আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা
ক্লান্তি দূর কিংবা
রমজানের
ইফতারিতে শরীরকে চাঙ্গা করতে আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি এজন্যই
আজ আমি আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম ছাড়াও আখের গুড়
সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আখের গুড় সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা
রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধানও উত্তর পাবেন এবং সঠিক নিয়ম জেনে আখের গুড়ের
সঠিক উপকার পাবেন।
ভূমিকা
প্রাচীনকাল হতে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা কিংবা ঘরোয়া ভাবে বিভিন্ন রোগ সমাধানে বিশেষ
ভূমিকা রয়েছে আখের গুড়ের। কারণ এতে বিভিন্ন ধরনের এমন প্রশ্ন পুষ্টি উপাদান
রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। আখের গুড়া রয়েছে পটাশিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফলেট, ফাইবার,
লোহ ও খনিজ ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। যেমন-শরীরে ক্লান্তি দূর করতে, শরীরে আদ্রতা
ধরে রাখতে, ত্বক উজ্জ্বল করতে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে, কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে, শরীর
ঠান্ডা করতে, লিভার কিংবা শরীর হতে টক্সিন বের করতে ইত্যাদি ছাড়া আরও বিভিন্ন
ধরনের উপকারে আসে
আখের গুড় কিংবা আখের গুড়ের শরবত। এজন্যই আজ আমি আপনাদের মাঝে শরবত খাওয়ার
উপকারিতা,আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা ও খাবার নিয়ম, এতে কি কি পুষ্টি
উপাদান রয়েছে, ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আখের গুড় খাওয়া যাবে কিনা এটাতে আরও
বিভিন্ন ধরনের আখের গুড় নিয়ে আপনাদের মনে ওঠা প্রশ্নের উত্তর নিম্নে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি।
আখের গুড় কখন খাওয়া উচিত?
শীত কিংবা গ্রীষ্মকাল যে কোন সময়ই আখের গুড় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ
উপকারী। খেজুরের গুড়ের হয়েছে আয়রন, পটাশিয়াম, মিনারেল, ফাইবার, ভিটামিন,
ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিঙ্ক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি
উপাদান যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে আনে,
কিডনি সুস্থ রাখে, পানি শূন্যতা রোধ করে কোষ্ঠকাঠিন্যে আরাম প্রদান করে, পাকস্থলী
পরিষ্কার করে শরীর হতে দূষিত পথে বের করতে সাহায্য করে।
তবে এ সকল উপকারিতা পেতে হলে অবশ্যই আখের গুড় কখন খাওয়া উচিত? তা জানা অত্যন্ত
জরুরী। কোন কিছু সঠিক সময় এবং সঠিক নিয়মে না খেলে এর সঠিক উপকারিতা পাওয়া যায়
না। এজন্য আখের গুড়ের উপকারিতা পেতে হলে এটি কখন খেতে হবে তা জানতে হবে। আখের
গুড়ের শরবত তৈরি করে অথবা শুধু আখের গুড় যে কোন খাবারের সঙ্গে মিশেও খেতে
পারেন।
আখের গুড়, আদা এবং ভেজানো কাঁচা ছোলা একসঙ্গে সকালে খালি পেটে খেলে দ্রুত ওজন
নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও
সকালে খালি পেটে আখের গুঁড়ের শরবত খেলে পাকস্থলী পরিষ্কার, হজম প্রক্রিয়া সহজ,
কোষ্ঠকাঠিন্য, সারাদিনের পানি শূন্যতার ঘাটতি এবং শরীরটাতে দূষিত পদার্থ বের করতে
সহায়তা করে। তবে আপনি দুপুরবেলা প্রচন্ড রোদে শরীর হতে পানির ঘাটতি ও শারীরিক
ক্লান্তি দূর করতে এক গ্লাস আখের গুড় এর শরবত খেতে পারেন।
সকালে খালি পেটে গুড় খেলে কি হয়?
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা মতে গুড় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। তবে সকালে
খালি পেটে গুড় খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। সকালে খালি
পেটে গুড় খাওয়ার বেশ উপকারী রয়েছে চলুন জেনে নেই সকালে খালি পেটে গুড় খেলে
আমাদের শরীরে কি কি উপকার পাওয়া যায়-
- সকালে খালি পেটে আপনি এক গ্লাস কুসুম গরম পানি ও এক টুকরো গুড় একসঙ্গে মিশে খেলে সুস্থ, সবল, স্বাস্থ্য করতে বেশ চমৎকারই প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
- কর্ম করার জন্য শরীরে এনার্জি ও মন প্রফুল্ল রাখে।
- সকাল থেকে শরীর হতে পানির ঘাটতি মেটায়।
- দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে সহায়তা করে।
- খেজুরের গুড় লিভার হতে টক্সিন সহজেই বের করতে পারে ফলে রক্ত পরিষ্কার থাকে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- কর্ম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আনে খেজুরের গুড়ে থাকা সোডিয়াম ও পটাশিয়াম।
- শরীর ঠান্ডা রাখে।
- শরীরে হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা বৃদ্ধি করে।
- ক্লান্তি নিরোধক হিসেবে কাজ করে।
- আখের গুড় ও ভেজানো কাঁচা ছোলা মহিলাদের ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
- শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি বা ভালো করতে সহায়তা করে আখের গুড় ও ভেজানো কাঁচা ছোলা।
- অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক ও অম্বলের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
- শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- শরীর হতে চর্বি কাটিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহায়তা করে।
- লিভার হতে টক্সিন বের করে লিভার সুস্থ রাখে।
- ঠান্ডা বিভিন্ন রোগ যেমন সর্দি কাশি দূর করতে বেশ সহায়তা করে।
আখের গুড় খাওয়ার নিয়ম
চিনির তুলনায় আখের গুড়ে অনেক বেশি পুষ্টি উপাদান ও গুনাগুন রয়েছে। আখের গুড়
চিনি চাইতে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী। তবে আখের গুড়ের উপকারিতা
সম্পর্কে যেমন জানতে হবে তেমনি আখের গুড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও সঠিক ধারণা
থাকতে হবে তাহলে আপনি এর সঠিক উপকারিতা পাবেন। এর জন্য আজ আমি আপনাদের মাঝে আখের
গুড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন জেনে নিই আখের গুড় কি কি নিয়মে
খাওয়া যায়-
দুধ ও আখের গুড়: দুধ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী আমরা সকলেই
জানি। তবে অনেকেরই দুধ খেলে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যার জন্য আমরা
দুধের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খাই কিন্তু চিনি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য তেমন উপকারী
নয় বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমন অবস্থায় আপনি
চিনির পরিবর্তে গুড় দুধের সঙ্গে মিশে খেতে পারেন। দুধ ও গুড়ের কম্বিনেশনে আপনার
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে , গ্যাস্ট্রিক ও হজম ক্রিয়ার উন্নতি
ঘটবে।
আখের গুড়ের শরবত: রমজান মাসে ইফতারের সময় কিংবা পানি শূন্যতা দূর করতে
অথবা শরীরে ক্লান্তি দূর করতে আমরা অনেকেই আছি যারা আখের গুড় ও লেবুর একসঙ্গে
মিশে শরবত খেতে বেশ পছন্দ করি। কারণ এতে থাকা গুড় থাকা আয়রন, পটাশিয়াম,
ফসফরাস, সোডিয়াম ইত্যাদি আমাদের শরীর হতে দূষিত পদার্থ বা টক্সিন বের করতে
সহায়তা করে। ফলে শরীরে দ্রুত ক্লান্তি দূর হয়ে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে এবং শরীরের
আদ্রতা ফিরে আসে। আখের গুড়ের শরবতকে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক ও বলা হয়।
আখের গুড় ও ইসবগুল: ইসবগুল ও আখের গুড় দুটোই আমাদের পেটের জন্য বেশ
উপকারী। কারণ এ দুটি উপকরণে আমাদের পাকস্থলীর হজম ক্রিয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করে
এবং বদহজম, অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক সহজে দূর করে। এছাড়াও শরীরকে ঠান্ডা, ক্লান্তি
দূর ও শরীরে পানির ঘাটতি মেলাতে বেশ হতো করে।
আখের গুড় ও কাঁচা হলুদ: সর্দি-কাশি, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা, ত্বক
মলিন হয়ে যাওয়া, ওজন বৃদ্ধি, লিভার সুস্থ ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর
করতে সেই প্রাচীনকাল থেকে হলুদের ব্যবহার চলে আসছে। কাঁচা হলুদের রয়েছে
এন্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, ফিনোলিক যৌগিক কারকিউমিন ইত্যাদি যা এ
সকল রোগ দূর করতে সহায়তা করে। এর জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত খালি পেটে
কিংবা যেকোনো সময় আখের গুড় ও কাঁচা হলুদ একসঙ্গে খেতে পারেন।
পিঠাপুলি তৈরি করে: আখের গুড় দিয়ে আপনি বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি কিংবা
লাড্ডু তৈরি করে খেতে পারেন। এভাবে আখের গুড় খেলেও আপনি এর সকল পুষ্টি উপাদানের
উপকারিতা পাবেন।
কাঁচা ছোলা ও আখের গুড়: দুটি উপাদান পুষ্টিগুণে ভরপুর। ওজন কমানো কিংবা গ্যাস্ট্রিক দূর করতে এদের জুটি মেলা ভার। এছাড়াও আরও শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে নিয়মিত কাঁচা ছোলা ও আখের গুড় সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।
আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা
গুড় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ পুষ্টিকর একটি খাবার। এটি বিভিন্নভাবে খাওয়া
যায় কখনো বা গুড় দিয়ে বিভিন্ন রকমের পিঠাপুলি তৈরি করে, কখনো বা শুধুমাত্র
ঘুরে শরবত তৈরি করে আবার কখনো বা শক্ত গুড় বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে। যেভাবেই আখের
গুড় খান না কেন এর এর স্বাদ গন্ধ খাবারকে যেমন লোভনীয় করে তোলে তেমনি শরীরকে ও
সুস্থ সবল করে তোলে।
তবে আমাদের কোন কিছু শরীরে দেওয়ার পূর্বে বা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সে খাবারটির
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। আপনি যদি খাবারটির উপকারিতা
অপকারিতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরের জন্য কোন
পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন। এজন্য আজ আমি আপনাদের মাঝে আখের গুড়ের উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরবো চলুন তা জেনে নিই-
আখের গুড়ের উপকারিতা
আমাদের শরীরের, খনিজ আয়রন, পটাশিয়াম ও সোডিয়াম ইত্যাদি পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি
মেটাতে পারে আখের গুড়। এছাড়াও আমাদের শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে প্রতিদিন আখের গুড়ের শরবত বা আখের গুড় খেলে
আমরা কি কি উপকার পাবো চলুন জেনে নিই-
অম্বলের সমস্যা রোধ: সকালে খালি পেটে এক মুঠো ভেজানো কাঁচা ছোলা, আখের
গুড় ও আদা একসঙ্গে খলে খুব সহজেই আপনার পুরাতন অম্ল, গ্যাস ও খাওয়ার প্রতি
অরুচি দূর করতে সহায়তা করবে এছাড়াও খেজুরের গুড় এভাবে খাওয়ার জন্য চিকিৎসকরাও
পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
রক্তস্বল্পতা: আখের গুড় ও ছোলা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা শরীরে
রক্তস্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে। রক্তস্বল্পতা দূর করতে আপনার খাদ্য তালিকায়
আখের গুণ ও ছোলা রাখতে পারেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে আনে: যেহেতু আখের গুড়ে রয়েছে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম যা
আমাদের শরীর হতে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ সহজে বের করে দেয় ফলে ওজন সহজে
নিয়ন্ত্রণে আসে। আপনার ওজন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইলে কাঁচা ছোলা ভেজানো, আদা
ও গুড় একসঙ্গে খেতে পারেন।
দাঁতের সমস্যা: দাঁতের সমস্যার সমাধানেও বেশ ভূমিকা রাখে আখের গুড় ও
কাঁচা ছোলা। দাঁত, দাঁতের মাড়ি মজবুত ও শক্ত করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আয়রন,
ফসফরাস ও পটাশিয়াম যা আখের গুড় ও ভেজানো কাঁচা ছোলা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ: শরীরে পানির ঘাটতি এবং খাবার হজম করার ক্ষমতা কম হলে
কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত রোগ দেখা দেয়। পাকিস্তানের হজম ক্রিয়া উন্নত ও পানির ঘাটতি
দুটোই খুব সহজেই মেটাতে পারে আখের গুড়। ফলে নিয়মিত আখের গুড় বা আখের গুড়ের
শরবত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর হতে সহায়ক হবে। এছাড়াও আপনি আখের গুড় ও কাঁচা ছোলা
খেতে পারেন দুটোই খাবার হজম করতে সহায়তা করে কারণ ছোলাতে রয়েছে ফাইবার যা পাচন
ক্রিয়ার পাচনতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ঋতুস্রাবের ব্যথা: প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময় মহিলাদের ঋতুস্রাবের এই
ব্যথা সহ্য করতে হয়। তবে ঋতুস্রাবের এ কষ্ট সহনীয় পর্যায় আনতে সহায়তা করে
আখের গুড়। আখের গুড় থাকা প্রোটিন ঋতুস্রাবের সময় শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি
যোগায় এবং আয়রনের ঘাটতি মেটাই।
ত্বকের যত্নে: ত্বকের আদ্রতা ও জেলা হারিয়ে যাই বিশেষ করে শরীরে পানি,
সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও জিংক এর ঘাটতির কারণে। দ্রুত সময়ের ভিতরে রুক্ষ-শুষ্ক,
প্রাণীহীন, ব্রণ, রোদে পুড়ে যাওয়া, কালচে ভাব, বার্ধক্য ইত্যাদি দূর করতে চাইলে
ভেজানো কাঁচা ছোলা ও আখের গুড় খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি: কাঁচা ছোলাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং আখের
গুড়ে রয়েছে ভিটামিন বি৬ জাম মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। ফলে
আপনার ডায়েট চাটে আখের গুড় ও কাঁচা ছোলা স্মৃতিশক্তির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
রাখতে পারেন।
পেশি মজবুত: আখের গুঁড়ে ও কাঁচা ছোলাই রয়েছে প্রোটিন, উচ্চ ফাইবার,
পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, সোডিয়াম, জিংক,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি যার
শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে শরীরে শক্তি যোগায় এবং বেশি মজবুত করে।
আখের গুড়ের অপকারিতা
কোন কিছু খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সেই জিনিসের অপকারিতা সম্পর্কে জানা ভালো কারণ
আপনার শরীরের জন্য কোনটা উপকারী আর কোন জিনিসটা উপকারী নয় এবং আপনার শরীর কোনটি
গ্রহণ করবে তা আপনি ভাল জানবেন এজন্য কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই তার
অপকারিতা সম্পর্কে জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। এজন্যইআজ আমি আপনাদের মাঝে আখের গুড়ের
অপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে তুলে ধরলাম-
শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি: গুড় চিনির তুলনায় স্বাস্থ্যকর হলেও ১০ গ্রাম
গুড়ে ৯ গ্রাম চিনি মেশানো থাকে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ
বৃদ্ধি হতে পারে। এজন্য অবশ্য অতিরিক্ত গুড় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: গুড় যা মূলত মিষ্টি জাতীয় একটি খাবার। তবে তা
স্বাস্থ্যের জন্য কেমন কোনো ক্ষতি করে না কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে আখের
গুড় খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অথবা যে সকল
ব্যক্তির ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য অতিরিক্ত গুড় খাওয়া মারাত্মক ক্ষতি হতে
পারে। এজন্য সতর্ক হিসেবে যে সকল ব্যক্তির ডায়াবেটিস রয়েছে তারা চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুসারে আখের গুড় খেতে পারেন।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা: সদ্য তৈরি গুড়ে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু থাকে ফলে তা
খেলে ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক সময় গুড়
তৈরির পদ্ধতি ভুল ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরির ফলে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু সংক্রমণ
ঘটে ফলে গ্যাস্ট্রিক, বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ওজন বৃদ্ধি: ভালো গুড় আমাদের ওজন কমাতে বেশ সহায়তা করে। তবে অতিরিক্ত
পরিমাণে আখের গুড় খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে কারণ এতে রয়েছে ক্যালরি যার শরীরে
বেশি মাত্রায় প্রবেশ করলে ওজন বাড়াতে পারে। তবে বাজারে বর্তমানে পরিশোধিত গুড়
খুব কমই পাওয়া যায়, বেশিভাগ গুড় চিনি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ফলে সামান্য বেশি
খেলে ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য অবশ্যই গুড় কেনা সময় এবং খাওয়ার সময় সতর্ক
থাকবেন।
রক্তক্ষরণ: গুড় যেহেতু আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি মেটাই এবং দ্রুত
ক্লান্তি দূর করে শরীরকে সতেজ ও ঠান্ডা করে তোলে। এজন্য আমরা অনেকেই আছি যারা
প্রচন্ড গরম থেকে এসে গুড়ের রস খায়। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো
নয়।
হঠাৎ অতিরিক্ত গরম থেকে শরীরকে ঠান্ডা করার জন্য গুড়ের শরবত খেলে অনেক সময় নাক
থেকে রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে। এজন্য অবশ্যই গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম থেকে এসে
হঠাৎ গুড়ের শরবত খাবেন না সামান্য থেমে শরীরকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এনে এরপরে
শরবত খাবেন।
বিভিন্ন সংক্রমণ: যেহেতু গুড় আমাদের চোখের সামনে তৈরি করা হয় না এবং এটি
বিভিন্ন প্রক্রিয়া মাধ্যমে তৈরি করা হয়। ফলে এতে বিভিন্ন রাসায়নিক ও ভেজাল
পদার্থ মেশানো খুবই সহজ। এছাড়াও অনেক সময় গুড় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা
হয় ফলে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু সেখানে সৃষ্টি হয়। যা থেকে আমাদের বিভিন্ন ধরনের
সংক্রমণ জনিত রোগ হতে পারে। এজন্য অবশ্যই গুড় কেনার পূর্বে বিশুদ্ধতা যাচাই করে
কিনবেন।
আখের গুড় খেলে কি ওজন বাড়ে
চিনির বিকল্প হিসেবে আপনি গুড় ব্যবহার করতে পারেন। তার মানে এই নয় যে গুড়
আপনার শরীরে কোন প্রকার ক্ষতি করবে না। গুড় আপনার শরীরে ক্ষতি করলেও চিনির
তুলনায় কম ক্ষতি করবে। গুড় আপনার শরীরে তখনি ক্ষতি করবে যখন আপনি সেটি অতিরিক্ত
পরিমাণে অর্থাৎ মাত্র অতিরিক্ত সেবন করবেন।তাহলে হয়তো আপনাদের অনেকের মনে এমন
প্রশ্ন জাগতে পারে আখের গুড় খেলে কি ওজন বাড়ে, কি বাড়ে না।
আরো পড়ুনঃ
খালি পেটে খেজুরের রস খেলে কি হয়?
গুড় আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে যদি আপনি নিয়মিত খালি পেটে এক গ্লাস গুড়ের
সঙ্গে লেবু মিশিয়ে খান তাহলে আপনার শরীরের মেটাবলিজম ভালো হবে আরমেটাবলিজম ভালো
হওয়া মানে পাকস্থলীর হজম ক্রিয়ায় উন্নতি ঘটা। ফলে আমাদের ওজন ও নিয়ন্ত্রণে
আসে। কিন্তু গুড় রয়েছে ক্যালরি। ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে গুড় খেলে ওজন কমার চাইতে
বেড়ে যেতে পারে এজন্য অবশ্যই অতিরিক্ত গুড় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা
গরম কিংবা ঠান্ডা,
রমজানের
ইফতারিতে জনপ্রিয় শরবত হিসেবে কিংবা শরীর থেকে ক্লান্তি দূর করে শরীরকে সতেজ ও
দূর্বলতা কাটাতে বেশ জনপ্রিয় আখের খেজুরের শরবত। আখের গুড়ে থাকা আয়রন,
ভিটামিন, মিনারেল, খনিজ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান গুলো
শরীরের বিভিন্ন রোগ সারাতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেই আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত-
রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি: নিয়মিত আখের গুড়ে শরবত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি পায়। কারণ আখের গুড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, খনিজ, ভিটামিন ভিটামিন সি, বি ১, বি ২, বি৬
শরীরে উৎপন্ন বিভিন্ন ধরনের অণুজীব ধ্বংস করতে সহায়তা করে।
শরীর উষ্ণ রাখতে: গুড়ের শরবত নিয়মিত খেলে এটা আমাদের শরীরে তাপমাত্রার
ভারসাম্য সঠিক রাখে। কারণ আখের গুড়ে রয়েছে ক্লোরোফিন যা আমাদের শরীরে শক্তি
যোগায় এবং শরীরকে উষ্ণ রাখতে সহায়তা করে।
ওজন কমাতে: নিয়মিত সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানিতে আখের গুড় ও লেবু
মিশিয়ে খেলে শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে। এছাড়াও
আপনি ওজন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে ভেজানো কাঁচা ছোলা, গুড় ও আদা খেতে পারেন।
ভেজা কাঁচা ছোলায় রয়েছে ফাইবার যা অতিরিক্ত ক্ষুধা থেকে বিরত রাখে এবং ওজন
নিয়ন্ত্রণ এবং আখের গুড়ে রয়েছে পটাশিয়াম, বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ ও সোডিয়াম
যা শরীর হতে অতিরিক্ত ক্যালরি তাপে পরিণত করে ঝরিয়ে ফেলে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে
আনে।
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত: রক্তস্বল্পতা ব্যাক্তিদের শরীরে
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নতি করতে প্রয়োজন লৌহ সমৃদ্ধ উপাদান যুক্ত খাবার। যা
আখের গুড়ে ভরপুর রয়েছে এছাড়াও নিয়মিত আখের গুড় শরবত মেয়েদের শরীরের
রক্তস্বল্পতায় দূর করতে বেশ সহায়তা করে।
এনার্জি বৃদ্ধি: ক্লান্তির কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়লে আখের গুঁড়ের
শরবত খেতে পারেন। মূলত গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত পরিমাণে শরীর হতে ঘাম বের হয়ে
যাওয়ার কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এটি মূলত পানির ঘাটতি দেখা দেওয়ার কারণে
হয়। পানির ঘাটতি মেটানোর জন্য এবং শরীর দ্রুত সতেজ করার জন্য আখের গুড়ে সঙ্গে
সামান্য পরিমাণ লেবু ও পুদিনা পাতা মিশে শরবত তৈরি করে খেতে পারেন। আখের গুড়ে
থাকা সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে দ্রুত তরতাজা করতে সহায়তা করে।
এর জন্য ধর্ম পান মুসলিম
রমজান মাসে
সারাদিনে সিয়াম পালনের পর ইফতারের সময় আখের গুড়ের শরবত খেয়ে থাকেন।
রক্তের বিশুদ্ধতা: আখের গুড় আমাদের শরীর হতে বিভিন্ন ধরনের দূষিত পদার্থ
বা টক্সিন বের করতে সহায়তা করে এছাড়াও শরীর হতে বিষক্রিয়া পদার্থ বের করতেও
সহায়তা করে এবং পাচন ক্রিয়ার কার্যক্ষমতা ও হজম শক্তি উন্নতি করতে সহায়তা করে।
হাঁপানি রোধ: গুড় এলার্জি বিরোধী বৈশিষ্ট্য এবং ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগ
প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। দীর্ঘদিন একটি গবেষণা থেকে জানা যায় ঠান্ডা জনিত
বিভিন্ন রোগ যেমন হাঁপানি, কাশি, সাইনাস পরিষ্কার ফুসফুস, ধুলাবালির কারণে হওয়া
বিভিন্ন সংক্রমণ, নিঃশ্বাসের শিষের আওয়াজ ইত্যাদি ঠান্ডা জনিত লক্ষণগুলো কমাতে
সহায়তা করে।
মিনারেলের সোর্স: একজন সুস্থ ব্যক্তির শরীরে যে পরিমাণ মিনারেলের প্রয়োজন
হয় তার অনেকাংশে পূরণ করতে পারেন গুড় কারণ ১০ গ্রাম ঘুড়ে ১৬ মিলিগ্রাম পর্যন্ত
মিনারেল রয়েছে।
সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে: আখের গুড় আমাদের শরীরের অণুজীব বৃদ্ধি হতে বাধা
সৃষ্টি করে ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসজনিত সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পাওয়া
যায়। বিশেষ করে সর্দি-কাশি ঠান্ডা ভাইরাস জনিত সংক্রমণ থেকে। কারণ সর্দি কাশি তে
আমাদের শরীরে তাপমাত্রা বেড়ে যায় আখের গুড় আমাদের শরীরের তাপমাত্রা কে
নিয়ন্ত্রণে আনে এবং গরমের কারণে শরীরে পান শূন্যতা হওয়া কমাই।
মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি: আখের গুড় লোহা ও ম্যাঙ্গানিজ এর
ভালো উৎস ধরা হয়। আর এ ম্যাঙ্গানিজ আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধি
করতে বেশ সহায়তা করে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার
রিসেপ্টরের ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে ম্যাঙ্গানিজ। নিয়মিত আখের গুড়ের শরবত খেলে
আপনার মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা, মাথা
ঠান্ডা করতে সহায়তা করে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ: আখের গুড়ে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম আমাদের
শরীরে ব্লাড প্রেসারের ভারসাম্য বজায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
মহিলাদের জন্য উপকারী: মেয়েদের রক্তস্বল্পতা হাড়ের ক্ষয়, ঋতুস্রাবের
সময় অতিরিক্ত ব্যাথা তলপেটে ব্যথা, মাথা ব্যথা, মেজাজ খিটখিটে ও পেশি সংকোচন
ইত্যাদি সমস্যা বেশি দেখা দেয়। আখের গুঁড়ে থাকা ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন ও
লৌহ ইত্যাদি উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় মেয়েদের রক্তস্বল্পতা, হাড়ের ক্ষয়,
ঋতুস্রাবের সময় বাধাহীন ভাবে রক্ত চলাচলের ফলে পেটে ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
শরীর ডিটক্স করে: আখের গুড় আমাদের শরীরে শ্বাসতন্ত্র, পাকস্থলী,
পরিপাকতন্ত্র ও ফুসফুস থেকে দূষিত বা টক্সিন জাতীয় পদার্থ বের করে এগুলিকে
সুস্থ রাখার পুষ্টি উপাদান ফাইবার রয়েছে।
যেভাবে আখের গুড়ের শরবত তৈরি করে অনেক বেশি উপকৃত হবেন চলুন জেনে নিই আখের
গুড়ের শরবত তৈরী প্রণালী
আখের গুড় ও এলাচের শরবত
উপকরণ
- আখের গুড়
- সামান্য লবণ
- এলাচ
- লেবু
তৈরি প্রণালী: এক গ্লাস পানিতে এক টুকরো আখের গুড়, একটি লেবু, ও এলাচ
গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে শরবত তৈরি করে খেতে পারেন।এই সর্বোচ্চ ঘুম থেকে
উঠে খালি পেটে খেলে ওজন নিয়ন্ত্র, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও সারাদিন কর্ম করার
ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
আখের গুড় ও পুদিনা পাতার শরবত
উপকরণ
- আখের গুড়
- সামান্য লবণ
- লেবু
- ও পুদিনা পাতা
তৈরি প্রণালী: এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক টুকরো আখের গুড়, ৬ থেকে ৭ টি
পুদিনা পাতা ও লেবু মিশিয়ে সর্ব তৈরি করে খেতে পারেন। এ শরবতটি আপনার শরীর থেকে
অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে, ক্লান্তি ও মন প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করবে।
আখের গুড় ও আদার শরবত
উপকরণ
- আখের গুড়
- স্বাদমতো লবণ
- আদার রস
- লেবু
তৈরি প্রণালী: এক গ্লাস পানিতে এক টুকরো আখের গুড়, এক চামচ লেবুর রস
ছাদমতো নুন ও এক চামচ আদা রস ভালো করে মিশিয়ে অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে শরবত
তৈরি করে খেতে পারেন। আদা ও আখের রোগ আপনার শরীর হতে বিষাক্ত পদার্থ বা টক্সিন
বের করতে সহায়তা করবে।
আখের গুড় ও চিয়া সিড
উপকরণ
- আখের গুড়
- চিয়া সিড
- ইসবগুল
- লেবু
- সামান্য লবণ
তৈরি প্রণালী: এক গ্লাস পানিতে চিয়া সিড ১ ঘন্টা বা ৪০ মিনিট ভিজিয়ে
রাখুন। আপনি চাইলে ইসবগুল ও মেশাতে পারেন। এরপর এক টুকরো গুড়, সামান্য লবণ ও
লেবুর রস মিশিয়ে শরবত তৈরি করে খেতে পারেন। এটি আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা ও
হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
আখের গুড় খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে?
আমরা জানি চিনির চাইতে গুড় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী এবং বর্তমানে
আমরা অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ায় চীনের বিকল্প হিসেবে। আমাদের ওজন কমাতে, রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, শরীরে পানির সল্পতা দূর করতে, ক্লান্তি দূর করতে
ইত্যাদি সহায়তা করে থাকে গুড়। এর জন্য হয়তো অনেকের মনে এমন প্রশ্ন জাগতে পারে
আখের গুড় খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে? না কমে।
আরো পড়ুনঃ
কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
৫০ গ্রাম খেজুরে রয়েছে ১৯১.৫ ক্যালোরি,৩২.৫ থেকে ৪২.৫ শতাংশ সুক্রোজ, ৫ থেকে ৭.৫
শতাংশ ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ রয়েছে। ঘুরে থাকা এই পুষ্টি উপাদানের মাত্রাগুলো দেখে
হয়তো আপনি বুঝতে পেরেছেন একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য গুড় কতটা মারাত্মক ক্ষতিকর
সেটা খেজুরের গুড়
কিংবা আখের গুড় হোক না কেন। চিনি ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য ক্ষতিকর তাই বলে গুড়
উপকারী এমন মোটেও নয়। গুড় ও চিনি দুটো ডায়াবেটিস রোগীর ডায়াবেটিস বৃদ্ধি কারণ
এবং শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাকে আখের গুড়ের শরবত এবং আখের গুড়
সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আশা করি উপরোক্ত সম্পন্ন পোস্টটি পড়ে
আপনি উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার
আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে আখের গুড়ের উপকারিতা
উপকারিতা অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম এবং পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানিয়ে সহায়তা
করবেন। এমন আরও তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন, আসসালামু
আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url