জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
এবং খাওয়ার নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন ইত্যাদি। এছাড়াও জামের বিচি সম্পর্কে
আরো জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং
খাওয়ার নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন ছাড়াও জামের বিচি সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন
ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং সঠিক খাওয়ার নিয়মে ও
পরিমাণ জানতে পারবেন এবং জামের বিচির সঠিক উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা
আজ আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করছি জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং
খাওয়ার নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন ইত্যাদি ছাড়াও জামের বিচি সম্পর্কে বিভিন্ন
জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য। হোমিওপ্যাথিক ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে ঔষধি গুন
সম্পূর্ণ জামের বিচি স্বাস্থ্যবি বিভিন্ন রোগ সমাধানে বহুল ব্যবহৃত হয়।
আরো পড়ুনঃ
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
বর্তমানে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানা গিয়েছে জামের তুলনায় জামের বিচিতে
স্বাস্থ্য উপকারী গুনাগুন কয়েকগুণ বেশি। যার কারণে বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে জামের
বিচি ব্যবহার করা হয় ফলে এর চাহিদা ও অনেক বেশি। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের
জন্য জামের বিচি যাদুকরি মহা ঔষধ। ডায়াবেটিস রোগীদের যে ঔষধ রয়েছে সে ঔষধের
একটি উপাদান হল জামের বিচি।
এ থেকে আপনারা খুব সহজে জানতে পারছেন জামের বিচি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা
উপকারী। এত গুণসম্পন্ন জামের বিচি আমাদের ডায়াবেটিস রোগ নিরাময় ছাড়াও পেটের
সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক, হাড় মজবুত, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি, রক্ত পরিষ্কার, ওজোন
নিয়ন্ত্রণ, ক্যান্সার প্রতিরোধক ইত্যাদি আরও হাজার স্বাস্থ্য উপকারিতা বয়ে
নিয়ে আসে।
তাই আজ আমি আপনাদের মাঝে জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন নিয়ে শুধু আলোচনা করছি না জামের বিচির পাউডার তৈরির
নিয়ম, ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে জামের বিচি কতটা উপকারী, জামের বিচির দাম ইত্যাদি
ছাড়াও আরো জামের বিচি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করেছি। তাই আশা করি জামের বিচির
২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন ছাড়াও নিম্ন
জামের ভীতি সম্পর্কে লেখা পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন।
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
আজ আমরা আপনার মাঝে জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
সম্পর্কে আলোচনা করব। জাম আমরা মোটামুটি সকলেই চিনি এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতা
সম্পর্কে আমাদের সকলের মোটামুটি ধারণা রয়েছে তবে জামের থেকে যে এর বিচিতে
স্বাস্থ্য উপকারিতা বেশি এ সম্পর্কে আমাদের বেশিভাগেরই কোন ধারণা নেই।
আরো পড়ুনঃ
ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
আশা করি জামের বিচির ২০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে
জাম খাওয়ার পর কখনোই মূল্যবান এই জামের বিচি ফেলবেন না। তাই চলুন দেরি না করে
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে
বিস্তারিত আলোচনা থেকে জেনে নেই।
জামের বিচির উপকারিতা
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম মধ্যে প্রথমে আমরা জামের
বিচির উপকারিতা সম্পর্কে জানব। জামের বিচি যেহেতু ঔষধি গুণসম্পন্ন এবং এটি
বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় যার কারণে এর হাজারো স্বাস্থ্য উপকারিতা
রয়েছে যা বলে শেষ করা সম্ভব নয় তবে জামের বিচির উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে আংশিক
স্বাস্থ্য উপকারিতা তুলে ধরলাম-
ত্বক সুস্থ রাখতে: জামের বিচি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এই
ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে ত্বককে স্বাস্থ্যজ্জ্বল করতে
সহায়তা করে।
শক্তি বৃদ্ধি: জামের বিচি আমিষ সমৃদ্ধ একটি খাবার যা নিয়মিত গ্রহণে শরীরে
দৈনিক আমিষ এর চাহিদা মিটানো সম্ভব ফলে শারীরিক শক্তি অক্ষুণ থাকে বিশেষ করে
পুরুষের বীর্য বৃদ্ধি হয় নিয়মিত জামের বিচি খেলে।
ডিটক্সিন করে: কর্ম ব্যবস্থার কারণে আমাদের সঠিক না থাকার কারণে নিয়মিত
আমরা বিভিন্ন ধরনের তৈলাক্ত বা ফ্যাট যুক্ত খাবার খাই যার ফলে আমাদের শরীরে
বিভিন্ন ধরনের টক্সিন জমা হয়। তবে জামের বিচিতে শরীর ডিটক্সিফাই করার মত পুষ্টি
উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীর হতে বিষাক্ত পদার্থ বা টক্সিন মলের মাধ্যমে বের
করতে সাহায্য করে একটু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে জাম লিভার কিডনি পরিষ্কার করতে
বিশেষ ভূমিকা রাখে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত খাদ্য
তালিকায় জামের বিচি রাখলে এতে থাকা পুষ্টি উপাদান মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত
করে ফলে স্মৃতিশক্তি ও কর্মে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: জামের বিচিতে থাকা অত্যধিক পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার,
ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পুষ্টি উপাদানর শরীরের অতিরিক্ত মেয়ে বা
চর্বি ঝরাতে অনেক বেশি সাহায্য করে এছাড়াও এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার অতিরিক্ত
ক্ষুধা লাগা নিয়ন্ত্রণে আনে যার করার ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়ে আসে।
হার্ট সুস্থ: জাম বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আমাদের হাটকে
সুস্থ রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণে:
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে জামের বিচির
সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা। এশিয়া
প্যাসিফিক জার্নাল অব ট্রপিক্যাল বায়োমেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায়, জামের
বিচির গুঁড়া একটি রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি এমন
ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করলে দেখা যায় ইদুরে রক্তে ইনসুলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে
আসছে। ফলে জামের বিচি অতিরিক্ত চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে যার
কারণে ডায়াবেটিস জামের বিচিকে বলা হয় এন্টি ডায়াবেটিক্স এজেন্ট। জামের বিচির
গুড়া নিয়মিত সকালে চায়ের সঙ্গে খেলে এই পানীয়
আমাদের শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ আনতে অনেক
বেশি সহায়তা করে। কারণ জামের ভিত্তিতে চিনির পরিমাণ নেই বললেই চলে তবে যেহেতু
আমিষ ও ফাইবার অত্যাধি পরিমাণ রয়েছে এজন্য অবশ্যই সঠিক মাত্রা ডক্টরের পরামর্শ
নিয়েই ডায়াবেটিস রোগ গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন।
ডায়াবেটিস রোগীর ঘনঘন প্রসাব ও তৃষ্ণা কমায়:
ডায়াবেটিস
রোগীরা তাদের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন রেসিপিতে জামের বিচি পাউডার খেলে এটি
খাবারের স্ট্যাস ভেঙে ফেলে এবং জামাই বিচিতে থাকা জাম্বোলাইন ও জাম্বোসাইন উপাদান
রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আসে। যার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের ঘন ঘন
প্রসাব ও অতিরিক্ত পানির প্রতি তৃষ্ণা কমে আসে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: জামের বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ডায়েটারি ফাইবার, প্রোটিন, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন
ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম ও আয়রন ইত্যাদি। আর এই সকল পুষ্টি উপাদান
আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস ফাঙ্গাস ও জীবাণুর আক্রমণ হতে
সুরক্ষা প্রদান করে এজন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আপনি
নিয়মিত জামের বিচির গুড়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকালে খেতে পারেন অথবা বিভিন্ন
ধরনের রেসিপিতে ব্যবহার করতে পারেন।
মুখের গন্ধ দূর করতে: জামের বিচিতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আমাদের
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপের কারণে আমাদের চোখ, হার্ট ও কিডনির মত
বিভিন্ন অঙ্গের অনেক ক্ষতি হয়। আর এই উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় রাখার
জন্য হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে ঘরোয়া পদ্ধতিতে উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জামের বিচির গুড়া খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। জামের
বিচির গুড়া নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাথে
সাথে হৃৎপিণ্ড ও সুস্থ থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক: জামের বিচিতে রয়েছে পলিফেনল নামক উপাদান যা
ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে আমাদের শরীরে কাজ করে এছাড়াও জামের বিচি জরায়ু
ডিম্বাশয় ও মলদ্বারের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে এমন প্রমাণিত হয়েছে।
পেট সুস্থ: বর্তমানে আমাদের কর্মব্যস্ততার কারণে খাদ্যাভ্যাস সঠিক নিয়মে
থাকে না যার কারণে পেট ফাঁপা,
গ্যাস্ট্রিক, বদরজম, পেটে ব্যথা ইত্যাদির মত সমস্যা লেগেই থাকছে তবে এই সমস্যা থেকে দূরে
থাকার জন্য জামের বিচির গুঁড়া খেতে পারেন এতে থাকা অত্যাধিক আমিষ ও ফাইবার
আমাদের পেটকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে।
নতুন চুল গজাতে: নতুন চুল গজাতে জামের বিচির গুঁড়ো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
এর জন্য শুধুমাত্র জামের বিচির গুঁড়ো সঙ্গে টক দই, মেহেদী ও পেঁয়াজ সহকারে ভালো
করে পেজ তৈরি করে সমস্ত চুলে মাসাজ করলে ১০ থেকে ১৫ দিনের ভেতরে আপনি পার্থক্য
লক্ষ্য করবেন।
হজম শক্তি: জামের বিচিতে রয়েছে উচ্চ ডায়েটারি ফাইবার, প্রোটিন ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ডাইজেস্ট সিস্টেমকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
হাড় মজবুত: জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
এর মধ্যে আরেকটি জামের পিছের গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হচ্ছে হাড় মজবুত করা। জামের
বিচিতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাসের মত খনিজ
উপাদান যা আমাদের হার মজবুত ও দাঁতের মাড়ি শক্ত এবং দাঁতের মাড়ি হতে রক্ত পড়া
বন্ধ করতে সহায়তা করে।
ডায়রিয়া: জামের বিচি বিভিন্ন পুষ্ট গুণে ভরপুর হাওয়ায় এটি ডায়রিয়া,
বমি ভাব, আমাশয়, অর্শ ইত্যাদি রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে।
প্রদাহ দূর করতে: জামের বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন
এ, আয়রন এবং অ্যান্থোসায়ানিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের যা আমাদের শরীরে
বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ রোধ করতে সহায়তা করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য
করে।
আশা করি উপরুক্ত আলোচনা থেকে জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম এর মধ্যে জামের বিচির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন। তবে
উপরোক্ত ছাড়াও জামের বিচির আরো হাজারো উপকারিতা রয়েছে যা একটি পোস্টের মাধ্যমে
লিখে শেষ করা সম্ভব নয়।
জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে আমরা এতক্ষণ
জামের বিচির উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম কিন্তু এর উপকারিতা গুলো পেতে হলে আমাদের
অবশ্যই সঠিক নিয়মে খেতে হবে। তাই চলুন জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে
নেই-
- ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে জামের বিচি গুড়া প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন অথবা এর ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন সমস্ত মুখে।
- জামের বিচি গুড়া করে সে পাউডার কেক, পেস্ট্রি, কুকিজ, আইসক্রিম, জেলি, মিল্কশেক, ফুড পান্না, শরবত ইত্যাদি প্রস্তুতের সময় ব্যবহার করতে পারেন।
- পেটের সমস্যা দূর করার জন্য সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানির সঙ্গে একটা চামচ জামের বিচি গুড়া মিশিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাবেন।
- এগুলো পেস্ট্রি ও বিভিন্ন ডেজার্ট এর ওপর ফ্লেভার হিসেবে ওপর দিয়ে ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন এতে স্বাদ ও খাবারের গুনাগুন কয়েকগুন বেড়ে যাবে।
- দাঁতের মাড়ির ব্যথা প্রশমের জন্য উক্ত স্থানে জামের বিচির গুঁড়া লাগাতে পারেন অথবা গরম পানি দিয়ে গুলিয়ে কুলকুচি করতে পারেন অথবা এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ জামের বিচি মিশিয়ে খেতে পারেন এতে ব্যথা কিছুটা প্রশম হবে।
- হার্টের রোগী নিয়মিত হাফ চা চামচ করে জামের বিচি গুড়া করে খায় তাহলে অনেক বেশি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবে। গ্রামের বিচির গুঁড়া চা তৈরি করে কিংবা গরম পানি অথবা শুধুমাত্র পানির সঙ্গে অথবা বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন এক চা চামচ জামের বিচির গুড়া এক গ্লাস পানিতে মিশে খেয়ে নেবেন অথবা সকালে জামের বিচির গুড়ার চা তৈরি করে খাবেন এতে শরীরের রক্তের সুগারের মাত্রা নিম্নমুখী হবে এবং ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর
মধ্যে জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন। তবে
অবশ্যই কোন রোগের সমাধানের জন্য জামের বিচির গুঁড়া খেতে চাইলে আয়ুর্বেদিক বা
হোমিওপ্যাথি অথবা আপনার ডক্টরের সাথে পরামর্শ নিয়ে সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ জেনে
খাবেন।
জামের বিচির অপকারিতা
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম মধ্যে এতক্ষণ আমরা জামের
বিচির উপকারিতা ও জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানলাম তবে আমাদের
অবশ্যই জামের বিচির অপকারিতা সম্পর্কে জানা দরকার। জামের বিচির তেমন কোন অপকারিতা
নেই তবে কোন খাবার সেটা যতই বেশি পুষ্টিগুণে ভরপুর ও স্বাস্থ্য উপকারী
হোক না কেন অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির
কারণ হতে পারে তেমনটি জামের বিচির ক্ষেত্রেও। আপনি যদি জামের বিচি মাত্রা
অতিরিক্ত খান তাহলে উপরোক্ত উপকারিতা গুলো কখনোই পাবেন না বরং আপনার স্বাস্থ্যের
আরও বেশি অবনতি ঘটবে। এজন্য অবশ্যই জামের বিচি খাওয়ার পূর্বে কোন হোমিওপ্যাথি বা
আয়ুর্বেদিক ডক্টর এর পরামর্শ নিয়ে আপনার সমস্যা বা রোগ জানিয়ে কি পরিমানে বা
মাত্রায় খেতে হবে তা জেনে বুঝে খাবেন।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন জামের বিচি সম্পর্কে
শুধুমাত্র জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম নিয়ে আমি
আলোচনা করছি না নিম্নে জামের বিচি সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা
উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম ছাড়াও জামের বিচি সম্পর্কে নিম্নত্ব বিষয় সম্পর্কে
বিস্তারিত পড়বেন যেমন-
- জামের বিচির গুনাগুন
- জামের বিচির পাউডার তৈরির নিয়ম
- ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে জামের বিচি কতটা উপকারী
- জামের বিচির দাম
জামের বিচির গুনাগুন
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা উপরোক্ত
আলোচনা থেকে জানলাম কিন্তু জামের বিচির গুনাগুন অর্থাৎ এতে কি কি পুষ্টি উপাদান
রয়েছে তা কি আপনি জানেন। যেহেতু জামের বিচি ঔষধি গুণ সম্পন্ন তাই এর পুষ্টি
গুনাগুন এর কোন শেষ নেই তবুও চলুন সামান্য ধারণা নিম্ন থেকে জেনে নেই-
- শর্করা
- আমিষ
- চর্বি
- ভিটামিন–এ
- ভিটামিন-বি
- ভিটামিন-সি
- লৌহ
- ক্যালসিয়াম
- বিটা সাইটোস্টেরল
- এসেনসিয়াল ওয়েল
- টেনিনস
- গ্লাইকোসাইড
- জামবোলিন
- ফ্লাভোনয়েডস
- ফিলোনিক
- গ্যালিক
- এলাজিক
- ক্যাজিক
- ফিরুলিক
- হেক্সাহাইড্রাইফেনিক এসিড
- হাইপোগ্লাইসোমিক
জামের বিচির পাউডার তৈরির নিয়ম
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন
ইত্যাদি সম্পর্কে জানার পর আপনি যদি জামের বিচি খাওয়ার প্রতি আগ্রহ হন তাহলে
অবশ্য আপনার জামের বিচির পাউডার তৈরির নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। জামের বিচির
পাউডার তৈরি করার জন্য প্রথমে জাম থেকে শাঁস আলাদা করে ভালো করে বিচি ধুয়ে নেব।
ভালো করে পরিষ্কার করে ধোঁয়া হয়ে আসলে পানি ঝরিয়ে রোদে দুই থেকে তিন দিন
শুকাতে দেব। জামের বিচির উপরের অংশ যখন এমন ভাবে শুকিয়ে যাবে যে হাত দিলে উপরে
চামড়াটি উঠে আসছে তখন সমস্ত জামের বিচি থেকে উপরের চামড়াটি তুলে আবারো দুই থেকে
তিন দিন টানা রোদে শুকনো করতে দেব।
এবার সমস্ত বিচিগুলো ব্লেন্ডারে ভালো করে ব্লেন্ড করে নেব এবং একটি ছাঁকনির
সাহায্যে থেকে নেব। ছাকনির উপরে থাকা বড় দানাগুলো পুনরায় ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড
করে নেব। এবার একটি এয়ারটাইট বয়ানে পাউডারটি সংরক্ষণ করে রাখবো। এভাবে আপনি
একমাস পর্যন্ত জামের বিচির পাউডার সংরক্ষণ করতে পারবেন।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে জামের বিচি কতটা উপকারী
ইতোমধ্যে আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং
খাওয়ার নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন ইত্যাদি সম্পর্কে জানলাম কিন্তু ডায়াবেটিসের
ক্ষেত্রে জামের বিচি কতটা উপকারী এই নিয়ে অনেকের মনে হাজারো প্রশ্ন রয়েছে।
জামের বিচি ব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মহা ঔষধ ধরা হয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যে ডায়াবেটিসের ঔষধ রয়েছে সে ওষুধের একটি উপাদান জামের
বিচিও রয়েছে। এ থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জামের বিচির
অবস্থানটা কত উপরে। এশিয়া প্যাসিফিক জার্নাল অব ট্রপিক্যাল বায়োমেডিসিনে প্রকাশিত
একটি গবেষণায় একটি হাইপারগ্লাইসেমিক অর্থাৎ শর্করার পরিমাণ খুবই কম।
সেই গবেষণায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ অত্যাধিক একটি ইঁদুরের ওপরে জামের বিচি
প্রয়োগ করা হয় দেখা যায় কিছুদিনের মধ্যে সেই ইঁদুরের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা
অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে জামের ভেতরে চিনি
ও সরকার মাত্রা নেই বললেই চলে যার কারণে একজন ডায়াবেটিকস রোগী নিশ্চিন্তে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য
প্রতিদিন তার খাদ্য তালিকায় জামের বিচি রাখতে পারে। তবে কোন কিছুই যেমন অতিরিক্ত
ভালো না এর জন্য একজন ডায়াবেটিস রোগী ৩০ দিন বা ১৫ দিন বিচির গুড়া খাওয়ার পর
আবারো ১৫ থেকে এক মাস বাদ দিয়ে পুনরায় খেতে পারে। এছাড়া ভালো আয়ুর্বেদিক বা
হোমিওপ্যাথি আপনার ডক্টরের সাথে পরামর্শ করে সঠিক মাত্রা বা পরিমাণ জেনে জামের
বিচির গুড়া খাবেন।
জামের বিচির দাম
জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন
ইত্যাদি জানার পর হয়তো আপনার এর বিচি খাওয়ার আগ্রহ জাগতে পারে। আপনি যদি ঘরে
জামের বিচি পাউডার তৈরি করতে না চান তাহলে জামের বিচির গুঁড়া বা পাউডার পাওয়া
যায় কিনতে পারেন। তবে আপনার
জামের বিচির দাম কত এ পোস্টটি সম্পন্ন পড়ে আপনি ধারণা পেতে পারেন। জাম যেহেতু
দেশীয় ফল যার কারণে এর জামের বিচির মূল্য কিছুটা হলেও কম তবে এর গুনাগুন ও
উপকারিতা এত বেশি যে তার তুলনায় এর দাম খুবই কম। ১০০ গ্রাম জামের বিচির পাউডারের
মূল্য ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে
আপনি বিভিন্ন সুপারশপ থেকে পেয়ে যাবেন। এছাড়াও আপনি যদি শুধুমাত্র জামের বিচি
কিনতে চান তাহলে কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন স্থানে আপনি জামের বিচি কিনতে পারবেন
যারা ভালো ভালো জাম থেকে জামের নিচে আলাদা করে বিক্রি করে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০
টাকা মূল্যে বিক্রি করা হয়।
লেখকের মন্তব্য
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের জামের বিচির ২৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, জামের বিচির গুনাগুন ইত্যাদি ছাড়াও জামের বিচি
সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা
করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও
বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url