ডেঙ্গু জ্বর হলে কি গোসল করা যাবে
আসসালামু আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় ডেঙ্গু জ্বর হলে কি গোসল করা যাবে,
ডেঙ্গু
মশা কামড়ানোর কত
দিন পর জ্বর হয়? ইত্যাদি আরো ডেঙ্গু জ্বর ও এডিস ইজিপ্টি
মশা অর্থাৎ ডেঙ্গু
জ্বরের ভাইরাস বহনকারী ডেঙ্গু মশা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে ডেঙ্গু জ্বর ও ডেঙ্গু মশার সম্পর্কে আপনার যত
প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক উত্তর ও সমাধান পাবেন এবং ডেঙ্গু জ্বর
হওয়া থেকে পূর্ব সতর্ক হতে পারবেন।
ভূমিকা:
ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস বহনকারী মশার নাম এডিস ইজিপ্টি
মশা তবে আমরা
অনেকেই ডেঙ্গু
মশা বলেই চিনে
থাকি। বর্ষাম মৌসুমী এই মশা বেশি বিস্তার করে। কারণ ডেঙ্গু মশা স্বচ্ছ পানি বেশ
পছন্দ করে এবং সেখানে বংশবিস্তার করে। এর জন্য প্লাস্টিকের বোতল, টায়ার, নারকেল,
ভাঙা পাত্র ইত্যাদি স্থানে জমে থাকা পানি থেকেই এই প্রাণঘাতী মশার বংশবিস্তার
ঘটে।
আরো পড়ুনঃ মশা তাড়ানোর উপায় কি-মশা মারার স্প্রে নাম
বাংলাদেশের ডেঙ্গু মশার প্রকোপ অনেক বেশি এজন্য এর জন্য আমাদের অনেকের মনে ডেঙ্গু
জ্বর এবং ডেঙ্গু
মশা সম্পর্কে
বিভিন্ন প্রশ্ন জানার কৌতূহল লেগে থাকে। সে সকল কিছু প্রশ্নের উত্তর আজ আমি
দেওয়ার জন্য নিম্নে পোস্টটি লিখেছি।
যেমন- ডেঙ্গু জ্বর হলে কি গোসল করা যাবে, ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণ গুলো কি বেগু
মশা চেনার উপায় ডেঙ্গু জ্বর কিছু আছে রোগ হলে কি খাবার খাবেন আর কি খাবার খাবেন
না ইত্যাদি আরো ডেঙ্গু জ্বর ও ডেঙ্গু
মশা নিয়ে নিম্নে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
ডেঙ্গু জ্বর হলে কি গোসল করা যাবে
বর্তমানে বাংলাদেশের ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোভ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে যার জন্য অনেকেই
বেশ সচেতন হয়েছে এবং যার ফলে মানুষের ভেতরে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন
জাগ্রত হচ্ছে যার মধ্যে একটি হল ডেঙ্গু জ্বর হলে কি গোসল করা যাবে কিনা। একজন
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্যেই জানা অত্যন্ত জরুরী যে ডেঙ্গু হলে গোসল করা যাবে
কিনা চলুন জেনে নেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর-
ডেঙ্গু জ্বর হলে গোসল করানো যাবে কিনা তা মূলত রোগের পরিস্থিতির বাজারে
তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। তবে এ বিষয় নিয়ে বেশ মতভেদ রয়েছে। কিছু ডক্টরদের
মতে ডেঙ্গু জ্বর হলে অবশ্যই গোসল করাতে হবে কারণ জ্বর হলো শরীরের তাপমাত্রা যা
গোসলের মাধ্যমে কমানো সম্ভব।
আবার অনেকের মতে জ্বর হলে যেহেতু শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যায় ফলে গোসলের
করলে শরীর আরো বেশি দুর্বল অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ডেঙ্গু জ্বরের
শরীরে তাপমাত্রা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে না হয় তাহলে নিম্ন পদ্ধতি আপনি ব্যবহার
করতে পারেন-
জলপট্টি: জলপট্টি অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা অর্থাৎ জ্বর কমানোর জন্য আমরা
অনেকেই আছি যারা নরম কাপড় পানিতে ভিজিয়ে হালকা চিপে কপালে বারে বারে ব্যবহার
করে থাকে। এতে কিছুটা হলেও শরীরে তাপমাত্রা কমে আসে।
সমস্ত শরীর নরম কাপড় দিয়ে মোছা: জ্বর হলে আমরা অনেকেই আছি যারা গোসল
করতে চাই না এজন্য একটি নরম কাপড় অথবা গামছা পানিতে ভিজিয়ে সমস্ত শরীর বুঝতে
পারেন। এতে শরীরে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং শরীর, মন পেশী শিথিল ও
শরীরের ব্যথা কমে হয়।
গরম পানি দিয়ে গোসল করা: জ্বর হলে আমাদের শরীরে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হয়
ফলে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা বেশি কষ্ট হয় এর জন্য ডেঙ্গু জ্বরে শরীরে
তাপমাত্রা কমানোর জন্য বা শরীর ভালো রাখতে কুসুম গরম ব্যবহার করে গোসল করতে পারেন
এতে শরীরে ঠান্ডা অনুভূত হবে না এবং শরীরের তাপমাত্রা ও কিছুটা হলেও কমবে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সর্তকতা: ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় আপনি যদি গোসল করেন
তাহলে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অর্থাৎ কারো ব্যবহৃত গামছা, সাবান ব্যবহার না
করা এবং অবশ্যই কাউকে সাথে রেখে গোসল করবেন কারণ ডেঙ্গু জ্বরে মাথা ঘুরে এছাড়াও
গোসলের পানি অবশ্যই একটি পাত্রে রেখে গোসল করবেন এবং বসে গোসল করার করবেন।
মাথায় পানি ঢালা: জ্বর হলে আপনি প্রাথমিক অবস্থায় শরীরে তাপমাত্রা
কমানোর জন্য মাথায় পানি ঢালতে পারেন। এতে আপনার কিছুটা হলেও শরীরের তাপমাত্রা
কমে আসবে এবং স্বস্তি অনুভূতি হবে। তবে পানি যেনঅতিরিক্ত ঠান্ডা না থাকে অর্থাৎ
বরফ পানি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
তবে আপনার যদি ডেঙ্গু জ্বর হয় তাহলে অবশ্যই বাড়িতে বসে থাকবেন না দ্রুত
চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে গোসল করবেন। কারণ সকলের
শরীর একরকম নয় কারো ডেঙ্গু জ্বরের গোসল করলে শরীর ভালো হয় কারো আবার ক্ষতি হতে
পারে এর জন্য অবশ্যই গোসল করার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে গোসল করবেন কারণ
ডেঙ্গু জ্বর অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়।
ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হতে কত সময় লাগে?
এডিস এজিপ্টি মশা ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস বহনকারী এই মশাটি কামড়ানোর চার থেকে সাত
দিনের ভেতরেই বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শরীরে
তাপমাত্রায় বেড়ে যাওয়া, শরীর প্রচন্ড ব্যথা হওয়া, সর্দি-কাশি, মাথাব্যথা,
হাড়ের জোড়ায় ব্যথা, মাংস পেশি অতিরিক্ত ব্যথা, বমি, চোখ ব্যথা ও শরীরের
বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি ওঠা ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা
দেয়।
আপনি যদি প্রথম দিকে লক্ষণগুলো উপলব্ধি করে অল্পতে ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে ঔষধ
খেয়ে থাকেন তাহলে খুব অল্প সময়ের ভেতরে ডেঙ্গু জ্বর এর ভাইরাস থেকে নিস্তার
পাবেন। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন থেকে যায় ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হতে কত সময় লাগে?
প্রাথমিক অবস্থায় সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে ডেঙ্গু রোগীর দুই সপ্তাহের মধ্যে
সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়।
তবে এটি যেহেতু এটি ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী রোগ এর জন্য সামান্য অবহেলা ও চিকিৎসা
গ্রহণের দেরি করলে মৃত্যুর ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত
বেশিভাগ রোগী মারা যায় মূলত দেরিতে চিকিৎসকের কাছে আসার কারণে। ডেঙ্গুর লক্ষণ
শরীরে দেখার এক থেকে দুই দিনের ভেতরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং সঠিক
পরামর্শ নিয়ে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত দিন পর জ্বর হয়?
ডেঙ্গু জ্বর বর্তমানে এক ভয়াবহ রোগের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এডিস এজিপ্টি ডেঙ্গু
জ্বরের জীবাণু বহনকারী
মশা। তবে বাংলাদেশ
এটি ডেঙ্গু মশা নামে মানুষ বেশি চিনে থাকে। এই মশা কামড়ানোর সাথে সাথেই জ্বর বা
ডেঙ্গু জ্বরের কোন প্রকার লক্ষণ দেখা যায় না। আপনাদের হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন
ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত দিন পর জ্বর হয়? চলুন জেনে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর-
ডেঙ্গু মশা কামড়ানো থেকে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া সময়কালকে ইনকিউবেশন
পিরিয়ড বলা হয়। এই সময়কাল ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত হতে পারে। রাজশাহী মেডিকেল
কলেজের একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডক্টর সাবেনা গুলনাহার তিনি একজন ভাইরোলজি
বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুনঃ
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ইঁদুর তাড়ানোর উপায়
এ ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যেই ডেঙ্গু মশা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের জ্বর সহ আরো
বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। চার ধরনের সিরোটাইপ ডেঙ্গু জ্বরের
ভাইরাস ধরুন পাওয়া গিয়েছে অর্থাৎ চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসে মানুষ আক্রান্ত হয়।
যথা:
- ডেন -১
- ডেন- ২
- ডেন- ৩
- ডেন- ৪
কোন ব্যক্তি যখন প্রথমবার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় তখন অনেকেই তা বুঝতে পারেনা
কারণ এর লক্ষণ খুবই সামান্য যেমন- শরীরে সামান্য ব্যথা, জ্বর ও হালকা সর্দি কাশি।
এ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি পাঁচ থেকে সাত দিনের ভিতরে সুস্থ হয়ে যায় এবং
এবং সে ব্যক্তির শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। পুনরায় যখন সেই ব্যক্তি ডেঙ্গু
জ্বরে আক্রান্ত হয় তখন এন্টিবডি ও নতুন ভাইরাসের এন্টিজেনের রিএকশন সৃষ্টি হয়।
ফলে শরীরে প্লাটি লেট বায় হেমোরেস কমে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি
হয়। দ্বিতীয়বার আক্রান্ত ব্যক্তি শরীরে প্রচুর পরিমাণে জ্বর হয় এবং তা হঠাৎ
করে আবার কমেও যায় এটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপদের সংকেত। কারণ জ্বর অতিরিক্ত হওয়া
এবং হঠাৎ করে কমে যাওয়ার কারণ হলো শরীরে প্লাটিলেট এর মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে
কমে যাওয়া এবং রক্তপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া।
এমন অবস্থায় কোনোভাবেই হাঁটাচলা কিংবা কোন প্রকার পরিশ্রম জনিত কাজ করা যাবে না।
এমন অবস্থায় অবশ্যই সকল প্রকার পরিশ্রম বা কর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে এবং
সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরেরর লক্ষণ প্রকাশের সাথে সাথে চিকিৎসা
করলে এটি ৫ থেকে ৭ দিনেরর ভেতরে জ্বর কমে যায় এবং দুই সপ্তাহের ভেতরে আক্রান্ত
ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যায়। তবে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা চাইতে পূর্ব সতর্ক থাকা অনেক
ভালো।
আমরা আশা করি জানি বর্ষার সময় অর্থাৎ শীতের শেষে
মশার আবির্ভাব বা
প্রকোপ বেশি হয়। আমরা যদি যেখানে সেখানে জমে থাকা পানি, আবর্জনা, জঙ্গল, আগাছা
ইত্যাদি পূর্বে কেটে ফেলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখি এবং ঘুমানোর পূর্বে মশারি
ব্যবহার করে ঘুমায় তাহলে এই মরণব্যাধি এবং অসহ্য যন্ত্রণা ব্যথা থেকে খুব সহজেই
নিস্তার পাওয়া সম্ভব। কারণ
মশা ময়লা আবর্জনা
স্থানে বংশবস্থার করে।
ডেঙ্গু মশা কখন কখন কামরায়?
আমরা হয়তো অনেকেই মনে করি ডেঙ্গু
মশা রাতের বেলা
বেশি কামড়ায় তবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল তাহলে আপনাদের মনে হয়তো এমন প্রশ্ন
জাগতে পারে ডেঙ্গু মশা কখন কখন কামরায়? বর্তমানে একটি গবেষণায় থেকে জানা
গিয়েছে ডেঙ্গু
মশা বা এডিস
এজিপ্টি ডেঙ্গু জ্বর বহনকারী
মশা দিন কিংবা রাত
যেকোনো সময় কামড়ায়।
তবে ডেঙ্গু মশা আলো
বেশি পছন্দ করে এর জন্য বেশিরভাগ সময় দিনে ভোরবেলা এবং সূর্যাস্তের সময়টা বেশি
কামড়ায় তবে রাত্রে ঘর আলোকিত থাকলেও এটি কামড়ায় অর্থাৎ ডেঙ্গু মশা আলোকিত
সময় গুলোতে বেশি সক্রিয় থাকে তবে অন্ধকারে এটি কম শুক্র তেমনটা নয়। এই মশা
সবসময়ই প্রায় সক্রিয় অবস্থায় থাকে।
ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে
ডেঙ্গু জ্বর যেহেতু একটি মরণব্যাধি ও ভয়াবহ রোগ এর জন্য এই সম্পর্কে বেশ সচেতন ও
সতর্ক হওয়া অত্যন্ত জরুরী। অনেক সময় বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বর মহামারীর রূপ ধারণ
করে। এরজন্য কোন ব্যক্তির ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে বা কি করতে হবে না এবং
বিশেষ করে কি খেতে হবে আর খেতে হবে না তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা অত্যন্ত জরুরী।
কারণ ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় কোন খাবার খেলে আমাদের শরীরে দ্রুত সুস্থ ও সফল হয়ে
উঠবে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে তা জানা বিশেষভাবে জরুরী। তবে
ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় সর্বপ্রথম লক্ষণ দেখার সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন
এবং আপনার শরীর এবং শরীরের অবস্থা বুঝে ডক্টর আপনাকে যে সকল খাবার খেতে বলবে সে
সকল খাবার বিশেষ করে খাবেন।
তবে আজ আমি আপনাদের মাঝে সাধারণভাবে ডক্টররা ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় যে সকল খাবার
খেতে বলেন বেশি করে সে সকল খাবারের নাম নিম্নে তুলে ধরলাম-
ডাবের পানি: ডেঙ্গু জ্বরে আমাদের শরীরে সবচেয়ে বেশি ঘাটতে দেখা দেয় তরল
পদার্থের। এজন্য আমাদের সর্বপ্রথম শরীরে তরল পদার্থের ঘাটতি মেটাতে হবে যার জন্য
আপনি ডাবের পানি পান করতে পারেন। আমাদের শরীরে ইলেকট্রোলাইটের প্রচুর ঘাটতি দেখা
দেয় যা ডাবের পানিতে রয়েছে। এজন্য ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় ডাবের পানি খেলে বেশ
উপকার পাবেন।
কিউইফল: রক্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, শরীরে ইলেকট্রোলাইটের স্তর বৃদ্ধি,
পটাশিয়াম, লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বৃদ্ধি এবং ভিটামিনের ঘাটতি ডেঙ্গু আক্রান্ত
ব্যক্তির শরীরে মেটাতে চাইলে কিউইফল খাওয়াতে পারেন। কারণ এই ফলটি এ সকল পুষ্টি
উপাদান ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও গুনে ভরপুর।
কমলা: ডেঙ্গু জ্বর নিয়ন্ত্রণে বিশেষ দুইটি পুষ্টিপ্রধান রয়েছে একটি হল
ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । যা কমলায় অত্যাধিক পরিমাণে রয়েছে। এজন্য
আপনি ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় কমলা ও কমলার রস খেতে পারেন।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বিভিন্ন খাবার: ভিটামিন সি জনিত খাবার আমাদের শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, দ্রুত কোন প্রকার রোগ সারানো এছাড়াও কোলাজের উৎপন্ন
করে যা শরীরের কোষ মেরামতের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির
শরীর দ্রুত সুস্থ করার জন্য ছোট রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, কোলাজের উৎপন্ন
ইত্যাদি এ সকল অত্যন্ত প্রয়োজন।
এজন্য আপনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- লেবু,
আমড়া, জাম্বুরা বা বাতাবি লেবু, জলপাই, কামরাঙ্গা, আনারস ইত্যাদি টক জাতীয় ফল
খাওয়াতে পারেন।
ডালিম: ডেঙ্গু জ্বর মূলত শরীরের প্লাটিলেটের সংখ্যা কমিয়ে দেয়। যা
ডালিমে বিদ্যমান রয়েছে এছাড়া ডালিমের রয়েছে ভিটামিন ও মিনারেল যা শরীর থেকে
ক্লান্তি, সতেজ ও মন ভালো বা অবসাদ অনুভূতি দূর করে।
চর্বিহীন প্রোটিন: ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর দ্রুত গতিতে সুস্থ করার
জন্য চর্বি বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ বিভিন্ন খাবার যেমন-মাছ, মুরগির মাংস, টফুর,
ডিম, চর্বি বিহীন লাল মাংস দুধ খাওয়াতে পারেন। এ সকল খাবার আক্রান্ত ব্যক্তির
শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ করতে বেশ সহায়তা করে।
পেঁপে পাতার রস: আমরা পূর্বেই জেনেছি ডেঙ্গু জ্বর আমাদের শরীর থেকে
প্লাটিলেটের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। আপনি যদি ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় শরীরে প্লাটি
প্লেটের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে চান তাহলে নিয়মিত পেপের পাতার রস খেতে পারেন। কারণ
পেঁপের পাতায় রয়েছে প্লাটিলেট, কিমোপেইন ও পাপাইন আমাদের বদহজম দূর করা সহ
প্লাটিলেটের পরিমাণও বৃদ্ধি করে।
দই: শরীরকে অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, শ্বাসতন্ত্র এবং
পেটের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ জনিত ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে অর্থাৎ গ্যাস জনিত বিভিন্ন
সমস্যা দূর করতে বেশ সহায়তা করে। এর জন্যই দই কে প্রোবায়োটিক বলা হয়। ডেঙ্গু
আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর অত্যন্ত পরিমাণে দুর্বল হয় গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে
পারে এর জন্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে দই খাওয়াতে পারেন।
হলুদ: ডেঙ্গু জ্বরে আমাদের সমস্ত শরীর প্রচন্ড রূপে ব্যথা করে এ ব্যথা দূর
করতে আপনি এক গ্লাস দুধের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ হলুদ মিশে খেতে পারেন কারণ হলুদে
রয়েছে বিভিন্ন ধরনের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক উপাদান ইত্যাদি আরও
বিভিন্ন ধরনের অজানা গুণ ও বৈশিষ্ট্য যা আমাদের শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে
করে শরীরের ক্লান্তি, বিভিন্ন ব্যথা, মন সতেজ ও শরীরের বল ফিরিয়ে আনতে সহায়তা
করে।
লাল শাক: লাল শাক সহ অন্যান্য আরো বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি যেগুলোতে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন ও প্লাটিলের সমৃদ্ধ উপাদান রয়েছে সেগুলো নিয়মিত
আক্রান্ত ব্যক্তির খাদ্য তালিকায় যুক্ত করবেন। কারণ নিয়মিত পাতাযুক্ত যে কোন
একটি শাক ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন ধরনের ঘাটতি খুব সহজে মিটিয়ে
দেবে এবং সুস্থ, সবল করবে
মেথি: অতিরিক্ত জ্বর নিয়ন্ত্রণে আনতে মেথি খেতে পারেন। তবে অবশ্যই মেথি
খাওয়ার পূর্বে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কারণ মেধিতে অনেক ঔষধি গুন রয়েছে
যা আপনার শরীরে জন্য ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় প্রয়োজন কিনা তা শুধুমাত্র আপনার
চিকিৎসকই বলতে পারবে।
তরল খাবার: আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে অত্যন্ত বেশি পরিমাণে পানির ঘাটতি
দেখা দেয়। এর জন্য অবশ্যই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কত দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার
পানি খাওয়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলে শরবত, বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে
ঘরোয়া ভাবে তৈরি স্যুপ কিংবা মাংস দিয়ে তৈরি স্যুপ খাওয়াতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
কারণ আক্রান্ত ব্যক্তি বেশি পরিমাণে খাবার খেতে পারে না এজন্য অল্প খাবারে বেশি
পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে এমন সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খাওয়াতে হবে। এতে শরীরের দুর্বল
দ্রুত কেটে যাবে এবং দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।
ব্রকলি: ব্রকলি কে ভিটামিন কে এর উৎসব বলা হয়। ভিটামিন কে আমাদের শরীরে
রক্তে থাকা প্লাটিলেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। আর একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির
জন্য শরীরে প্লাটিলেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরী। এর জন্য ডেঙ্গু জ্বর
অবস্থায় আপনি ব্রকলি খেতে পারেন এছাড়া ব্রকলিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও
খনির সম্পৃক্ত বিভিন্ন উপাদান যার ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত রোগীর জন্য অত্যন্ত
প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান।
দুধ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার: অনেক সময় ডেঙ্গু চরে আক্রান্ত ব্যক্তি
শুধুমাত্র দুধ খেতে পারে না গন্ধ বা বমি বমি ভাব আসে তবে দুধ আক্রান্ত ব্যক্তির
জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি
উপাদান।
এজন্য আপনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দুধ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার
যেমন- মিষ্টি দই, ফিরনি, পায়েস, পুডিং, দই, সুজি, সাগু ইত্যাদি খাওয়াতে পারেন।
তবে এ সকল খাবার অবশ্যই ঘরোয়া ভাবে তৈরি করবেন কোন ভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত
ব্যক্তিকে বাইরের খাবার খাওয়াবেন না এবং অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন খাবারগুলো যেন কোন
ভাবে আক্রান্ত ব্যক্তির পেটের সমস্যা সৃষ্টি না করে।
পালং শাক: ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর অত্যন্ত পরিমাণে দুর্বল হয় ফলে
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি কমে যায় এজন্য ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আপনি পালং শাক খেতে পারেন।
পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধিকারী উপাদান, আয়রন ও প্লাটিলেট ইত্যাদি। এ সকল পুষ্টি উপাদান ও গুনাগুন
পেতে হলে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত সুস্থ করতে চাইলে আপনি ডেঙ্গু আক্রান্ত
ব্যক্তির খাদ্য তালিকায় নিয়মিত পালং শাক রাখতে পারেন।
আয়রন জাতীয় খাদ্য: ডেঙ্গু জ্বরে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায় কারণ শরীরে
হিমোগ্লোবিন ও প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যায়। তবে শরীর দ্রুত সুস্থ করার জন্য
শরীরে তৈরি ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার জন্য আয়রন জাতীয় খাদ্য যেমন-
মিষ্টি কুমড়া, কিসমিস, খেজুর, কলিজা, বিট জুস, সবুজ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি
ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য যেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে এগুলো
অবশ্যই ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় খাবেন।
ডেঙ্গু জ্বরে যে সকল খাবার পরিহার করবেন
ভাজাপোড়া: ডেঙ্গু জ্বরের শরীর অত্যন্ত পরিমাণে দুর্বল থাকে। ফলে খাবার
হজম হতে বেশ সময় নাই অনেক সময় বদহজম, ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক জনিত ইত্যাদি আরও
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর জন্য ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় অতিরিক্ত
ভাজাপোড়া জাতীয় খাদ্য থেকে বিরত থাকবেন।
মসলাযুক্ত খাবার: অনেক সময় ডেঙ্গু জ্বর অবস্থায় মসলাযুক্ত খাবার বেশি
খেলে ডায়রিয়া, বমি ইত্যাদি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এর জন্য এই সময় মসলা জাতীয়
খাদ্য পরিহার করে মসলা ছাড়া এবং তরল খাদ্যগুলো বেশি খাবেন যেমন-রাইস্যুপ, মুরগির
পাতলা ঝোল, মাছের পাতলা ঝোল ও বিভিন্ন ফলের জুস ইত্যাদি খাওয়াতে পারেন।
চিনি যুক্ত খাবার: মিষ্টি বা চিনি জাতীয় খাদ্য অনেক সময় আমাদের শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ সৃষ্টি করে এর জন্য
ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত ব্যক্তিকে সম্ভব হলে চিনি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার খাওয়া
থেকে বিরত রাখবেন।
এলোভেরা: অ্যালোভেরা আমাদের শরীরকে ডিহাইড্রেট করে এর জন্য ডেঙ্গু
আক্রান্ত একজন ব্যক্তির শরীর ডিহাইডেট হলে বেশ সমস্যা হতে পারে। এর জন্য ডেঙ্গু
জ্বর থেকে সুস্থ হওয়া না পর্যন্ত এলোভেরা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
চা ও কফি: দ্রুত সুস্থ হতে বাধা সৃষ্টি করে অতিরিক্ত পরিমাণে দুধ চা, কফি,
সফট ড্রিংক ইত্যাদি পানীয় খাবার। দ্রুত সুস্থ হতে চাইলে ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত
অবস্থায় এ সকল খাদ্য থেকে দূরে থাকুন।
ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ
ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে আমাদের ভেতরে অনেক প্রশ্ন জাগে কারন এটি অনেক ভয়াবহ একটি রোগ।
তার মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সকলেরই প্রশ্ন যে ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে
রোগ। এর উত্তর ডেঙ্গু জ্বর কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটি মূলত এডিস এজিপ্টি মশার
কামড়ে নির্গত লালা এই লালাই ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস বা জীবাণু থাকে।
যার ফলে আপনি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির খাবার, একই বিছানায় ঘুমানো, কিংবা তার
ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহার করলেও আপনার ডেঙ্গু হবে না। তাহলে বোঝা যাচ্ছে ডেঙ্গু
জ্বর কোন প্রকার ছোঁয়াচে রোগ নয় এটি শুধুমাত্র মশার কামড়ের মাধ্যমে কোন
ব্যক্তির হয়ে থাকে।
ডেঙ্গু মশা কামড়ালে কি ফুলে যায়
সাধারণ
মশা কামড়ালে
আমাদের কামড়ানো স্থানটি ফুলে যায়, চুলকানি ও লাল হয়ে যায়। তবে আমরা কি জানি
ডেঙ্গু
মশা কামড়ালে কি
ফুলে যায়। জি হ্যাঁ ডেঙ্গু মশা কামড়ালেও কামড়ানোর স্থানটি ফুলে যায় এবং
চুলকায়।
কোন মশা কামড়ানোর পূর্বে কামড়ানো স্থানটিতে এক ধরনের তরল পদার্থ ছিটিয়ে দেয়
যেন কামড়ানো অনুভূতি বোঝা না যায় এর জন্য আমরা অনেকেই
মশা কামড়ানোর বা
মশার
হুল ঢোকানোর সময় টের পাওয়া যায় না। কামড়ানোর স্থানটির অবশ কেটে গেলে আমরা
ব্যথা অনুভব করি ফলে চুলকায় এতে কামড়ানোর স্থানটি ফুলে যায়।
ডেঙ্গু মশা চেনার উপায়
আমরা অনেকেই ডেঙ্গু
মশা চিনি না ফলে যে
কোন মশা কামড়ালে
আমরা মনে করি ডেঙ্গু মশা কামড়েছে এবং ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে এমন আতঙ্ক অনুভূত
হয়। তবে কোনটি ডেঙ্গু
মশা আর কোনটি
ডেঙ্গু মশা নয় সেটা আপনি খালি চোখে ও শনাক্ত করতে পারবেন চলুন জেনে ডেঙ্গু
মশা চেনার উপায়
গুলো কি-
- ডেঙ্গু মশা সাইজ বেশ বড় আবার বেশ ছোট হয় না এটি মাঝারি সাইজের হয়ে থাকে।
- ডেঙ্গু মশার গায়ে সাদা ডোরাকাটা থাকে তবে আর্মিগিরার নামক একটি মশা রয়েছে যার পেটেও এমন দাগ রয়েছে তবে মশাটি আকারে বেশ বড় হয় ডেঙ্গু মশার তুলনায়।
- শুধুমাত্র ডেঙ্গু মশার পায়ে ডোরাকাটা দাগ রয়েছে অন্য কোন মশার পায়ে এমন কোন দাগ নেই।
- পুরুষ ডেঙ্গু মশার এন্টেনা কিছুটা লোমশ হয়ে থাকে তবে স্ত্রী ডেঙ্গু মশার এমন থাকে না।
- ডেঙ্গু মশার শরীরে যে ডোরাকাটা গুলো থাকে তা দেখতে অনেকটা বাঘের শরীরে দাগের মতো এজন্য একে অনেকে টাইগার মশা ও বলে থাকে।
- অন্যান্য মশা শরীরের সঙ্গে ৪৫ ডিগ্রী কোণে বসে কিন্তু ডেঙ্গু মশা শরীরের সঙ্গে সামান্তরাল ভাবে বসে।
- অন্যান্য মশার তুলনায় ডেঙ্গু মশা অনেক বেশি কালো রঙের হয়।
ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণ গুলো কি কি?
২০২৩ সালে ডেঙ্গু বাংলাদেশে এক মহামারি রূপ ধারণ করেছিল। করোনার পর বাংলাদেশে এত
রোগী মেডিকোলে ভর্তি হয়েছে শুধুমাত্র ডেঙ্গু জ্বরের কারণে এবং অনেক মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারাও গিয়েছে। তবে ২০২৪ সালে নিজে এবং সমাজেরসকলে একসঙ্গে ডেঙ্গু
মশা বিস্তার ঠেকাতে
না কাজ করলে ২০২৩ সালের চাইতে এর প্রকোপ বেশি হতে পারে।
তবে সকল এডিস মশা ডেঙ্গুর জ্বরের ভাইরাস বহন করে না এবং সকল মশা কামড়ালেই ডেঙ্গু
জ্বর হয় তেমন নয়। ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কিছু বিশেষ লক্ষণ রয়েছে। চলুন জেনে নেই ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণ গুলো কি কি?
- অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বর হওয়া এই জ্বর ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে।
- সমস্ত শরীর অতিরিক্ত ব্যথা অনুভব হওয়া।
- অতিরিক্ত পরিমাণে মাথা ব্যথা।
- চোখ জ্বালাপোড়া করা।
- কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া।
- চোখে এবং চোখের পেছনে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যথা।
- স্বাদের পরিবর্তন ও ক্ষুধা কমে যাওয়া।
- খাবার খেতে অনীহা এবং বমি বমি ভাব।
- শরীরে ফুসকুড়ি বের হওয়া।
- পেটে ব্যথা।
- ওঠাবসা এবং চলাফেরায় হঠাৎ মাথা ঘোরা।
- শরীরের সব সময় ক্লান্তি অনুভূত হওয়া।
- হাত-পা অনেক সময় ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
- রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনের হার কমে যাওয়া
- প্রসবের মাত্রা রাস পাওয়া।
- শরীর দুর্বল অনুভূত হওয়া।
- সর্দি কাশি হতে পারে।
- শরীরে র্যাশ বা চামড়া লাল হয়ে যাওয়া।
- পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা হওয়া।
- মাংসপেশী ও হাড়ের গাটে গাটে ব্যথা।
- চোখে লালচে ভাব হওয়া।
- কোমর ও হাঁটু ব্যথা করা।
- শরীরে অতিরিক্ত শীত অনুভূত হওয়া।
- গ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
- মুখ শুকনো হয়ে যাওয়া
- হাত পা ঝিনঝিন করা।
এগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ রয়েছে তবে তা ডেঙ্গু জ্বরের
ধরন অনুসারে। তবে অবশ্যই ডেঙ্গু জ্বরের সামান্য লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের
শরণাপন্ন হবেন।
লেখক এর মন্তব্য
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদেরকে এডিস ইজিপ্টি
মশা অর্থাৎ
প্রাণঘাতী ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস বহনকারী
মশা ডেঙ্গু মশা
সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি উপরোক্ত সম্পন্ন পোস্টে পড়ে
আপনি উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার
আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে ডেঙ্গু জ্বর হলে গোসল
করা যাবে কি না, ডেঙ্গু জ্বরের প্রাথমিক লক্ষণ ইত্যাদি ছাড়াও ডেঙ্গু
মশা সম্পর্কে তথ্য
দিয়ে সহায়তা করবেন। এমন আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন,
আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url