ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালামু আলাইকুম/আদাব, আজকে আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা, ইসবগুলের ভুষি কতদিন খাওয়া যায়? ইত্যাদি। এগুলো প্রশ্নর
উত্তর ছাড়াও ইসবগুলের ভুসি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার
বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে ইসবগুলের ভুসি সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা
রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার সঠিক
নিয়ম, পদ্ধতি, পরিমাণ, সময়সীমা ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে সঠিকভাবে ইসবগুলের ভুসি
খেতে পারবেন।
ভূমিকা
স্বাস্থ্যের প্রতি যারা বিশেষভাবে নজর দিয়ে থাকে তাদের কাছে হয়তো ইসবগুলের ভুসি
বেশ পরিচিত। তবে বর্তমানে আমরা অনেকেই স্বাস্থ্যের প্রতি বেশ সচেতনশীল যার কারণে
পেটের সমস্যা কিংবা পেটকে সুস্থ রাখতে অনেকের কাছেই ইসবগুলের ভুসি বেশ ভরসা
সমৃদ্ধ একটি খাবার। কিন্তু আপনি ইসবগুল খাওয়ার ক্ষেত্রে যদি নতুন হন বা খেতে
চাচ্ছেন তাহলে অবশ্যই সম্পন্ন পোষ্টটি পড়বেন।
কারণ আজ আমি আপনাদের মাঝে ইসবগুলের ভুসি সম্পর্কে যারা স্বাস্থ্যের উপকার বা
পেটকে সুস্থ রাখতে ইসবগুলের ভুসি প্রথমবার খেতে চাচ্ছেন এবং এর সম্পর্কে সঠিক
তথ্য জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্যই ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
ইসবগুলের ভুষি খেলে কি মোটা হওয়া যায়? ইসবগুলের ভুসি কত সময় ভিজিয়ে রাখতে
হয়?
এইসবগুলের ভুসি কতদিন খাওয়া যায়, ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক সময় কখন ইত্যাদি
সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে আলোচনা করেছি । আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে অনেক
বেশি উপকৃত হবেন।
ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কিংবা পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে
সহায়ক হিসেবে ইসবগুলের ভুসি উপকারিতা অনেক বেশি। প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক
ভাবে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানের ঔষধ হিসেবে ইসবগুলের ভুসি খেতে পরামর্শ
দেন ডক্টররা। তবে মাত্র অতিরিক্ত কিংবা সঠিক পদ্ধতি অনুসারে না খেলে এর কিছু
অপকারিতা ও রয়েছে এজন্য আজ আমি আপনাদের মাঝে ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন জেনে নেই ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা-
ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা-ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা
ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্য নিম্নে ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
আলসারজনিত সমস্যা দূর: ইসবগুলের ভুসিতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা
খুব সহজে আমাদের পেটে বিভিন্ন ধরনের পীড়া দূর করতে সহায়তা করে। ইসবগুলের ভুসিতে
রয়েছে মিউসিলেজিনাস যা অতিরিক্ত গ্যাসের কারণে হওয়া আলসারের ব্যথা কম করতে
সহায়ক হিসেবে কাজ করে। আপনার যদি আলসার থাকে তাহলে এর ব্যথা প্রশম করতে নিয়মিত
খাদ্য তালিকায় দুই থেকে তিন চামচ ইসবগুলের ভুসি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেতে
পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর: আমরা অনেকেই আছি যারা সবচেয়ে বেশি ইসবগুলের ভুসি
মূলত পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে কনস্টিবেশন বা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আরাম
পাওয়ার জন্য খেয়ে থাকি। কারণ এতে থাকা বিভিন্ন ধরনের পেটের জন্য উপকারী পুষ্ট
উপাদান পেটে কোন প্রকার বিষক্রিয়া বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ব্যতীত বিভিন্ন ধরনের
পেটের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
ইসবগুলের ভুসিতে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও সলিউঅ্যাবল ফাইবার অর্থাৎ আঁশ যা
কিছুটা পানিতে দ্রবীভূত হয় আর কিছুটা অদ্রবণীয় অবস্থায় থাকে। ইসবগুলের ভুসি
আপনি যেভাবেই খান না কেন এটি আপনার শরীরে লেক্সিটিভের কাজ করবে। অর্থাৎ লেক্সিটিভ
প্রোপারটিজ আমাদের পেটে গিয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য(কনস্টিপেশন) এর সমস্যা দূর করতে
অর্থাৎমলত্যাগ সহজ ও পেটের বিভিন্ন পীড়া দূর করতে সহায়তা করবে।
আরো পড়ুনঃ আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা
কোষ্ঠকাঠিন্য মূলত পেট হতে মল বা অপদ্রব্য গুলো ত্যাগ হতে কষ্ট হওয়া বা না
হওয়া। ইসবগুলের ভুসি আমাদের পেটে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করে এবং মল নরম
করে অন্ত্রের দেওয়ার পিচ্ছিল করে ফলে মল ত্যাগে কোন প্রকার কষ্ট হয় না ফলে সহজে
মলত্যাগ হয়। এর জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যায় ভালো ফলাফল পেতে হলে অল্প সময়
দুধ কিংবা গরম বা ঠান্ডা পানিতে ৫থেকে ১০ গ্রাম বা ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি ভিজিয়ে
রেখে খেয়ে ফেলুন কারণ বেশি সময় ধরে এটি ভিজিয়ে রাখলে ভেজানো পানি শোষণ করে
নেবে ফলে এর কার্যকারিতা অনেকটা কমে যাবে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: ইসবগুলের ভুসি একটি প্রিবায়োটিক ও বাল্ব গঠন রেচক।
ইসবগুলের ভুসি আমাদের অন্ত্রকে সতেজ, সুস্থ এবং মলকে নরম করে দ্রুত ও সহজে
নিষ্কাশন করতে সহায়তা করে ফলে পেট সুস্থ সবল ও বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা হওয়া
থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি আমাদের শরীরের পাচনতন্ত্রে ভালো
ব্যাকটেরিয়া, স্বাস্থ্যকর টিস্যু, শরীরের বিভিন্ন কোকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে।
যেহেতু এটি খুব সহজেই মলকে নরম করে পাচনতন্ত্রের দেয়ালে একটি পিচ্ছিল জেল তৈরি
করে বিভিন্ন ধরনের অপ্রদ্রব্য শরীর থেকে মলত্যাগের মাধ্যমে সহজে বের করে দিয়ে
পাচনতন্ত্রকে ভালো রাখার ফলে খাবার দ্রুত হজম হয়।
প্রস্রাবের জ্বালা: প্রসবের জ্বালা প্রশম করতে ইসবগুলের ভুসি বেশ কার্যকরী
ভূমিকা রাখে। অল্প পানি খাওয়া কিংবা অত্যন্ত গরমে শরীর হতে অতিরিক্ত ঘাম এর
মাধ্যমে পানি বের হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের অনেকেরই প্রস্রাবের সময় অতিরিক্ত
জ্বালা অনুভূত হয় এ জ্বালা অনেকটাই প্রশমন করতে পারে ইসবগুলের ভুসি এর জন্য আপনি
শুধুমাত্র ইসবগুলের ভুসি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা আখের গুড়ের
শরবতের ভেতরে দুই থেকে তিন চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশে খেতে পারেন এতে দ্রুত প্রশম
অনুভূত হবে।
বিভিন্ন প্রদাহ/জ্বালাপোড়া: হাত-পা বা শরীর জ্বালা পোড়া বা প্রদাহ
অনুভূত হলে ঠান্ডা রাখতে ইসবগুলের ভুসি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের শরবত বা আখের গুড়ের শরবতের সঙ্গে খেতে
পারেন। যেমন-আখের গুড়, সামান্য লবণ, সামান্য লেবু, কয়েকটি পুদিনা পাতা ও
ইসবগুলের ভুসি দিয়ে তৈরি এক গ্লাস শরবত খেতে পারেন যা আপনার শরীরের বিভিন্ন
ধরনের জ্বালাপোড়া বা প্রদাহ দূর করতে বেশ সহায়তা করবে এবং শরীরকে ঠান্ডা
অনুভূতি দেবে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ: পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান হিসেবে যেমন
ইসবগুলের ভুসি ব্যবহার করা হয় তেমনি ডায়রিয়া প্রতিরোধক হিসেবে এর কার্যকারিতা
অনেক। আপনি শুনে হয়তো অবাক হচ্ছেন যে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা খুব সহজেই দূর করতে
আমরা সচরাচর ইসবগুলের ভুসি ব্যবহার করে থাকি তাহলে পাকস্থলীর দুটি ভিন্ন ধরনের
সমস্যা কিভাবে ইসবগুলের ভুসি সমাধান করতে পারে।
শুনতে অবাক হলেও সত্য ইসবগুলের ভুসি পাকস্থলীর দুইটা ভিন্ন ধরনের সমস্যা একই সাথে
সমাধান করতে পারে। ইসবগুলের ভুসি হলো দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবার। ইসবগুলের
ভুসির দ্রবণীয় ফাইবার গুলো আমাদের পাকস্থলীর অন্ত্রের পানি শোষণ করে ফুলে ওঠে
ফলে তরল মল দ্রুত আবদ্ধ করে শক্ত করে দেয়।
ভালো ফলাফল পেতে হলে আপনি ইসবগুলের ভুসির সাথে দই খেতে পারেন। দই এ থাকা
প্রোবায়োটিক আমাদের পাকস্থলীর ইনফেকশন গুলো দ্রুত সারাতে সহায়তা করবে। এর জন্য
আপনি তিন থেকে চার চামচ দইয়ের সঙ্গে দুই চামচ এসব গুলোর খুশি খাওয়ার পরে দিনে
দুইবার যেতে পারেন।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে: ইসবগুলের ভুসি মূলত রক্তে ক্লোলেস্টেরলের মাত্রা
নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ সহায়তা করে কারণ এটি একটি দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় আঁশযুক্ত
ফাইবার খাদ্য এছাড়াও ইসবগুলের ভুসি একটি হাইপোকোলেস্টেরলি ফুড। যার কারণে এটি
আমাদের শরীরে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এনে ভালো কোলেস্টেরলের
মাত্রা বৃদ্ধি করে ফলে হৃদ রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে এছাড়াও এটি রক্তে
ট্রাই-গিস্নসারাইডের মাত্রা ও কমাতে সহায়তা করে।
পাইলস প্রতিরোধ: ইতিমধ্যে আমরা হয়তো ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা সম্পর্কে
অবগত হয়েছি যে ইসবগুলের ভুসি প্রাকৃতিকভাবে ভরপুর দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় আঁশযুক্ত
খাবার। যেহেতু এটি একটি আঁশযুক্ত দ্রবণীয় ও দ্রবণীয় খাবার ফলে খুব সহজেই আমাদের
পাকস্থলীর অন্ত্রের পানিকে শোষণ করে মলকে নরম করে দ্রুত সহজে নিষ্কাশন করতে পারে।
ফলে আমাদের পেট পরিষ্কার থাকে এবং পাইলস জনিত সমস্যা দূর করতে বেশ সহায়ক হিসেবে
কাজ করে। এছাড়াও পাইলস এর ব্যথা ও বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের ক্ষত সারাতে ও বেশ
কার্যকারী ভূমিকা রাখে ইসবগুলের ভুসি। এর জন্য আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত
ঘুমানোর পূর্বে কুসুম গরম পানি কিংবা আখের গুড়ের সঙ্গে দুই থেকে তিন চামচ
ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেতে পারেন।
পেট ঠান্ডা রাখতে: পেটের জন্য ইসবগুলের ভুসি কতটা উপকারী আমরা হয়তো
ইতিমধ্যে অবগত হয়েছি। এর জন্য পেটকে সতেজ, সুস্থ ও পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
সমাধান করে পেটকে ঠান্ডা রাখতে নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন
ইসবগুলের ভুসি এক গ্লাস শরবত।
গ্যাসট্রিক প্রতিরোধক: ইসবগুলের ভুসিতে থাকা দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয়
আঁশযুক্ত ফাইবার আমাদের অন্ত্রের পানি শোষণ করে মলকে নরম করে দ্রুত নিষ্কাশন করতে
সহায়তা করে ফলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং পেটের ভেতরে থাকা বিভিন্ন ধরনের
গ্যাস্ট্রিক বের করে দেয়। ইসবগুলের ভুসি পাকস্থলীর ভেতরে গিয়ে একটি
প্রতিরক্ষামূলক আস্তরণ তৈরি করে যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক তৈরি হওয়া
থেকে সুরক্ষা দেয় এবং পাকস্থলীতে অত্যাধিক
পরিমাণে উৎপাদিত গ্যাস্ট্রিকের মাত্রা দ্রুত কমাতেও সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এজন্য
আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ভেজানো দুই থেকে তিন
চামচ ইসবগুলের ভুসি অথবা ঠান্ডা দুধের সঙ্গে মেশানো ২ থেকে ৩ চামচ ইসবগুলের ভুসি
অবশ্যই খাওয়ার পরে খাবেন। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের ফলে হওয়া পেটে জ্বালা কমানোর
জন্য আখের গুড়ের সঙ্গে দুই থেকে তিন চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেতে পারে।
তৃষ্ণা মেটাতে: প্রচন্ড গরমে শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে ঘাম বের হয়ে
যাওয়া কারণে শরীরে পানির ঘাটতি মেটাতে কিংবা রমজান মাসে শরীরকে সতেজ, সুস্থ ও
তৃষ্ণা মেটানো স্বাস্থ্যকর ও পেটের জন্য উপকারী এক গ্লাস শরবত হিসেবে আপনার খাদ্য
তালিকায় রাখতে পারেন হিসেবগুলো দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের শরবত
ওজন নিয়ন্ত্রণ: যেহেতু আজ আমি আপনাদের মাঝে ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করছি সেহেতু ইসবগুলের ভুসি
উপকারিতার মধ্যে আরেকটি সবচেয়ে বড় উপকারিতা হচ্ছে ইসবগুলের ভুসি মাধ্যমে ওজন
নিয়ন্ত্রণে আনা। ইসবগুলের ভুসির উপকারিতার মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক,
কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস ও আলসার ইত্যাদি সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করা।
এ সকল সমস্যাগুলো হয়ে থাকে মূলত আমাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে বজ্র পদার্থ বা
অতিরিক্ত পরিমাণে ক্ষুধা যার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড বা তৈলাক্ত
জাতীয় অ্যাসিটিক খাবার খেয়ে থাকি। আর এগুলো খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে
অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি জমে ফলে ওজন অনিয়ন্ত্রিত হারিয়ে বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আর অনিয়ন্ত্রিত হারে বৃদ্ধি পাওয়া চর্বি ফলের বাড়ন্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে
আমাদের শরীর থেকে এ সকল অপদ্রব্য বা বর্জ্য পদার্থ বের করতে হবে।যেহেতু ইসবগুলের
ভুসি খুব সহজেই আমাদের অন্ত্রের মলকে নরম করে দ্রুত নিষ্কাশন করে পেট পরিষ্কার
করে ফলে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ইসবগুলের ভুসি খেলে খুব সহজেই এ সকল বজ্র বের
হয়ে যাবে ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এছাড়াও এসব ইসবগুলের ভুসি আমাদের অনিয়ন্ত্রিত ক্ষুধা লাগা নিয়ন্ত্রণে আনে
অর্থাৎ পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা রাখতে সহায়তা করে। দ্রুত এবং ভালো ফলাফল পেতে
চাইলে নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানির সঙ্গে লেবুর
রস, ইসবগুলের ভুসি ও মধু মিশিয়ে খেতে পারে।
আইপিএস: আইপিএসসি চিকিৎসাতেও ইসবগুলের ভুসি বেশ উপকারী। আইপিএস রোগে যারা
ভুগছেন তাদের মূলত নিয়মিত পায়খানা ক্লিয়ার ভাবে হয় না অর্থাৎ কখনো কনস্টিপেশন
হয় আবার কখনো লুজ মোশন হয়। এর জন্য অনেক সময় ডক্টরের আইপিএস চিকিৎসার ক্ষেত্রে
ইসবগুলের ভুসি খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: ইসবগুলের ভুসিতে থাকা দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয়
আঁশযুক্ত ফাইবারের মধ্যে দ্রবণীয় আঁশযুক্ত ফাইবার আমাদের শরীরের রক্তের অতিরিক্ত
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে। ইসবগুলের ভুসি মূলত আমাদের
অন্তরে থাকা অতিরিক্ত পরিমাণে কোলেস্টেরল ও ফ্যাটকে জেলে পরিণত করে এবং মলের
মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। এছাড়াও ইসবগুলের ভুসি আমাদের অন্ত্রে একটি
পিচ্ছিল দেওয়াল তৈরি করে যেন তা অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্যাট শোষণ করতে না পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: ইসবগুলের ভুসিতে থাকা দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয়
প্রাকৃতিক আঁশযুক্ত ফাইবার যখন পাকস্থলীর অন্ত্রে গিয়ে জেল তৈরি করে তখন
ডায়াবেটিস রোগের শরীরে থাকা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্লুকোজ শোষণ গতি কম করে এবং
গ্লুকোজ গুলো ভেঙে ফেলে ফলে ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ডায়াবেটিস
রোগীরা কখনোই ইসবগুলের ভুষি বইয়ের সঙ্গে খাবেন না কিন্তু দুধ কিংবা কুসুম গরম
অথবা নরমাল পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।
তাহলে আমরা ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা তার মধ্যে আরেকটি উপকারিতা ও
অপকারিতা হল ইসবগুলের ভুসি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সহায়তা করে। তবে
ডায়াবেটিস যেহেতু অনেক জটিল একটি রোগ এর জন্য অবশ্যই কোন খাবার গ্রহণের পূর্বে
অবশ্যই আপনার ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে গ্রহণ করবেন।
ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা-ইসবগুলের ভুষির অপকারিতা
আমরা ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এখন
আমরা ইসবগুলের ভুসির অপকারিতা সম্পর্কে জানব কারণ কোন খাদ্য গ্রহণের পূর্বে
অবশ্যই তার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা রয়েছে কিনা তা সম্পর্কে জানা
অত্যন্ত জরুরী। ইসবগুলের ভুসি আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী যেমন জানা অত্যন্ত
জরুরী তেমনি সেটি আমাদের দেহের জন্য কিভাবে খেলে, কত পরিমানে খেলে এবং কি
পদ্ধতিতে খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে তা সম্পর্কে জানা অত্যন্ত বেশি জরুরী। তাই
চলুন জেনে ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা সাথে সাথে ইসবগুলের ভুসির অপকারিতা সম্পর্কেও
বিস্তারিত কিছু তথ্য-
পাকস্থলীর সমস্যা: কখনো কখনো ইসুবগুলের ভুষি অতিরিক্ত পরিমাণে এবং সঠিক
পদ্ধতি না জানার কারণে খেলে পাকস্থলীতে টানটানের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য
যাদের প্রথমবার এসবগুলি খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা সৃষ্টি হলে তা খাওয়া থেকে বিরত
থাকবেন। এছাড়াও জটিল কোন রোগ কিংবা কোন প্রকার ওষুধ খাচ্ছেন এমন অবস্থায়
ইসবগুলের ভুসি খেতে চাইলে খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে খাবেন।
এলার্জির সমস্যা: অনেকের ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার ফলে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা
দেখা দিতে পারে, যেমন- ছোট ছোট ফুসকুড়ি শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দেওয়া এবং
চুলকানি হতে পারে। এজন্য অবশ্যই সামান্য শরীরে এলার্জির আভাস দেখা মাত্রই তা
খাওয়া বন্ধ করে দেবেন অথবা আপনার এলার্জিজনিত সমস্যা আগে থেকে থাকলে অবশ্যই
ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে ইসবগুলের ভুসি গ্রহণ করবেন।
অ্যাপেন্ডিসাইড: কোন ব্যক্তির যদি অ্যাপেন্ডিসাইড জনিত সমস্যা থেকে থাকে
তাহলে তাদের জন্য ভালো হবে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া থেকে বিরত থাকা অথবা আপনি যদি
খেতে চান তাহলে আপনার ডক্টরের সাথে পরামর্শ অনুসারে গ্রহণ করতে পারেন নতুবা কখনোই
নিজে থেকে কোন খাবার খেতে যাবেন না।
অন্ত্রের সমস্যা: এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যাদের এসবগুলোর ভুসি গিলে খেতে
অনেক কষ্ট হয় ফলে যাতে অতিরিক্ত পরিমাণে ইসবগুলের ভুসি খেতে কষ্ট হয় তাদের
অন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে এছাড়াও যে সকল ব্যক্তির পূর্বে থেকে অন্ত্রের
সমস্যা রয়েছে তাদের এ সমস্যা বেড়ে যেতে পারে এর জন্য যে সকল ব্যক্তির অন্ত্রের
সমস্যা রয়েছে তারা ইসবগুলের ভুসি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন নতুবা ডক্টরের পরামর্শ
অনুসারে গ্রহণ করবেন।
পেটে ব্যথা: অতিরিক্ত পরিমাণে বা মাত্র অতিরিক্তইসবগুলের ভুসি খেলে পেটে
ব্যথা হতে পারে এর জন্য অবশ্যই কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই তা কি পরিমাণে
খেতে হবে তা জেনে খাওয়া সবচাইতে বেশি উত্তম নতুবা আপনার শরীরে তার উপকারী না
হয়ে স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করতে পারে।
সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক নিয়মে এবং সঠিক পরিমাণে ইসুবগুলের ভুষি খেলে এর কোন প্রকার
পাশবতিক্রিয়া দেখা যায় না এর জন্য পার্শ্বপ্রতিকরাহীন এই উদ্ভিজ্জ খাদ্যটি সেই
প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক সেক্টরে বেশ জনপ্রিয় প্রাকৃতিক ও ন্যাচারাল শরীরের
বিভিন্ন ধরনের সমাধানের ঔষধ হিসেবে পরিচিত কিন্তু আমাদের অনেকের কাছে হয়তো এসব
গুলোর খুশি শুধু মাত্র পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্যই পরিচিত কিন্তু
সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে
হয়তো আপনি জেনেছেন ইসবগুলের ভুসি শুধুমাত্র পেটের সমস্যার জন্যই নয় বরং
বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যের উপকারে আসে তবে মাত্র অতিরিক্ত বা সঠিক পদ্ধতিতে না
খেলে এর শারীরিক বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় উপরোক্ত পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া ব্যতীত আপনি যদি মাত্রা অতিরিক্ত বা সঠিক পদ্ধতিতে না খান তাহলে
আপনার বদহজম, ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক, পেশি টানটান, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বমি ভাব,
হারকানো, এলার্জি জড়িত সমস্যায় খেলে শ্বাস নিতে সমস্যা,
মুখ ও গলা ফুলে যাওয়া, চুলকানি ও ফুসকুড়ি হতে পারে। এর জন্য অবশ্যই আপনাদের
ইসবগুলের ভুসি উপকারিতা ও অপকারিতা জানার সাথে সাথে পদ্ধতি বা নিয়মে এবং কি
পরিমাণে খেতে হবে তা সম্পর্কে ও সঠিক ধারণা রাখা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া অবশ্যই
ইসবগুলের ভুসি কিংবা অন্যান্য কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ
অনুসারে গ্রহণ করবেন।
আপনি যদি ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা জানা ছাড়া ও ইসবগুলের ভুসি
সম্পর্কে এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চান যেগুলো আমাদের মনে জায়গা প্রশ্নের
উত্তরগুলো জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো। মানুষের
মনে ওঠা ইসবগুলের ভুসি নিয়ে সবচাইতে বেশি যে প্রশ্নগুলো মনে জাগে সেগুলো হলো-
- ইসবগুলের ভুসি খেলে কি মোটা হওয়া যায়?
- ইসবগুলের ভুসি কত সময় ভিজিয়ে রাখতে হবে?
- ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক সময়
- ইসবগুলের ভুষি কতদিন খাওয়া যায়
চলুন জেনে নেই ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়া ও ইসবগুলের ভুসি
সম্পর্কিত উপরোক্ত প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর।
ইসবগুলের ভুসি খেলে কি মোটা হওয়া যায়?
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
জানলাম এখন আমরা এ সম্পর্কে আমাদের সকলের মনে থাকা আরো এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর
জানব, চলুন জানি। ইসবগুলের ভুসি হল প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত একটি ন্যাচারাল
দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ও ফাইবার যুক্ত খাদ্য। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এর ব্যবহার
অনেক বেশি।
ইসবগুলের ভুসি যেহেতু আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং পরিপাকতন্ত্রের
বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয় এর জন্য আপনাদের অনেকেরই মনে
প্রশ্ন জাগতে পারে এইসবগুলের ভুসি খেলে কি মোটা হওয়া যায়?এই প্রশ্নের উত্তর হলো
"না" ইসবগুলের ভুসিতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার আমাদের পাকস্থলীর পরিপাকতন্ত্রের মলকে
নরম করে জেল এ পরিণত করে ফলে মল সহজে নির্গত হতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
এটি আমাদের পাকস্থলীর দেয়ালে পিচ্ছিল করে তোলে ফলে শরীরে চর্বি জমে না এবং
অতিরিক্ত চর্বি থাকলে তা মলের মাধ্যমে ঝরাতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি যেহেতু
দ্রবণীয় ফাইবার যুক্ত একটি খাদ্য ফলে অনেকক্ষণ ধরে পেট ভরা থাকে এবং অতিরিক্ত
ক্ষুধা লাগা কমায়, পেট পরিষ্কার রাখে ও উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত, চিনি যুক্ত বা ফ্যাট
যুক্ত খাবার খাওয়া হতে বিরত রাখে বা এগুলো খাবারের প্রতি লোভ কমে আনে যা ওজন
নিয়ন্ত্রণে বেশ সহায়ক হিসেবে
কাজ করে থাকে এবং এটি আমাদের রক্তের শর্করার
মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনে ও পরিপাকতন্ত্রে চিনি শোষণকে ধীরগতি করে দেয়।এজন্য যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে চান এবং অতিরিক্ত শরীরের মেদ বা চর্বি কমাতে চান
তারা তাদের খাদ্য তালিকায় ইসবগুলের ভুসি রাখতে পারেন। উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা
জানতে পারলাম ইসবগুলের ভুসি খেলে কি মোটা হওয়া যায়? কিনা এ প্রশ্নের উত্তর। আশা
করি আলোচনা থেকে আপনি আপনার প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়েছেন।
ইসবগুলের ভুসি কত সময় ভিজিয়ে রাখতে হবে?
আমরা ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে উপরোক্ত আলোচনা থেকে
জানলাম কিন্তু ইসবগুলের ভুসি কত সময় ভিজিয়ে রাখতে হবে? অর্থাৎ কত সময় ধরে এবং
কি পরিমানে পানির দিয়ে এটি ভিজিয়ে রেখে খেতে হবে এ সম্পর্কে কি আপনার সঠিক
উত্তর জানা আছে। আপনার যদি এ সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকে তাহলে আমাদের এই
পোস্টটিতে থাকা ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি মধ্যে আরেকটি
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে ইসবগুলের ভুসি কত সময় ভিজিয়ে রাখতে হবে?
চলুন জেনে নেই নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা থেকে এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর-
sobgul
ইসবগুলের ভুসি মূলত আমরা চিনে থাকি পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে
কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক, বদহজম ইত্যাদি সমস্যা দূর করার জন্য কিন্তু ইসবগুলের
ভুসি এই কার্যকারী গুণগুলো পেতে হলে অবশ্যই এটি কি নিয়মে বা পদ্ধতিতে খেতে হবে
তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে খেতে হবে কারণ ইসবগুলের ভুসি সম্পূর্ণ উপকারিতা পেতে
হলে অথবা কোন খাবারে সঠিক কার্যকারিতা নির্ভর করে সেই জিনিসটি সঠিক নিয়মে বা
পদ্ধতিতে সেবনের ওপর।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
এজন্যই আজ আমি আপনাদের মাঝে ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনা সাথে
সাথে ইসবগুলের ভুষি কত সময় ভিজে রাখতে হবে এবং রেখে খেতে হবে তা সম্পর্কে আলোচনা
করছি। ইসবগুলের ভুষি মূলত একটি দ্রবণীয় ও অদ্রবনীয় খাদ্য যার কিছু অংশ প্রচুর
পরিমাণে পানি শোষণ এবং কিছু অংশ পানি শোষণ করে না করে আমাদের অন্ত্রের বা আমাদের
শরীরে গিয়ে কোন প্রকার বিষক্রিয়া তৈরি করে না।
তবে ইসবগুলের ভুসি দীর্ঘ সময় ধরে ভিজিয়ে রাখলে সেটি অতিরিক্ত পরিমাণে ফুলে যাবে
এবং পানি শোষণ করবে ফলে এর কার্যকারিতা কমে যাবে এবং এটি যে কারণে বা উদ্দেশ্যে
খেতে চাচ্ছেন অর্থাৎ পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যা দূর
করতে চাচ্ছেন তা পূরণ হবে না। এজন্য হয়তো অনেকেই ইসবগুলের ভুসি খাচ্ছেন কিন্তু
যে উদ্দেশ্যে খাচ্ছেন সেটি পূরণ হচ্ছে না।
ইসবগুলের ভুসি অবশ্যই অল্প সময় ধরে ঠান্ডা অথবা গরম ২৪০ মিলিলিটার পানিতে অথবা
দুধের সঙ্গে অথবা আপনার ইচ্ছামত যেকোনো পানীয় বা আখের গুড়ের শরবতের সঙ্গে সামান্য কিছু সময় ধরে
ভিজিয়ে সর্বোচ্চ আধা ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে খেয়ে নেবেন। এতে আপনি এর সঠিক উপকারিতা
পাবেন। ইসবগুলের ভুষি আপনি যদি অধিক সময় ধরে ভিজিয়ে রাখেন তাহলে এটি অনেক বেশি
পানি শোষণ করে নেবে এবং ফুলে যাবে ফলে আপনি যখন এটি খাবেন তখন আপনার গলায় আটকে
যাওয়া মত সমস্যা হতে পারে এছাড়া পেটে অন্তরের জন্য এর কার্যকারিতা ও কম হবে।
এর জন্য অবশ্যই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার পূর্বে এটি কত সময় ধরে ভিজিয়ে রাখতে হবে
তা জেনে খাবেন। তবে বিভিন্ন সমস্যার জন্য এটি অনেক সময় ডক্টররা বিভিন্ন সময় ধরে
ভিজিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকে। এর জন্য আপনার যদি কোন সমস্যা সমাধানের
উদ্দেশ্যে এইসবগুলের ভুসি খেতে চান তাহলে একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে
খাবেন এছাড়াও আপনার যদি শরীরে পূর্ব থেকে অন্য কোন রোগ থাকে তাহলে অবশ্যই
ইসবগুলের ভুসি গ্রহণের পূর্বে আপনার ডক্টরের সাথে পরামর্শ অনুসারে গ্রহণ করবেন।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক সময়
আজ আমি যেহেতু আপনাদের মাঝে ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও
অন্যান্য ইসবগুলের ভুসি সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি সেজন্যই আরেকটি
গুরুত্বপূর্ণ সকলের মনের ভেতরে থাকা প্রশ্ন হচ্ছে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক
সময় কখন। আপনি যে উদ্দেশ্য বা যে রোগ নিরাময় বা সমস্যা দূর করার জন্য খেতে
চাচ্ছেন তা যেন সঠিকভাবে পুরনো হয় এর জন্য অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে ইসবগুলের
ভুসি খাওয়ার সঠিক সময়। চলুন জেনে নিই ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
ছাড়াও ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার সঠিক সময় কখন-
ইসবগুলের ভুষি মূলত পেটের জন্য বেশ উপকারী এজন্য আমরা অনেকেই এটি পেটের সমস্যা
দূর করার জন্যই খেয়ে থাকি। ইসবগুলের ভুষি আপনি আপনার শারীরিক অবস্থা বুঝে অথবা
ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে যে কোন সময় খেতে পারেন। তবে বেশি ভাগ চিকিৎসক
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নির্দেশনা অনুসারে ৫ থেকে ১০ গ্রাম এসব গুলোর ভুষির সঙ্গে
২৪০ মিলিগ্রাম গরম অথবা ঠান্ডা পানি অথবা যে কোন প্রকার পানীয় বা দুধের ও বিভিন্ন ধরনের শরবতের সঙ্গে কিংবা আখের গুড়ের শরবতের সঙ্গে
খুবই অল্প
সময় বা সর্বোচ্চ আধাঘন্টা ভিজিয়ে রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে অথবা সকালে খালি
পেটে কিংবা আপনি শরবত হিসেবে যেকোনো সময় শরীরকে ঠান্ডা, ক্লান্তহীন, পেটকে সুস্থ
রাখতে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে আপনার যদি শারীরিক কোন সমস্যা বা কোন
প্রকার অসুখের জন্য ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে
ইসবগুলের ভুসি সেবন করবেন।
ইসবগুলের ভুষি কতদিন খাওয়া যায়
কোন খাবার যেমন সঠিক নিয়মে বা পদ্ধতিতে বা সঠিক পরিমাণে না খেলে এর সঠিক
উপকারিতা বা গুণাগুণ পাওয়া যায় না বরং উল্টো বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তেমনি দীর্ঘ সময় ধরে খেলে সেটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন
ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এটি ইসবগুলের ভুষির ক্ষেত্রেও। এজন্য
আপনাদের সকলেরই ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্ক জানা ছাড়াও
ইসবগুলের ভুষি সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানার পাশাপাশি ইসবগুলের ভুসি
খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই জানা দরকার ইসবগুলের ভুষি কতদিন খাওয়া যায় চলুন এ
প্রশ্নের উত্তর জেনে নেই-
আরো পড়ুনঃ পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর ১২ টি ঘরোয়া উপায়
আপনার যদি ইসবগুলের ভুসি আপনার কোন শারীরিক সমস্যা বা পেটে সমস্যা সমাধানের
উদ্দেশ্যে খেয়ে থাকেন তাহলে, খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই কোন ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে
খাবেন। এছাড়া যেহেতু আমরা ইসবগুলের ভুসি পেটের সমস্যার সমাধানের জন্যই চিনে
থাকি, তা ভেবে আপনি যদি ইসবগুলের ভুসি নিয়মিত খেতে থাকেন কিন্তু কোন প্রকার
শারীরিক উন্নতি বা পেটের সমস্যার উন্নতি না দেখা দিলে সর্বোচ্চ তিন দিন অপেক্ষা
করে ডক্টরের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
কারণ আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে বা সঠিক নিয়ম বা পরিমান না জেনে দীর্ঘ সময় ধরে
খেয়ে থাকেন তাহলে এটি শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা বা পেটে সমস্যা হিসেবে ডায়রিয়া ও
হতে পারে। এজন্য আপনার সবচেয়ে ভালো হবে পূর্ব সতর্ক হিসেবে কোন খাবার খাওয়ার
পূর্বে বিশেষ করে যে খাবার আপনার কোন রোগ নিরাময় করবে বা নিরাময়ের জন্য খাবেন
তা খাওয়ার পূর্বে সেটি কত সময় ধরে বা কতদিন ধরে খেতে হবে ও খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি
ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে খাবেন।
লেখকের মন্তব্য-ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাকে ইসবগুলের ভুসির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ছাড়াও ইসবগুলের ভুসি সম্পর্কে মানুষের মনে থাকা বিভিন্ন
প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আশা করি
উপরোক্ত সম্পন্ন পোস্ট পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো
লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে আমাদের শেয়ার করে
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার পূর্বে কি কি সতর্কতা বা কি কি তথ্য বা জ্ঞান থাকা
প্রয়োজন তা সম্পর্কে জানিয়ে তাদেরকে সহায়তা করবেন। এমন আরো তথ্য জানতে আমাদের
ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন, ফলো করে রাখুন এবং সাবস্ক্রাইব করে রাখুন,
আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url