  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে লোন এর ক্ষেত্রে লোন পরিশোধ মাসিক কিস্তিতে হয়। আপনার ঋণ গ্রহণের ২ মাস গ্রেস পিরিয়ড ব্যতীত মাসিক কিস্তিতে আপনাকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ক্ষেত্র বিশেষে ১ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করে থাকে। তবে এর জন্য বিভিন্ন ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন হয়।

এছাড়াও আপনাকে সব সময় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সঙ্গে সুলভ সম্পর্ক ও লেনদেন করতে থাকতে হবে। এটি একটি সময় সাপেক্ষ অর্থাৎ অনেক সময় ধরে আপনাকে ব্যাংকের সাথে লেনদেন ভালো রাখলে হবে তাহলে আপনি এই পরিমাণ অর্থ ঋণ পাবেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বিভিন্ন কারনে বিদেশে যাওয়া যেমন শিক্ষা চাকুরী ব্যবসা এবং বিদেশ থেকে ফিরে এসে নিজে কর্মসংস্থান বা পুনর্বাসন করা কিংবা বাড়ি নির্মাণ ইত্যাদি সকল সুবিধা দিয়ে থাকে প্রবাসীদের জন্য।

আমাদের অনেকেরই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব বা নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে যায় না। আজ আমি আপনাদেরকে খুব সহজ কিন্তু ধাপ অবলম্বনের মাধ্যমে সহজে অবশ্যই কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানাবো-

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে আপনাকে লোন নিতে হলে প্রথমে আপনার নিকটস্থ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখায় গিয়ে লোন নেওয়ার আবেদন এপ্লিকেশন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে এবং সে ফর্মটি সকল সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে এবং বিভিন্ন ডকুমেন্ট এর সাথে জমা দিতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে লোন নেওয়ার পৃষ্ঠা নম্বর -১: প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের লোন নেওয়ার ফর্ম এর প্রথম পৃষ্ঠায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লেখার নিচে যে ঘর ফাঁকা রয়েছে সেখানে আপনার নিকটস্থ যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শাখা হতে লোন নেবেন তার ঠিকানা দিতে হবে।

বিষয়কের লাইনে আপনাকে লিখতে হবে আপনি কত ঋণ নিবেন ধরুন আপনি ২ লক্ষ টাকা ঋণ নেবেন। এর পরের ঘরে তারিখ লিখতে হবে অর্থাৎ আপনি যে তারিখে ফর্মটি ঋণ নেওয়ার জন্য ব্যাংকের নিকট জমা দিবেন সেই তারিখ উল্লেখ করবেন।
এরপর আপনি যে প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত আছেন সেটি উল্লেখ করবেন এবং তার পরের ঘরে আপনি মাসে কত টাকা কিস্তি দিতে পারবেন সেটা লিখবেন।

  • নম্বর ঘরে আপনাকে আপনার নিজের নাম বাংলা এবং নিচের ঘরে ইংলিশে লিখতে হবে।
  •  নম্বর ঘরে আপনার পিতার নাম মেয়ে ব্যক্তি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বামীর নাম বাংলাতে এবং নিচের ঘরে ইংলিশে লিখতে হবে।
  • নম্বর ঘরে আপনার মায়ের নাম বাংলা ও নিজের ঘরে ইংলিশে লিখতে হবে।
  • নম্বর ঘরে আপনার জন্ম তারিখ।
  • ঙ ও চ নম্বর ঘরে আপনার বর্তমান ঠিকানা অর্থাৎ আপনি যেখানে বর্তমানে বসবাস করছেন এবং আপনার স্থানীয় ঠিকানা। আপনার যদি বর্তমান ও স্থানীয় ঠিকানা একই হয় তাহলে সময় বর্তমান ঠিকানা প্রদান করবেন।
  • নম্বর ঘরে আপনি যে জেলায় বসবাস করছেন সে জেলার নাম উল্লেখ করবেন।
  • মুরগির জ নম্বর ঘরেআপনার জাতীয়তা অর্থাৎ আপনি বাংলাদেশী এমন লিখবেন।
  • নম্বর ঘরে আপনার ধর্ম যেটা সেটা লিখবেন।
  • নম্বর ঘরে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে সেটা প্রদান করবেন আর যদি না থাকে তাহলে নাই লিখবেন।
  • নম্বর ঘরে আপনার পাসপোর্ট এর নম্বর প্রদান করবেন।
  • নম্বর ঘরে আপনার সচল ফোন নম্বরটি প্রদান করবেন।
  • নম্বর ঘরে আপনার ভোটার আইডি নাম্বারটি প্রদান করবেন।
  • নম্বর ঘরে বি এম ই টি রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবি এম ই টি নম্বরটি আপনার পাসপোর্ট নিয়ে তৈরি করে দিয়েছেন তার কাছে পাবেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে লোন নেওয়ার পৃষ্ঠা নম্বর -২: প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে আপনি যদি ঋণের জন্য আবেদন করেন তাহলে আপনার দুইজন জামিনদারের প্রয়োজন হবে নিচের ফর্মটি উনার জামিনদারের তথ্যাবলী প্রদানের জন্য দেওয়া হয়েছে।

এক নম্বর ফর্মটিতে আপনার প্রথম জামিনদার এর তথ্যগুলি প্রদান করবেন বাংলা ও ইংলিশে এবং দুই নম্বর ফর্মটিতে আপনার দ্বিতীয় জামিনদারের সকল তথ্য প্রদান করবেন। এবং নিচে এক থেকে ছয় নম্বর পর্যন্ত যে তথ্য গুলির কথা নির্দেশ করা হয়েছে সেগুলো অবশ্যই জামিনদারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে রাখবেন।


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে লোন নেওয়ার পৃষ্ঠা নম্বর -৩: নিম্নে যে ফর্মটি দেওয়া হয়েছে সেটি হলো আপনি বিদেশে কিসের জন্য বাকি কাজে যাবেন এমন বিষয়ক তথ্যাবলী। ৭ নম্বর বলা হয়েছে আপনি যদি বিদেশ যান তাহলে যে কাজে বিদেশ যাবেন তার ঠিকানা প্রদান করুন।

৮ নম্বরে বলা হয়েছে আপনার ভিসা টি সঠিক কিনা এর জন্য প্রমাণ হিসেবে BMIT বা BOESL দিতে হবে। আট নম্বরে বলা হয়েছে আপনি যেদিন নেবেন তা কিভাবে পরিশোধ করবেন তার একটি বর্ণনা প্রদান করুন এবং ৯ নম্বরে বলা হয়েছে আপনি যদি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ থাকেন তাহলে তার সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার জন্য।


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে লোন নেওয়ার পৃষ্ঠা নম্বর -৪: আপনার উপরুক্ত সকল তথ্য প্রদান শেষ হলে আপনি যখন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিকট ফর্ম গুলো জমা দিতে যাবেন তখন নিচের ফর্মটি তারাই পূরণ করে দেবে।

আপনি যদি একজন প্রবাসী হন এবং বিভিন্ন হয়রানির কারণে বিদেশ হতে দেশে ফিরে আসেন এবং কর্মসংস্থানের জন্য অর্থের তাগিদে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে লোন নিতে চান তাহলে আপনি কিভাবে এই পুনর্বাসন ঋণ নেবেন এর ফর্মটি নিম্নে দেয়া হলো-

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে পুনর্বাসন ঋণ আবেদন ফরম পৃষ্ঠা নম্বর-১


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে পুনর্বাসন ঋণ আবেদন ফরম পৃষ্ঠা নম্বর-২


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে পুনর্বাসন ঋণ আবেদন ফরম পৃষ্ঠা নম্বর-৩


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে পুনর্বাসন ঋণ আবেদন ফরম পৃষ্ঠা নম্বর-৪


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে পুনর্বাসন ঋণ আবেদন ফরম পৃষ্ঠা নম্বর-৫


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে পুনর্বাসন ঋণ আবেদন ফরম পৃষ্ঠা নম্বর-৬

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সুবিধা

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদান করে থাকে যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সুবিধা যার ভিতর রয়েছে -
  • প্রবাসে চাকরি কিংবা বিভিন্ন কারণে বৈধভাবে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা।
  • বিদেশ ভ্রমণকারীর ব্যক্তির দেশে থাকা পরিবারের আর্থিক সুবিধা প্রদানের জন্য তাদের আত্মীয়-স্বজনের লোন দেওয়ার সুবিধা।
  • বিদেশ ফেরত কর্মসংস্থান বা স্বাচ্ছন্নতার জন্য ঋণ প্রদান।
  • প্রবাসী ব্যক্তি ঘর নির্মাণের উদ্দেশ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হাউজ লোন

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কোন প্রবাসী যদি বিভিন্ন কারণে যেমন রাজনীতি, সামাজিক কিংবা নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষ হতে বিভিন্ন প্রকার হয়রানির কারণে দেশে ফিরে আসলে তাকে পরিবারের পুনর্বাসন কিংবা সচ্ছল হওয়ার ঋণ প্রদান করে থাকে।

এছাড়া প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হাউজ লোন প্রবাসীদের দিয়ে থাকে। প্রবাস ফেরত এই ব্যক্তি হাউজিং লোন দিয়ে তার কর্মসংস্থান ও তৈরি করতে পারবে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ জামানত সহকারে কোন প্রবাস ফেরত ব্যাক্তিকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা দশ বছর মেয়াদে ৯% সুদে প্রদান করে থাকে বিনা জামানতে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রদান করে থাকে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে সুদের হার কত?

যেকোনো ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই জানা দরকার সুদের হার কত। আপনি যদি একজন প্রবাসী হন এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে ঋণ নিতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে সুদের হার কত? চলুন তা জেনে নি -
                                                                  

লোনের প্রকার

সুদের হার

লোনের সময়

লোনের পরিমাণ

অভিবাসন  ঋণ

  ৯%

দুই বছর

১ থেকে ৩ লক্ষ টাকা

  পূর্ণবাসন    ঋণ

১০ বছর

সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা

বঙ্গবন্ধু অভিবাসী   বৃহৎ পরিবার  ঋণ

১০ বছর

সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা

লেখক এর মন্তব্য

রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আশা করি উপরের সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন গ্রহণ করবেন ঋণ নেওয়ার জন্য কি কি তথ্য গুলি জানা দরকার ইত্যাদি সম্পর্কে জানিয়ে সহায়তা করবে। এমন আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url