চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয়
চুলের যত্নে
টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম, চুলের যত্নে টক দই এর উপকারিতা ইত্যাদি। এছাড়াও
চুলের যত্নে টক দই এর ব্যবহার সম্পর্কে আরো জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ
পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম ছাড়াও
চুলের যত্নে টক দই এর ব্যবহার সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার
অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং সঠিক নিয়মে, পদ্ধতি ও পরিমাণ জানতে পারবেন
এবং চুলের যত্নে টক দই এর সকল পুষ্টি উপাদান ও গুনাগুন গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম
চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়মসম্পর্কে জানলে আশা করি আপনার চুলের কোন
ধরনের সমস্যা থাকবে না এবং আপনি যেভাবে আপনার চুল দেখতে চান আশা করি সেভাবে বা
তেমনি আপনার চুলকে দেখতে পাবেন। টক দই দিয়ে তৈরি বিভিন্ন রেসিপি যেমন-খিচুড়ি,
কাচ্চি বিরিয়ানি, রোস্ট ইত্যাদি যেমন বেশ সুস্বাদু হয় এর পোস্টগুলো গুণের জন্য
তেমনি আপনি যদি টক দই চুলে ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুলে যত্নে আর অন্য কোন
প্রোডাক্ট এর প্রয়োজন হবে না।
আরো পড়ুনঃ
অ্যালোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম
এজন্যই আজ আমি আপনাদের মাঝে চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম, চুলের
যত্নে টক দই এর উপকারিতা,চুলের যত্নে ডিম ও টক দই, খুশকি দূর করতে টক দই, টক দই
দিয়ে হেয়ার মাস্ক, চুলের যত্নে টক দই ও মেথি ইত্যাদি ছাড়াও চুলের যত্নের টক
দইয়ের আরও বিভিন্ন জানা-অজানা ও টিপস এন্ড ট্রিকস আপনাদের সাথে নিম্নে বিস্তারিত
আলোচনার মাধ্যমে শেয়ার করেছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি অনেক বেশি
উপকৃত হবেন।
চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম
আজ আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম। আর আমি
টক দই ব্যবহারে যে নিয়ম বা পদ্ধতি গুলো দেখাবে এতে আশা করি আপনার চুলের সকল
সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে। চুলের আমাদের নানা ধরনের সমস্যা যেমন- চুল ঝরে
যাওয়া, উসকো-শুষ্ক হয়ে যাওয়া , চুলেও খুকশি, সিল্কি না হওয়া, চুল লম্বা না
হওয়া ইত্যাদি কিছু না কিছু সমস্যা আমাদের সকলেরই আছে আর এ সমস্যার সমাধান রয়েছে
আপনারই ঘরে।
প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায় এর মাধ্যমে চুলের সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব
রূপচর্চায় যেমন টক দই কার্যকারিতা অনেক বেশি তেমন চুলের যত্নেও টক দইয়ের
ব্যবহার ও কার্যকারিতা অনেক বেশি। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই টক দইয়ে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি প্রোটিন ভিটামিন বি ৬, বি ১২ বি ৫, ফ্যাট ও
ল্যাটট্রিক এসিড থাকায় চুলের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি যোগায় ফলে চুল পড়া রোধ
হয়, খুশকি দূর করে ও চুলকে ঘন, সুন্দর ও সিল্কি করে তোলে ইত্যাদি তাহলে চলুন
দেরি না করে চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম গুলো বিস্তারিত জেনে নিন-
টক দই ও অলিভ অয়েল: ১ কাপ টক দই, ১ চা চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল
ও ১ ক চা চামচ মধু ইত্যাদি উপকরণগুলো ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন এবং
চুলের স্কেলপে ৫ মিনিট পর্যন্ত মাসাজ করে রেখে দিন। আধা ঘন্টা থেকে ৪৫ মিনিট পর
শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে চুল ধুয়ে চুলের কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। প্যাকটিতে
ব্যবহৃত উপকরণের পরিমাণ আপনার চুল অনুসারে কম বেশি করে নেবেন এটি সপ্তাহে ১ থেকে
২ দিন ব্যবহারে পরিবর্তন আপনি নিজেই লক্ষ্য করবেন।
উপকারিতা: অলিভ অয়েল ও মধু দুটোই পুষ্টিগুনে ভরপুর। মধুতে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং জলপাইয়ের তেলে বা অলিভ রয়েছে অয়েলেঅ্যান্টি
ফাঙ্গাস যা আমাদের চুলেরসেবোরহিক ডার্মাটাইটিস, খুশকি, চুলের ত্বক উস্ক-শুষ্ক,
সূর্যের তাপে চুল ফেটে যাওয়ার মত আরও বিভিন্ন সমস্যা খুব সহজে দূর করে চুলের
ত্বকের মশ্চারাইজ করে চুলকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
টক দই ও অ্যালোভেরা: ১ কাপ টক দই, ১ চা চামচ মধু ও ৩ চা চামচ
এলোভেরা জেল ভালো করে মিক্স করে পেস্ট তৈরি করে নিন এবং পেস্টটি চুলের স্কাল্ফে
এবং সম্পূর্ণ চুলে ৩ থেকে ৪ মিনিট ভালো করে ম্যাসাজ করে রেখে দিন। ৪৫ মিনিট
থেকে ১ ঘন্টা পর চুল সকল আদ্রতা চুষে নিলে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো
করে চুলগুলো ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
উপকারিতা: এলোভেরা চুলের জন্য কতটা উপকারিতা তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এলোভেরা আমাদের চুলের ঘনত্ব বাড়াই, চুলের ড্যামেজ রোদ করে, মজবুত করে, বৃদ্ধিতে
ইত্যাদি আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে এলোভেরা জেলের অপরদিকে মধু আমাদের চুলকে
মশ্চারাইজ করে।
টক দই ও নারিকেল তেল: একটি বাটিতে ১ কাপ টক দই ও ২ টেবিল চামচ
নারিকেল মিক্স করে পেস্ট তৈরি করে নেবেন এবার এটি চুলের স্কাল্ফে এবং সম্পূর্ণ
চুলে ৫ মিনিট ভালো করে ম্যাসাজ করে রেখে দিন। ১ ঘন্টা পর চুল সকল আদ্রতা
চুষে নিলে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো করে চুলগুলো ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার
করুন।
উপকারিতা: নারিকেল তেল চুলকে ময়েশ্চারাইজ, চুল বৃদ্ধি করতে, চুল পড়া
রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে এ ছাড়া চুল ভেঙে যাওয়া ও খুশকি থেকেও মুক্তি পাবেন
নিয়মিত সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার এই হেয়ার প্যাকটি ব্যবহার করলে।
টক দই ও পাকা কলা: ১টি পাকা কলা, ১ কাপ টক দই, ২ চা চামচ মেথি গুঁড়া
ও ২ চা চামচ মধু ব্লিন্ডারে ভালো করে পেস্ট করে হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিন।
তৈরি পেস্টটি চুলের স্কাল্ফে এবং সম্পূর্ণ চুলে ৫ থেকে ৬ মিনিটট ভালো করে
ম্যাসাজ করে রেখে দিন। ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পর চুল সকল আদ্রতা চুষে নিলে
হালকা কুসুম গরম বা ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে চুলগুলো ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার
করুন।
উপকারিতা: কলা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। তবে এ কলা আমাদের চুলের জন্য
বেশি উপকারী এটি চুলের আগা ভেঙে যাওয়া বা ফেটে যাওয়া রোধে বিশেষ কার্যকরী
ভূমিকা রাখে। এর জন্য সপ্তাহে ১ বার অথবা ২ বার এই হেয়ার প্যাকটিস ব্যবহার করলে
আপনি আপনার চুলের পরিবর্তন নিজে দেখতে পাবেন।
টক দই ও মধু: প্রথমে টক দই থেকে সকল পানি বের করে ভালো করে টক দই ফেটে নেব
এবং এতে ২ চা চামচ মধু মিশিয়ে আবারো ভাল করে ফেটে নিয়ে পেস্ট এর আকার তৈরি
করে এবার সম্পূর্ণ চুলে বিশেষ করে কালকে ৫ থেকে ৬ মিনিট ম্যাসাজ করে
সম্পূর্ণ চুল শুকানো পর্যন্ত রেখে দেবো। এবার ইচ্ছা অনুসারে যে কোন শ্যাম্পু বা
সবচেয়ে বেশি ভালো হয় যদি আপনি হারবার শ্যাম্পু ব্যবহার করে সমস্ত চুল ধুয়ে
ফেলেন এবং সম্পূর্ণ চুলে অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।
উপকারিতা: এমন কোন হেয়ার প্যাক বা হেয়ার রেমিটি যেখানে মধু ব্যবহার করা
হয় না কারণ আমরা সকলেই জানি মধুর উপকারিতা কতটা বেশি। মধুর যে হেয়ার প্যাক এর
সঙ্গে বা উপকরণের সঙ্গে মেশানো হয় না কেন সে হেয়ার প্যাক বা উপকরণের গুনাগুন
কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় মধু। আর এই মধু ও টক দইয়ের হেয়ার প্যাকটি সপ্তাহে
২ থেকে ৩ দিন ব্যবহারে চুল হবে সিল্কি, নরম ও মজবুত।
টক দই ও আমলকি: প্রথমে কয়েকটি আমলকি নিয়ে ভালো করে ব্লেন্ডারে কিংবা
পাতায় পিষে পেস্ট তৈরি করে নেব এবং ১ কাপ ফেটে রাখার টক দইয়ের সাথে ভালো
করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নেব। তৈরিকৃত পেস্টটি চুলে কয়েক মিনিট মাসাজ করে
আধাঘন্টা সময় রেখে দিন শুকিয়ে আসলে ভালো
করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে
কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহারে আপনার চুলের
রুক্ষতা শুষ্কতা দূর, নতুন চুল গজানো বিভিন্ন সংক্রমণ দূর ইত্যাদি সমস্যার সমাধান
দেখবেন খুব সহজেই হয়ে গেছে।
উপকারিতা: আমলকিতে রয়েছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ভিটামিন সি ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলকে মজবুত ঘন লম্বা প্রানো বন্ধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখের
অত্যন্ত এর জন্য তৈরিকৃত পেস্টটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহারে আপনার চুলের
রুক্ষতা শুষ্কতা দূর, চুল ঝরে পড়ানো, নতুন চুল না গজানো, স্কাল্ফে বিভিন্ন
সংক্রমণ দূর ইত্যাদি সমস্যার সমাধান দেখবেন খুব সহজেই হয়ে গেছে।
টক দই ও ডিমের কুসুম: চুল অনুসারে একটি পাত্রে ১টি অথবা ২টি ডিমের সাদা
অংশ হতে কুসুম আলাদা করে নিয়ে নেব এবং ভালো করে ফেটে নেব এবার এতে ফেটে রাখা
১ কাপ টক দই মিশিয়ে ১ থেকে ২ চামচ মধু মিক্স করে পেস্ট তৈরি করে
নেব। তৈরি হেয়ার প্যাকটি সমস্ত চুলে ২ থেকে ৩ মিনিট ম্যাসাজ করে ৩০
থেকে ৩৫ মিনিটে রেখে যে কোন হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে সম্পন্ন চুল ভালো করে ধুয়ে
কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
উপকারিতা: টক দই যেমন চুলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান
রয়েছে তেমনি ডিমে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান প্রোটিন ও জিংক রয়েছে।
আর এই দুইটি পুষ্টি উপাদান যখন একসঙ্গে মিশ্রিত করা হয় তখন এর গুনাগুন আরো
কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। আর এভাবে আপনি পেস্টটি নিয়মিত সপ্তাহে ২ থেকে
৩ দিন ব্যবহার করলে আপনার চুলের সকল সমস্যা সমাধানের সাথে চুলের উজ্জ্বল
বৃদ্ধি পাবে এবং চুলকে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করে তুলবে।
টক দই ও পেঁয়াজের রস: ৩টি মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ হতে রস তৈরি করে পানি
ঝরানো ১ কাপ ফাটানো টক দের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে এতে ২ চা চামচ মেথি
গুঁড়া, ১ চা চামচ মধু ও ১ চামচ লেবুর রস ভালো করে মিক্স করে হেয়ার
প্যাক তৈরি করে নিন। তৈরি হেয়ার প্যাকটি স্কাল্ফে সম্পূর্ণ চুলে ম্যাসাজ করে চুল
শুকানো পর্যন্ত রেখে দিন এবং চুল শুকিয়ে আসলে ঠান্ডা অথবা ওসুন গরম পানি দিয়ে
চুলগুলো ভালো করে ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
উপকারিতা: বহুকাল হতে চুলের যত্নে পেঁয়াজের রস ব্যবহার চলে আসছে।
পেঁয়াজের রস খুব সহজেই চুলকে খুশকি, আগা ফেটে যাওয়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া,
রুক্ষ শুষ্ক হয়ে যাওয়া ইত্যাদির মত সমস্যা দূর করে চুলকে মজবুত ঘন বিভিন্ন
সংক্রমণ হতে সুরক্ষা ও নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে থাকে। আর এই পুষ্টিগুনে ভরপুর
পেঁয়াজের সঙ্গে যখন
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার ১৭ টি নিয়ম
উপরোক্ত অত্যন্ত কার্যকরী উপকরণ গুলো মেশানো হয় তখন এর
কার্যকরতা আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই যদি আপনি মাসে ৩ থেকে ৪ দিন এই
হেয়ার প্যাকটি চুলে ব্যবহার করেন তাহলে চুলের পরিবর্তন আপনি নিজেই লক্ষ্য করতে
পারবেন।
টক দই ও অ্যাপেল সিডার ভিনেগার: ১ চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার,
২ চা চামচ এলোভেরা জেল, ১ চা চামচ লেবুর রস ও ১ কাপ পানি ঝরানো ভালো
করে ফ্যাটানো টক দের সঙ্গে সমস্ত উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে পেজ তৈরি করে নিন এবং
সম্পূর্ণ চুলে পেজটি ৫ থেকে ১০ মিনিট। সম্পূর্ণ চুল যখন আদ্রতা চুষে নেবে বা
৮০% শুকিয়ে যাবে তখন ঠান্ডাও তবে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে সমস্যা চুল শ্যাম্পু দিয়ে
কন্ডিশনার দিয়ে নেব।
উপকারিতা: উপরোক্ত সকল উপকরণগুলো চুলের জন্য বেশ উপকারী যা আমাদের চুলকে
মসৃণ, সিল্কি, আগা ফেটে যাওয়া রোধ, ঘন, মজবুত ইত্যাদি করে তুলে চুলের সকল প্রকার
সমস্যাকে দূর করে।
টক দই ও ক্যাস্টর অয়েল: পানি ঝরানো ফেটানো টক দইয়ের সঙ্গে ১ চামচ
কাস্টার অয়েল, ১ চা চামচ মধু, ১ চা চামচ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে
পেস্ট তৈরি করে নিন। পেস্টটি চুলে ভালো করে ম্যাসাজ করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর
ধুয়ে ফেলুন। চুল ধোয়ার পর অবশ্যই চুলে যে কোন কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।
উপকারিতা: ক্যাস্টর অয়েল এমন এক ধরনের অয়েল যা আমাদের চুলকে ভেতর থেকে
উজ্জীবিত করে তোলে নতুন চুল গজায় এবং তা দ্রুত বাড়ে এর জন্য আপনি যদি টক দইয়ের
সঙ্গে উপলব্ধ উপকরণ গুলো মিশিয়ে পেস্টটি সপ্তাহ ১ থেকে ২ দিন ব্যবহারে
চুলের সকল সমস্যা দূর হয়ে চুল সিল্কি, ঘন, মজবুত ও প্রাণবন্ধক হবে।
টক দই ও মেহেদী: হাফ কাপ টক দই ও চুল অনুসারে ১ কাপ মেহেদী এর সঙ্গে
২ চা চামচ পেঁয়াজের রস, ১ চা চামচ মেথি গুড়া পাউডার, ১টি ডিমের সাদা
অংশ ও ২ চা চামচ অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে সকল উপকরণ গুলো ভালো করে বিলিন্ডারে
পেস্ট তৈরি করে নিন। পেস্টটি তৈরি হয়ে আসছে সম্পূর্ণ চুলের ম্যাসাজ করে এপ্লাই
করুন। ১ ঘন্টা অথবা চুল শুকিয়ে আসলে শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে
কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
উপকারিতা: মেহেদী ও উপরোক্ত ব্যবহৃত পেজটিতে ব্যবহৃত উপকরণগুলো আমাদের
চুলের জন্য কতটা উপকারিতা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই উপরোক্ত হেয়ার প্র্যাকটি
মাসে ৪ থেকে ৫ বার ব্যবহারে দেখবেন আপনার চুলের সকল সমস্যার দূর হয়ে
চুল লম্বা ঘন ও মজবুত হয়ে গিয়েছে।
টক দই ও কেশরাজ: ১ কাপ কেশরাজ পেস্ট, হাফ কাপ টক দই, ২ চা চামচ
মেথি গুঁড়া, ১টি ডিমের সাদা অংশ, ১ চা চামচ লেবু, ২ টেবিল চামচ মেহেদী
ও ১ চা চামচ এলোভেরা জেল ইত্যাদি উপকরণগুলো ভালো করে ব্লেন্ডারের ব্লেন্ড
করে পেস্ট তৈরি করে নিন। হেয়ার প্যাকটি ভালো করে পেস্ট হয়ে আসলে ঠান্ডা করে
সমস্ত চুলে এবং চুলের স্কাল্ফে ভালো করে ম্যাসাজ করে করে ব্যবহার করবেন এবং চুল
শুকানো পর্যন্ত রেখে ঠান্ডা অথবা কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নেবেন ও
অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।
উপকারিতা: কেশরাজ শব্দ থেকে হয়তো আপনি বুঝতে পারছেন এটি কেশের রাজা
অর্থাৎ চুলের রাজা। চুলের এমন কোন সমস্যা বা উপকারিতায় নেই যেটি কাজ করে না। আর
এর সাথে যখন উপরোক্ত সকল উপকরণগুলো মিশিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করা হয় তখন আপনার
চুল এই হেয়ার প্যাকটি দ্বারা কতটা উপকৃত হবে আপনি ব্যবহার না করলে বুঝতে পারবেন
না। তাই অবশ্যই এই হার প্যাকটি সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
টক দই ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল: হাফ কাপ টক দই, ২টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল,
কয়েক ফোঁটা আমার অয়েল, ১ চা চামচ লেবুর রস ও ২ চামচ এলোভেরা জেল ভালো করে
মিশে হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিন। হেয়ারমাক্সটি তৈরি হলে ভালো করে চুলের
স্ক্যাল্প ও পুরো চুলে মাসাজ করুন ৫ মিনিট। মাসাজ শেষে চুল গুলো ৮০% শুকিয়ে
শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা: ভিটামিন ই এর অভাবে আমাদের চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি
হয় আর এ সমস্যাগুলো দূর করার জন্য যেকোনো ধরনের হেয়ার প্যাক সঙ্গে যদি আপনি
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করেন তাহলে খুব সহজে আপনার চুলে বিভিন্ন সমস্যা
সমাধান করবে এবং উপরোক্ত হেয়ার প্যাকটি ব্যবহার করলে আপনার আপনার চুল নতুন গজাতে
সহায়তা করবে, চুল বৃদ্ধি করবে, চুলের স্ক্যাল্পে খুকশি ও বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ
দূর করবে এবং চুলকে মজবুত, ঘন, উজ্জ্বল ও সিল্কি করবে।
টক দই ও জবা ফুল: ২ টেবিল চামচ জবা ফুলের পেস্ট, হাফ কাপ টক দই, ২ টেবিল
চামচ মেহেদী পেস্ট, ১ চা চামচ লেবুর রস, ১ চা চামচ অলিভ অয়েল ও
১ চা চামচ মেথি পাউডার ভালো করে মিশিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিন এবং
হেয়ার প্যাকটি ২ মিনিটের জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দিন। ২ মিনিট পর
সমস্ত উপকরণ আবারো ভালো করে নাড়া দিয়ে সমস্ত চুলে ব্যবহার করে ২ মিনিট
ম্যাসাজ করে নিন এবং সমস্ত চুল শুকানো পর্যন্ত রেখে দিন বা ৮০% শুকিয়ে আসলে
শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করে নিন।
উপকারিতা: জবা ফুলের ভেতরে এমন কিছু লুকানো পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা
আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন এর জন্যই দেখবেন জবা ফুল বিভিন্ন তেলে কিংবা
বাজারে কেনা রেডিমেড হেয়ার মাক্স এ লেখা থাকে। এই জবা ফুলের সঙ্গে যখন টক দই ও
অন্যান্য উপকরণগুলো মেশানো হয় তখন এ প্যাকটি আরো বেশি পুষ্টিগুণের ভরপুর ও চুলের
জন্য কার্যকরী একটি হেয়ার প্যাক হয়ে ওঠে। এই পেস্টটি যদি আপনি মাসে ২ থেকে
৩ বার ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুলের পরিবর্তন আপনি নিজের চোখে দেখতে পাবেন।
টক দই ও মেথি: ২ চা চামচ মেথি গুঁড়া, ১ কাপ টক দই, ১ চা চামচ
লেবু, কয়েক ফোঁটা কাস্টার্ড অয়েল ও ১টি ডিম ভালো করে সমস্ত উপকরণের সঙ্গে
মিশিয়ে হেয়ারমাক্স তৈরি করে নিন। আর এই ইহার মাক্সটি অবশ্যই চুলের ব্যবহারের পর
মাসাজ করে নেবেন চুল হালকা শুকিয়ে আসলে ঠান্ডা অথবা কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো
করে ধুয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে নেবেন।
উপকারিতা: মেথি যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তেমনি চুলের জন্য বেশ
কার্যকারী। চুলের যত্নে মিথির গুনাগুনের শেষ নেই। মেথিতে যে সকল গুনাগুন রয়েছে
তা চুলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তাই যে কোন হেয়ার প্যাক বা তেলে চুল লম্বা
করতে, ঘন করতে বা নতুন চুল গজাতে চাইলে আমরা মেথি অবশ্যই ব্যবহার করে থাকি। এজন্য
অবশ্যই টক দই ও মেথি দিয়ে তৈরি এই হেয়ার প্যাকটি নতুন চুল গজাতে ও লম্বা করতে
ব্যবহার করুন।
টক দই ও নারিকেলের দুধ: ২ থেকে ৩ চামচ নারকেলের দুধ,
১ চামচ মধু, হাফ কাপ টক দই, ১ চামচ লেবু ও ১ চামচ মেথি ভালো করে
সকল উপকরণগুলো ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নেবেন। পেস্টটি তৈরি হয়ে আসলে সমস্ত চুলে
মাসাজ করে লাগিয়ে নেবেন এবং হেয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখবো। সম্পূর্ণ চুল হালকা
ভেজা থাকলে এমন অবস্থায় শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। শ্যাম্পু শেষে অবশ্যই
কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।
উপকারিতা: প্রাকৃতিক ও ন্যাচারালভাবে চুলকে নরম, কোমল, মসৃণ, সাইনি,
সিল্কি, লম্বা, ঘন, মজবুত করতে চাইলে আপনি টক দই ও নারকেল দুধের প্যাক ব্যবহার
করতে পারেন। তেল নারকেলের দুধের চেয়েও বেশি উপকারী এজন্য অবশ্যই এই হেয়ার প্যাক
দিয়ে চুলে মাসে ৩ দিকে ৪ বার ব্যবহার করবেন।
টক দই ও গ্রীন টি: প্রথমে ২ থেকে ৩ চামচ চায়ের লিকারের সঙ্গে
১ কাপ টক দই, ১ চামচ মধু, ১ চামচ চিনি, ২ চামচ এলোভেরা জেল,
২ থেকে ৩ চামচ পেঁয়াজের রস, আমন্ড অয়েল বা অলিভ অয়েল ১ চামচ
ইত্যাদি সকল উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিন। ৩০ থেকে ১ ঘন্টা
চুলে রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে কন্ডিশনার চুলে ব্যবহার করবেন।
উপকারিতা: চায়ের লিকার আমাদের চুলের গোড়াকে মজবুত এবং আগা ফেটে যাওয়া
রোধ করে এজন্য টক দই অগ্রিম দিয়ে লিকার দিয়ে তৈরি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং মজবুত
ও ঘন হবে।
টক দই, দারুচিনি ও থানকুনি পাতা: ১ কাপ টক দই, দারুচিনি হাফ
চামচ, থানকুনির পাতা ৩ চা চামচ, মধু ১ চামচ, চিনি ১ চামচ, কুসুম বাদে
ডিমের সাদা অংশ ১টি, মেথি পাউডার ১ চামচ, ভিটামিন ই ক্যাপসুল ২টি, জবা ফুল
দুইটি, আমান্ড অয়েল ১ চামচ ইত্যাদি সকল উপকরণগুলো ভালো করে মিক্স করেপ্যাক
তৈরি করুন। চুলে সম্পূর্ণ প্যাকটি এপ্লাই করে মাসাজ করে নিন এবং ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট
রেখে দিন। শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
উপকারিতা: থানকুনির পাতা ও দারুচিনি সে প্রাচীনকাল থেকে চুলের যত্নে
ব্যবহার হয়ে আসছে এর জন্যই বিভিন্ন তেল ও হেয়ার প্যাক এর প্যাকেটের গায়ে
দারচিনি ও থানকুনি পাতা লেখা থাকে। এর জন্য অবশ্যই টক দই, দারুচিনি ও ধান কুনের
পাতা দিয়ে তৈরি এই ব্যবহার করুন আপনার চুলকে সকল প্রকার সমস্যা থেকে দূরে রাখার
জন্য।
টক দই ও গ্লিসারিন: ১ কাপ টক দই, ১ চামচ গ্লিসারিন,
১ চামচ বেকিং পাউডা, ১ চামচ মধু, ভিটামিন ই ক্যাপসুল ২টি, এলোভেরা জেল
২ চা চামচ, পেঁয়াজের রস ১ চামচ ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে চুলে ৪০
থেকে ৪৫ মিনিট ভালো করে শুকিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে কন্ডিশন ব্যবহার করুন।
উপকারিতা: শুনে হয়তো অবাক হয়েছেন কিন্তু উসকো-শুষ্ক, প্রানহীন চুলকে
নরম, সিল্কি, প্রানোবন্ধু ও উজ্জ্বল করতে গ্লিসারিন আমাদের চুলের জন্য অনেক
প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। আর এই টক দের সাথে ও উপরোক্ত উপকরণ গুলো মেশানো যায়
তাহলে আপনার চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয়ে চুল হয়ে উঠবে ঘন, মজবুত, লম্বা ও
প্রাণবন্তক।
আরো পড়ুনঃ টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
টক দই ও কারিপাতা: পানি ঝরানো ফাটানো টক দইয়ের সঙ্গে ১ মুঠো কারি পাতার পেস্ট,
১ চা চামচ মধু ১ চামচ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে সমস্ত
চুলে, স্ক্যাল্প এবং বিশেষ করে চুলের আগার দিকে ভালো করে মাসাজ করে নেবেন
১ থেকে ২ মিনিট। সমস্ত চুল হালকা ভেজা অবস্থায় বা ৮০% শুকিয়ে আসলে
হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন এবং অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার
করবেন।
উপকারিতা: কারি পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যালরিন এবং প্রোটিন
যা আমাদের চুলের আগাকে ফেটে যাওয়া রোধ করে এবং গোড়া মজবুত করে এর জন্য টক দই ও
কারিপাতার এই পেস্টটি সপ্তাহে ১ দিন অথবা ২ দিন ব্যবহার করতে পারেন এ সমস্যা থেকে
দূরে থাকার জন্য
টক দই ও নিম পাতা: ১ চামচ নিমের পাতার পেস্ট, ১ কাপ ফাটানো
পানি ঝরানো টক দই, ২ চামচ এলোভেরা জেল ও ১ চামচ মেথি গুঁড়ো ভালো করে
মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। পেস্ট তৈরি করে সমস্ত চুলে, বিশেষ করে চুলের
স্ক্যাল্প মাসাজ করে নেবেন ১ থেকে ২ মিনিট। সমস্ত চুল হালকা ভেজা
অবস্থায় বা ৮০% শুকিয়ে আসলে হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন এবং
অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।
উপকারিতা: নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়ার, অ্যান্টি ফাঙ্গাস ও
বিভিন্ন ধরনের জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান। এর জন্য আপনার চুলের স্ক্যাল্প যদি কোন
প্রকার সংক্রমণে আক্রান্ত হয় তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে এই রেমিডিটি ব্যবহার করতে
পারেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আশা করি চুলে যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত জানা অজানা বিভিন্ন তথ্য জানতে পেরেছেন। তবে আজ আমি শুধুমাত্র চুলের
যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করছি করছি না
চুলের যত্নের টক দইয়ের আরো কত রকমের ব্যবহার ও উপকারিতা রয়েছে তার সম্পর্কেও
বিস্তারিত আলোচনা করব। যেমন-
- চুলের যত্নে টক দই এর উপকারিতা
- চুলের যত্নে টক দই ও মেথি
- টক দই দিয়ে হেয়ার মাস্ক
- খুশকি দূর করতে টক দই
- চুলের যত্নে ডিম ও টক দই
চুলের যত্নে টক দই এর উপকারিতা
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম সম্পর্কে
জানলাম এখন আমরা চুলের যত্নে টক দই এর উপকারিতা সম্পর্কে জানব কারণ টক দই আমাদের
চুলে কি কি উপকার বয়ে নিয়ে আসবে অর্থাৎ কি কি সমস্যা দূর করবে তা সম্পর্কে
আমাদের সঠিক ধারণাটি জানা অত্যন্ত জরুরি তাই চলুন করে জেনে নিন-
- চুল পড়া বন্ধ করতে সহায়তা করবে।
- চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে করবে।
- খুব সহজে চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করতে সহায়তা করবে।
- প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করবে।
- চুলের আদ্রতা খুব সহজে অনেকক্ষণ ধরে বজায় রাখবে।
- চুলের ফ্যাকসা ভাব বা লালচে ভাব দূর করতে সহায়তা করবে।
- চুলের আগা ফেটে যাওয়া কিংবা মাঝখান থেকে ভেঙে যাওয়া খুব সহজে রোধ করতে সহায়তা করবে।
- চুলের গঠন মজবুত ও দৃঢ় করতে সহায়তা করবে।
- চুলের স্কাল্পে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ খুব সহজেই দূর করতে সহায়তা করবে।
- চুলকে মসৃণ, সাইনি ও মোলায়েম বা নরম করতে সহায়তা করবে।
- দ্রুত চুল পেকে যাওয়া বা পাকা চুল হতে রোধ করবে।
- প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করবে।
- চুলের স্কাল্পে কোন প্রকার চুলকানি বা ক্ষত থাকলে তা সারাতে সহায়তা করবে।
- নতুন চুল গজাতে সহায়তা করবে।
- চুলে সকল ধরনের পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি মেটাতে সহায়তা করবে।
- চুলের চিপচিপে বা আঠালো বা তৈলাকতোতা ভাব দূর করতে সহায়তা করবে।
- মাথার স্কাল্পে খুশকি প্রতিরোধে সহায়তা করবে।
- চুলকে সিল্কি ও চুলাতে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
চুলের যত্নে টক দই ও মেথি
চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম এর মধ্যে চুলের যত্নে টক দই ও মেথি
ব্যবহার ও উপকারিতা অনেক বেশি তা চলুন দেরি না করে কিভাবে বা পদ্ধতিতে এ ২টি
উপকরণ ব্যবহার করলে এর পুষ্ট গুনাগুন সবচেয়ে বেশি আমরা চুলে পাব এবং উপকৃত হব
চলুন জানি। টক দই ও মিথি এই ২টি উপকরণ যদি আপনি হেয়ার প্যাক তৈরি করে চুলে
ব্যবহার করেন তাহলে টক দই ও মিথি আপনার চুলের স্কাল্পে মৃত কোষগুলো দূর করে নতুন
কোষ তৈরি করে সেই সবসময় সতেজ রাখে।
ফলে চুলের গোড়া মজবুত দৃঢ় থাকে সহজে চুল উঠে না অর্থাৎ চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়
এছাড়াও মেথি এবং টক দই স্কাল্পে বিভিন্ন সংক্রমণ বা ফাঙ্গাস সৃষ্টি হলে তা রোধ
করতে বা প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করে এই দুটি উপকরণ। এই ২টি উপকরণে সঠিক উপকারিতা
পেতে হলে আপনাকে প্রথমে আস্ত মেথি সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে মেথির পানি সহ পানি
ঝরানো ভালো করে ফেটে রাখা টক দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে সমস্ত চুলে
আরো পড়ুনঃ টক দই বানানোর ১০ ধরনের ঘরোয়া নিয়ম
মাখিয়ে পাঁচ মিনিট সমস্ত চুল ম্যাসাজ করে ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত রেখে
হারবাল যে কোন একটি শ্যাম্পু ব্যবহার করে কন্ডিশনার ব্যবহার করা। এই নিয়মে আপনি
যদি সপ্তাহে দুই দিন কিংবা একদিন ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুলের সকল সমস্যা
অনায়াসে সমাধান হয়ে যাবে যা আপনি নিজের চোখেই লক্ষ্য করতে পারবেন। তাহলে আমরা
বুঝতে পারলাম চুলের যত্নে টক দই ও মেথির উপকারিতা কত বেশি।
টক দই দিয়ে হেয়ার মাস্ক
চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম মধ্যে আমি অনেকগুলো টক দই দিয়ে হেয়ার
মাস্ক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা ও উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদেরকে জানিয়েছি। আশা
করি সম্পূর্ণ পোস্ট পড়লে চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম সম্পর্কে জেনে
অনেক বেশি উপকৃত হবেন এবং জানতে পারবেন আপনার চুলের জন্য কোন হেয়ার একটি অত্যন্ত
প্রয়োজন। তাই চলুন আরও ২টি টক দই দিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি দেখে নিই-
টক দই ও হলুদের হেয়ার মাস্ক
উপকরণ
- টক দই- ১ কাপ
- হলুদ- ১ চা চামচ
- নারিকেলের দুধ- ২ থেকে ৩ চামচ
- মধু- ১ চা চামচ
- ডিম- ১টি
- মেথি গুঁড়া- ১ চা চামচ
- আপেল সিডার ভিনেগার- ১ চা চামচ
- এলোভেরা জেল- ২ চা চামচ
তৈরি প্রণালী: সকল উপকরণগুলো ভালো করে মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করে নিন
এবং সমস্ত চুলে ভালো করে মাসাজ করে লাগিয়ে নিন। ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর উষ্ণ গরম
পানি দিয়ে সমস্ত চুল ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন।
টক দই ও আমলার হেয়ার মাস্ক
উপকরণ
- টক দই- ১ কাপ
- আমলা পেস্ট- ২ চা চামচ
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল- ২টি
- ডিমের সাদা অংশ- ১টি
- কাস্টার্ড অয়েল- সামান্য
- এলোভেরা জেল- ২ চা চামচ
তৈরি প্রণালী: সকল উপকরণগুলো ভালো করে মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করে নিন
এবং সমস্ত চুলে ভালো করে মাসাজ করে লাগিয়ে নিন। ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর উষ্ণ গরম
পানি দিয়ে সমস্ত চুল ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন।
খুশকি দূর করতে টক দই
এতক্ষণ আমরা চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম
কিন্তু খুশকি দূর করতে টক দই কতটা ভূমিকা রয়েছে এবং কিভাবে তা কাজ করে চলুন
জানি। তবে এমন কিছু পুষ্টি গুনাগুন ও ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা আমাদের চুলের
স্কাল্পে থাকা খুশি বাম দিত কোষগুলো দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। টক দই রয়েছে
অ্যান্টি ফাঙ্গাস ব্যাকটেরিয়া যা এই মৃত কোষগুলো সতেজ করে চুলের গোড়াকে মজবুত ও
দৃঢ় করে।
আরো পড়ুনঃ মেথি শাক খাওয়ার ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
এছাড়াও এতে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, জিংক, পটাশিয়াম, প্রোটিন,
ল্যাট্রিক্স অ্যাসিড ইত্যাদি উপাদান গুলো আমাদের চুলের সকল পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি
খুব সহজে মিটিয়ে দেয়। এর জন্য আপনি যদি টক দই এর ভেতরে অন্য কোন উপকরণ না দিয়ে
শুধুমাত্র টক চুলের স্কাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করেন এবং ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পর
ধুয়ে ফেলেন তাহলে আপনার চুল খুশকি মুক্ত, উজ্জ্বল, মসৃণ, নরম ও প্রাণ বন্ধু হয়ে
উঠবে।
চুলের যত্নে ডিম ও টক দই
চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম মধ্যে যে উপকরণটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত
হয়েছে সেটি হলো ডিম। তাই আমাদের অবশ্যই জানা দরকার চুলের যত্নে ডিম ও টক দইয়ের
ব্যবহার বা কিভাবে কাজ করে ও উপকারিতা সম্পর্কে। ডিম আমাদের চুলের জন্য প্রাকৃতিক
ময়েশ্চারাইজার ও কন্ডিশনার। ডিমে থাকা অত্যধিক পরিমাণে প্রোটিন ভিটামিন ও
মিনারের আমাদের চুলকে ভেতর থেকে এমন নতুন চুল গজায় যেগুলো গোড়া অনেক বেশি মজবুত
দৃঢ় উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর হয়।
আপনি যদি ১ কাপ টক দই ও ১টি ডিম ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে সমস্ত চলে
ম্যাসাজ করে চুল পেচিয়ে খোঁপা করে হেয়ার ক্যাপ দিয়ে রেখে দেন ৩০ মিনিট থেকে ৪৫
মিনিট পর্যন্ত এবং এরপর যে কোন শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার
করেন তাহলে আপনার চুল দেখলে আপনি অবাক না হয়ে থাকতে পারবেন না। এর জন্য অবশ্যই
চুলের যত্নের ডিম ও টক দই একবার হলেও ব্যবহার করে দেখবেন।
লেখকের মন্তব্য-চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি নিয়ম
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের ও চুলের যত্নে টক দই ব্যবহারের ২২ টি
নিয়ম, চুলের যত্নে টক দই এর উপকারিতা ইত্যাদি ছাড়াও চুলের যত্নে টক দই এর
ব্যবহার সম্পর্কে অনেক জানাও অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে
জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার
আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url