মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় মিষ্টি
কুমড়ার বিচির ৪৫
টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কতটুকু কুমড়ার বীজ খাওয়া উচিত? ইত্যাদি।
এছাড়াও মিষ্টি কুমড়া বিচি সম্পর্কে আরো জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ
পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
প্রতিদিন কতটুকু কুমড়ার বীজ খাওয়া উচিত? ছাড়াও মিষ্টি কুমড়া বিচি সম্পর্কে
আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং সঠিক
নিয়মে, পরিমাণ জানতে পারবেন এবং মিষ্টি কুমড়া সঠিক উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আজ আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করেছি মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, মিষ্টি কুমড়ার বিচির পুষ্টিগুণ, মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম,
মিষ্টি কুমড়া বিচি খেলে কি এলার্জি হয়, প্রতিদিন কতটুকু কুমড়ার বীজ খাওয়া
উচিত?, কুমড়ার বীজ কতদিন খাওয়া উচিত?, মিষ্টি কুমড়ার বীজের দাম ইত্যাদি ছাড়াও
মিষ্টির কুমড়া সম্পর্কে আরো বিভিন্ন জানা-অজানা তথ্য নিম্নে বিস্তারিত
আরো পড়ুনঃ মিষ্টি কুমড়ার ৩৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরেছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে অনেক বেশি উপকৃত
হবেন। মিষ্টি কুমড়া বিচি কতটা উপকারী ও পুষ্টিকরণে ভরপুর খাবার হয়তো আমরা সঠিক
ধারণা না থাকলেও সামান্য ধারণা আমাদের সকলের মাঝে রয়েছে। মিষ্টি কুমড়া এমন এক
ধরনের খাবার যা বিভিন্ন ফল, বাদামের তুলনায় এমন কিছু কিছু পুষ্ট উপাদান রয়েছে
যা এগুলো খাবারের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি রয়েছে। এর জন্য দেখবেন যারা ওজন
নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে কিংবা শরীর সুস্থ রাখতে চায় অথবা খেলাধুলা
করে তাদের খাদ্য তালিকায় এটি যুক্ত রয়েছে। তাই আশা করি মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫
টি উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও নিম্নে পোস্টটি সম্পন্ন করবেন।
মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আজ আমি আপনাদের মাঝে বিস্তারিত আলোচনা করব মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে। মিষ্টি কুমড়া কতটা উপকারী আমরা সকলেই জানি যার কারণে ছোট
বাচ্চাদের প্রথম খাবার হিসেবেও অনেক সময় ডক্টাররা সেদ্ধ মিষ্টি কুমড়া খাওয়াতে
বলে থাকেন। মিষ্টি কুমড়া যদি পুষ্টিগুণে ভরপুর সুপার ফুড হয়ে থাকে তাহলে এর
বিচি আরো কয়েকগুণ বেশি পুষ্টিগুণে ভরপুর ও ঔষধি গুণ সম্পূর্ণ একটি খাবার। তাই
চলুন দেরি না করে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নেই।
মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ার বিচির হাজারো উপকারিতা রয়েছে তবে আজ আমি আপনাদের মাঝে মিষ্টি
কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে প্রথমে মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা
সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব আশা করি সম্পূর্ণ
পোস্টটি পড়ে অনেক বেশি উপকৃত হবেন। তাই চলুন দেরি না করে মিষ্টি কুমড়ার বিচির
৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা গুলো জেনে নেই-
হাড়ের সমস্যা দূর করতে: বর্তমানে ৩০ বছর বয়স থেকেই মানুষের বিভিন্ন
ধরনের হাড়ের সমস্যা দেখা দিচ্ছে যেমন- বিভিন্ন স্থানে হাড় ক্ষয়, কোমর ও মাজা
ব্যথা, হাড়ে সুক্ষ ফাটল ইত্যাদি। আর এই সকল সমস্যাগুলো মূলত হয়ে থাকে শরীরে
জিংক, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এর অভাব বর্তমানে ভেজালযুক্ত খাবারের কারণে
আমাদের শরীরে এই সকল পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবারের অভাব থেকেই
যায় আর এই সকল পুষ্টি উপাদানের অভাব মেটাতে পারেন খুব সহজেই উচ্চ জিংক সমৃদ্ধ
খাবার দিয়ে যা হল মিষ্টি কুমড়ার বিচি। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তি যদি নিয়মিত
তিন মাস ৩০ গ্রাম করে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেয়ে থাকে তাহলে তার হাড়ের সমস্যা
থাকলে তা খুব সহজেই দূর করতে সহায়তা করবে। এছাড়াও হাড়ের অস্ট্রিওপেরেসিসের মত
সমস্যাও দূর করতে সহায়তা করে থাকে মিষ্টি কুমড়ার বিচি।
হার্ট সুস্থ: আমাদের শরীরে যদি হার্ট সুস্থ রাখার জন্য খারাপ কোলেস্ট্রোল
এর মাত্রা কমে ভালো কোলেস্টের মাত্রা বাড়ানোর মতো পুষ্টি উপাদান নিয়মিত প্রবেশ
করে করানো যায় তাহলে আমাদের শরীর এমনিতেই অনেক বেশি সুস্থ থাকবে। আর এ হার্টর
সুস্থ রাখার জন্য এবং খারাপ কোলেস্টেরল মাত্র কমে ভালো কোলেস্টের মাত্রা বাড়াতে
পারে যে সকল পুষ্টি উপাদান সেগুলো হলো
মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, আঁশ সমৃদ্ধ খাবার, ভালো ফ্যাট যুক্ত খাবার ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর এ সকল পুষ্টি উপাদানই একত্রে একটি খাবারে পেতে হলে আপনি
নিয়মিত মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেতে পারেন কারণ এতে রয়েছে অত্যধিক এ সকল পুষ্টি
উপাদান এছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম খুব সহজে আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে যার কারণে আমাদের হার্ট আরো বেশি থাকে সুস্থ রাখতে সহায়তা
করবে।
কোলেস্টেরল কমায়: আমাদের শরীরের জন্য ফাইটোস্টেরল হতাম তো প্রয়োজন কারণ
এটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপ গুলো সম্পন্ন করে থাকে
যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্যান্সার প্রতিরোধ ও রক্তের কোলেস্টেরলের
মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে। যেহেতু মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে অত্যাধিক পরিমাণে
ফাইটোস্টেরল রয়েছে এর জন্য আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় এটি নিশ্চিন্তে রাখতে
পারেন।
চুল ঘন ও উজ্জ্বল: আমাদের চুলের স্কাল্প যত ভালো ও সুস্থ থাকবে আমাদের
চুলের গোড়া তত বেশি মজবুত হবে এবং চুল ঘন ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। আর আমাদের চুলের
কেল্ক কে সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন কিউকুরবিটিন অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন সি
সমৃদ্ধ খাবার। অনেক খাবার রয়েছে যেগুলোতে
এ দুইটি পুষ্টি উপাদান একসঙ্গে একত্রে পাওয়া যায় না তবে কুমড়োর বিচিতে এ দুটি
পুষ্টি উপাদানই রয়েছে এবং তা অত্যাধিক পরিমাণে। ফলে আপনি যদি নিয়মিত মিষ্টি
কুমড়ার বিচি খান তাহলে খুব সহজে আপনার চুলের বিভিন্ন সমস্যা আশা করি কুমড়োরে
বিচি সমাধান করতে সহায়তা করবে।
অনিদ্রা জনিত সমস্যা দূর: মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে বর্তমান যুগে সকলের জন্য অনিদ্রা জনিত সমস্যা দূর করা।
মিষ্টি কুমড়োর বিচিতে থাকা ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড ও সেরোটোনিন
স্নায়ুতন্ত্রের চাপ কমিয়ে অনিদ্রা জড়িত সমস্যার সমাধান করতে সহায়তা করে। আপনি
যদি নিয়মিত ঘুমানোর পূর্বে ৩০ গ্রাম পরিমাণে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খান তাহলে
আপনার স্নায়ুতন্ত্রের চাপ কমিয়ে ঘুম এবং প্রশান্তির ঘুম আসতে সহায়তা করবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মিষ্টি কুমড়ার বিচি
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কারণ ১০০ গ্রাম মিষ্টি মিষ্টি কুমড়ায় যে
পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে তা খুব সহজেই আমাদের শরীরে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে
পারবে এবং আমাদের শরীরে যে পরিমাণে ট্রেস এলিমেন্ট উপাদান অর্থাৎ ভিটামিন খনিজ ও
ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন সেই পরিমাণে মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে বিদ্যমান রয়েছে যার
ফলে আমাদের শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের পরিমাণ সঠিক থাকে ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
থাকতে সহায়তা করে থাকে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে থাকা প্রোটিন ও ফাইবার আমাদের
পেটের পাকস্থলীকে সুস্থ রাখতে বিশেষ সহায়তা করে। ফলে খুব সহজে হজম শক্তি
বৃদ্ধিতে এই বৃদ্ধি সহায়তা করে থাকে।
কিডনি, লিভার মিষ্টি কুমড়া বিচি: কিডনি ও লিভারে সুস্থতা বজায় রাখার
জন্য আমাদের শরীরে প্রয়োজন বিভিন্ন ধরনের খনিজ পুষ্টি উপাদান যেমন-
ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ম্যাগনেসিয়াম এ খনির পুষ্টি
উপাদানটি আমাদের কিডনিতে বিভিন্ন স্তরে পাথর গঠনের ঝুঁকি কমিয়ে কিডনি ফাংশন এবং
কিডনিকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে, কিডনি রোগীর জন্য পটাশিয়াম জাতীয় খাদ্য
মোটেও ভালো নয় তবে শরীরে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য মাঝারি পটাশিয়াম জাতীয় উৎস
খাবার যেমন মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে শরীরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকতে
সহায়তা করবে অপরদিকে এন্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় পুষ্টি উপাদান যেমন- ভিটামিন ই ও
ক্যারোটিনয়েডের কিডনিকে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ থেকে সুরক্ষা দিতে সহায়তা করে এবং
কিডনির ও লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে থাকে।
বাত ব্যথার দূর: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের
শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে জমে থাকা টক্সিন জাতীয় পদার্থ ও চর্বি সমূহের পরিমাণ
বাড়াকে প্রতিরোধ করে থাকে যার ফলে সৃষ্টি বাত ব্যথা অনেকাংশে কমে আসে যেহেতু এটি
একটি প্রাকৃতিক খাবার ফলে জমে থাকা বিভিন্ন জাতীয় পদার্থ সহজেই পুনরায় জমা থেকে
বাধা সৃষ্টি করে থাকে ফলে শরীরে কোন প্রকার সৃষ্টি হয় না।
ওজন কমাতে: ওজন কমানোর প্রথম সূত্র হল অল্প পরিমাণে খাওয়া কিন্তু শরীরও
কোন প্রকার পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি যেন না দেখা দেয় কারণ শরীরে যদি পুষ্টি
উপাদানের ঘাটে দেখা দেয় তাহলে ওজন তো কমে আসবে কিন্তু শরীর বিভিন্ন ধরনের রোগ
বাসা বাঁধবে কিন্তু এমন একটি খাবার রয়েছে যেটি আমাদের শরীরে সকল
আরো পড়ুনঃ
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
প্রকার পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি মিটিয়ে ক্ষুধার পরিমাণ কমিয়ে দেবে আর সেটি হল
খুবই ছোট কিন্তু অনেক পুষ্টি উপাদানে ভরপুর মিষ্টি কুমড়ার বিচি। এটি অত্যন্ত
পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন ও আঁশ জাতীয় খাদ্য হওয়ায় আমাদের ক্ষুধা কম করে দেয়
ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা খুব সহজ হয়ে যায়।
চুল বৃদ্ধিতে: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে থাকা জিংক, ভিটামিন বি, ভিটামিন এ,
সালফার, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও কিউকুরবিটিন অ্যামিনো অ্যাসিড খুব সহজেই
চুলকে বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে এর জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ৩০ গ্রাম
মিষ্টি কুমড়োর বিচি রাখতে পারেন।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে: মিষ্টি কুমড়ায় থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি
উপাদান আমাদের শরীরে একটি দেওয়াল সৃষ্টি করে যা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক ও
অবাঞ্ছিত বা ক্ষতিকারক কোষ সৃষ্টি হতে বাধা সৃষ্টি করে ফলে যার কারণে প্রোস্টেট,
ফুসফুস, পাকস্থলী, ব্রেস্ট ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অনেক বেশি সহায়তা করে
থাকে।
চোখ ভালো রাখতে: মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে
আরেকটি অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে চোখ সুস্থ রাখা বা ভালো রাখা। মিষ্টি কুমড়ার
বিচিতে থাকা বিটা ক্যালরিন আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে এবং
এতে থাকা ভিটামিন এ আমাদের চোখের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে
ও ভিটামিন বি এর ঘাটতি পূরণ করে ফলে আপনি যদি নিয়মিত মিষ্টি কুমড়ার বিচি খান
তাহলে এটি আপনার চোখকে সুস্থ রাখতে বা ভালো রাখতে সহায়তা করবে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে ভিটামিন এ ও সি পুষ্টি
উপাদান ভরপুর রয়েছে যা আমাদের ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে এবং ত্বকে হাইড্রেট করতে
সহায়তা করে। এর জন্য উজ্জ্বল ও চকচকে ত্বক পেতে চাইলে নিয়মিত আপনার খাদতালিকায়
মিষ্টি কুমড়ার বিচি রাখতে পারেন।
ম্যাঙ্গানিজের অভাব পূরণ করতে: নে আমাদের শরীরে যদি ম্যাঙ্গানিজের অভাব
সৃষ্টি হয় তাহলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় যেমন- বাতের
ব্যথা, সিজোফ্রেনিয়া, মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক কার্যকলাপ, মৃগীরোগ, হৃদরোগ,
স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলা, আলজেইমার্স ইত্যাদি এর জন্য আমাদের
শরীরে দৈনিক নির্দিষ্ট পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী
আর শরীরে এই ম্যাঙ্গানিজের ঘাটতি খুব সহজে মেটাতে পারে মিষ্টি কুমড়ার বিচি।
জ্বালাপোড়ার অনুভূতি কমাতে: শরীরে জ্বালাপোড়া বা প্রদাহ দীর্ঘস্থায়ী
কোন স্থানের ব্যথা প্রশমন বা নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ ভূমিকা রেখে থাকে মিষ্টি
কুমড়ার বিচি এর জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় এই সকল প্রদাহ থেকে মুক্তি পেতে
মিষ্টি কুমড়ার বিচি রাখতে পারেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে: মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে ভিটামিন সি যা টাইপ
টু ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে থাকে এছাড়াও এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা রক্তে শর্করা
মাত্রা কমাতে সহায়তা করে এবং অত্যাধিক পরিমাণে ফাইবার যা হঠাৎ ডায়াবেটিস বেড়ে
বা কমে যাওয়া যাওয়া নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কার্যকারী ভূমিকা রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে: আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
করে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ লবণ জাতীয় পুষ্টি উপাদান গুলো যেমন- ভিটামিন
"এ", "বি", "সি", পটাশিয়াম, ফাইবার, এন্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। আমাদের শরীরে যদি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস
খুব সহজে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের
মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করতে পারে এর জন্য আমাদের শরীরে উপরোক্ত রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী উপাদান গুলো নিয়মিত গ্রহণ করতে হবে যা একসাথে পেতে হলে আপনি
আপনার খাদ্য তালিকায় মিষ্টি কুমড়ার বিচি রাখতে পারেন কারণ উপরোক্ত সকল
উপকরণগুলো অত্যাধিক পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে এতে।
ইমিউনিটি বাড়াতে: মিষ্টি কুমড়ায় থাকা অত্যাধিক পরিমাণে জিংক আমাদের
শরীরে ইমিউনিটি সিস্টেম বৃদ্ধি করতে সহায়তা করার পাশাপাশি অস্টিওপোরোসিস এর মত
সমস্যা ও প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
গর্ভকালীন রক্তস্বল্পতা দূর করতে: মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও
অপকারিতা মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো গর্ভকালীন বিভিন্ন সমস্যা
সমাধান। একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থায় সাধারণ মানুষের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয় যার ঘাটতি শুধুমাত্র মায়ের সমস্যা
সৃষ্টি করে না বরং গর্ভে থাকা বাচ্চার ও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে।
তবে গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার রক্তশূন্যতা যেন না দেখা দেয় এর জন্য এমন
পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেগুলো রক্তস্বল্পতা খুব সহজেই রোদ করতে পারবে কারণ
এ রক্তস্বল্পতার কারণে অনেক সময় গর্ভপাতের সম্ভাবনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় যার
কারণে এর রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি খাদ্য তালিকায়
মিষ্টি কুমড়ার বিচি রাখতে পারেন কারণ এটি খুব সহজেই অনেকটা রক্তস্বল্পতা রোধ
করতে সহায়তা করবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: মিষ্টি কুমড়ার বিচি যেহেতু একটি আঁশ ও
ফাইবার যুক্ত খাবার ফলে খুব সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান
করা সম্ভব। তাই আমরা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় এ সকল সমস্যা থেকে দূর করার জন্য
মিষ্টি কুমড়ার বিচি রাখতে পারেন।
রক্তশূন্যতা দূর করতে: আমাদের শরীরের জন্য আয়রন বা লোহিত পুষ্টি উপাদানের
অত্যন্ত প্রয়োজন কারণ এগুলোই আমাদের কর্ম করার জন্য শক্তি উৎপাদন, মাংসপেশী গঠন,
শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ, শরীরকে সতেজ ও রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে থাকে। এর
জন্য আমাদের নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে আয়রনজাতক খাদ্য খেতে হয় কিন্তু
আপনি যদি নিয়মিত ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ার বিচি খান তাহলে আমাদের শরীরে দৈনিক
আয়রন জাতীয় খাবারের চাহিদার ৩০% পর্যন্ত এটা থেকে মেটানো সম্ভব।
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে: আমাদের শরীরে জিংক জাতীয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি
দেখা দিলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো প্রজনন
ক্ষমতা কমে যাওয়া বা দুর্বল শিশুর জন্ম নেওয়া কারণ আমাদের দেহের কোষ আবরণীর গঠন
করার সাথে সাথে এর কার্যকারিতা ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং আমাদের
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
শরীরের ২০০ টিরও বেশি এনজাইমের কার্যকরতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে জিংক। যেহেতু
মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে অত্যাধিক পরিমাণে জিংক রয়েছে ফলে শরীরে এই ঘাটতি মেটানোর
জন্য আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত মিষ্টি কুমড়ার বিচি রেখে এ সকল সমস্যা
থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে থাকা অত্যাধিক
পরিমাণে জিংক ও ডাই-হাইড্রো এপি-অ্যান্ড্রোস্টেনেডিয়ন প্রোস্টেট এর সমস্যা
প্রতিরোধ করে এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে থাকে।
ম্যাগনেসিয়াম এর অভাব পূরণ করে: আমাদের শরীরের জন্য ম্যাগনেসিয়াম অর্থাৎ
খনিজ জাতীয় পদার্থ অত্যন্ত প্রয়োজন কারণ খনিজ জাতীয় পদার্থ আমাদের শরীরের হাড়
মজবুত, মাংসপেশি সচল, স্নায়ুতন্ত্র সচল রাখতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে,
দৈহিক বৃদ্ধি ঠিক রাখতে, শরীরের বিভিন্ন হরমোন সমূহের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ
করতে এছাড়াও অসংখ্য জৈবিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে
ম্যাগনেসিয়াম অর্থাৎ খনিজ জাতীয় পদার্থ যা খুব সহজে আপনি পূরণ করতে পারেন
মিষ্টি কুমড়ার বিচি দিয়ে আমাদের শরীরে যে পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খনিজ
পদার্থের প্রয়োজন তার অনেকটাই পূরণ করতে সক্ষম এটি।
বার্ধক্য জনিত লক্ষণ কম করেন: অল্প বয়সে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যাওয়া
বর্তমানে মানুষের ভেতরে দুশ্চিন্তা, টেনশন ও খাদ্যাভ্যাসের বেনিয়ম হওয়ার ফলে
শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি, বিশেষ করে ভিটামিন বি এর ঘাটতির কারণে হয়ে
থাকে। আর এই ভিটামিন বি এর ঘাটতি মেটানোর জন্য আপনি যেকোনো সময় যেকোন স্থানে
মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেতে পারেন। এতে আপনার যেমন বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের
ঘাটতি মিটিয়ে আসবে তেমনি ত্বকে বার্ধক্য জনিত লক্ষণগুলো অনেকটা কমে যাবে।
মেজাজ নিয়ন্ত্রণে বা মানসিক চাপ কমাতে: বর্তমানে মানুষের ভেতরে মানসিক
চাপ, স্ট্রেস, মেজাজ খিটখিটে, টেনশন, ডিপ্রেশনের মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা
দিচ্ছে জানো যা মূলত পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে দেখা দিচ্ছে।
আর এই সমস্যাগুলো দূর করার জন্য আপনি নিয়মিত মিষ্টি
কুমড়ার বিচি খেতে পারেন কারণ এতে এমন কিছু পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে যা আপনার মেজাজ
ঠান্ডা ও মানুষের চাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে কারণ এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও
ভিটামিন বি পুষ্টি উপাদান গুলো এ সমস্যা সমাধানে বেশ কার্যকারী।
ঠান্ডা জনিত সমস্যা প্রতিরোধ করতে: যেহেতু মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে বিভিন্ন
ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলো খুব সহজে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে যার কারণে আপনি যদি নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় মিষ্টি
কুমড়ার বিচি রাখেন তাহলে মৌসুমী সর্দি, কাশি, জ্বর বা অন্য সময়ের ঠান্ডা জনিত
সমস্যা প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে এটি।
প্রোস্ট্রেট প্রন্থির টিউমার: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড,
জিংক, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড যা এই প্রোস্ট্রেট প্রন্থির টিউমার নিয়ন্ত্রণে
বিশেষ ভূমিকা রাখে। এই রোগটি এমন এক ধরনের রোগ যেখানে প্রোস্ট্রেট গ্রন্থি ধীরে
ধীরে বড় হতে থাকে কারণ টেস্টোস্টেরন হরমোন ও এর থেকে উৎপন্ন ডাইহাইড্রো
টেস্টোস্টেরন হরমোন প্রোস্ট্রেট গ্রন্থির পোস্টগুলোকে উদ্দীপিত করে তোলে ফলে নতুন
নতুন অনেক কোষের সৃষ্টি করে প্রোস্ট্রেট গ্রন্থি বাড়িয়ে প্রোস্ট্রেট গ্রন্থির
টিউমার সৃষ্টি হয়। আর এই গ্রন্থিগুলোকেই নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে
মিষ্টি কুমড়ার বিচি।
আজ আমরা মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করছি কিন্তু মিষ্টি কুমড়ার বিচি এতটাই পুষ্টিগুনে ভরপুর যে এর উপকারিতা
সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না উপরোক্ত ছাড়াও উপকারিতা রয়েছে যেমন-
- রেটিনার কোষ সুরক্ষা, বার্ধক্যজনিত দৃষ্টিশক্তির সমস্যা কমাতে এবং চোখে ছানি পড়া প্রতিরোধ করে থাকে মিষ্টি কুমড়ায় বিচিতে থাকা আলফা ক্যারোটিন ও বিটা ক্যারোটিনের মত ক্যারটিনয়েড সমূহ।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ সহায়তা করে থাকে।
- বমি ভাব দূর করে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
- শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষ সহায়তা করে।
- পেটের কৃমি প্রতিরোধে বেশ কার্যকারী একটি খাদ্য।
- লৌহঘটিত রোগ প্রতিরোধ করে।
- কিছু কিছু ক্ষেত্রে এলার্জি সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে পৃষ্ঠ কুমড়ার বীজ।
- রেডিকাল ড্যামেজ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
- নখ ভালো রাখতে সহায়তা করে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা হাজারো উপকারিতা ও অপকারিতা থেকে মিষ্টি কুমড়ার বিচির
৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম কিন্তু আমরা মিষ্টি কুমড়ার বিচির
অপকারিতা সম্পর্কে এখনো সঠিক ধারণা পাইনি তাই চলুন মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি
উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে মিষ্টি কুমড়ার বিচির অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
মিষ্টি কুমড়ার বিচির অপকারিতা
আজকের আলোচ্য বিষয় মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা তবে আমরা
উপরুক্ত আলোচনা থেকে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি এখন আমরা
মিষ্টি কুমড়ার বিচির অপকারিতা সম্পর্কে জানব। মিষ্টি কুমড়ার বিচি তেমন কোন
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকারক দিক নেই তবে আমাদের শরীরের জন্য সকল খাবারই যদি
তা অতিরিক্ত পরিমাণে বা মাত্রা অতিরিক্ত বা সঠিক
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
নিয়মে গ্রহণ করা না হয় তাহলে তা আমাদের শরীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকারক
হিসেবে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে সে খাবারটি যতই ভালো বা পুষ্টিগুনে ভরপুর হোক না
কেন। তাই চলুন মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে অপকারিতা
সম্পর্কে জানি-
- সঠিক পরিমাণে বা পদ্ধতিতে না খেলে ওজন কমার পরিবর্তে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- গর্ভঅবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে বা মাত্রা অতিরিক্ত মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে সন্তানের জন্মগত বিভিন্ন ত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
- যে সকল ব্যক্তির এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে ফলে চুলকানি, ফুসকুড়ি, লালচে ভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- উচ্চ ফাইবার থাকার কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে পরিমাণে খেলে পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফুলে যাওয়া, গ্যাস্ট্রিক এর মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার কারণে অনেকের গলা ব্যথা, কাশি হতে পারে।
- যেহেতু মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে অত্যধিক পরিমাণে ফাইবার ও ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে ফলে বাচ্চারা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া বা পেটে ব্যথার সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
- উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য মিষ্টি কুমড়ার বিচি অনেক উপকারী হলেও নিম্নে রক্তচাপ রোগীদের জন্য এটি তেমন বেশি উপকার আসে না কারণ এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা নিম্ন রক্তচাপ রোগীদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে এজন্য নিম্ন রক্তচাপ রোগীরা খেতে চাইলে অবশ্যই পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও
অপকারিতা ছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার নীতি সম্পর্কে আরো বিভিন্ন তথ্য জানতে চাইলে
সম্পন্ন পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো কারণ নিম্নে আমি মিষ্টি কুমড়ার বিচি
সম্পর্কে আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যেমন-
- মিষ্টি কুমড়ার বিচির পুষ্টিগুণ
- মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
- মিষ্টি কুমড়া বিচি খেলে কি এলার্জি হয়
- প্রতিদিন কতটুকু কুমড়ার বীজ খাওয়া উচিত?
- কুমড়ার বীজ কতদিন খাওয়া উচিত?
- মিষ্টি কুমড়ার বীজের দাম
মিষ্টি কুমড়ার বিচির পুষ্টিগুণ
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন কিন্তু আমাদের মিষ্টি কুমড়ার বিচির
পুষ্টিগুণ গুলো সম্পর্কেও ও জানা বা অবগত হওয়া অত্যন্ত জরুরী কারণ আপনি যে
খাবারটি খাচ্ছেন তাতে কি কি পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে তা জানা অত্যন্ত জরুরি তাই
চলুন দেরি না করে মিষ্টি কুমড়ার বিচির পুষ্টিগুণ গুলো জেনে নেই-
প্রতি ৩৪.৫০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়া বীজে আছে
- শক্তি- ১৮৬.৬৫ ক্যালরী,
- ম্যাঙ্গানিজ- ১.০৪ মিঃগ্রাম,
- ম্যাগনেশিয়াম- ১৮৪.৫৮ মিঃগ্রাম,
- ফসফরাস- ৪০৫.০৩ মিঃগ্রাম,
- ট্রিপটোফেন- ১১০ মিঃগ্রাম,
- আয়রন- ৫.১৬ মিঃগ্রাম,
- কপ্ওা- ০.৪৮ মিঃগ্রাম,
- ভিটামিন কে- ১৭.৭৩ মিঃগ্রাম,
- জিংক- ২.৫৭ মিঃগ্রাম,
- প্রোটিন- ৮.৮৭
- মিষ্টি কুমড়া বীজের ৩০ শতাংশই ফ্যাটি এসিড।
- ক্যালোরি- ৫৬০ ক্যালরি
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
ইতোমধ্যে আমরা মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি
কিন্তু মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম অর্থাৎ কিভাবে খেলে এর সঠিক উপকারিতাটা
আমরা গ্রহণ করতে পারব তা সম্পর্কে আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরী তাই চলুন মিষ্টি
কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন-
মিষ্টি কুমড়ার বিচি বিভিন্ন নিয়মে আপনি খেতে পারেন যেমন-
- পাকা মিষ্টি কুমড়ার বিচি রোদে শুকিয়ে বিভিন্ন সালাদের ভিতরে ব্যবহার করে খেতে পারেন।
- ভালো করে রোদে শুকিয়ে বিভিন্ন তরকারির ভেতরে ব্যবহার করে খেতে পারেন।
- ভালো করে ধুয়ে ব্লেন্ডারে পেস্ট করে বিভিন্ন তরকারির ভিতরে ব্যবহার করতে পারেন।
- পানি ঝরিয়ে হালকা তেলে মতমচে করে ভেজে বিকালের নাস্তায় খেতে পারেন।
- ভর্তা তৈরি করে খেতে পারেন অথবা বিভিন্ন ভর্তায় ব্যবহার করে খেতে পারেন।
- বাচ্চাদের বিভিন্ন খাবারে ভেতরে দিয়ে খাওয়াতে পারেন বিশেষ করে খিচুড়ির ভেতরে ব্যবহার করে।
- বিভিন্ন ধরনের ফলের ভেতরে ব্যবহার করে খেতে পারেন।
- বিভিন্ন স্যুপে ব্যবহার করে খেতে পারেন।
- মিষ্টি কুমড়ার বিচি সব সময় চেষ্টা করবেন স্নাক্স হিসেবে খাওয়ার জন্য এবং সিঙ্গেল হওয়ার জন্য কারণ আপনি যদি বিভিন্ন তরকারি বা খাবারের ভেতরে দিয়ে খান তাহলে এর পুষ্টিগুণ গুলো অনেকটা ভেঙে যায়।
মিষ্টি কুমড়া বিচি খেলে কি এলার্জি হয়
আজ আমি আপনাদের মাঝে মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
আলোচনা করেছি কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে
মিষ্টি কুমড়া বিচি খেলে কি এলার্জি হয়। মিষ্টি কুমড়া খেলে এলার্জি হওয়ার
সম্ভাবনা খুবই কম কিছু কিছু ক্ষেত্রে যাদের অল্প পরিমাণে এলার্জি রয়েছে তাদের
এলার্জি ভাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকি এবং যাদের অনেক বেশি এলার্জি বা অতিরিক্ত
পরিমাণে এনার্জি রয়েছে তাদের এলার্জি বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা অনেক বেশি কিন্তু
যদি আপনি খেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার ডক্টরের পরামর্শ নিয়েই খাবেন কারণ এলার্জি
যুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে খেলে অনেক সময় চুলকানি, লালচে ভাব, ফুসকুড়ি, বমি
ভাব, মাথা ঘোরা আবার কখনো কখনো নিস্তেজ হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। তাই অবশ্যই
সতর্ক অনুসারে ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাবেন।
প্রতিদিন কতটুকু কুমড়ার বীজ খাওয়া উচিত?
মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার সাথে সাথে আমাদের
প্রতিদিন কতটুকু কুমড়ার বীজ খাওয়া উচিত? তা সম্পর্কে ও সঠিক ধারণা থাকা উচিত
কারণ এর পরিমাণ জেনেই আমরা এর সঠিক উপকারিতাটা পাবো তা না হলে উপকারিতার চেয়ে
অপকারিতা টাই বেশি হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য
আরো পড়ুনঃ চুল লম্বা করার ঘরোয়া সহজ উপায়
নিয়মিত ৩০ গ্রাম বা ১৫ থেকে ২০ টি মিষ্টি কুমড়ার খাওয়া উচিত এর অতিরিক্ত হলে
আমরা উপরোক্ত মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে অপকারিতা
সম্পর্কে তো জানতে পেরেছি যে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আমাদের কি কি শারীরিক পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে মিষ্টি কুমড়ার
বিচি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন।
কুমড়ার বীজ কতদিন খাওয়া উচিত?
মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা জানা যেমন জরুরী তেমনি কুমড়ার
বীজ কতদিন খাওয়া উচিত? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর বা ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। আপনি
যদি মনে করেন যেহেতু উপরে আলোচনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি মিষ্টি কুমড়ার বিচির
কতগুলো উপকারিতা রয়েছে এই ভেবে আপনি যদি বছরজুড়ে তুমরার বীজ খান তাহলে আপনার
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
দেখা দিতে পারে যেহেতু এটি একটি বীজ অর্থাৎ ঔষধি গুন সম্পূর্ণ খাবার এর জন্য আপনি
যদি কোন রোগের জন্য খান তাহলে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে খাবেন এছাড়া আপনি
যদি শরীর সুস্থ থাকার জন্য খেতে চান তাহলে মাঝে মাঝে খেতে পারেন তবে একেবারে টানা
তিন মাস খাবেন না মাঝে মাঝে খাবেন এতে এর সঠিক উপকারিতা টা পাবেন এবং অবশ্যই এর
পরিমাণটা ঠিক রেখে খাবেন।
মিষ্টি কুমড়ার বীজের দাম
মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে আপনি যদি মিষ্টি
কুমড়ার বীজ খেতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই মিষ্টি কুমড়ার বীজের দাম সম্পর্কে সঠিক
ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। মিষ্টি কুমড়ার দাম বাংলাদেশের উৎপাদনের ওপর নির্ভর
করে কম বেশি হয় তবে আনুমানিকভাবে ২৫০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ার বীজের দাম ৩২৫ থেকে
৩৫০ টাকা হয়ে থাকে।
লেখক এর মন্তব্য-মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের মিষ্টি কুমড়ার বিচির ৪৫ টি উপকারিতা
ও অপকারিতা, প্রতিদিন কতটুকু কুমড়ার বীজ খাওয়া উচিত? ইত্যাদি ছাড়াও মিষ্টি
কুমড়া সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর
চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন
ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url