জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয়
জাফরান এর ৩০টি
উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম
ইত্যাদি। এছাড়াও জাফরান সম্পর্কে আরো জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ
পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম, গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম ছাড়াও জাফরান সম্পর্কে আপনার যত
প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং সঠিক খাওয়ার
নিয়মে ও পরিমাণ জানতে পারবেন এবং জাফরান এর সঠিক উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
শরীরের শান্তির দূত হিসেবে ব্যবহৃত জাফরান আর এই জাফরান সম্পর্কে আজ আমি
বিস্তারিত আলোচনা করব যেমন- জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম, গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম, প্রতিদিন কতটুকু জাফরান খাওয়া
উচিত?, জাফরান এর দাম বাংলাদেশে-১ গ্রাম জাফরানের দাম কত, জাফরান এর গাছ-জাফরান
এর ছবি ইত্যাদি
ছাড়াও জাফরান সম্পর্কে জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার
বিশেষ অনুরোধ রইলো। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, , উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের সুরক্ষা, চুল পড়া
বন্ধ, হাড় মজবুত, হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দূর ছাড়াও আরো বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা,
গর্ভাবস্থার বিভিন্ন সমস্যা থাকলে
সমাধান পাবেন এবং অনেক বেশি উপকৃত হবেন। কারণ এতে রয়েছে হাজারো পুষ্টি উপাদান যা
আমাদের শুধুমাত্র স্বাস্থ্য উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে। তাই আশা করি জাফরান এর ৩০টি
উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম
ছাড়াও নিম্নে জাফরান সম্পর্কে লেখা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়বেন।
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
আজ আমরা কথা বলছি জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম। জাফরান
হল বিশ্বের সবচাইতে দামি মসলা। এটি মসলা হলেও এর ব্যবহার ও উপকারিতা শুধুমাত্র
রান্নাঘরেই সীমাবদ্ধ নয়। জনপ্রিয় এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিভিন্ন ধরনের
পুষ্টিগুন গুণাগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য
অনেক বেশি উপকারী।
এছাড়া একজন মানুষ সুস্থ থাকার জন্য যে সকল পুষ্টিগুনাগুনের প্রয়োজন তার সকল
কিছুই এবং সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা দিতে পারে জাফরান। ৯০ টির ও বেশি রোগের সমাধান
দিয়ে থাকে এর পুষ্টিগুণাগুণ হাটযেমন ধরুন সর্দি, কাশি থেকে শুরু করে পেটের
ব্যথা, অনিদ্রা, পেট ফাঁপা, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি এমনকি হৃদরোগের সমস্যা থেকেও
মুক্তি পাওয়ার জন্য এটি দুর্দান্ত একটি প্রাকৃতিক ঔষধি।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
আপনার স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে এক চিমটি জাফরান। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা
ক্ষেত্রে শরীর সুস্থ থাকার জন্য জাফরান খাওয়ার কথা বলে থাকে শুধু তাই নয়
মেক্সিকোর এক গবেষক জানিয়েছেন, জাফরানের নির্যাস এবং এর কিছু উপাদান মানবদেহের
ক্ষতিকর কোষ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাখে। তাই চলুন দেরি না করে জাফরান এর ৩০টি
উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা-
জাফরান এর উপকারিতা
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে প্রথমে আমরা
জাফরান এর উপকারিতা সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা থেকে জানবো। মানব দেহ সুস্থ
রাখার জন্য জাফরানের হাজারো উপকারিতা রয়েছে কিন্তু আজ আমি আপনাদের মাঝে সামান্য
কিছু জাফরান এর উপকারিতা সম্পর্কে কিছু জানা অজানা তথ্য তুলে ধরলাম। আশা করি
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে গর্ভাবস্থায়
জাফরান এর উপকারিতা সম্পর্কে যেন অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
হাড় মজবুত: বয়সের সাথে সাথে আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা
দেয়। আর ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আমাদের বিশেষ দুইটি স্থানে বেশি ক্ষতি করে একটি হলো
দাঁত আর অন্যটি হলো হাড়ের ক্ষয় কারণ শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে শরীর
এগুলো স্থান হতে ক্যালসিয়াম শোষণ করে। জাফর রয়েছে উচ্চ ক্যালসিয়াম যা আমাদের
শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটানোর সাথে সাথে দাঁতের ক্ষয় ও হাড়ের ক্ষয় রোধে
বিশেষ সহায়তা করবে।
ব্যথা নাশক: জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর
মধ্যে জাফরান খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী হচ্ছে ব্যাথা নাশক হিসেবে কাজ করা।
ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে জাফরান। জাফরানের মধ্যে রয়েছে আন্টি ইনফ্লামেটরি ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা খুব সহজে বাতের ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা, মাংসপেশির
ব্যথা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে এবং প্রাকৃতিক উপাদান পেন কিলার হিসেবে কাজ
করে।
মেজাজ খিটখিটে কমানো: বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের বিভিন্ন ধরনের
হরমোনের পরিবর্তন হওয়ার কারণে মানসিকভাবে বিভিন্ন অনুভূতি সৃষ্টি হয় যেমন কখনো
আবেগী, কখনো অনেক বেশি খিটখিটে আবার কখনো অনেক বেশি সংবেদনশীল। আবার
কর্মব্যস্ততার কারণে ও মানুষের ভেতরে এমন লক্ষণগুলো দেখা দেয় কিন্তু খাদ্য
তালিকায় নিয়মিত যদি নির্দিষ্ট মাত্রায় জাফরান খান তাহলে এতে থাকা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রেখে হরমোন সেরোটোনিন
তৈরি করে মেজাজকে উন্নত ও শান্ত করবে।
শারীর দুর্বলতা দূর: জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম এর মধ্যে জাফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হচ্ছে শারীরিক দুর্বলতা
কাটানো। শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে এটি দারুন কাজে দেয়। শারীরিক দিক দিয়ে
দুর্বল মেয়েদের জাফরান খুবই উপকারী। প্রতিদিন এক চিমটি জাফরান দুধের সঙ্গে
মিশিয়ে খেলে হরমোন উদ্দীবিত হয়।
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন অস্বস্তি বোধ: গর্ভবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের সবচেয়ে
বেশি অস্বস্তি বোধ হয় সকালবেলা এ সময় অলসবোধ, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, নিস্তেজ
ইত্যাদির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন সকালে জাফরান দিয়ে
তৈরি চা খেতে পারেন যা এগুলো সমস্যা দূর করতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।
ভালো ঘুম: প্রতিদিন ঘুমানোর সময় এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সঙ্গে এক চিমটি
জাফরান মিশিয়ে খেলে আপনার ফ্যাটিলিটি বাড়বে ফলে ভালো ঘুম হবে এবং অনিদ্রার
সমস্যা থাকলেও আপনার এ সমস্যা অনেকটা কেটে উঠবে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: বর্তমানে মানুষের অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া-দাওয়া ও বাইরের
বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড খাওয়ার জন্য হজম শক্তি অনেক বেশি কমে যাচ্ছে যার কারণে
বিভিন্ন ধরনের এসিডিটি মূলক সমস্যা মানুষের ভেতরে বেড়েই চলেছে। কিন্তু নির্দিষ্ট
পরিমাণে জাফরান খেলে জাফরান আমাদের পাচনতন্ত্রের রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে খুব সহজে
পরিপাক তন্ত্রে হজম প্রক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করবে।
সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা: জাফরান রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি,
অ্যান্টিফাঙ্গাল ফলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ও বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকে খুব
সহজে এটি সুরক্ষা প্রদান করে।
ক্র্যাম্পস থেকে মুক্ত: গর্ভবতী মহিলাদের প্রসবের শুরুর দিকে অল্প থেকে
শুরু করে অনেক সময় মারাত্মক ক্র্যাম্পস বা খিচুনি নিয়ে ওঠে। মূলত এটি শিশুকে
উপস্থাপনের জন্য প্রসারিত এবং স্থানান্তরিত হয় ফলে গর্ভবতী মহিলার পেট ও বিভিন্ন
জয়েন্টে ব্যথা এবং ক্র্যাম্পস হয়। আমরা পূর্বে জেনেছি জাফরান হল প্রাকৃতিক
ব্যথা নাশক বা পেনকিলার হিসেবে কাজ করে হলে নিয়মিত স্বল্প পরিসরে জাফরান খেলে
জাফরান পেটের ব্যথা, খিচুনি ও পেশীর ব্যথা শিথিল করতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ: জাফরানে রয়েছে আন্টি ইনফ্লামেটরি, এন্টিফাঙ্গাল,
ম্যাঙ্গানিজ যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হার্ট সুস্থ: যারা অনেক বেশি চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করে যা তাদের
কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমে অনেক বেশি ক্ষতিকারক প্রভাব পরে কিন্তু আপনি যদি
নিয়মিত জাফরান সঠিক মাত্রায় খান তাহলে এতে থাকা পটাশিয়াম, ক্রোসটি,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে
সাহায্য করবে ফলে অতিরিক্ত গ্রহণের কারণে হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হওয়া
থেকে অনেকটা সুরক্ষা প্রদান করবে।
ঋতুস্রাবের সমস্যা: যেসব কিশোরী ঋতুস্রাব দেরিতে হয় কিংবা নিয়মিত হতে
সমস্যা হয় তাদের এর ঋতুস্রাব নিয়মিত করতে সাহায্য করে জাফরান। এ থাকোক্ষেত্রে
এক চিমটি চূর্ণ জাফরান এক টেবিল চামচ দুধের ভেতরে মিশিয়ে খেলে হরমোন সচল হয় এবং
কাঙ্খিত ফল পেতে অনেক সাহায্য করে।
যকৃৎ এবং মুত্রথলির রোগ: এমন কিছু পুষ্টি উপাদান ও গুণাগুণ রয়েছে যা খুব
সহজে আমাদের যকৃৎ এবং মুত্রথলির রোগ নিরাময়ের সহায়তা করে। এছাড়া নিয়মিত এক
গ্লাস দুধের সঙ্গে জাফরান খেলে আমাদের শরীরে জানা অজানা বিভিন্ন রোগ খুব সহজেই
নিরাময় করতে সাহায্য করবে এটি।
ক্যান্সার প্রতিরোধ: জাফরান ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য
করে। জাফরানে এক ধরনের উপাদান ক্যারোটিন রয়েছে যাকে পুরোসিন বলা হয়। যা আমাদের
শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার কোষ যেমন লিউকোমিয়া, ওভারিয়ান কার্শিয়ানামো
ক্লোন এন্ডোম কার্শিয়ানামো ইত্যাদি ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
বাচ্চাদের জন্য উপকারী: বাচ্চাদের মস্তিষ্ক সক্রিয় করতে কিংবা শারীরিক
গঠন ও মানসিক বিকাশে বিশেষ সহায়তা করে জাফরান আপনার বাচ্চাকে নিয়মিত এক গ্লাস
দুধের সঙ্গে কয়েকটি জাফরান মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
আয়রনের ঘাটতি মেটাতে: গজাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জাফরানের স্বাস্থ্য উপকার হচ্ছে শরীরে
আয়রনের ঘাটতি মেটানো। জাফরানের একটি জাদুঘরের সম্পত্তি রয়েছে তা হলো অত্যধিক
পরিমাণে আয়রন যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য গর্ভ অবস্থায় লোহসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
দেহকে সুস্থ রাখতে অত্যন্ত প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় যদি শরীরে লৌহ সমরিত খাবার
ভরপুর থাকলে রক্তস্বল্পতা দূর হয় ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
গ্যাস্ট্রিক: গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় জাফরান এ থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,
আন্টি ক্যান্সার, আন্টি ইনফ্লামেটরি এবং হাইপারলিপারডিম ইত্যাদি উপাদান গুলো
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে জাফরানের কয়েকটি
সুতো রেখে তা পান করতে পারেন এটি আপনাকে হজমের সহায়তা করবে পেট পরিষ্কার করতে
সাহায্য করবে এবং এসিডিটি থেকে অনেকটা রেহাই পাবেন।
শ্বাসযন্ত্র সুস্থ: কোন ব্যক্তির যদি হাঁপানি, ফুষ্প জনিত রোগ বা
শ্বাসনালীর কোন সমস্যা থাকে তাহলে জাফরান খেতে পারেন কারণ জাফরনে থাকা অ্যান্টি
ইনফ্লামেটরি নাকের শ্বাসনালী প্রসারিত করতে, পরিষ্কারভাবে শ্বাস নিতে এবং
ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে ফুসফুস ফুলে যাওয়া বা প্রদাহ হ্রাস করতে
বিশেষ সহায়তা করে থাকে।
স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি: সম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে জাফরান
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জাপানে পারকিনসন ও স্মৃতিশক্তি হারিয়ে
যাওয়ার বিভিন্ন রোগে জাফরান ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
চুল পড়া বন্ধ: বর্তমানে নারী পুরুষ সকলেরই চুল ধরে পড়ার মতো সমস্যা
রয়েছে এর মূল কারণ হচ্ছে শরীরের এবং চুলে সঠিক পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি কিন্তু
আপনি যদি দুধ, জাফরান ও মেহেদির পেস্ট তৈরি করে মাথায় লাগাতে পারেন এছাড়াও
নিয়মিত জাফরান খান তাহলে এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি
যোগায় এবং চুল ঝরে পড়া বন্ধ করে চুলকে দৃঢ় করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: বর্তমানে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
করা অত্যন্ত জরুরি কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের
সংক্রমণ, রোগ জীবাণু, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া খুব সহজে শরীরে আক্রমণ করবে কিন্তু
নিয়মিত খাদ্য তালিকায় নির্দিষ্ট মাত্রায় জাফরান রাখলে জাফরান থাকা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ফাঙ্গাস, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও আন্টি
ইনফ্লামেটরি উপাদান শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধির একটি স্তর তৈরি করে ফলে
বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে খুব সহজেই দূরে থাকা সম্ভব হয়।
ত্বকের সুরক্ষা: বর্তমানে ছেলে কিংবা মেয়ে খাদ্য অভ্যাস সঠিক না রাখার
কারণে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে ব্রণ, মেস্তা, চোখের নিচের কালো দাগ
ইত্যাদি দেখা দিচ্ছে। এমন অবস্থায় আপনি যদি নিয়মিত নির্দিষ্ট মাত্রায় জাফরান
খান তাহলে এটি আমাদের শরীরে রক্ত পরিশুদ্ধ করে ত্বকের এ সকল সমস্যা দূর করতে বেশ
কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
ত্বককে হাইড্রেট ও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা: জাফরানের রয়েছে ভিটামিন সি যা
আমাদের শরীর এবং ত্বককে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ বা ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা প্রদান
করে। এতে রয়েছে এন্টিটেসিভ এজেন্ট, এন্টিমোটাজেনিং যা টক্সিনেশন সাড়িয়ে ত্বকের
দূর করে সেনসিটিভিটি দূর করে। এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টি সোলার এজেন্ট রোদে পোড়া
কালচে দাগ, ত্বকের বিভিন্ন এেরিটেশন দূর করে, সানবার্ন থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে
বেশ ভালো মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে ফলে ত্বক অনেক বেশি হাইড্রেটিভ থাকে এবং
ত্বক ভেতর থেকে গ্লো ও সজীব করে।
অকাল প্রসব ঝুঁকি: গর্ভধারণের পর পঞ্চম মাস শুরু হলে তারপরেই জাফরান
খাওয়া শুরু করবেন কারন এ সময়ও গর্ভ অবস্থায় স্থিতিশীল থাকে এবং অকাল প্রসবে বা
অন্যান্য ঝুঁকি হ্রাস পায় ।
মাড়ি ব্যথা রোধ: আয়রন ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে বর্তমানে আমাদের
বেশিভাগ মানুষেরমাড়ির ব্যথা বা মারিতে ঘা দেখা দিচ্ছে। এজন্য আমাদের শরীরে
ক্যালসিয়াম আয়রনের মাত্রা সঠিক রাখার অত্যন্ত জরুরী যা আমরা জাফরান দিয়েও পূরণ
করতে পারি এছাড়াও মাড়ির এই ঘা বা ব্যথা প্রশম করতে ব্যথায় স্থানে জাফরানের
মাসাজ করতে পারেন বা নির্দিষ্ট মাত্রায় কুসুম গরম দুধের সঙ্গে খেয়ে ব্যথা হ্রাস
করতে পারেন।
রক্তস্বল্পতা দূর: রক্তস্বল্পতা রোগীদের জন্য খাদ্য তালিকায় জাফরান রেখে
রক্তস্বল্পতা দূর করা অত্যন্ত ভালো খাদ্যা অভ্যাস হতে পারে। আপনি আপনার খাদ্য
তালিকায় নিয়মিত জাফরান রাখলে এটি আপনার শরীরে আয়রন ও হিমোগ্লোবিনের স্তর বজায়
রাখতে সাহায্য করবে ফলে রক্তস্বল্পতা ও দূর হবে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি: জাফরান এ থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান খুব সহজে
চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করে বিশেষ শক্তি বৃদ্ধি করতে বা দৃষ্টিশক্তি
উন্নত করতে সাহায্য করে এর জন্য গর্ভাবস্থায় চোখে ছানি পড়ার মতো বা চোখের
বিভিন্ন সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য জাফরান খেতে পারেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত অল্প পরিমানে জাফরান খেলে জাফরানের থাকা
পটাশিয়াম এবং ক্রোসটিন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। এছাড়াও
গর্ভাবস্থায় অনেক গর্ভবতী মহিলাদের রক্তচাপ বেড়ে যায় কারণ এই সময়ে শরীরে রক্ত
প্রবাহ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি থাকে। এ সময় অনেক অনেক গর্ভবতী মহিলার
হার্টবিটের হার প্রায় ২৫% গতিতে বাড়তে থাকে। এজন্য তাদের খাদ্য তালিকায় জাফরান
রাখতে পারেন।
শরীর সুস্থ রাখতে: জাফরানের রয়েছে পটাশিয়াম, ফলিক এসিড, থায়ামিন,
নিয়াসিন, ভিটামিন এ এবং সি ও রাইবোফ্লাভিন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। যার কারণে
একজন ব্যক্তি সুস্থ-সবল থাকার জন্য নির্দিষ্ট মাত্রায় জাফরান খেতে পারে এছাড়াও
এতে থাকা পটাশিয়াম কিডনি স্বাস্থ্য বজায় রাখবে কারণ পটাশিয়াম খুব সহজে আমাদের
ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে ফলে চর্বিবিহীনভাবে ওজন বাড়ানো বা হাড়ের
ঘনত্ব বৃদ্ধি করার জন্য শরীরকে সুস্থ সবল রাখার জন্য একজন ব্যক্তির জন্য আদর্শ
খাবার হতে পারে জাফরান।
আরো পড়ুনঃ কাচ্চি বিরিয়ানি রেসিপি বানানোর নিয়ম
আশা করি জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্য জাফরান এর
উপকারিতা সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন। উপরোক্ত ছাড়াও জাফরানের হাজারো
উপকারিতা রয়েছে যা আমি শুধুমাত্র একটি পোষ্টের মাধ্যমে লিখে শেষ করা সম্ভব নয়
তাই জাফরানের আংশিক কিছু উপকারিতা উপরোক্ত তুলে ধরেছি।
জাফরানের অপকারিতা
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে আমরা এতক্ষণ
জাফরান এর উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। এ সকল আলোচনা থেকে হয়তো আপনারা এতোটুকু
বুঝতে পেরেছেন যে জাফরান কতটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ করে গর্ভবতী
মহিলাদের জন্য উপকারী।
কিন্তু এ জাফরানি কখনো কখনো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের
জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে যখন এটি সঠিক মাত্রায় এবং নিয়মে না খাওয়া
হয়। চলুন জেনে নেই জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর
মধ্যে জাফরানের অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া-
- অতিরিক্ত পরিমাণে জাফরান গ্রহণ বেশিরভাগ গর্ভবতী মহিলাদের শরীরে বিষক্রিয়া ঘটে ফলে জন্ডিস, ডায়রিয়া, রক্তক্ষরণ, প্রসাবে রক্তের স্রাব ইত্যাদির মত মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
- জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে জাফরানের যে অপকারিতা টা আপনাদের সবচেয়ে বেশি জানা দরকার সেটি হল গর্ভাবস্থার সঠিক মাস থেকে জাফরান খাওয়া। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় প্রথমদিকে জাফরান খান তাহলে আপনার গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে এজন্য অবশ্যই জাফরান গর্ভাবস্থার পঞ্চম মাসের পর থেকে জাফরান খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- অতিরিক্ত জাফরান গ্রহণ অনেক সময় জরায়ু উদ্দীপিত করে অকাল প্রসব হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
- গর্ভাবস্থায় জাফরান অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে জাফরান শরীরের উষ্ণতা ও বাড়িয়ে দেয় ফলে জরায়ু সংকোচন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর জন্য অবশ্যই আপনার ডক্টরের সাথে পরামর্শ নিয়ে জাফরান খাওয়ার নিয়ম এবং সঠিক মাত্রা জেনে খাবেন।
- জাফরান আমাদের মন স্থির ও শান্ত করে কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে মাথা ঘোরা ও মাথা ব্যথার মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
- অতিরিক্ত জাফরান খাওয়ার কারণে অনেক সময় বমি ভাব, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, উদ্বেগ ইত্যাদির মত সমস্যা দেখা দেয় এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে অবশ্যই ডক্টরের শরণাপন্ন হবেন এবং জাফরান খাওয়া এড়িয়ে চলবেন।
- সাসোলা, ওলিয়া, লোলিয়াম ইত্যাদি গাছে এলার্জি রয়েছে বা নির্দিষ্ট কোন খাবারের প্রতি বিশেষ সংবেদনশীলতা রয়েছে তারা অবশ্য জাফরান খাওয়া হতে বিরত থাকবেন কারণ এতে আপনার এলার্জির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
- অতিরিক্ত পরিমাণে জাফরান খেলে জাফরান অনেক সময় আমাদের শরীরে বিষক্রিয়া ঘটায় এমন অবস্থায় চোখ, শ্লেষ্মা ঝিল্লি, ত্বক হলুদ হয়ে যায় এবং নাক থেকে রক্ত পড়া, রক্ত যুক্ত ডায়রিয়া, ঠোঁট থেকে রক্তপাত, অসাড়তা ইত্যাদির মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়। এজন্য অবশ্যই অতিরিক্ত জাফরান খাওয়া হতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
- শারীরিক সঠিক অবস্থা, পরিস্থিতি বা অ্যালার্জি না জেনে অতিরিক্ত পরিমাণে বা সঠিক সময়ে না জেনে জাফরান খেলে অনেক সময় ঠোঁট, নাক ও চোখ হতে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা ঘটতে পারে। এছাড়াও হাত-পা সংবেদনশীলতা হারিয়ে যেতে পারে।
- এছাড়াও আপনি যদি কোন সুপার মার্কেট হতে জাফরান কিনেন তাহলে অবশ্যই প্যাকেজের জাফরানের লেভেল অর্থাৎ মেয়াদের শেষ তারিখ নিশ্চিত হয়ে কিনবেন, জাফরানের রং দেখে অর্থাৎ আসল বা খাঁটি জাফরান এর রং লাল হয় এবং একটি হালকা কমলা লাল ডগা থাকে, জাফরান এর গ্রেড অর্থাৎ
- জাফরানের রঙের উপর ভিত্তি করে এর গ্রেড দেওয়া হয় সে অনুযায়ী এর মূল্য নির্ধারণ করা হয় অবশ্যই তা নির্বাচন করে নেবেন, জাফরানের কোন প্রকার সাদা রং থাকলে বুঝবেন সে জাফরানগুলো নকল এর জন্য অবশ্যই জাফরান কেনার সময় উপর উক্ত বিষয়গুলো জেনে বুঝে কিনবেন।
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে জাফরানের
অপকারিতা সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন এবং কিভাবে খেলে আপনার
শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে এবং কিভাবে খেলে এর সঠিক
উপকারিতা পাবেন তা সম্পর্কে আশা করি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
জাফরান খাওয়ার নিয়ম
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম মধ্যে প্রথমে আমরা জাফরান
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব। জাফরান খাওয়া তেমন কোন অসুবিধা বা পার্শ্বপ্রতিকরা
নেই তবে এ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তখনি নেই যখন এটি সীমিত পরিমাণই খাবেন। তবে
আমাদের স্বাস্থ্য ও শারীরিক সুস্থতা যেহেতু এ আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ এজন্য
অবশ্যই ডক্টরের সঠিক পরামর্শ নিয়ে সঠিক পরিমাণ জেনে গ্রহণ করবেন। তবে ডক্টর
অভিসকরা কিছু নির্দিষ্ট নিয়মে জাফরান খাওয়ার কথা বলে থাকে তাই আমি আপনাদের মাঝে
সে নিয়মগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করলাম তাই চলুন জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও
অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে জাফরান খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই-
জাফরান মূলত দুই ভাবে খাওয়া হয়
- জাফরান ভেজানো
- জাফরান চূর্ণ
ভেজানো জাফরান ও চূর্ণ করা জাফরান আবার বিভিন্নভাবে আপনি খেতে পারেন তাই চলুন
নিম্নে আলোচনা থেকে জেনে নেই এই দুইটি জাফরান গর্ভাবস্থায় কিভাবে খাবেন।
জাফরান ভেজানো: জাফরান ভেজানো এটি রান্নার ক্ষেত্রে সবচাইতে সহজ উপায়ে
ব্যবহার পদ্ধতি। এর জন্য জাফরানের সুতোগুলো আস্তে করে বের করে নিয়ে পানি কিংবা
দুধ অথবা ঝোলের মধ্যে স্থানান্তর করা। আপনি যদি যাত্রা রান্নার জন্য ব্যবহার করতে
চান তাহলে কোন রেসিপি দেওয়ার পূর্বে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখবেন।
- শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি এবং শিশুর মানসিক বিকাশ ও শারীরিক গঠন ভিত্তিতে খনিজ উপাদান হিসেবে গর্ভ অবস্থায় পঞ্চম মাসের দিকে দুধের সঙ্গে বাদাম, পেস্তা ও বিভিন্ন ধরনের ড্রাই ফুডের সঙ্গে জাফরানের সুতো ভিজিয়ে রেখে পিষে খেতে পারেন। এই ড্রিঙ্কস টি আপনি সকাল সন্ধ্যা যেকোনো সময় খেতে পারেন।
- এক চিমটি চূর্ণ জাফরান এক টেবিল চামচ দুধের ভেতরে মিশিয়ে খেলে হরমোন সচল হয় ফলে কিশোরীদের ঋতুস্রাব জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং নিয়মিত ঋতুস্রাব হতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
- গর্ভাবস্থায় হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য শুধুমাত্র এক গ্লাস পানিতে কয়টি জাফরানের সুতো ভিজে রেখে পিষে পানির ভিতরে মিশ্রিত করে খেতে পারেন।
- ভিজিয়ে রাখা জাফরান ও চন্দন একসঙ্গে ভালো করে পেস্ট তৈরি করে কপালে লাগালে জ্বর নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
- জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে জাফরান খাওয়ার সবচেয়ে ভালো নিয়ম প্রতিদিন এক চিমটি জাফরান দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া এতে যেমন শরীরে দুধের কারণে ও জাফরানের কারণে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটে অপরদিকে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর হবে এবং হরমোন উদ্দীবিত হতে সাহায্য করবে।
- সকালে জাফরান ভেজানো পানি দিয়ে চা তৈরি করে খেলে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তি বোধ বিশেষ করে বমি ভাব মাথা ঘোরা অলসতা বোধ কেটে ওঠে।
জাফরান চূর্ণ: জাফরান চূর্ণ আপনি বিভিন্ন ধরনের রান্নার রেসিপিতে ব্যবহার
করে খাবারের গন্ধ স্বাদ ও কালার বৃদ্ধি করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে শুধুমাত্র
জাফরানের সুতোগুলো আঙ্গুল দিয়ে ভেঙে সরাসরি খাবারের ভেতরে ব্যবহার করতে হবে।
আপনি যদি মনে করেন জাফরান জন্য কোন কোন খাবারে ব্যবহার করব তাহলে এটি কোন চিন্তার
বিষয় নয় কারণ গর্ভাবস্থায় নির্দিষ্ট মাত্রায় জাফরানের জন্য আপনি যে কোন
খাবারের ভেতরে ব্যবহার করতে পারেন বিশেষ করে পায়েস, বিরিয়ানি, সালাদ, স্যুপ,
লস্যি ইত্যাদি।
- উষ্ণ গরম দুধের সঙ্গে এক চিমটি জাফরান চূর্ণ মিশিয়ে খেলে শরীরে ব্যথা-নাশক বা পেনকিলা হিসেবে কাজ করে বিশেষ করে আপনার দাঁতের মাড়ির ব্যথা, মাংসপেশি ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদি ব্যথা প্রশমে সাহায্য করবে।
- এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সঙ্গে অথবা এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সঙ্গে এক চিমটি জাফরানের জন্য মিশিয়ে খেলে অনিদ্রার সমস্যা দূর করে ভালো ঘুম হতে সহায়তা করবে।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন জাফরান সম্পর্কে
শুধুমাত্র জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়মতা নিয়ে আমি
আলোচনা করছি না নিম্নে জাফরান সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা উত্তর
নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং
খাওয়ার নিয়ম ছাড়াও জাফরান সম্পর্কে নিম্নত্ব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বেন
যেমন-
- গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম
- প্রতিদিন কতটুকু জাফরান খাওয়া উচিত?
- জাফরান এর দাম বাংলাদেশে-১ গ্রাম জাফরানের দাম কত
- জাফরান এর গাছ-জাফরান এর ছবি
গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা জানলাম
কিন্তু আপনি যদি একজন গর্ভবতী মহিলা হন এবং জাফরান ও দুধের গুনাগুন একসাথে
পাওয়ার জন্য জাফরান ও দুধ একসঙ্গে খেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার গর্ভাবস্থায়
জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী।
জাফরান ও দুধ দুটোই একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুনে
ভরপুর খাবার। এ দুটি খাবার একসাথে খেলে যেমন গর্ভবতী মহিলার ক্যালসিয়াম আয়রন ও
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি খুব সহজে মেরানো সম্ভব হবে তার সাথে
সাথে একজন গর্ভবতী মহিলার বিভিন্ন
ধরনের শারীরিক সমস্যা ও দূর হবেই আশা করি। তবে গর্ব অবস্থায় যেহেতু অনেক বড়
অবস্থা ও সেনসিটি পরিস্থিতি এছাড়া সকল গর্ভবতী মহিলার পরিস্থিতি বা শারীরিক
অবস্থা একরকম হয় না এর জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো হয় গর্ভ অবস্থায় জাফরান দুধ
খাওয়ার নিয়ম আপনার
ডক্টরের সাথে পরামর্শ করে জেনে খাওয়া। তবে সাধারণত ডক্টররা যেভাবে গর্ভাবস্থায়
জাফরান ও দুধ একসঙ্গে খেতে বলে তা আমি কিছুটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। জাফরান
আর দুধ আপনি একসাথে বিভিন্নভাবে খেতে পারেন প্রথমত এক গ্লাস উষ্ণ গরম দুধের সঙ্গে
এক চিমটি জাফরানের চূর্ণ মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা
দুধ দিয়ে তৈরি যেকোনো ডেসার্ট এর জাফরান ব্যবহার করতে পারেন। এটা আপনি কালার এর
জন্য রান্নার সময় দিতে পারেন অথবা ডেকোরেশন এর জন্য উপর দিয়ে ছিটিয়েও দিতে
পারেন। আপনি যেভাবেই দুধ দিয়ে জাফরান খান না কেন একজন গর্ভবতী মহিলা হিসেবে
জাফরানের স্বাস্থ্য উপকারিতা অবশ্যই পাবেন এজন্য আপনি যদি জাফরান দুধ দিয়ে
খেতে চান তাহলে আপনার ইচ্ছামত যে কোন নিয়মে বা যে কোন পদ্ধতি অথবা যে কোন
খাবারের রেসিপিতে ব্যবহার করে খেতে পারেন। তবে অবশ্যই জাফরানের সঠিক পরিমাণ ঠিক
রেখে অথবা গর্ভ অবস্থায় কি পরিমানে জাফরান খেতে পারবেন তা আপনার অবশ্যই গাইনি
ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিয়েই খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
প্রতিদিন কতটুকু জাফরান খাওয়া উচিত?
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ
খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কিত জানলেন কিন্তু এ সকল উপকারিতা যিনি আপনি যদি
জাফরান খেতে চান তাহলে প্রতিদিন কতটুকু জাফরান খাওয়া উচিত? এ সম্পর্কে কি আপনার
সঠিক ধারণা রয়েছে। যদি না থাকে তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন কারণ আপনারা
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে জাফরান খাওয়ার
অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তো জেনেছেন যে অতিরিক্ত পরিমাণে বা
মাত্রায় অতিরিক্ত বা সঠিক পরিমাণে না খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যাপন কতটা
মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। একজন ব্যক্তি ১০ গ্রাম পর্যন্ত জাফরান খেতে পারে তবে এর
অধিক হলে
মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে যা আমরা আগেই জেনেছি। তবে প্রত্যেক মানুষের শারীরিক
অবস্থা ও পরিস্থিতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে এর জন্য জাফরান খাওয়ার পূর্বে আপনি
কতটুকু পরিমানে জাফরান খাবেন তা খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ভালো ডক্টরের সাথে
পরামর্শ নিয়েই খাবেন। এতে যেমন আপনার জাফরানের সঠিক উপকারিতা পাবেন তেমনি আপনার
শারীরিক অবস্থা ও শারীরিক সুস্থতা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।
জাফরান এর গাছ-জাফরান এর ছবি
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ
খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে জানার পর হয়তো আপনার মনে জাফরান এর গাছ-জাফরান
এর ছবি দেখার ইচ্ছা জাগতে পারে। জাপানের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ক্রোকাস স্যাটিভাস।
জাফরান প্রথমে চাষ হয়েছিল গ্রিসে। আইরিশ গোত্রের একটি ফুলের গর্ভদণ্ড থেকে
উৎপাদন করা হয় জাফরান। এত গুণসম্পন্ন, উপকারী ও দামি গাছটি দেখতে কেমন চলুন
চিত্রের মাধ্যমে দেখিনি এবং চিনে রাখি-
জাফরান এর গাছ
জাফরান এর ছবি
জাফরান এর দাম বাংলাদেশে-১ গ্রাম জাফরানের দাম কত
জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ
খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি তথ্য জানার পর হয়তো আপনার মনে জাফরান খাওয়ার ইচ্ছে জাগতে
পারে তবে আপনি জাফরান এর দাম বাংলাদেশে-১ গ্রাম জাফরানের দাম কত তা জানেন। জাফরান
মূলত এর গ্রেট এর ওপরে অর্থাৎ জাফরানের সুতোর রঙের উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা
হয়।
এর রং যত বেশি গাড়ো লাল এবং একটি অংশ হালকা হলুদ বর্ণের হবে তত বেশি এর দাম
বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও জাফরান বাংলাদেশের উৎপন্ন হয় না এটি মূলত ইরান, কাশ্মীর,
গ্রীস, আফগানিস্তান, স্পেন ইত্যাদি দেশগুলোতে উৎপাদিত হয় এবং সকল দেশ এ সকল
দেশগুলো হতে জাফরান আমদানি করে থাকে।
যার কারণে এর বিশ্ববাজারে এর মূল্য উৎপাদনের উপরে এবং আমদানির উপর নির্ভর করে
নির্ধারণ করা হয়। ২০২৩ সালে বিশ্ব বাজারে জাফরানের মূল্য কেজি প্রতি ৫ লক্ষ থেকে
৭ লক্ষ ছিল এখন পর্যন্ত ২০২৪ সালে এই মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। ২০২৩ সালের ১ গ্রাম
জাফরানের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ৩০০০ থেকে ৫ হাজার টাকা ছিল
বর্তমানে ২০২৪ সালে বাংলাদেশি টাকায় হাজার ১ গ্রাম জাফরানের মূল্য ৪ হাজার থেকে
৬ হাজার টাকা। বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ কেজি ইরানি জাপানের মূল্য প্রায় সাড়ে ৪ লাখ
টাকা। প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার ফুল প্রয়োজন হয় ৫০০ গ্রাম জাফরান তৈরির জন্য।
বিশ্ববাজারে ডলারের বিনিময়ে হার বৃদ্ধি পেলে আমদানি জাফরানের মূল্য অনেক বেশি
বৃদ্ধি পায়।
লেখক এর মন্তব্য-জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের জাফরান এর ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
এবং খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি ছাড়াও জাফরান
সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা
করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও
বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url