টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, গর্ভাবস্থায় টক দই খেলে কি হয় ইত্যাদি। এছাড়াও টক দই সম্পর্কে আরো
জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পন্ন পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও টক দই সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন
এবং সঠিক নিয়মে, পদ্ধতি, পরিমাণ, খাওয়ার সঠিক সময় জানতে পারবেন এবং টক দই এর
সকল পুষ্টি উপাদান ও গুনাগুন গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
টক দই এমন এক ধরনের খাদ্য যা বিভিন্ন খাবার যেমন- বিরিয়ানি, রোস্ট, খিচুড়ি,
রেজালা, কারি ইত্যাদিতে ব্যবহার করলে খাদ্যের গন্ধ ও স্বাদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে
দেয় তেমনি শরীরের জন্য আরও কয়েক গুণ বেশি উপকারী যা বলে শেষ করা যাবে না। তাই
আজ আমি আপনাদের মাঝে টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
আরো পড়ুনঃ
টক দই বানানোর ১০ ধরনের ঘরোয়া নিয়ম
গর্ভাবস্থায় টক দই খেলে কি হয়, রাতে টক দই খেলে কি হয়, টক দই খাওয়ার সঠিক
সময়, টক দই খেলে গ্যাস হয় কিনা ইত্যাদি আরও বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক উত্তর
বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে নিম্নে তুলে ধরেছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টে পড়লে
অনেক বেশি উপকৃত হবেন এবং টক দই সম্পর্কে জানা অজানা বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন।
টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আজ আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত। টক দই যে নিশ্চিন্তে একটি পুষ্টিকর খাবার এটা বলার অপেক্ষা রাখে না
এছাড়া আমরা টক দই খুব সহজেই বাড়িতে বানিয়ে ফেলতে পারি। টক দই আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভালো ব্যাকটেরিয়া, যে
ব্যাকটেরিয়াগুলো আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না।
সে সমস্ত ব্যাকটেরিয়া গুলোর মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য ব্যাকটেরিয়া হলো
ল্যাকটোব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া। আমরা যখন টক দই খাই তখন ঐ সমস্ত ভালো
ব্যাকটেরিয়া জীবিত অবস্থাতে আমাদের গাটের মধ্যে বা ডাইজেস্ট সিস্টেমের মধ্যে
প্রবেশ এবং আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের ফাংশনকে ভালো করতে সাহায্য করে তার সাথে
সাথে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে তাই চলুন দেরি না করে টক দই এর ৪২ টি
উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নেই-
টক দই এর উপকারিতা
টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে প্রথমে আমরা টক দই এর উপকারিতা
সম্পর্কে জানব তাই চলুন দেরি না করে সুপার ফুড টক দই এর উপকারিতা গুলো জেনে নিন
বিস্তারিত আলোচনা মাধ্যমে-
হজম শক্তি বৃদ্ধি: যখন আপনি দীর্ঘদিন ধরে হজম জড়িত সমস্যায় ভোগেন তখন
চিকিৎসকরা চিকিৎসার পাশাপাশি আপনাকে প্রোবায়োটিক সম্পূর্ণ খাবার খেতে বলে। আর
প্রোবায়োটিক সম্পন্ন খাবার বলতে সেই সকল খাবার কে বোঝায় যে সকল খাবারে ভালো
ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান থাকে এবং খাবারটি খাবার পরে জীবিত অবস্থাতে
সে সমস্ত ব্যাকটেরিয়া আমাদের ডাইজেস্ট সিস্টেমে প্রবেশ করে আমাদের ডাইজেস্টিক
পাওয়ারকে ইম্প্রুভ করতে সাহায্য করে আর সেগুলোকে বলা হয় প্রোবায়োটিক সম্পন্ন
খাবার। আর টক দই হল ন্যাচারাল প্রোবায়োটিক সম্পন্ন একটি খাবার তাই আপনার খাদ্য
তালিকায় নিয়মিত দই রাখতে পারেন আপনার হজম ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করার জন্য।
ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে: অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে আমাদের অনেকেরই
ডায়রিয়া হয়ে থাকে আর এই ডায়রিয়া খুব সহজেই প্রতিরোধ করতে বা নিয়ন্ত্রণে
আনতে পারে টক দই। এছাড়াও এতে থাকার লেক্টিক এসিডো ও খুব সহজে ডায়রিয়া জনিত রোগ
নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে আপনি যদি
নিয়মিত টক দই খেতে পারেন তাহলে আপনার ইমুউনিটি পাওয়ার বা প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি পায়। তার তার কারণ আপনাদের জেনে রাখা ভালো আমাদের পুরো শরীরে ৭০% থেকে ৮০% ইমিউন সিস্টেম বর্তমানে কিন্তু আমাদের গ্যাস্ট্রো
ইন্টারস্টাইন ট্র্যাকের মধ্যে বা পেটের
মধ্যে আর আমরা যখন টক দই খায় তখন দইয়ের মধ্যে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া আমাদের
পেটের মধ্যে প্রবেশ করে সেই গুড ব্যাকটেরিয়া গুলি আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ার
বাড়াতে সক্ষম হয়। তাহলে আপনি যদি অনুভব করেন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তবে
আপনি নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় টক দই রাখতে পারেন আপনার রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করার জন্য।
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে: টক দই থাকা অত্যধিক পরিমাণে ল্যাক্টিক অ্যাসিড,
প্রোবায়োটিক অ্যাসিড, প্রোটিন ও পেটের জন্য প্রয়োজনীয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
পুষ্টি উপাদান আমাদের পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করে
কোষ্ঠকাঠিন্যত রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে এজন্য আপনার তালিকায় নিয়মিত টক দই
দেখে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে প্রতিরোধ পান।
মহিলাদের ইস্ট ইনফেকশন কম করতে: মহিলাদের একটি কমন সমস্যা হল যোনির মধ্যে
ইস্ট ইনফেকশন। আর এই ইস্ট ইনফেকশন এর লক্ষণগুলো হলো প্রচন্ড পরিমাণে চুলকানি,
চুলকানির পরে অত্যন্ত বেশি জ্বালাবোধ, ইউরিন পাশের পর অত্যন্ত জ্বালাবোধ, যোনিবোধ
লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণগুলো দেখতে পান তাহলে হতে পারে এটি আপনার যোনির
মধ্যে ইস্ট ইনফেকশনের হয়েছে।
ইস্ট ইনফেকশন কে কম করার জন্য আপনি নিয়মিতভাবে টক দই খেতে পারেন এই টক দইয়ের
মধ্যে ল্যাট্রোবেসিলাস ব্যাকটেরিয়া রয়েছে আর এই ল্যাট্রোবেসিলাস ব্যাকটেরিয়া
ইস্ট ইনফেকশন কমাতে বেশ সহায়তা করে এবং তার সাথে সাথে খুব কম পরিমাণে টক দই
যোনির মধ্যে আপনি লাগাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কি হয় টক দই এর ভেতরে যে
ল্যাট্রোবেসিলাস ব্যাকটেরিয়া
আরো পড়ুনঃ কাচ্চি বিরিয়ানি রেসিপি বানানোর নিয়ম
রয়েছে ওই সমস্ত ব্যাকটেরিয়াগুলি হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রিলিজ করতে থাকে আর এই
হাইড্রোজেন পাওয়ার অক্সাইড ইস্ট ইনফেকশনের মত সমস্যাকে খুব সহজেই সমাধান করতে
সহায়তা করে। তাই আপনি নিয়মিতভাবে টক দই খান বা যোনিদেশে খুব কম পরিমাণে আপনি
লাগাতে পারেন আপনার ইস্ট ইনফেকশন এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। তবে বিশেষ
সতর্ক থাকবেন টক দই যেন আপনার যোনির ভেতরে প্রবেশ না করে।
ওজন কম করতে সাহায্য করে: আমাদের শরীরে এক স্ট্রয়রেড ধরনের হরমোন রয়েছে
যার নাম হলো কটিজল। যখন আমাদের শরীরে এই কটিজল হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে যায়
তখন আমরা ওভারওয়েট বা অভিসিটির মত সমস্যায় ভুগতে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে
টক দই খেতে পারেন তাহলে টক দই আপনার শরীরে এই কটিজল হরমোন
লেভেলকে মেনটেন করতে সহায়তা করবে আর আপনার শরীরে যখন এই কটি জল হরমোনের পরিমাণ
মেনটেন থাকবে তখন কিন্তু ওভার ওয়েট বা ওবিসিটির মত সমস্যা থেকে আপনি অনেকটাই
দূরে থাকতে পারবেন। তাই যদি আপনার ওভার ওয়েট মেন্টেন করতে চান বা ওজন
নিয়ন্ত্রণে আনতে চাচ্ছেন তাহলে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার সারাদিনের খাদ্য
তালিকায় টক দই রাখুন।
ঘুমের সমস্যা প্রতিরোধে: টক দইয়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের
মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান হচ্ছে ল্যাট্রোবেসিলাস ব্যাকটেরিয়া আর
এ ব্যাকটেরিয়া আমাদের পেটের ভেতরে গিয়ে সেগ্রেশন বাড়িয়ে দেয় ফলে মন সবসময়
সতেজ থাকে ফলে ঘুমের সমস্যা খুব সহজে সমাধান হয়ে যায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে: একটি মানুষ সারাদিনে যত পরিমাণে খাবার খায়
এবং খাবারের মধ্য দিয়ে যত পরিমানে ক্যালরি তার শরীরের মধ্যে প্রবেশ করছে তার
মাত্র ২% ক্যালরি যদি টক দই থেকে নিতে পারে তাহলে সে মানুষটির হাইপার টেনশন বা
উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার চান্সেস ৩০% পর্যন্ত কমে যায়। এছাড়াও দইয়ের মধ্যে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে
ম্যাগনেসিয়াম যে ম্যাগনেসিয়াম আপনার উচ্চ রক্তচাপকে কম করতে সাহায্য করে এবং
আপনার রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। তাই আপনার রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে
রাখার জন্য বা আপনি যদি একজন হাইপার টেনশনের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার হাইপার
টেনশনকে কম করার জন্য টক দই খেতে পারেন।
আলসার প্রতিরোধে: টক দইয়ের মূল কাজই হচ্ছে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে
সহায়তা করা আর এর ভেতরে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পেটের সমস্যা হচ্ছে আলসার, আ বললেন
বুঝলেনর এই সমস্যা সমাধানেও বেশ ভূমিকা রাখে টক দই কারণ টক দই রয়েছে ল্যাটট্রিক
এসিড যা পেটের খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে পেটকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।
মানসিক চাপ দূর করতে: আপনারা হয়তো খেয়াল করে থাকবেন বেশিরভাগ পরিবারের
মা-বাবারা বা গুরুজনরা বাচ্চাদেরকে পরীক্ষার দিনে সকালবেলা টক দই খাইয়ে স্কুলে
পাঠায়। তার কারণ টক দইয়ের মধ্যে যে ল্যাট্রোবেসিলাস ব্যাকটেরিয়া রয়েছে এই
ব্যাকটেরিয়া আমাদের পেটের মধ্যে যাওয়ার পরে সেরোটেনিন হরমোনের সিগ্রেশন
বাড়িয়ে দেয় আর এসে রোটেনিন হরমোন হলো হ্যাপি হরমোন যখন আমাদের শরীরে সেরোটেনিন
হরমোন বেশি বেশি সিক্রেশন হতে থাকে তখন যে কোন প্রকার মেন্টাল অ্যাংজাইটি বা
মেন্টাল ডিপ্রেশন বা যেকোনো ধরনের মেন্টাল স্ট্রেস খুব সহজেই কমে যায়। তাই
বাড়ির বাচ্চারা চিন্তামুক্ত হয়ে পরীক্ষা দিতে
পারে বা মাথা ঠান্ডা করে পরীক্ষা দিতে পারে তাই বাড়ির গুরুজনরা তাকে টক দই
খাইয়ে পরীক্ষা দিতে পাঠায়। অতএব আপনি বুঝতে পারলেন আপনি যদি মেন্টাল
অ্য্যাংজাইটি বা মেন্টাল ডিপ্রেশনের মত সমস্যায় ভুগছেন আপনি কিন্তু নিয়মিত টক
দই খেতে পারেন এই সমস্ত সমস্যাগুলোকে এড়িয়ে চলার জন্য।
অকালে চুল পাকা বন্ধ করতে: টক দই থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন ও
মিনারেল আমাদের চুলকে অকালে পেকে যাওয়ার হাত থেকে খুব সহজে সুরক্ষা দেয় এবং এর
সাথে সাথে চুলকে মুসলিম ঘন ও মজবুত করে।
ত্বকে সুন্দর ও সুস্থ রাখতে: যদি আপনার ত্বকের মধ্যে সান ড্যামেজ, ব্রণ,
পিপমেন্টেশন, লার্জ পোর, ফাইন লাইন এবং তার সাথে সাথে যদি আপনার ত্বক অত্যন্ত
ড্রাই হওয়ার সাথে সাথে ইচিটিং সেনসেশন থাকে তাহলে আপনার স্কিনকে মোশ্চারাইজ করার
সাথে সাথে সমস্ত সমস্যাকে দূর করতে সক্ষম। তার কারণ টক দইয়ের মধ্যে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং জিংক যেগুলো
আপনার স্ক্রিনের জন্য যথেষ্ট উপকারী।
ভিটামিন বি তৈরি করতে: আমাদের শরীরে ভিটামিন বি তৈরি তৈরি করতে সহায়তা
করে টক দই। ভিটামিন বি আমাদের শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজন আমরা সকলেই জানি এজন্য
আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত টক দই রেখে শরীরে ভিটামিন বি এর ঘাটতি পূরণ করুন।
খুকশির সমস্যা দূর করতে: যদি আপনার চুলে ড্যানড্রাম বা খোকশির মতো সমস্যা
রয়েছে এবং সে সমস্যাগুলো কোনভাবে সমাধান করা যাচ্ছে না তাহলে কিন্তু আপনি টক দই
এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ার মধ্যে লাগান দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে আপনি
ম্যাজিক্যাল রেজাল্ট পাবেন এবং তার সাথে সাথে টক দই যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
এবং মিনারেল রয়েছে সেগুলো আপনার চুলের গোড়াকে মজবুত করতে এবং আপনার চুলকে
সুন্দর করতে সাহায্য করবে।
দাঁত মজবুত করতে: টক দই থাকায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক ও
পটাশিয়াম আমাদের দাঁতকে মজবুত করতে সহায়তা করে। দাঁতকে সুরক্ষা রাখার সকল
পুষ্টি উপাদান একসঙ্গে হয়তোবা কোন খাবারে নেই এজন্যই দুধকে বা দুধকে
প্রক্রিয়াজাতকৃত বিভিন্ন খাদ্যকে সুপার ফুড বলা হয়।
হাড় এবং মাংসপেশীকে মজবুত করতে: টক দইয়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস এই তিনটি জিনিসই কিন্তু আপনার হারকে মজবুত করতে
এবং আপনার মাংসপেশীকে মজবুত করতে সহায়তা করে। তাই যদি আপনি নিয়মিত ভাবে টক দই
খেতে পারেন ভবিষ্যতে গিয়ে আপনার অস্টিওপোরোসিস, অস্টিওজেনেসিস ইনপারফেক্টটা এবং
অস্টিওআর্থারাইটিস্ট এর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
টক্সিন বের করতে: টক দই যেহেতু খুব সহজেই পেটের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে
পারে এবং পেটের গ্যাস দূর করে ফলে খুব সহজেই শরীর থেকে টক্সিন জাতীয় পদার্থ বা
খারাপ কোলেস্টেরলে মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে ফলে
নিয়মিত টক দই খেলে শরীর যেন রিফ্রেশ হয়ে ওঠে।
ডায়বেটিস ও হার্টের রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে: টক দই যেহেতু কোন প্রকার চিনি
বা মিষ্টি জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হয় না ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি
উপকারী এছাড়াও হার্টের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিশেষ ভূমিকা রাখে টক দই।
ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে: আমাদের শরীরে যে সেলগুলো তৈরি হয় সেগুলো
সম্পূর্ণ প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয় আর দইকে হাই প্রোটিন এর উৎস বলা হয় যেহেতু টক
দই হাই প্রোটেন সম্পূর্ণ তাই মৃত কোষ কে দূর করে নতুন কোষ অর্থাৎ প্রোটিন সমৃদ্ধ
কোষ তৈরি করতে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় টক দই রাখতে পারে।
হাড়ের ক্ষয় রোধে: শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষয় মূলত ক্যালসিয়ামের অভাবে
হয়ে থাকে। টক দই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক,
সিলিনিয়ামম ও ভিটামিন ডি। আমাদের শরীরে অনেক সময় ভিটামিন দিয়ে খাওয়ার সাথে
সাথে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাদ্য খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে কিন্তু যেহেতু টক দই
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন দিয়ে দুটোই বিদ্যমান রয়েছে এর জন্য এক্সট্রা করে ভিটামিন
ডি এর পাশাপাশি ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
রুচি বৃদ্ধিতে: অনেক সময় জ্বর থেকে বা বিভিন্ন রোগ থেকে ওঠার পর আমাদের
খাওয়ার রুচি চলে যায় এর জন্য ডক্টর অনেক সময় এমন ধরনের খাবার জ্বর থেকে বা
অন্য রোগ থেকে ওঠার পর খেতে বলে যেগুলোতে সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে বা যা
সারাদিন অল্প পরিমাণ খেলে ও আপনার
শরীরে সকল পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি মিটিয়ে দেবে বা পূরণ করে দেবে এবং আপনার রুচিকে
বৃদ্ধি করবে যেমন- টক দই। এর জন্য যেকোনো রোগ থেকে ওঠার পর নিজেদের শরীরকে আরো
সুস্থ করে তুলতে হলে নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় টক দই রাখুন।
উপরোক্ত উপকারিতা ছাড়াও টক দইয়ের আরো হাজারো টক দইয়ের উপকারিতা রয়েছে যা বলে
শেষ করা যাবে না তাই নিম্নে আরো কয়েকটি টক দইয়ের উপকারিতা সম্পর্কে তথ্য দেয়া
হলো-
- বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা নিয়মিত টক দই খায় তাদের কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম এজন্য আপনার খাদ্য নিয়মিত টকদই রাখার চেষ্টা করুন।
- বাত ব্যথা প্রতিরোধে বা মাংসপেশীর ব্যথা বা শরীরে জ্বালা প্রতিরোধ বিশেষ ভূমিকা রাখে টক দই।
- আমাশয় পেটের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে আমাশয় সমস্যা সমাধানেও সহায়তা করে টক দই।
- আইবিএস অর্থাৎআইটেবল ভাওয়েল সিনডোম সমস্যার সমাধানে বিশেষ সহায়তা করে টক দই।
- দাঁতের গোড়া ও দাঁতের ব্যথা কমাতে ও নখ সুরক্ষায় টক দই নিয়মিত খাওয়ার কোন জুড়ি নেই।
- শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে বা প্রচন্ড গরমে শরীরকে শীতল করতে আমরা অনেকে খেয়ে থাকি কারণ এতে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরে তাপমাত্রাকে শীতল করতে পারে।
- ত্বকের বার্ধক্য দূর করতে সহায়তা করে টক দিয়ে থাকা বিভিন্ন প্রকারের ভিটামিন।
- গবেষণায় দেখা গিয়েছে টক দই বিষন্নতা ও উদ্বেগ খুব সহজেই দূর করতে পারে।
- পেটের ঘা সারাতে সহায়তা করে কারণ টকদয়ে রয়েছে প্রবায়োটিক এসিড, ল্যাট্রিক্স অ্যাসিড এবং ল্যাট্রোবেসিলাস ব্যাকটেরিয়া যা পেটকে ঠান্ডা রাখে এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে সহায়তা করে।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে বিশেষ ভূমিকা রাখে কারণ রয়েছে প্রোবায়োটিক উপাদান আর এই পুষ্টি উপাদানটি গ্যাসের নিরাময় করতে সাহায্য করে।
- যাদের ল্যাট্রোস সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ যারা দুধ খেতে পারেন না বা দুধ-জাত খাবার খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা হয় তারা টক দই খেতে পারেন এতে উল্টো পেটের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হবে।
- মুখের ঘা সারাতে টক দই বেশ ভালো কাজ করে এজন্য মুখের ঘা হলে নিয়মিত ঘা স্থানে টক দই ব্যবহার করলে দ্রুত নিরাময় পাওয়া যায় এছাড়াও আপনি নিয়মিত খাদ্য তালিকা রেখে ও ভালো ফলাফল পাবে।
- ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করার জন্য টক দই ও মধু ভালো করে মিক্স করে পেস্ট সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহারে খুব সহজে ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করতে সহায়তা করবে।
- গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলা ক্যালসিয়ামের ও বিভিন্ন উপাদানের ঘাটতি মেটায় এবং গর্ভে থাকা বাচ্চার ভ্রূণ ও দৈহিক বিকাশ গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে নিয়মিত টক দই খেলে।
টক দইয়ের অপকারিতা
এতক্ষন আমরা টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে টক দইয়ের উপকারিতা
সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা টক দইয়ের যেহাজার উপকারীতের মধ্যে সামান্য কিছুতে টক
দইয়ের অপকারিতা গুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে জানব চলুন এ সম্পর্কেও বিস্তারিত
সঠিক তথ্য গুলো জেনে নিন-
- আমরা প্রথমেই জেনেছি টক দই হলো ন্যাচারাল প্রোবায়োটিক খাবার যেটা স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট উপকারী কিন্তু সব সময় খেয়াল রাখবেন যদি আপনি একজন ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন বা আপনার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকে সেক্ষেত্রে টক দইয়ের ভেতরে কোন প্রকার মিষ্টি জাতীয় পদার্থ ব্যবহার না করা। তবে সামান্য মধু, মিশ্রি, লেবু ইত্যাদি মিশিয়ে ডায়াবেটিস রোগীরা মাঝে মাঝে খেতে পারেন।
- আমরা সকলেই জানি টক দইয়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে ফসফরাস এবং প্রোটিন তাই কিডনি রোগীরা খুব অল্প পরিমাণে টক দই বা দই খেতে বলা হয় সম্ভব হলে টক দই একেবারে এড়িয়ে চলার কথা বলা হয় বা আপনি যদি খেতে চান তাহলে যে চিকিৎসকের আন্ডারে চিকিৎসা নিচ্ছেন সেই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিয়েই কিন্তু আপনি টক দই খাবেন।
- যে সকল ব্যক্তির ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা সরাসরি ফ্রিজ থেকে টক দই খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এতে। সাধারণত টক দই ফ্রিজ থেকে বের করে খাওয়া হয় কিন্তু এজমা রোগী বা ঠান্ডা জনিত সমস্যায় রোগী ফ্রিজ থেকে বের করে খেলে ঠান্ডা জনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে এর জন্য ফ্রিজ থেকে বের করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট নরমাল টেম্পারেচারে রেখে খাবেন।
- যে সকল ব্যক্তির ল্যাক্টোজ গ্রহণে সমস্যা হয় তারা ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে টক দই গ্রহণ করবেন।
- তবে কখনো গরম করে খাবেন না এতে টক দই সকল পুষ্টি উপাদান ও গুণ নষ্ট হয়ে যায় এছাড়াও টক দই সারাদিনে যেকোনো একবার খাবেন সকালে খাওয়ার আধাঘন্টা পরে কিংবা দুপুরে খাওয়ার আধঘণ্টা পরে অথবা রাত্রে খাওয়ার আধাঘন্টা পরে তবে যাদের সমস্যা রয়েছে তারা রাত্রে খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য সারা দিনে দুই থেকে তিন চামচ বা ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম পরিমাণের চেয়ে বেশি টক দই খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কারণ এতে রয়েছে অত তাদের পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যা শরীরে এ সকল পোস্ট উপাদানের মাত্রা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়ে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ঘটাতে পারে।
- খাদ্য জাতীয় সকল কিছু আমাদের স্বার্থের জন্য বেশ উপকারী কিন্তু সঠিক পরিমাণ সঠিক সময় এবং মাত্র অতিরিক্ত ভালো খাবারও শরীরের জন্য বিরূপভাবে ফেলতে পারে তেমনি টক দই। তবে যদি আপনি মাত্র অতিরিক্ত বা সঠিক সময়ে না খান তাহলে ওপরে চাইতে উপকারী স্বাস্থ্যের জন্য বেশি হবে এজন্য সঠিক পরিমাণ জেনে ও সময় জেনে অবশ্যই টক দই খাবেন।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন তবে ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে টক দইয়ের আরো হাজারো উপকারিতা ও
অপকারিতা রয়েছে এবং এ সম্পর্কে মানুষের মনে আরও বিভিন্ন প্রশ্ন রয়েছে। তাই আজ আমি টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও টক দই সম্পর্কে আরও বিভিন্ন
প্রশ্নের উত্তর নিম্নে বিস্তারিত দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যেমন-
- টক দইয়ে কি কি পুষ্টির উপাদান রয়েছে
- টক দই খেলে কি গ্যাস হয়
- টক দই খাওয়ার উপযুক্ত সময়
- রাতে টক দই খেলে কি হয়
- খালি পেটে টক দই খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় টক দই খেলে কি হয়
- টক দই ইংরেজি- টক দই এর দাম কত
টক দইয়ে কি কি পুষ্টির উপাদান রয়েছে
টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তো আমরা জানলাম কিন্তু টক দই কি কি
পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা কি আমরা জানি না জানলে চলুন আপনার শরীরে কোন পুষ্টি
উপাদানের ঘাটতি রয়েছে এবং আপনার শরীরে যে পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন সেই পুষ্টি
উপাদানটি টক দইয়ে রয়েছে কিনা জেনে নেই টক দইয়ে কি কি পুষ্টির উপাদান রয়েছে
নিম্নে দেখে জেনে নেই-
ভিটামিন ও মিনারেল
- ক্যালোরি-৯৮ পার্সেন্ট
- ফ্যাট-৮.৬ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট ৩.৪ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট-৬.৮ গ্রাম
- প্রোটিন ২২ গ্রাম
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন বি
- টামিন সি
- ভিটামিন বি ১২
- ভিটামিন ডি
- ক্যালসিয়াম
- পটাশিয়াম
- সোডিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- আয়রন
- অ্যান্টি অক্সিডেন্টের
ব্যাকটেরিয়া
টক দই খেলে কি গ্যাস হয়
এতক্ষণ আমরা টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম কিন্তু অনেকের
মাঝে এমন ভুল ধারণা ও প্রশ্ন রয়েছে টক দই খেলে কি গ্যাস হয় এটি সম্পূর্ণ ভুল
ধারণা বিভিন্ন গবেষণা ও ডক্টরদের মতে টক দই রয়েছে ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক
ব্যাকটেরিয়া যা আমাদের পাকস্থলীর পাচনতন্ত্র এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের
জন্য জীবিত এই ব্যাকটেরিয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়াও এই ল্যাকটোব্যাসিলাস
ব্যাকটেরিয়া
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের ফাংশনকে ভালো করতে সাহায্য করার সাথে সাথে হজম
ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এই থেকে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারছি যে টক দই
আমাদের গ্যাসের সমস্যাকে বৃদ্ধি করে না বরং গ্যাসের সমস্যা সমাধানের সাথে সাথে
আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করে পেটকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও
আপনারা উপরোক্ত টক দই এর ৪২ ধরনের উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে উপকারিতা সম্পর্কে
জেনেছেন আশা করি।
টক দই খাওয়ার উপযুক্ত সময়
আমরা এতক্ষন টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম কিন্তু টক দই
খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন সম্পর্কে সঠিক তথ্য কি জানেন যদি না জেনে থাকেন তাহলে
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো। টক দই খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে বিকেলে
এছাড়াও আপনি সকালের নাস্তায়, দুপুরে খাবারের আধা ঘন্টা পরে কিংবা রাতে খাবার
আধা ঘন্টা পরে খেতে পারেন। দুপুরে কিংবা যেকোনো সময় ভারী কিংবা তো খাবার
খাওয়ার পরে টক দই খাওয়ার পেট এবং স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। তবে যাদের
ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা রাত্রে টক দই খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন কারণ টক দই
ফ্রিজে রাখা হয়। যার ফলে সরাসরি ফ্রিজ থেকে বের করে খেলে অ্যাজমা বা ঠান্ডা
কিন্তু সমস্যা থাকলে তা বৃদ্ধি হওয়া সম্ভব না অনেক বেশি। তবে আপনি যদি রাত্রে
খেতে চান তাহলে অবশ্যই সরাসরি ফ্রিজ থেকে বের করে না খেয়ে নরমাল টেম্পারেচার
হওয়ার পর খাবেন।
রাতে টক দই খেলে কি হয়
আজকের আলোচ্য বিষয় টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা কিন্তু অনেকের মনে এমন
প্রশ্ন রয়েছে রাতে টক দই খেলে কি হয়। বিভিন্ন গবেষণা ডক্টরে এবং আয়ুর্বেদিক
চিকিৎসকের মতে রাতে টক দই খাওয়া মোটেও ভালো নয়। এর কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে
রাতে টক দই আমাদের শরীরে বিপরীত ক্রিয়া কলাম বাড়ায় ফলে
আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে যেমন-বমি বমি ভাব,
আর্থ্রাইটিস বেড়ে যায় অর্থাৎ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা অনুভূত হয়,
স্থূলতা সমস্যা বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা অনেক বেশি, ঠান্ডা জড়িত বিভিন্ন সমস্যা
যেমন সর্দি, কাশি, জ্বর, কফ, অ্যাজমা ইত্যাদি ত্বকের বিভিন্ন টিস্যুর ড্যামেজ
ছাড়াও ব্রণ হতে পারে।
এছাড়াও টক দই থাকা অত্যধিক পরিমাণে প্রোটিন ও ফ্যাট রাত্রে হজম প্রক্রিয়াকে
ধীরগতি করে পেটের বিভিন্ন সমস্যা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি দেয়। এর জন্য সবচেয়ে
বেশি ভালো হবে আপনারা রাতে খাওয়া থেকে বিরত থেকে সকালে, দুপুরে কিংবা বিকেলে যে
কোন সময় খাবেন এতে করে সব সঠিক উপকারিতা ও গুনাগুন আপনার শরীর পাবে।
খালি পেটে টক দই খেলে কি হয়
আজ আমি টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সহ টক দই সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের
উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি সকালে কমেন্ট করে
থাকে সেটা হল খালি পেটে টক দই খেলে কি হয় বা ওজন নিয়ন্ত্রণের সময় খাওয়া যাবে
কিনা বা খেলে কি ওজন বৃদ্ধি পাবে। টক দই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোবায়োটিক যা
খুব সহজে আমাদের
শরীরের পাকস্থলীর বিভিন্ন অন্ত্রের কার্যকলাপকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও
টক দই রয়েছে ল্যাকটোব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া, বিভিন্ন ভিটামিন প্রোটিন ও খনিজ যার
ফলে যখন আমরা টক দই খাই তখন ঐ সমস্ত ভালো ব্যাকটেরিয়া জীবিত অবস্থাতে আমাদের
গাটের মধ্যে বা ডাইজেস্ট সিস্টেমের মধ্যে প্রবেশ এবং আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের
ফাংশনকে
ভালো করতে সাহায্য করে তার সাথে সাথে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং ওজন
নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শরীর সুস্থ থাকে। এছাড়া আপনি যদি লো ফ্যাট টক দই তৈরি করে
খান তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আরো বেশি ভালো ফলাফল পাবেন। তবে যাদের গ্যাস্ট্রিকের
অতিরিক্ত সমস্যা রয়েছে বা ল্যাক্টোজ গ্রহণে সমস্যা রয়েছে তারা খালি পেটে
টক দই খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এতে সমস্যা আরো বেশি বেড়ে যেতে পারে। এ
থেকে আমরা বুঝতে পারছি খালি পেটে টক দই খেলে তেমন কোন ক্ষতি হয় না বরং অনেক বেশি
উপকার হয়েছে তবে সামান্য কিছু বা বিশেষ ব্যক্তিদের বিশেষ কিছু রোগের ক্ষেত্রে
খালি পেটে টক দই খাওয়া সমস্যা কারণ হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় টক দই খেলে কি হয়
টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত জানলেন কিন্তু গর্ভাবস্থায় টক দই
খেলে কি হয় তা কি আপনি জানেন। যদি না জেনে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
গর্ব অবস্থায় টক দই খেলে তেমন কোন ক্ষতি হয় না বরং অনেক বেশি উপকার রয়েছে
গর্ভবতী মহিলার জন্য এবং তার গর্ভে থাকা বাচ্চার জন্য। বরং অনেক পুষ্টিবিদ বা
চিকিৎসকরা বলে থাকেন একজন গর্ভবতী মহিলা নিয়মিত
খাদ্য তালিকায় অবশ্যই টক দই রাখবেন না রাখলে কিছু বিপদ থাকে কারণ টক দই রয়েছে
এমন কিছু পুষ্টি উপাদান যা বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার ফলেও পাওয়া যায় না
কিন্তু একমাত্র টক দই খেলে সে সকল পুষ্টি উপাদান খুব সহজেই পাবে একটি খাবারের
মাধ্যমে পেয়ে থাকে একজন গর্ভবতী মহিলা যা তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
টক দই একজন গর্ভবতী মহিলার অন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং ইমিউনিটি খুব দ্রুত বাড়িয়ে
দেয়। এছাড়াও একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য ক্যালসিয়াম অত্যন্ত প্রয়োজন কারণ
গর্ভাবস্থায় মায়ের হাড় ও পেশি যেমন মজবুত থাকা দরকার তেমনি গর্ভে থাকা বাচ্চার
হাড়, ভ্রূণ ও দৈহিক গঠন বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখে ক্যালসিয়াম যা টক দই য়ে
অত্যাধিক পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে।
চিকিৎসক ও গবেষকদের মতে দুধের তুলনায় টক দইয়ে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কয়েক গুণ
বেশি রয়েছে। টক দই গর্ভবতী মহিলার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো
কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে, হার্টের
সুস্থতা বজায় রাখে, চোখ, হরমোন জনিত পরিবর্তন, পিগমেন্টেশন প্রতিরোধ,
অতিরিক্ত ওজন হওয়া থেকে বিরত, উদ্বেগ, মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত রাখে,
কিডনি ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করতে সহায়তা করে এই টক দই।
এজন্য অবশ্যই একজন গর্ভবতী মহিলার ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে নির্দিষ্ট মাত্রায়,
নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত টক দই খাদ্য তালিকায় যুক্ত করবেন।
টক দই ইংরেজি- টক দই এর দাম কত
টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্ক ছাড়াও আরো বিভিন্ন বিষয়তো জানলেন
কিন্তু টক দই ইংরেজি- টক দই এর দাম কত তা কি আপনারা জানেন। টক দই এর ইংরেজি হল
Sour Yoghurt এবং টক দইয়ের দাম বিভিন্ন সময় চাহিদা এবং সরবরাহ অনুসারে বিভিন্ন
হয়ে থাকে তবে আমি আপনাদেরকে এখন একটি বর্তমানে বাজারে টক দইয়ের দাম কত তা
জানাবো। বর্তমানে এক কেজি টক দইয়ের দাম ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা মূল্যে পাওয়া যায়।
এই মূল্য কখনও কম আবার কখনো বেশি হয়।
লেখকের মন্তব্য-টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের টক দই এর ৪২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
গর্ভাবস্থায় টক দই খেলে কি হয় ইত্যাদি ছাড়াও টক দই সম্পর্কে অনেক জানা-অজানা
বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছে। আমাদের আর্টিকেলটি
আপনার ভালো লাগলো অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য
শেয়ার করবেন। এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত
ভিজিট করুন, সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন
বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি
কেমন লাগলো কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url