আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়

আমরা অনেকেই আজওয়া খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে জানি কিন্তু আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় এবং আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানিনা এছাড়াও আজওয়া খেজুর এর দাম, এর পুষ্টি উপাদান ইত্যাদি আরও আজওয়া সম্পর্কে জানতে সম্পন্ন পুষ্টি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আজোয়া খেজুর সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধানও উত্তর পাবেন এবং সঠিক নিয়মে এবং সঠিক আজওয়া খেজুর খেয়ে উপকৃত হবেন।

ভূমিকা

বর্তমানে খেজুরকে সুপার ফুড হিসেবে গণ্য করা হয়। এই খেজুর খাওয়ার যেমন ইসলাম ধর্মে বেশ গুরুত্ব রয়েছে তেমনি বিভিন্ন গবেষণাও প্রমাণিত হয়েছে এর উপকারিতা ও বিভিন্ন রোগ সমাধান করে। তবে এটি এখন আর শুধুমাত্র মুসলমান ধর্মের খাবার নয় সকল ধর্ম, জাতি নির্বিশেষে সকলেই এর উপকারিতা নিচ্ছে।
এজন্য আজ আমি আপনাদের মাঝে সঠিক আজওয়া খেজুর চিনে উপকৃত হওয়ার জন্য আজওয়া খেজুর চেনার উপায়, সঠিকভাবে আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম, আজওয়া খেজুরে কি কি পুষ্টি উপাদান এবং বাংলাদেশ এর দাম কত ইত্যাদি আরো আজওয়া খেজুর সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

আজওয়া খেজুরের উপকারিতা

মুসলমানদের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় ফল এবং খাবার ছিল খেজুর। মহান আল্লাহ তায়ালা খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে ২৬ বার খেজুর নামটি পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেন। পবিত্র কোরআনে সূরা মরিয়মের ২৩ নম্বর আয়াত ও সূরা আল আমের ৯৯ তম আয়াতে খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

সাধারণত মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর দিয়ে নাস্তা করতেন এবং পবিত্র মাহে রমজান মাসে খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার ও সেহেরী করার কথা উল্লেখ করেছেন। আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের হাতে আজওয়া খেজুরের বীজ রোপণ করেন কারণ এই খেজুর বিশেষভাবে রহমতময়।

প্রিয় নবী (সা.) বলেন, কারো বাড়িতে খেজুর গাছ থাকলে তাকে গরিব বলা যাবে না। এই খেজুরের উপকারিতা এতটাই বিস্তৃত যে আজওয়া খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজওয়া খেজুরের বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খুরমা খাবে ওই ব্যক্তির উপর সারাদিনে কোন প্রকার জাদু ও বিষ শরীরে কার্যকর হবে না।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আরও বলেন আজওয়া খেজুর হলো জান্নাতের ফল আর এর মধ্যে রয়েছে বিষের নিরাময়। হযরত আয়েশা রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেছেন, নিশ্চয়ই আলিয়ার আজওয়া খেজুর রোগ নিরাময়কারী এবং প্রাতঃকালীন প্রতিষেধক। এছাড়াও খেজুর এবং আজুয়া খেজুর সম্পর্কে ইসলামে আরো বর্ণনা রয়েছে।

বিজ্ঞানীদের মতে ও আজওয়া খেজুর বিশেষ কিছু গুণের অধিকারী। গবেষণায় দেখা গিয়েছে আজুয়া খেজুরে কোন প্রকার ফ্যাট নেই এবং যতটুকু ফ্যাট রয়েছে তা স্বাস্থ্যসম্মত ফ্যাট ও মানব দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়াও খেজুরে আরও বিভিন্ন ধরনের গুনাগুন রয়েছে যা নিয়মিত খেলে মানবদেহ বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে সুরক্ষা পাবে। তাহলে চলুন দেখে নেই আজওয়া খেজুর নিয়মিত খেলে আপনি কি কি ভাবে উপকৃত হবেন-

চোখের সুস্থতা: খেজুরে রয়েছে ভিটামিন "এ"। ভিটামিন "এ" এর গুরুত্বপূর্ণ প্রধান উপাদান হচ্ছে বিটা ক্যারোটিন। আর এ বিটা ক্যারোটিন আমাদের চোখে ঝাপসা দেখা ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে এবং চোখ সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধি করে: আজওয়া খেজুরে রয়েছে ফ্লেভোনয়েডস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম যা স্নায়ু কোষের দুর্বলতা ও স্নায়বিক বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে উঠাতে বেশ সহায়তা করে। এছাড়াও স্মৃতিশক্তির উন্নতি , ডিমেনশিয়া ও আলঝেইমার্স এর মত মারাত্মক স্নায় রোগ গুলো প্রতিরোধ করতে বেশ সহায়তা করে এই খেজুর।

ওজন কমাতে: আজুয়া খেজুর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। আমরা সকলেই জানি ফাইবার জাতীয় খাদ্য আমাদের খুদা নিয়ন্ত্রণ ও অনেকক্ষণপেট ভরে রাখে সহায়তা করে ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ বা কমে যায়। তাই ওজন কমাতে চাইলে আপনার খাদ্য তালিকায় বা ডায়েট চাটে আজুয়া খেজুর রাখতে পারেন।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: হৃদরোগের নিরাময়ক বা ঝুঁকি কমাতে বেশ কার্যকরী আজওয়া খেজুর। আজওয়া খেজুরে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান ও গুনাগুন রয়েছে যা হৃদপিন্ডের স্পন্দন সঠিক রাখতে সহায়তা করে এবং হার্ট সুস্থ রাখে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের শরীরে প্রয়োজন ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাদ্য। আজওয়াখেজুরে অতিমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে এজন্য উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে চাইলে আপনার খাদ্য তালিকায় আজুয়া খেজুর রাখতে পারেন।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: কোন ব্যক্তির হজম শক্তি দূর্বল ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। শরীরে ফাইবার জাতীয় খাদ্যের অভাব দেখা দিলে হজম শক্তি কমে যায়। মূলত হজম শক্তি বা পাচনতন্ত্রের ক্রিয়া সচ্ছল করে ফাইবার জাতীয় খাদ্য। আজোয়া খেজুর উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় এটি পাকস্থলীর হজম ক্রিয়াকে সক্রিয় করে এবং খাবার দ্রুত হজম করতে সহায়তা করে ও পাচনতন্ত্রের গঠন সঠিক করে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

চিনির বিকল্প: যারা বেশি মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য চীনের বিকল্প হিসেবে খেজুরের গুড় বা খেজুর অথবা খেজুরের রস হতে পারে যা অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত ও স্বাস্থ্যকর । এটি চিনির চাইতে বেশি স্বাস্থ্যসম্মত হবে আপনার পরিবারের জন্য।

লিভার ও পাকস্থলী শক্তিবর্ধক: লিভারকে সুস্থ রেখে লিভারের কার্যক্ষমতা ও পাকস্থলী শক্তিবদ্ধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে আজওয়া খেজুর। আজওয়া খেজুর দেহে ছাঁকনি হিসেবে ক্ষতিকারক ও রক্তে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। ফলে হজম ক্রিয়ায় কোন উপকার ব্যাঘাত ঘটে না ফলে পাকস্থলী শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং লিভার সুস্থ থাকে।

রক্তশূন্যতা: একজন সুস্থ ব্যক্তির জন্য যে পরিমাণ আয়রন প্রয়োজন তার ১১ ভাগই পূরণ করতে পারে আজওয়া খেজুর। আয়রনের অভাব দেহের রক্তশূন্যতার মূল কারণ। এই আয়রনের অভাব বা ঘাটতি খুব সহজেই দূর করতে পারে আজওয়া খেজুর যার। ফলে আপনি নিয়মিত আজওয়া খেজুর খেলে আপনার শরীরে রক্তশূন্যতা দূর হবে।

ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়: আজুয়া খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও ভিটামিন সি আমাদের ত্বক হতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা খুব সহজেই দূর করতে পারে। যেমন- চর্মরোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া, তৈলাক্ত ত্বক হতে ব্রণ, ত্বকের বিভিন্ন প্রদাহ, ত্বকের রক্ষতা শুষ্কতা, মলিন হয়ে যাওয়া ও ত্বক হতে উজ্জলতা হারিয়ে যাওয়া ইত্যাদি সকল সমস্যা খুব সহজেই দূর করতে পারে। এ সকল সমস্যা থেকে আপনার ত্বককে দূরে রাখতে চাইলে নিয়মিত আপনার ডায়েট যাতে আজও খেজুর যুক্ত করতে পারেন।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে: চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে লিউটেন ও জিক্সাথিন উপাদান। আজওয়া খেজুরে থাকা ভিটামিন এ রোডোপসিন ও রেটিনোয়াইড চোখের প্রেগন্যান্ট উৎপাদন করে এবং লিউটেন ও জিক্সাথিন উপাদান সরাসরি চোখের রেডিনাই কাজ করে চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আজওয়া খেজুরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট- ক্যারোটিনয়েডস, এমিনো এসিড, ফ্লেভোনয়েডস, ফেনোলিক এসিড যা মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। আপনি যদি নিয়মিত সাতটি করে আজওয়া খেজুর সকালের নাস্তাই কিংবা যেকোনো সময় খান তাহলে কোন প্রকার রোগ আপনার শরীরে আক্রমণ করবে না।

শুষ্ক কাশি ও কফ দূর করে: শুষ্ক কাশি, বুকের ভিতরে কফ জমে থাকা ইত্যাদি মূলত শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতির কারনে হয়ে থাকে এছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে কিছুদিন পর পর সর্দি, কাশি, জ্বর সমস্যা শরীরের লেগেই থাকে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধক: আজওয়া খেজুরে প্রাকৃতিকভাবে রয়েছে শর্করা যা রক্তে গ্লুকোজ ও চর্বির মাত্রা হ্রাস করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে সেই সাথে রক্তে ইনসুলেনের মাত্রা কম করতে সহায়তা করে। সাধারণত একজন ডায়াবেটিস রোগী দিনে তিন থেকে চারটি আজওয়া খেজুর খেতে পারে তবে খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে খাবেন। কারণ ডায়াবেটিস রোগীর মিষ্টি জাতীয় খাদ্য খাওয়া নিষেধ রয়েছে তবে খেজুরে থাকা মিষ্টি রোগের জন্য তেমন কোন ভয়ের কারণ নয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধক: আজওয়া খেজুরে রয়েছে বিটা ডি গ্লুকেন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের ক্ষতিকারক পদার্থ ও এর বিরুদ্ধে লড়াই করে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে খেজুরে থাকা পুষ্টি উপাদান ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ ও টিউমার সৃষ্টিকারী পদার্থের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ক্ষতিকারক কোষ গুলোকে ধ্বংস করে। এছাড়াও মুখগহ্বরের ক্যান্সার, মূত্রথলির ইনফেকশন রোধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে আজওয়া খেজুর।

পেটের গ্যাস দূর করে: শরীর থেকে গ্যাসের সমস্যা দূর করতে চাইলে পাচনতন্ত্রের প্রক্রিয়া বা খাবার ডাইজেস্ট করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। আর এই পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে চাইলে ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে যা আজওয়া হুজুরে বিদ্যমান রয়েছে।পেটের হজম ক্রিয়া সুষ্ঠু, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি সমস্যা আজওয়া খেজুরে থাকা ফাইবার খুব সহজে সমাধান করতে পারে।

বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ প্রতিরোধী: আজওয়া খেজুরে থাকা ফেনোলিক এসিড ও ফ্লেভোনয়েডস অ্যাসিড মানব দেহের বিভিন্ন স্থানের ব্যথা, ক্ষত, প্রদাহ ও ফুলে যাওয়া রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

গর্ভবতী অবস্থায়: গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে সকল ধরনের পুষ্টি থাকা অত্যন্ত জরুরী। যেকোনো একটি পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে মা ও গর্ভে থাকা বাচ্চার বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। একজন গর্ভবতী মায়ের দৈনিক ক্যালসিয়াম, আয়রন, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, ফাইবার ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের অত্যন্ত প্রয়োজন পড়ে। এমন অবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা যদি নিয়মিত আজওয়া খেজুর খায় তাহলে সামান্য হলেও এ সকল পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি আজওয়া খেজুর মেটাতে পারবে।

গর্ভধারণ সহজ: একজন গর্ভবতী নারীর জন্য সবচাইতে খুশির ও বিপদজনক সময় হচ্ছে সন্তান প্রসব। আরে সন্তান প্রসব সহজ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে আজওয়া খেজুর। গর্ভ অবস্থায় নিয়মিত আজুয়া খেজুর খেলে জরায়ুর পেশি সক্রিয় সক্রিয় করে নরমালে সন্তান জন্মদান সহজ করে।

প্রসব-পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য: অনেক গর্ভবতী মহিলার রয়েছে যাদের নরমালে প্রসবের পর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। এটি মূলত ফাইবার জড়িত খাবারের ঘাটতি এবং প্রসবের কারণে হয়ে থাকে। এছাড়া শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ঘাটতি দেখা দিলেও কষ্ট পাঠানো হয়ে থাকে। যেহেতু আজওয়া খেজুরের উচ্চ ফাইবার রয়েছে এজন্য প্রসবের পর একজন নারীকে বিশেষ খেয়াল হিসেবে নিয়মিত খেজুর খাওয়াতে পারেন।

রক্তক্ষরণ কমাই: প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও প্রসব পরবর্তী সময়ে জরায়ুর বিভিন্ন সমস্যা ও পাইলস্ প্রতিরোধে আজওয়া খেজুর খেতে পারেন। এছাড়াও প্রসব পরবর্তী সময়ে রক্তস্বল্পতা দূর করতে আজও খেজুর খেতে পারেন কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, কপার ও বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ রয়েছে যার নতুনভাবে রক্ত উৎপাদন করতে সহায়তা করবে।

কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি: কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ফাইবার জাতীয় খাদ্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এছাড়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুনির বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার। একসঙ্গে একটি খাবারে পেতে হলে আপনি নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় আজও খেজুর রাখতে পারেন। কারণ আজওয়া খেজুর এ সমস্ত উপাদান বিদ্যমান রয়েছে ফলে খুব সহজেই আজওয়া খেজুর আপনার শরীর হতে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করবে।

তারুণ্য ধরে রাখতে: অতিরিক্ত কর্মব্যস্ততা, সঠিক খাবার সঠিক সময়ে না খাওয়া, পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া ইত্যাদি আরও বিভিন্ন কারণে বর্তমানে মানুষের মাঝে অল্প বয়সেই বয়সের ছাপ চেহারায় পুরিলক্ষিত হচ্ছে। বয়সের ছাপ, কুঁচকে যাওয়া ত্বক, উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া, চেহারা মলিন হয়ে যাওয়া, ত্বকের টিস্যু বা কোষ নির্জন হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে আমাদের প্রয়োজন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী।
এই কর্মব্যস্ত জীবনে স্বল্প সময়ে সকল পুষ্টি উপাদান পেতে হলে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন আজওয়া খেজুর। কারণ আজওয়া খেজুরে আমাদের ত্বকে মৃত কোষ ও টিসুকে রিপেয়ার করতে বেশ ভূমিকা রাখে এবং ত্বকের তারুণ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।

দাঁত ও হাড় মজবুত: আজওয়া খেজুরে থাকা ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ধাতব লৌহ ও খনিজ যা দাঁত, দাঁতের মাড়ি মজবুত শক্ত এবং হাড়ের গঠন, মজবুত ও সবল করে তোলে।

চুল পড়া বন্ধ: নিয়মিত খাদ্য তালিকায় আজওয়া খেজুর রাখলে চুলের স্কার্ফে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন- খুকসি, ক্ষত, বিভিন্ন সংক্রমণ এবং চুলের আগা ফেটে যাওয়া, প্রাণহীন চুল পাতলা হয়ে যাওয়া ও চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে গিয়ে অতিরিক্ত চুল পড়া ইত্যাদি এ সকল সমস্যা গুলোর খুব সহজেই দূর করতে পারে আজওয়া খেজুর।

চুলের যত্নে: আজওয়া খেজুরে থাকা আয়রন মাথার স্কার্ফে রক্ত সঞ্চালন সচল এবং বাড়িয়ে দেয় ফলে আগা শক্ত এবং চুল ঘন, মজবুত ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

হার্ট সুস্থ : আজওয়া খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি যা আমাদের রক্তের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এনে হার্টের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক, রক্তনালী সংকোচন বন্ধ হওয়ার রোধ, হৃৎপিণ্ডে স্বাভাবিকভাবে রক্ত সরবরাহ ও অন্ত্রের সকল কার্যকারিতা উন্নত করতে হার্ড সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

এছাড়াও এছাড়াও আজওয়া ক্ষেত্রে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন আমাদের মানসিক অবস্থার উন্নতি, অনিদ্রা দূর করতের, বিঘ্নতার ঘাটতি, মানসিক টেনশন দূর করতে, উদ্বেগ, নায়ক ওশের আঘাত প্রতিরোধ করতে, কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, শরীরে ক্লান্তি দূর করতে, ফুসফুস সুরক্ষা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ, ঠান্ডা জনিত সমস্যা, অ্যাজমা, যকৃৎ দূর করে, রুচি বাড়াতে,

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য, নারীদের শ্বেতপ্রদর ও শিশুর রিকেট নিরাময়ে,মুখের অর্ধাঙ্গ রোগ, পক্ষঘাত, পাতলা পায়খানা বন্ধ করে, শ্লেষ্মা, মুখের লালাকে ভালোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করে, নেশাগ্রস্তদের অঙ্গক্ষয় প্রতিরোধ করে , শরীরের নার্ভ সিস্টেমকে সচল রাখে ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা খুব সহজে দূর করতে সহায়তা করে আজওয়া খেজুর। এ সকল সমস্যা দূর করতে আপনার খাদ্য তালিকায় বা ডায়েটে আজুয়া খেজুর রাখতেই পারেন।

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়

ধর্ম, বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান ব্যক্তিরা খেজুরের উপকারিতা জেনে বর্তমানে আজওয়া খেজুর খাওয়ার বেশ জনপ্রিয়তা হচ্ছে। যেহেতু আজওয়া খেজুর সবচাইতে দামি এজন্য অনেকেই রয়েছে যারা অন্য খেজুর আজওয়া খেজুর হিসেবে বিক্রয় করছে। আপনি যদি সঠিক আজোয়া খেজুরের উপকারিতা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আসল আজওয়া খেজুর চিনতে হবে। আর সঠিক আছে খেজুর চেনার কিছু উপায় রয়েছে চলুন জেনে সঠিক আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়-

  • মদিনার আসল আজওয়া খেজুর চেনার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে আজওয়া খেজুরের গায়ে ডোরাকাটা দাগ বা শিরা থাকে।
  • খেজুর যখন ভাঙ্গা হবে তখন তার ভেতরটা সাদা কালো থাকলে বোঝা যাবে সেদিন পুরাতন এবং পোকা ধরা খেজুর এবং ভেতরটা যদি সাদা হয় তাহলে ভালো এবং কিছুদিন আগেই প্যাকেজিং করা হয়েছে।
  • আজও আজওয়া খেজুরের গা মসৃণ হবে না।
  • আজো খেজুর কালো কুচকুচে জামের মত।
  • আজওয়া খেজুরের ডোরাকাটা শিরা গুলো কোঁকড়ানো থাকবে স্টিল নয়।
  • আজওয়া খেজুরের যে শিরা গুলো থাকে সেগুলো গোল্ডেন কালারের বা লালচে রঙের হয়।
  • আসল আজুবা খেজুর কিছুক্ষণের জন্য বাইরে রাখলে আশেপাশে পিঁপড়ে আসলে বুঝবেন সেটা নকল খেজুর কারণ নকল খেজুরে চিনি দেওয়ার ফলে চীনের গন্ধে পিঁপড়া আশেপাশে ঘোরে।
  • আজওয়া খেজুর কখনোই লাল রঙের হয় না।
  • আজওয়া খেজুরে বোটা থাকবে, না থাকলে বুঝবেন সেটা নকল।
  • আজওয়া খেজুরের বিচি ছোট মোটা এবং চ্যাপ্টা হয়।
  • আজুয়া খেজুরের গাছ সর্বোচ্চ ১০০ ফিট পর্যন্ত লম্বা।
  • আজওয়া খেজুরের মিষ্টি গন্ধ রয়েছে কিন্তু খেতে অতিরিক্ত মিষ্টি নয়।
  • আজওয়া খেজুরটি নরম হবে শক্ত বা শুকনো নয়।
  • আজওয়া খেজুর মাঝারি সাইজের এবং গোলাকার হয়।
আজওয়া খেজুরের ন্যায় এমন কিছু খেজুর রয়েছে যেগুলো দেখতে অনেকটাই আজওয়া খেজুরের মত তবে সেগুলো আজও খেজুরের মত পুষ্টি গুনাগুন সম্পূর্ণ নয়। নিম্নে আজওয়া খেজুরের মতো দেখতে কিন্তু আজওয়া কিছু নয় এমন কিছু খেজুরের নিম্নে চিত্র দেখানো হলো। যেগুলো দেখে আপনি সচেতন হয়ে সঠিক আজওয়া খেজুর কিনতে পারবেন-

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়


আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়
এই দুইটি খেজুর দেখতে আজওয়া খেজুরের মতই কিন্তু এ দুটি খেজুর আজওয়া খেজুর নয় এজন্য খেজুর কেনার সময় অবশ্যই সাবধান থাকবেন।

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়
চিত্রে দেখানো ছবিটির মতো আসলে আজওয়া খেজুর হয়ে থাকে। অবশ্যই খেজুর কিনার সময় এমন আজওয়া খেজুর দেখে কিনবেন।

আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম

ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আজওয়া খেজুরের পুষ্টি উপাদান, গুনাগুন ও উপকারিতার দিক দিয়ে একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। তবে আমাদের এর উপকারিতা গুণাগুণ ও পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানলে হবে না বরং আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম অর্থাৎ কিভাবে আজওয়া খেজুর খেলে এর সম্পূর্ণ পুষ্টি উপাদান পাব এ সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি। এজন্যই আজ আমি আপনাদের মাঝে আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব চলুন জেনে নেই-

সকালে খালি পেটে: সকালে খালি পেটে আজুয়া খেজুর খেলে সারাদিন কর্ম করার এনার্জি বা ক্ষমতা পাওয়া যায় এছাড়াও ব্যায়াম করার আগে কিংবা পরে খেলে শরীরে দূষিত বের হয়ে যায়। এছাড়াও ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যাক্তি সকালে সাতটি আজওয়া খুরমা খাবে সে ব্যক্তি শরীরে কোন প্রকার বিষ ও জাদু কারো ক্ষতি করতে পারবে না'।(বুখারি, হাদিস : ৫৪৪৫)।
আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, 'সকালে খালি পেটে মদিনার উঁচু ভূমি থেকে আজওয়া খেজুর খেলে সে ব্যক্তির সেই দিন কোন প্রকার জাদু অথবা বিষক্রিয়া আরোগ্য করতে পারবে না'।(মুসনাদে আহমাদ: ২৩৫৯২)

রাতে ঘুমানোর সময়: আপনি যদি সারাদিনের কর্মের ক্লান্তি খুব সহজে দূর করতে চান তাহলে রাত্রে ৬ থেকে ৭ টি আজওয়া খেজুর খেতে পারেন যা খুব সহজে আপনার শরীরকে সতেজ ও প্রাণবন্তক করে তুলবে।

ভিজিয়ে খেজুর খাওয়ার নিয়ম: সাত থেকে আটটি আজওয়া খেজুর এক গ্লাস পানিতে বিচি বাদে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খেতে পারেন। এতে আপনি খেজুরের সকল পুষ্টি উপাদান পাবেন। কারণ খেজুর পানিতে সারারাত ভেজালে এর গুনাগুন আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। একটি হাদিসে রয়েছে 

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রে এক গ্লাস পানিতে সাত থেকে আটটি খেজুর এবং এক মুঠ পরিমান কিসমিস এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে সকালে খেতে বেশ পছন্দ করতেন। একে নাবিস কি বলা হয়। এভাবে খেলে কিসমিস ও খেজুরের গুনাগুন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়।

দুধ ও খেজুর: খেজুর ও দুধ দুইটি বেশ পুষ্টির গুনা সম্পন্ন খাবার। এ দুটি খাবার একসঙ্গে খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্ট প্রদানের ঘাটতি ও চোখের সমস্যা দূর হবে। পরিমাণ মতো দুধ নিয়ে এর ভেতরে বিচি ছাড়ানো আজওয়া খেজুর ভালো করে জাল দিতে থাকতে হবে। দুধের কালারযখন হালকা লালচে হয়ে আসবে তখন চুলা বন্ধ করে দিয়ে। ঠান্ডা করে খেতে পারেন।

আজওয়া খেজুর বিচিসহ বড়ি তৈরি করে: পবিত্র আল কুরআনে আজুয়া খেজুরের উপকারিতা একাধিকবার বর্ণনা করা হয়েছে এবং এটি গবেষণা ও প্রমাণিত হয়েছে যে আজওয়া খেজুর হৃদরোগ নিরাময়ে বেশ সহায়তা করে। হযরত সা’দ (রাঃ) বর্ণিত, আমি একবার বিষ অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার অসুস্থতার কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন এবং আমাকে দেখে তিনি আমার বুকের ওপর হাত রাখেন ফলে আমার হৃদয়ের শীতলতা অনুভূত হয়।

তিনি বলেন তুমি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং এটি সারানোর জন্য হারিশা ইবনে কাওলাদার কাছে যাও তিনি শাকিব কোর্টের অধিবাসী এবং তিনি একজন বেশ অভিজ্ঞ চিকিৎসক। নবীজির কথা শুনে হযরত সা’দ (রাঃ) কাছে যান এবং তিনি মদিনার সাতটি আজওয়া খেজুর বিচিসহ চূর্ণ করে সাতটি বড়ি তৈরি করে দেন"।(আবু দাউদ: ৩৮৩৫)। এ থেকেআমরা বুঝতে পারি আজওয়া খেজুর ও এর বিচিতে ও উপকার রয়েছে।

আজওয়া খেজুর দাম-আজওয়া খেজুর ছবি

সবচাইতে দামি ও সুস্বাদু এবং পুষ্ট গুণে ভরপুর খেজুর ফল হচ্ছে আজওয়া খেজুর। যেহেতু এটি অনেক বেশি দামি এজন্য আমরা অনেকে এটি চিনতে পারিনা আবার এটা সঠিক দামও জানিনা। এর জন্যই আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে আজওয়া খেজুর দাম-আজওয়া খেজুর ছবি তুলে ধরব যেন আপনারা আজওয়া খেজুর দেখে চিনতে পারেন এবং সঠিক দাম দিয়ে সঠিক আজওয়া খেজুর কিনতে পারেন-

বর্তমানে আজওয়া খেজুর অনলাইন কিংবা বাজারে বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হয়। আজওয়া খেজুরের ভিন্ন ভিন্ন দাম রয়েছে এর কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে। তবে সবচেয়ে ভালো আজওয়া খেজুর ১০০০ থেকে বিক্রয় করা হয় ১২০০ টাকা মূল্যে। আজওয়া খেজুরের মূল্য এত বেশি হওয়ার কারণ এটি সৌদি আরব, মিশর, ইরান ইত্যাদি হতে আমদানি করা হয়।

নিম্নে আজওয়া খেজুরের ছবি দেয়া হলো-

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়

আজওয়া খেজুরে কোন ভিটামিন থাকে?

আজওয়া খেজুরের উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি কিন্তু আজওয়া খেজুরে কোন ভিটামিন থাকে? এবং কি পরিমাণে তাকে আমরা আমরা হয়তোবা অনেকেই জানিনা। এজন্যই আজ আমি আপনাদের মাঝে আজওয়া খেজুরে কোন কোন পুষ্টি উপাদান কি কি পরিমাণে এবং কি কি ভিটামিন কি পরিমাণে রয়েছে নিম্নে একটি ছকের মাধ্যমে তুলে ধরলাম-

ভিটামিনের উপাদান

খনিজের উপাদান

পুষ্টির উপাদান

উপাদান

পরিমান

উপাদান

পরিমাণ

উপাদান

পরিমাণ

ভিটামিন এ

১০ আন্ত.ইউনিট

ক্যালসিয়াম

৩৯ মিলিগ্রাম

শক্তি

১১৭৮ ক্যালোরি

ভিটামিন সি

০.৪ মিলিগ্রাম

ম্যাগনেসিয়াম

৪৩ মিলিগ্রাম

শর্করা

৭৫.০৩ গ্রাম

  ভিটামিন ই

০.০৫ মিলিগ্রাম

লোহ

১.০২ মিলিগ্রাম

চিনি

৬৩.৩৫ গ্রাম

ভিটামিন কে

২.৭ মাইক্রগ্রাম

ম্যাঙ্গানিজ

০.২৬ মিলিগ্রাম

খাদ্য আশ

৮ গ্রাম

ভিটামিন বি ৬

০.১৬৫ মিলিগ্রাম

পটাশিয়াম

৬৫৬ মিলিগ্রাম

প্রোটিন

২.৪৫ গ্রাম

নায়াসিন (বি২)

১.২৭ মিলিগ্রাম

ফসফরাস

৬২ মিলিগ্রাম

স্নেহ

০.৩৯ গ্রাম

ফোলেট (বি৯)

  ১৯মাইক্রগ্রাম

জিংক

০.২৯ মিলিগ্রাম





পানি

২০.৫৩ মিলিগ্রাম।



আজওয়া কোন খেজুর ভালো?

পুরো রমজান মাস জুড়ে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারাদিনের সিয়াম পালন শেষে ইফতারি করতেন খেজুরও পানি দিয়ে এবং কখনো কখনো সেহেরী শুধুমাত্র খেজুর খেয়েই করতেন। এর জন্য রমজান মাস ধরে খেজুরের চাহিদা থাকে অনেক বেশি এবং দামও থাকে অনেক বেশি। তবে আজওয়া খেজুর বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় না এটি বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

সবচেয়ে বেশি খেজুর উৎপাদিত হয় ইরাক, ইরান, সৌদি আরব, লেবানন, ইজিব, আলজেরিয়া, ওমান, মদিনা মনোয়ার ইত্যাদি। তবে আমরা কি জানি আজওয়া কোন খেজুর ভালো? অর্থাৎ কোন দেশের আজওয়া খেজুর সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু। সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু ও ভালো আজওয়া খেজুর হলো মদিনা মনোয়ার।

একটি হাদিস হতে বর্ণিত, নবী মুহাম্মদ (সাঃ) আজওয়া খেজুরের স্বাদ বেশ পছন্দ করতেন বিধায় এর উপকারিতা সম্পর্কে বেশ সচেতন ছিলেন, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রথম আজওয়া খেজুরের গাছ মদিনার কুবা মসজিদের কাছে রোপন করেছিলেন।

আজওয়া খেজুরের দাম বাংলাদেশ ২০২৪

প্রতিবছরই রমজান মাস এলে বাংলাদেশে খেজুরের চাহিদা ও দাম অনেক বেশি বেড়ে যায়। কারণ এতে যে সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা রমজানে সারাদিন সিয়াম সাধনার পর শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির চাহিদা মেটায়। এর জন্য অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতনতা ও উপকারিতা দিয়ে খেজুর কে সুপার ফুল হিসেবে বিবেচনা করেন। পুরো বিশ্ব জুড়ে প্রায় তিন হাজার প্রজাতিরও বেশি খেজুর রয়েছে।

কিন্তু আজওয়া খেজুর বাংলাদেশ উৎপাদিত হয় না এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি বছর প্রায় মিশর ১৬ লাখ মেট্রিক টন খেজুর উৎপাদন করে মিশর খেজুর উৎপাদনের দিক দিয়ে প্রথম স্থান রয়েছে এবং সৌদি আরব ১৫ লাখ মেট্রিক টন খেজুর উৎপাদন করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এছাড়াও ইরান, ইরাক, আলজেরিয়া, আফ্রিকা, তিউনিশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, দুবাই ইত্যাদি আরো অনেক দেশ রয়েছে যেগুলো ১২ লাখ, ১৩ লাখ, ১১ লাখ মেট্রিক টন খেজুর উৎপাদন করে থাকে।
বাংলাদেশ এ সকল দেশ থেকে ১০০ টেরও বেশি প্রজাতির খেজুর আমদানি করে থাকে যার মধ্যে রয়েছে মরিয়ম খেজুর, আজওয়া খেজুর, মাশরুক, আম্বার, ভিআইপি ইত্যাদি আরো বিভিন্ন ধরনের খেজুর। তবে আজওয়া খেজুর বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও সুস্বাদু খেজুর। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা আজওয়া খেজুরের দাম বাংলাদেশ ২০২৪ সালে কেমন চলছে।

আজওয়া খেজুর যেহেতু অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা হয় এজন্য এর দাম একটু বেশি তবে এর কোয়ালিটি ও গুণগত মান অনুসারে এর না দাম কম বেশি হয় যা ৮০০ থেকে ২৫০০ পর্যন্ত হয়। আজওয়া খেজুর চারটি কোয়ালিটিতে বিক্রি করা হয় । আপনি যদি ভিআইপি কোয়ালিটির কিনতে চান তাহলে বেশি দাম পড়বেন এবং কম গ্রেডের কিনতে চাইলে এর দাম কিছুটা কম হবে।

লেখক এর মন্তব্য

রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণের ভরপুর আজওয়া খেজুর সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আশা করি উপরোক্তার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে বিভিন্ন রোগ সমাধান ও বিশেষ গুণের অধিকারী আজওয়া খেজুর সম্পর্কে জানিয়ে সহায়তা করবেন। এমন আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন আসসালামু আলাইকুম/আদাব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url