ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয়
ত্বীন ফলের
২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম, ত্বীন ফলের ছবি ইত্যাদি। এছাড়াও
ত্বীন ফল সম্পর্কে আরো জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ
অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি
নিয়ম, ত্বীন ফলের ছবি ছাড়াও ত্বীন ফল সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে
তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং সঠিক খাওয়ার নিয়মে ও পরিমাণ জানতে
পারবেন এবং ত্বীন ফল এর সঠিক উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম
শরীরে শান্তির দূত হিসেবে ব্যবহৃত ত্বীন ফল এই ফল সম্পর্কে আজ আমি বিস্তারিত
আলোচনা করব যেমন- ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম, ত্বীন
ফলের ছবি, ত্বীন ফলের দাম, ত্বীন ফলের ছবি, ত্বীন ফল গাছ, ত্বীন ফল english ও
ত্বীন ফল কি ডুমুর ইত্যাদি ছাড়াও ত্বীন ফল সম্পর্কে জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, ওজন নিয়ন্ত্রণ, রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হাড়
মজবুত, হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দূর ছাড়াও আরো বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সমাধান
পাবেন এবং অনেক বেশি উপকৃত হবেন। কারণ এতে রয়েছে হাজারো পুষ্টি উপাদান যা আমাদের
শুধুমাত্র স্বাস্থ্য উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে। তাই আশা করি ত্বীন ফলের ২০টি
উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম, ত্বীন ফলের ছবি ছাড়াও নিম্নে ত্বীন
সম্পর্কে লেখা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়বেন।
ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম
আজ আমি আপনাদের মাঝে ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম
সম্পর্কে বিস্তারিত আংশিক কিছু জানা-অজানা তথ্য জানানোর চেষ্টা করব। বরকতময়
সুন্নতি ও জান্নাতি ফল হল ত্বীন ফল। পবিত্র কোরআন মজিদের বিভিন্ন ধরনের বরকতময়
ফলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যার মধ্যে এমন দুটি ফল রয়েছে
যার মধ্যে একটি বরকত উল্লেখ করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা তাদের একটি সূরা তৈরি
করেছে আর সেটি হল সূরা ত্বীন। এই সূরার প্রথম আয়াতে মহান আল্লাহ তা'আলা এ দুইটি
ফলের কসম খেয়েছেন একটি হল ত্বীন ফল এবং অন্যটি হলো জয়তুন ফল। মহান আল্লাহ
তায়ালা বলেছেন, وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ (কসম ‘তীন ও যায়তূন’ এর)। এছাড়াও
একটি হাদিসের বর্ণিত রয়েছে,
হযরত আদম আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মা হাওয়া আল্লাহর নিষেধ অমান্য করে যখন একটি ফল
খেয়েছিলেন তখন বিবস্ত্র হয়ে পড়েছিলেন তখন এই ত্বীন ফলের পাতা দিয়েই লজ্জা
নিবারণ করেছিলেন। এ থেকেই স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে যে ত্বীন গাছ জান্নাতেও রয়েছে
অর্থাৎ এটি জান্নাতি ফল। মহান আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনের
যে সকল ফলের নাম উল্লেখ করেছে নিঃসন্দেহে কোন প্রকার দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়ায় সে
সকলফলগুলো অত্যন্ত বরকতময় ও স্বাস্থ্য উপকারী ফল। তাই চলুন দেরি না করে এই
স্বাস্থ্য উপকারী ও বরকতময় ফল অর্থাৎ ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার
১০টি নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেই-
ত্বীন ফলের উপকারিতা
ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম এর মধ্যে প্রথমে আমরা
ত্বীন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জানব। যেহেতু ত্বীন ফল যা বরকতময় জান্নাতি ফল
সেহেতু এর উপকারিতা ও অনেক যা আমি হয়তো বলে শেষ করতে পারবো না তাই সম্পূর্ণ না
পারলেও ত্বীন ফলের আংশিক স্বাস্থ্য উপকারিতা নিম্নে তুলে ধরলাম-
যৌন শক্তি বৃদ্ধি: ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম
এর মধ্যে ত্বীন ফলের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হচ্ছে যৌন শক্তি বৃদ্ধি
করা। প্রাচীন যুগ থেকে চলে আসছে যৌন শক্তি বৃদ্ধির এবং যৌন উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য
দুধ ও ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়ম। একত্রে এ দুটি পুষ্টি উপাদান খেলে এতে থাকা দস্তা,
ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান যা
বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যৌনশক্তি ও উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তার জন্য।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি উপকারিতা
রয়েছে যার মধ্যে একটি হলো কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা। ত্বীন ফলে থাকা ফাইবার
শরীরে দ্রুত শোষিত হয় ফলে দ্রবীভূত এই ফাইবার আমাদের শরীর হতে অতিরিক্ত
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে আর কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ মানে
হৃদপিন্ডের বিভিন্ন ঝুঁকি কম তাই আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ত্বীন ফল যুক্ত
করতে পারেন এছাড়াও ত্বীন ফলে থাকা পেকটিন শরীর হতে খারাপ কোলেস্টেরল গুলো কমাতে
সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে: গবেষণায় দেখা গিয়েছে ত্বীন ফল উচ্চ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার সমৃদ্ধ একটি ফল ফলে মহিলাদের স্তন্য ক্যান্সার ও
হরমোন জনিত ভারসাম্য হীনতা থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি
নিয়ম এর মধ্যে ত্বীন ফলের আরেকটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হচ্ছে
ডায়াবেটিকস
নিয়ন্ত্রণে আনা। ত্বীন ফলে রয়েছে ডিকোসিন ইনসুলিনের বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক
এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। ২০০৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায় যে ত্বীন ফলের
নির্যাস রক্তের ফ্যাটি এসিড এবং ভিটামিন ই এর লেভেলকে স্বাভাবিক রেখে ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা রাখে।
রক্তস্বল্পতা দূর: ত্বীন ফলকে আয়রনের প্রাচুর্য বলা হয়। ফলে নিয়মিত
খাদ্য তালিকায় ত্বীন ফল রাখলে আপনার খুব সহজে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে
রক্তস্বল্পতা জনিত বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এই ফল বিশেষ সহায়তা করবে।
গর্ভাবস্থায়:
গর্ভাবস্থায়
মায়েদের বুকের দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য ত্বীন ফলের জুড়ি মেলা ভার। এছাড়াও
গর্ভবতী মহিলাদের অ্যাসিডিটি দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে এটি। মহিলাদের জরায়ু
ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের বিশেষ প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে এই ত্বীন ফল।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ: ত্বীন ফলে থাকা পটাশিয়াম মানবদেহের রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পটাশিয়াম অতি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ যা
শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। ফলে আপনি যদি নিয়মিত ত্বীন ফল খান তাহলে আপনার
উচ্চ রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে থাকতে সাহায্য করবে এটি।
হার্টের সুরক্ষা: ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা
গিয়েছে যে, ত্বীন ফল মানব দেহে ট্রাই গ্লিসারাইড এর মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা
করে যা চর্বিযুক্ত কণা ও রক্তে প্রবাহে সঞ্চালিত হয় এবং হৃদরোগের একটি প্রধান
কারণ এছাড়া রক্তচাপ হ্রাস করার বৈশিষ্ট্যযুক্ত শুকনো ত্বীন ফলে থাকা উচ্চ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ শরীর থেকে ফ্রি রেডিকেল কে শরীর থেকে নির্মূল করতে
সহায়তা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: ত্বীন ফলে উচ্চ আঁশ যুক্ত উপাদান গুলি স্বাস্থ্যকর
হজম ব্যবস্থা ও পরিপাকতন্ত্র বজায় রাখতে সহায়তা করে এভাবে খুব সহজেই ত্বীন ফল
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ সমাধানের সাহায্য করে থাকে।
স্নায়ুরোগ কমাতে: ত্বীন ফল স্নায়ুরোগ কমাতে দারুন কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে থাকে এছাড়াও হাঁপানি, ইউরিনারি ব্লাডারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, শরীরের
দুর্বলতা কাটিয়ে শরীরকে চাঙ্গা ও সজীব করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে এই ফল। কারণ এই
ফলে কোন প্রকার ক্যালরি ও ফ্যাট নেই একটি গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন বড়
আকারে একটি ত্বীন ফলে মাত্র দুই গ্রাম ফ্যাট রয়েছে।
হাড় মজবুত: ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম এর
মধ্যে ত্বীন ফলের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হচ্ছে হাড় মজবুত রাখা। শুকনো
ত্বীন ফল ক্যালসিয়ামের অনেক ভালো একটি উৎস। মানবদেহে খনিজ পদার্থের প্রয়োজন
মেটাতে প্রতিদিন প্রায় ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। যেহেতু
ক্যালসিয়াম শরীল দ্বারা উৎপন্ন হয় না তাই আমরা যা খাই তা দেহের প্রয়োজনে অবদান
রাখে সুতরাং আমাদের হাড়ের সুরক্ষায় ক্যালসিয়াম অনন্য উচ্চ হিসাবে আপনি আপনার
খাদ্য তালিকায় ত্বীন ফল রাখতে পারেন।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি: ত্বীন ফলে রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি
উন্নত করতে সহায়তা করে।দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায় ম্যাকুলার অবক্ষয়ের কারণে যা
ভিটামিন এ পুষ্টি উপাদান খুব সহজেই রোধ করে দৃষ্টিশক্তি উন্নত ও রেটিনার বিভিন্ন
ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
ত্বক সুস্থ: ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করা সম্ভব নিয়মিত ত্বীন ফলের আহার
যেমন এনজিমা, মিটিলেগো, সেরিআসিস ইত্যাদি আরও অনেক সমস্যার সমাধান হিসেবে ত্বীন
ফল ভূমিকা নিয়ে গবেষণা চলছে। ডুমুরের অনেক ধরনের ভিটামিন, মিনারেল,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় নিয়মিত ত্বীন ফল সেবন আপনাকে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের
সুবিধা দেবে যেমন ত্বকের লাবণ্য ফিরে আসা, ত্বক উজ্জ্বল্য করা, ভেতর থেকে ফর্সা
ভাব বের করা ইত্যাদি।
চুলের যত্নে: বিশ্বের বিভিন্ন নাম করা কোম্পানি শ্যাম্পু তৈরিতে ত্বীন
ফলের নির্যাস ব্যবহার করে থাকেন। এটি চুলকে ভেতর থেকে শক্তিশালী ও মশ্চারাইজার
করে থাকে।
মানসিক ডিপ্রেশ কমাতে: ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। ত্বীন ফলে
রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড, ওমেগা ৬ ফেটে এসিড যা আমাদের ডিপ্রেশন, স্মৃতিশক্তি
লোপ, মানসিক চাপ ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে মূলত আমাদের শরীরে এই পুষ্টি উপাদানের
ঘাটতি হলে এ সকল সমস্যা দেখা দেয়।
ওজন কমাতে: ত্বীন ফলে রয়েছে অত্যাধিক পরিমাণে ফাইবার। এজন্য ওজন কমার
জন্য আপনার দৈনন্দিন খাবারে অলিভ অয়েল বা ত্বীন ফল যুক্ত করতে পারেন। গবেষণায়
দেখা গিয়েছে যে ত্বীন ফল পরিপাকতন্ত্রের সবল করে তোলে এবং মেটাবলিজম উন্নত করতে
সাহায্য করে।
পেশী শক্তিশালী: আমাদের শরীরে থায়ামিনের অভাব সৃষ্টি হলে পেশী দুর্বল হয়ে
পড়ে যাকে বেরিবেরি রোগ বলা হয় কিন্তু আপনি যদি আপনার খাদ্য তালিকায় ত্বীন ফল
রাখেন তাহলে এ সমস্যা থেকে দূরে থাকা অনেকটা সম্ভব হয়ে যায় কারণ ত্বীন ফলে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে থায়ামিন যা আমাদের শরীরে এই পুষ্টি উপাদানের অভাব খুব সহজে
মেটাতে সক্ষম।
হজমে উন্নতি: ত্বীন ফলে যেহেতু অত্যাধিক পরিমাণে ফাইবার বা আজ জাতীয়
পুষ্টি উপাদান রয়েছে ফলে পাক পরিপাকে সহায়তা হয় এবং হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এর
জন্য আপনার ডায়রিয়া, বদহজম, পেট ফাঁপা, পেটে সমস্যা থাকলে খাদ্য তালিকায় ত্বীন
ফল যুক্ত করতে পারেন।
শ্বাসকষ্ট ও মাথা ব্যথা: শ্বাসকষ্ট ও মাথা ব্যথা দূর দূর করতে ত্বীন ফল
বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এজন্য এ সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য আপনার খাদ্য
তালিকায় নিয়মিত দুই থেকে তিনটি ত্বীন ফল যুক্ত করতে পারেন।
ঋতুস্রাবের সমস্যা: ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। বিভিন্ন
মহিলাদের ঋতুস্রাব নিয়মিত না হওয়ার সমস্যা রয়েছে আর এ সমস্যা থেকে দূরে থাকার
জন্য ত্বীন ফল ভেজানো পানি খেতে পারেন এটা বেশ কার্যকারী।
ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়ম
ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম এর মধ্যে প্রথমে আমরা
ত্বীন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। ত্বীন এতটাই বরকতময় ও উপকারী ফল যে ত্বীন
ফল খাওয়ার নিয়ম নির্দিষ্ট নেই। তবে বিভিন্ন রোগের সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি
এটি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন এছাড়াও স্বাস্থ্য উপকারের জন্য আপনি বিভিন্ন ভাবে
খেতে পারেন এতে কোন প্রকার ক্ষতিসাধন হয় না।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
প্রথমে বলে রাখা ভালো পবিত্র আল-কোরআনে যে ত্বীন ও জয়তুন ফলের কথা উল্লেখ করা
হয়েছে তা আমাদের দেশে নেই। মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়াতে এগুলো বেশি চাষাবাদ
হয়। চলুন দেরি না করে ত্বীন ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়ম এর
মধ্যে ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন-
- দুইটি শুকানো ত্বীন ফল পানিতে ভিজিয়ে রাত্রে ঘুমানোর আগে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।
- ডুমুরের মধ্যে থাকা হাই কোয়ালিটির ডায়েটারি ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সচল রাখে এবং পেটের ভালো ব্যাকটেরিয়াকে বাঁচিও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং শরীর সতেজ রাখি এর জন্য আপনি যদি দুইটি ভিজিয়ে রাখা ত্বীন ফল খেতে পারেন তাহলে আবার এই সকল সমস্যাগুলো খুব সহজে দূর হওয়া সম্ভব।
- আমাশয়ের রোগীরা যদি নিয়মিত কাঁচা অবস্থায় ত্বীন ফল চাবিয়ে খায় তাহলে আমাশয় নিরাময় হয়। এছাড়াও ত্বীন ফল ও আতপ চাল চিবিয়ে খেলেও খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
- মেয়েদের ঋতুস্রাবের সময় পেটে অতিরিক্ত ব্যথা হলে ত্বীন ফল মধু সহকারে খেলে পেটের ব্যথা অনেকটা কম হতে সাহায্য করে এবং জয়তুন ফল এর তেল পেতে মালিশ করলে কিংবা খেলে ও পেটের ব্যথা নিরাময় করতে সাহায্য করবে।
- ত্বীন ফল সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে নিয়মিত ত্বীন ফলের ভেজানো পানি খেলে ঋতুস্রাব নিয়মিত হয়।
- ২ থেকে ৩টি ত্বীন ফল পানিতে ভিজে সামান্য মধু মিশিয়ে সকালে খেলে হজম শক্তি উন্নত হয়।
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ত্বীন ফল মহা ঔষধ। একজন ডায়াবেটিস রোগী নিয়মিত ত্বীন ফল খেলে দ্রুত সময়ের ভেতরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে।
- মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করতে দুধ, চিনি ও ত্বীন ফল একত্রে মিশিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাবেন।
- রক্ত আমাশের রোগীরা সপ্তাহে দুইদিন মধু ও ত্বীন ফল একত্রযুক্ত খেলে অনেক বেশি ভালো ফলাফল পাবেন।
- শরীর দুর্বল কিংবা মাথা ঘোরার মত সমস্যার ক্ষেত্রে ত্বীন ফল রান্না করে খেলে অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি
নিয়ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন এই ফল সম্পর্কে
শুধুমাত্র ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম নিয়ে আমি
আলোচনা করছি না নিম্নে ত্বীন ফল সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা
উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন
ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম ছাড়াও ত্বীন ফল সম্পর্কে নিম্নত্ব বিষয় সম্পর্কে
বিস্তারিত পড়বেন যেমন-
- ত্বীন ফলের পুষ্টি গুনাগুন
- ত্বীন ফলের ছবি
- ত্বীন ফলের দাম
- ত্বীন ফল গাছ
- ত্বীন ফল english ও ত্বীন ফল কি ডুমুর
ত্বীন ফলের পুষ্টি গুনাগুন
ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম সম্পর্কে আমরা উপরোক্ত
আলোচনা থেকে জানলাম কিন্তু ত্বীন ফলের পুষ্টি গুনাগুন অর্থাৎ এতে কি কি পুষ্টি
উপাদান রয়েছে তা কি আপনি জানেন। যেহেতু এটি জান্নাতি ফল তাই এর পুষ্টিগুলো গুণ
এর কোন শেষ নেই তবুও চলুন সামান্য ধারণা নিম্নোক্ত থেকে জেনে নেই-
- ওমেগা ৩
- ওমেগা ৬
- ম্যাগনেশিয়াম
- পটাশিয়াম
- ক্যালসিয়াম
- আয়রন
- কপার
- জিঙ্ক
- ডায়েট্রি ফাইবার
- কার্বোহাইড্রেট
- ফসফরাস
- থায়ামিন
- ভিটামিন যেমন – ভিটামিন সি , এ , কে ,বি৬
ত্বীন ফলে ৭১ রকমের পুষ্টি উপাদান রয়েছে কিন্তু এতে কোন প্রকার ফ্যাট ও ক্যালরি
নেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে একটি বড় সাইজের তিন ফলে মাত্র ২ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে।
ত্বীন ফলের ছবি
ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম সম্পর্কে জেনে হয়তো আপনি
অবাক হয়েছেন এবং এর এত উপকারিতা জানার পর হয়তো আপনি ত্বীন ফলের ছবি দেখতে চান।
ত্বীন ফল দেখতে দেশে বন জঙ্গল বা যোগ ঝাড়ে হওয়া কাকডুমুরের মতো দেখতে কিন্তু
তার চেয়ে বড় এবং রসালো ও সুগন্ধময় হয়ে থাকে। চলুন দেরি না করে ত্বীন ফলের ছবি
দেখি নেই-
ত্বীন ফলের দাম
ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম, ত্বীন ফলের ছবি ইত্যাদি
সম্পর্কে ইতোমধ্যে আমরা বিস্তারিত উপরুক্ত আলোচনা থেকে জানলাম কিন্তু এত সব
উপকারিতা জানার পর আপনি যদি এই ফল খেতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই ত্বীন ফলের দাম
সম্পর্কে সঠিক ধারণা ও তথ্য থাকা অত্যন্ত জরুরী।
আরো পড়ুনঃ
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
ত্বীন ফল মূলত বাংলাদেশে অধিক পরিমাণে উৎপাদিত হয় না এ ফলগুলো বাংলাদেশ অন্যান্য
দেশ থেকে আমদানি করে থাকে যার কারণে এর মূল্য কিছুটা বেশি হয়ে থাকে তবে এর
উপকারিতার দিক দিয়ে এর দাম অনেক কম। প্রথমে বলে রাখা ভালো আমাদের দেশে যে ডুমুর
ফল পাওয়া যায় তা ত্বীন ফল নয়। দুটি একই রকম দেখতে হলো সম্পূর্ণ আলাদা
পুষ্টিগুণ।
যেহেতু এ ফল ইউরোপিয়ান ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোতে বেশি উৎপাদন হয় ফলে সে সকল
দেশ থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে থাকে। ত্বীন ফল ৫০০ গ্রামের মূল্য ১১৫০ থেকে ১২০০
টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হয়। তবে এ মূল্য আমদানির কমবেশির ওপর নির্ভর করে কখনো
বাড়ে আবার কখনো কমে।
ত্বীন ফল গাছ
ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম, ত্বীন ফলের ছবি ইত্যাদি
সম্পর্কে এ জানার পর হয়তো আপনার মনে ত্বীন ফল গাছ এর ছবি দেখার আগ্রহ সৃষ্টি হতে
পারে। ত্বীন ফল গাছ ৩ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয় এর পাতা খসখসে ও ঘন হয়।
ত্বীন ফল গাছ লাগানোর ছয় মাসের মধ্যে ফল দেয়া শুরু করলে এবং একবার শুরু করলে ১২
মাস ফল দেয় প্রথম বছর ১ থেকে ২ কেজি দিলেও পরবর্তী বছর থেকে ৪ থেকে ২৫ কেজি
পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে এর আয়ুকল ১০০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। চলুন এবার ত্বীন ফল
গাছ দেখি নেই-
ত্বীন ফল english ও ত্বীন ফল কি ডুমুর
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম,
ত্বীন ফলের ছবি ইত্যাদি সম্পর্কে জেনেছি কিন্তু আপনি কি ত্বীন ফল english ও ত্বীন
ফল কি ডুমুর এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকেন কারণ তিন ফল কি ডুমুর এই নিয়ে আমার
কাছে অনেক প্রশ্ন রয়েছে ও অনেক মানুষের এ নিয়ে অনেক বিভ্রান্ত রয়েছে।
The Fig ত্বীন ফল english। genus ficus, Ficus carica ত্বীন ফল বৈজ্ঞানিক নাম।
সৌদি আরবে এই ফলটিকে ত্বীন নামে ডাকলেও আঞ্জির নামে পরিচিত ভারত, তুরস্ক, মিসর,
জর্দান ও যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে সামান্য পরিষদের তিন ফল বাংলাদেশের উৎপাদিত হলেও
আমাদের দেশে যে ডুমুর রয়েছে তা এই ত্বীন ফল নয়। তবে বাংলাদেশে কাকডুমুর নামক এক
ধরনের বন জঙ্গলে বেড়ে ওঠা ডুমুরের সঙ্গে অনেকেই ত্বীন ফল মিলিয়ে ফেলি।
আরো পড়ুনঃ
ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
বর্তমানে সমস্ত দেশ ছুড়ে ৮০০ প্রজাতির ডুমুর ফল রয়েছে যার মধ্যে ত্বীন ফল
সবচেয়ে বেশি উপকারী ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। ত্বীন ফল আকার অন্যান্য ডুমুরের তুলনায়
বড় হয় সুস্বাদ ও গন্ধ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং রসালো হয়। উর্দুতে এই ফলকে আঞ্জির।
ফল বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত হলেও বাণিজ্যিকভাবেম ধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম এশিয়ায়
চাষাবাদ করে থাকে। তবে বর্তমানে গাজীপুরের দক্ষিণ বারোতোপা গ্রাম, শ্রীপুর, মাওনা
চৌরাস্তায় এই বিশেষ ফলের প্রথম বাণিজ্যিক ফার্ম তৈরি করা হয়েছে। যেখানে গিয়ে
আপনি ডুমুর ও ত্বীন ফলের মধ্যে পার্থক্য তুলনা করতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য-ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল খাওয়ার ১০টি নিয়ম
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের ত্বীন ফলের ২০টি উপকারিতা-ত্বীন ফল
খাওয়ার ১০টি নিয়ম, ত্বীন ফলের ছবি ইত্যাদি ছাড়াও ত্বীন ফল সম্পর্কে জানা-অজানা
বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি
আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য
শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url