করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা
খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা ইত্যাদি। এছাড়াও করলা
সম্পর্কে আরো জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ
রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার
নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা ছাড়াও করলা সম্পর্কে আপনার যত
প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং সঠিক খাওয়ার
নিয়মে ও পরিমাণ জানতে পারবেন এবং করলা সঠিক উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম
আপনারা করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস
খাওয়ার উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত ও সঠিক তথ্য জানার জন্যই ক্লিক
করেছেন কিন্তু আপনাদের মাঝে করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম
ছাড়াও করলা সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য এবং বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকের মত
অনুযায়ী,
করলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা আলোচনা করব। করলা ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণ, হজম শক্তি বৃদ্ধি, হৃৎপিণ্ড সুস্থ, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর, রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি, ওজন নিয়ন্ত্রণ, হাড় মজবুত, ক্যান্সার প্রতিরোধ ও, রক্তশূন্যতা
দূর, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি, কিডনি পাথর নিয়ন্ত্রণ, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য
বৃদ্ধির ইত্যাদি ছাড়াও হাজারো উপকারিতায় ভরপুর।
তাইতো করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস
খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে শুধু আলোচনা করছি না করলার পুষ্টি গুনাগুন-করলা ইংরেজি
কি, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি,
ওজন কমাতে করলা কিভাবে খাবেন?, ওজন কমাতে প্রতিদিন কতটুকু করলার জুস খাওয়া উচিত,
করলার জুস খেলে কি ওজন কমে, করলার জুস বানানোর নিয়ম, করলার জুস কখন খেতে হয়,
করলার রস খেলে কি সত্যিই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে ইত্যাদি ছাড়াও করলা জুস
সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আশা করি করলার ৩০টি উপকারিতা ও
অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম ছাড়াও নিম্নে করলা সম্পর্কে লেখা সম্পন্ন পোষ্টটি
পড়বেন।
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম
আজ আমরা আপনাদের মাঝে আলোচনা করছি করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার
নিয়ম। করলা নিয়ে প্রচলিত একটি প্রবাদ বাক্য রয়েছে তেতো খাও ভেতো বাঙালি অর্থাৎ
বাঙালিরা ভাত বেশি খায় বিধায় তাদের বিভিন্ন প্রকারের স্বাস্থ্যঝুঁকের সম্মুখীন
হতে হয়।
আর সেসকল স্বাস্থ্যঝুকে কে কম করতে পারে তেতো যুক্ত খাবার। আর এ তেতো খাবারের
সর্ব ওপরে রয়েছে করলা। করলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী যা আমরা
ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। তাই চলুন দেরি না করে করলার ৩০টি উপকারিতা ও
অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা থেকে জেনে নেই।
করলার খাওয়ার উপকারিতা
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে চলুন প্রথমে করলার
হাজারও উপকারিতার মধ্যে সামান্য কিছু করলার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে
বিস্তারিত আলোচনা থেকে জেনে নেই-
ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ: করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার
নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করছি আর ডায়াবেটিসের বিষয়টা আমরা এড়িয়ে যাব সেটা হতেই
পারে না। একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য করলার জুস অত্যন্ত নিরাপদ। এর কারণ করলার
জুসে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র ১৭ এবং এর গ্লাইসেমিক লোড হল মাত্র ০. ৬৭।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
এর সাথে সাথে ১০০ গ্রাম কোরলাতে কার্বোহাইড্রেট থাকে মাত্র ১৭ গ্রাম। এছাড়াও
করলার মধ্যে চ্যারেনটিন এবং পলি পেপটাইড পি নামক বিশেষ এক ধরনের বায়ো কম্পাউন্ড
রয়েছে যেগুলো আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এর
জন্য আপনার ডায়াবেটিস কন্ট্রোল প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস
করলার জুস খেতে পারেন। সবকিছু মিলেমিশে একজন ডায়াবেটিস রোগী নিঃসংকচে,
নির্দ্বিধায় করলা খেতে পারেন।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: করলা গ্যাস্ট্রিক জনিত বিভিন্ন সমস্যা দূর করে পেট
পরিষ্কার করে ও হজম শক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে ফলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা
সহজে দূর হয়ে যায়। কারণ এটি অত্যন্ত ফাইবার সম্পূর্ণ সবজি।
হৃদপিণ্ড সুস্থ: করলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ফলিক এসির যা
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে সাহায্য করে ফলে আপনার খাদ্য
তালিকায় নিয়মিত করলা রাখতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস সারাতে: করলায় অত্যন্ত পাওয়ারফুল বা শক্তিশালী
আন্টি ইনফরমেটরি, ফাইবার গুণ রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের মতো সমস্যা দূর
করতে বিশেষ সাহায্য করে থাকে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ: আপনি যদি নিয়মিত ১০০ গ্রাম করলা খেতে পারেন তাহলে
একজন মানুষের সারাদিনে যত পরিমানে ভিটামিন সি এর প্রয়োজন তার ৯৩% পর্যন্ত পূরণ
করতে পারে করলা। সাধারণত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে শরীর সুস্থ ও সরবর রাখার
জন্য একজন ব্যক্তির দৈনিক গড়ে ৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া উচিত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: করলা পাওয়ার হাউজ অফ ভিটামিন সি। করলে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও সংক্রমণ হতে সুরক্ষা
প্রদান করে।
রুচি বৃদ্ধি: খাবার প্রতি অরুচি মূলত শরীরে অপুষ্টির অভাবকে বোঝায় এর
জন্য খাবারের রুচি বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরী এ খাবারের রুচি বৃদ্ধি করার জন্য এক
চা চামচ করে অথবা সকালে খালি পেটে এক গ্লাস করলা জুস খেতে পারেন।
এন্টি আলসার: একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে করোলাতে এন্টি আলসার গুন
রয়েছে যা নিয়মিত করলা গ্যাস্ট্রিক ও ডিওডেনাল আলসার সারাতে সাহায্য করবে।
হাড় মজবুত: হাড় সুস্থ ও মজবুত রাখার জন্য ভিটামিন কে ও ক্যালসিয়াম
আমাদের হাড়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করলাতে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
কে ও ক্যালসিয়াম রয়েছে যার কারণে আপনার নিয়মিতভাবে করলা খেলে এটি আপনার হাড়কে
শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করবে হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা থেকে সুরক্ষা প্রদান করবে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, করলা বা করলার
জুসে মধ্যে যেমন রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তেমনি এর সাথে সাথে এর
মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার ফাইটিং এজেন্ট। যেগুলি আমাদের শরীরে বিভিন্ন প্রকার
ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে আপনাকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।
তেতো করলার মধ্যে যে সমস্ত ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট রয়েছে সেগুলো আপনার বেস্ট
ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, স্টমাক ক্যান্সার, লাঞ্চ ক্যান্সার, নেসোফেয়ারিং
ক্যান্সার ইত্যাদি ক্যান্সার হতে আপনাকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। একজন ক্যান্সার
রোগীর শরীরের যে ক্যান্সার সেল থাকে সেই ক্যান্সার সেলকে যেন ব্যক্তির পুরো শরীরে
ছড়িয়ে না পড়ে সেদিক থেকে ও বিশেষ সাহায্য করে থাকে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম এর
মধ্যে যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ প্রসেসে রয়েছেন তারা সবচেয়ে ভালোভাবে জানবেন করলার
জুস ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য কতটা উপকারী। করলা আমাদের শরীর হতে ফ্যাট সেল গুলোকে
ঝরাতে বিশেষ সাহায্য করে এবং নতুন করে চর্বি জমা হতে প্রতিরোধ করে ফলে
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার ১৭ টি নিয়ম
ওজন নিয়ন্ত্রণ প্রসেসে নিয়মিত খালি পেটে এক গ্লাস করলা জুস খেতে পারেন। কারণ
করালায় রয়েছে অত্যাধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা
আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে বিটক্সিফাই করে পরিপাকতন্ত্র উন্নত করে এবং অ্যাডি
অ্যাডিপোজ কোষ অর্থাৎ যেখানে ফ্যাট জমা হয় তা বন্ধ করে বিশেষ সাহায্য করে।
রক্তশূন্যতা দূর: রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে রক্তের উপাদান
বাড়ানোর জন্য অত্যাবশ্যকীয় ভূমিকা রাখে করলার জুস। এর জন্য যারা রক্তশূন্যতায়
ভুগছেন তারা রক্তশূন্যতা দূর করার উত্তম খাবার হিসেবে করলা বেছে নিতে পারেন।
এইচআইভি ও এইচএসভি-1: নিউরোপ্যাথি মেডিসিন গবেষণায় প্রকাশিত এক
ল্যাবরেটরী পরীক্ষায় রিপোর্টে বলা হয়েছে যে করেলায় বিদ্যমান ফাইটো কেমিক্যাল
এইচআইভি ভাইরাসের বংশবিস্তার প্রতিরোধ করতে বিশেষ সাহায্য করে থাকে। এছাড়া এতে
আরো বলা হয় এইচআইভি চিকিৎসার পাশাপাশি করলা খেলে তা পজিটিভ ইফেক্ট দেয় এবং
করলায় অ্যান্টিভাইরাস গুণ থাকায় হারপেস সিমপ্লেক্স ভাইরাস বংশবিস্তার রোধ করতে
বিশেষ ভূমিকা রাখে।
টিউমার প্রতিরোধ: আমাদের শরীরের মধ্যে যাতে কোন প্রকারের ম্যালিগ্রেইন
টিউমারের উৎপত্তি না হয় সেদিক থেকে বিশেষ সাহায্য করে নিয়মিত এক গ্লাস করলার
জুস।
দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি: একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক যে পরিমাণে
ভিটামিন এ প্রয়োজন তার এক তৃতীয়াংশ রয়েছে করনায় আর আমরা জানি ভিটামিন এ
আমাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। করলাতে থাকা ভিটামিন এ
আমাদের ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করে এবং নাইট ভিশন বাড়াই এছাড়াও করলাতে
থাকা বিটা ক্যারোটিন চোখে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
এলার্জি বা অ্যাজমা কমাতে: করলা বিভিন্ন ধরনের শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা বিশেষ
করে অ্যাজমা বংকাইটিস ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ সাহায্য করে। করলাতে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে এন্টি হিস্টামিন, এন্টি ইনফর্মেটরি ও এন্টিভাইরাল আর এ সকল গুন
আমাদের শ্বাসতন্ত্রকে সুস্থ ও সুরক্ষা রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিতভাবে আপনি যদি সকালে খালি পেটে এক গ্লাস
করলার জুস খেতে পারেন তাহলে করলার জুসের মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম,
বিটাকারোটিন এবং বিভিন্ন প্রকারের হাই পাওয়ারফুল এন্টিঅক্সিডেন্ট আর এইগুলি
আমাদের রক্ত থেকে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কম করতে সাহায্য করে,
ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কম করতে সাহায্য করে এবং আমাদের কার্ডিওভাসকুলার হেলথকে
প্রটেক্ট করে রাখতে সাহায্য করে।
ত্বক সুস্থ: কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার কারণে
আপনি যদি করলা জুসের সঙ্গে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে খান তাহলে এটি আপনার রক্ত
পরিষ্কার করবে যার কারণে আপনার ত্বকে ব্রণ, একজিমা, সোরিয়সিস ইত্যাদি দূর করে
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
চুল পাকা প্রতিরোধ: অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করতে ১০ থেকে ১২ দিন পর পর
করলার জুস ও অ্যালোভেরা একসঙ্গে মিশে পাকা চুলের গোড়ায় মাসাজ মাসাজ করবেন
দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে অকালেকে যাওয়া অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
উজ্জ্বল চুল: করলা আমাদের চুলকে উজ্জ্বল ও সুন্দর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে
এর জন্য সপ্তাহে দুই দিন এক কাপ করলার জুস, টক দই ও অ্যালোভেরা ভালো করে মিশিয়ে
পেস্ট তৈরি করে চুলে লাগান।
কিডনি পাথর: করলা কিডনি পাথরকে প্রাকৃতিকভাবে ভেঙে প্রসবের মাধ্যমে বের
করে দিতে সাহায্য করে এবং পুনরায় শরীরে কোন প্রকার পাথর সৃষ্টি হতে বাধা প্রদান
করে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ: করলা বা করলার জুসে রয়েছে এন্টিবিলিয়ন এবং
সেক্রেটিভ প্রপার্টি যা আমাদের স্ট্রেস লেভেলকে কম করতে সাহায্য করে এবং আমাদের
ব্লাড প্রেসার এর লেভেলকে মেন্টেন করে রাখতে সাহায্য করে। তাই যদি আপনি একজন
ব্লাড প্রেসারের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি তেতো করলার সবজি হিসেবে অথবা
জুস হিসেবে খেতে পারেন আপনার ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য।
রক্ত পরিষ্কার: বিশেষজ্ঞ ও ডাক্তারদের মতে নিয়মিত করলা সবজি বা জুস করে
খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় এজন্য আপনি করলার জুসের সঙ্গে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে
খেতে পারেন এটি আপনার রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে।
কৃমিনাশক: কৃমিনাশক হিসেবে বিশেষ ঔষধ হিসেবে পরিচিত করলাম এর জন্য নিয়মিত
সকালে খালি পেটে করলার জুস খেয়ে পেট হতে খুব সহজে কৃমি মুক্ত করুন।
লিভার ডিটক্সিফাই: লিভার ডিটক্সিন জুস হিসাবে করলার জুস অত্যন্ত জনপ্রিয়।
এটি আপনার লিভার কে শুধুমাত্র ডিডক্সিফাই করতে সাহায্য করবে তাই নয় এর সাথে সাথে
যে সমস্ত মদ্যপায়ী ব্যাক্তি রয়েছেন বা যারা নিয়মিতভাবে অ্যালকোহল গ্রহণ করে
থাকেন তাদের হ্যাংওভার কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে এবং লিভারের মধ্যে অ্যালকোহল
বেশি পরিমাণে ডিপোজিট না হয় সেদিক থেকেও বিশেষ সাহায্য করে থাকে। সব কিছু
মিলেমিশে তেতো করলার জুস একজন মানুষের লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
অনিদ্রা দূর করতে: নিয়মিত করলা বা করলার জুস খেলে অনিদ্রার মত সমস্যা ও
দূর হয় এবং প্রশান্তির ঘুম হতে সাহায্য করে এছাড়াও দ্রুত ক্ষত নিরাময়, রক্ত
জমার নিয়ন্ত্রণ, চোখে ছানি পড়া, শক্তিবর্ধক অর্থাৎ স্ট্যামিনা বাড়ানো, ডাইয়া ও
পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ইত্যাদি আরো হাজারো উপকারিতা রয়েছে করলার জুসে।
আরো পড়ুনঃ মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার ২০টি উপায়
আশা করি করলার করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে করলার
হাজার উপকারী তার মধ্যে উপরোক্ত করলার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি
উপকৃত হয়েছেন।
করলার খাওয়ার অপকারিতা
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে এতক্ষণ আমরা করলার
খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম কিন্তু কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই কিভাবে
খেলে বা বেশি পরিমাণে খেলে কি কি সমস্যা দেখা দিতে পারে তা জানা অত্যন্ত জরুরি
তাই এখন আমরা করলার খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে
আপনাদেরকে জানাবো-
- করলা অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে তবে এক গ্লাস তেতো করলার জুসে যে পরিমাণে চ্যারেনটিন এবং পলি পেপটাইড পি নামক যে বায়ো কম্পাউন্ড থাকে তা আপনার সম্পূর্ণভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যথেষ্ট নয়। এর জন্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ প্রসেসে কখনোই এক গ্লাস করলার জুসের উপর নির্ভর না করে ডায়াবেটিসের ওষুধের পাশাপাশি এক গ্লাস নিয়মিত ভাবে করলা জুস অবশ্যই খেতে পারেন।
- গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে তিতা জাতীয় খাবার বিশেষ করে করলা না খাওয়া সবচেয়ে ভালো কারণ এতে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায় কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে করলা খেলে মাসিকের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
- অল্প বয়সের বাচ্চাদের বা শিশুদের কলার জুস থেকে দূরে রাখবেন কারণ এটি বাচ্চাদের পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে পেটে ব্যথা, বদহজম, বমি ভাব, ডায়রিয়া পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে বাচ্চাদের কৃমিনাশক হিসেবে অল্প করে রান্না করা করলা সবজি খাওয়াতে পারেন।
- অতিরিক্ত পরিমাণে করলার জুস খেলে লিভার ইনফ্লামেশন হতে পারে অর্থাৎ লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
করলা খাওয়ার নিয়ম
আশা করি করলার করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে করলার
খাওয়ার উপকারিতা ও করলার খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি উপকৃত
হয়েছেন কিন্তু এই উপকারিতা গুলো পাওয়ার জন্য অবশ্যই করলা খাওয়ার নিয়ম সঠিক
সম্পর্কে জানতে হবে তাই চলুন করলা খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই-
করলা আমরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি তবে আপনি যদি মেডিসিনাল বা স্বাস্থ্য উপকারী
করলার দ্বারা পেতে চান তাহলে অবশ্যই করলা জুস করে খেতে হবে তবে আপনার যদি করলার
জুস খেতে সমস্যা হয় তাহলে গোটা করলা সেদ্ধ করে খেতে পারেন এছাড়া রান্না করে
সবজি আকারে ও খেতে পারেন তবে এতে এর পুষ্টিগুণ আগুন কিছুটা নষ্ট হয়ে যায়।
অবশ্যই মনে রাখবেন তেতো করলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী বিধায়
বেশি পরিমাণে খাবেন না এর কারণ বেশি পরিমাণে তেতো করলার জুস খেলে বেশ কিছু
মানুষের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ধরুন- গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, ডায়রিয়ার মত সমস্যা।,নিয়মিত ২৫ থেকে ৪০
গ্রাম করলা জুস খাবেন। করলার জুস তৈরি করার জন্য প্রথমে করলাকে ভালো করে ধুয়ে
কেটে নেবেন এবং ভেতর হতে বিচি বের করে নেবেন।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
এবার একটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে সামান্য পানি ব্যবহার করে ব্লেন্ড করে নেবেন।
ব্লেন্ড করা হয়ে আসলে ছাকনির সাহায্যে রসগুলো বের করে নেবেন। এবার এর ভেতরে পানি
ব্যবহার করে হাত বাড়ানোর জন্য মধু কিংবা লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। তবে
অবশ্যই ডায়াবেটিস রোগী মধু ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন। করলার জুসের সঙ্গে হাফ চা
চামচ মধু মিশিয়ে খেলে এজমা,
ব্রংকাইটিস ও গলার প্রদাহ থেকে অনেক বেশি উপকৃত পাবেন। এছাড়াও করলা যে কোন ধরনের
সবজি কিংবা মাছের সঙ্গে অথবা শুধুমাত্র করলার ভাজি তৈরি করে খেতে পারেন। তবে আপনি
যদি করলা ভাজি আকারে রান্না করেন তাহলে এর পুষ্টিগুন অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাবে। এর
জন্য জুস করে বা সেদ্ধ করে অথবা যে কোন প্রকার সবজির সঙ্গে রান্না করে খেতে
পারেন।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম
সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন করলা সম্পর্কে শুধুমাত্র
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম নিয়ে আমি আলোচনা করছি না
নিম্নে করলা সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা উত্তর নিয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি। আশা করি করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম ছাড়াও
করলা সম্পর্কে নিম্নত্ব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বেন যেমন-
- করলার পুষ্টি গুনাগুন-করলা ইংরেজি কি
- খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি
- ওজন কমাতে করলা কিভাবে খাবেন?
- ওজন কমাতে প্রতিদিন কতটুকু করলার জুস খাওয়া উচিত?
- করলার জুস খেলে কি ওজন কমে
- করলার জুস বানানোর নিয়ম
- করলার জুস কখন খেতে হয়
- করলার রস খেলে কি সত্যিই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে
করলার পুষ্টি গুনাগুন-করলা ইংরেজি কি
আমরা যেকোনো খাবারের যখন স্বাস্থ্য গুণাগুণ অর্থাৎ করলার ৩০টি উপকারিতা ও
অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করছি তখন আমাদের অবশ্যই সে খাবারটির
অর্থাৎ করলার পুষ্টি গুনাগুন কি কি রয়েছে সেগুলো জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি
তেমনি করলা ইংরেজি কি জানাও জরুরী। করলা ইংরেজিতে,
- Balsam pear
- Alligator pear
- Bitter gourd
- Bitter melon
- Bitter cucumber ইত্যাদি বলা হয়।
করলা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Momordica charantia যা Cucurbitaceae পরিবারভুক্ত এক
প্রকার লতা জাতীয় উদ্ভিদ।
করলার পুষ্টি গুনাগুন-করলা ইংরেজি কি এর মধ্যে চলুন এখন করলার পুষ্টি গুনাগুন
গুলো কি কি রয়েছে জেনে নেই,
১০০ গ্রাম করলাতে রয়েছে,
- ক্যালরি- ৩৪ ক্যালোরি
- ফ্যাট- ০.২ গ্রাম
- স্যাচুরেটেড ফ্যাট- ০ গ্রাম
- কোলেস্টেরল- ০ গ্রাম
- সোডিয়াম- ১৩ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম- ৬০২ মিলিগ্রাম 17%
- কার্বোহাইড্রেট- ৭ গ্রাম
- ডিএটারি ফাইবারর-১.৯ গ্রাম
- সুগার- ১ গ্রাম
- প্রোটিন- ৩.৬ গ্রাম
- ভিটামিন সি- ৯২ %
- ক্যালসিয়াম- ৪%
- আইরন- ৫%
- ভিটামিন ডি- ০%
- ভিটামিন বি৬- ৪০%
- ম্যাগনেসিয়াম- ২৩%
খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা উপরোক্ত
বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে আশা করি জানতে পেরেছেন তবে খালি পেটে করলার জুস
খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে কিনা এ নিয়ে যদি আপনার কোন বিভ্রান্তি থাকে তাহলে
সম্পূর্ন পোষ্টটি পড়ুন। ওপর উপরোক্তে করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা
খাওয়ার নিয়ম এর মধ্যে
করলার খাওয়ার উপকারিতা আশা করি পড়েছেন। এখানে যে উপকারিতাগুলো আমি আলোচনা করেছি
সে উপকারিতা গুলো পেতে হলে আপনি করলার জুস সকালে খালি পেটে বা যেকোনো সময় যখন
আপনি খালি পেটে রয়েছেন তখন খাবেন তাহলে আশা করি উপরোক্ত সকল উপকারিতা গুলো আপনি
পাবেন। এ থেকে আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা
কি কি।
কারণ আমরা যখন খালি পেটে থাকি তখন যদি এমন খাবার খায় যেগুলো আমাদের পেটের জন্য
অত্যন্ত উপকারী তখন সেটি আমাদের সমস্ত শরীরের জন্য উপকারী হয়ে ওঠে। যেমন করলার
জুস এটি যেমন আমাদের পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা খুব সহজে দূর করতে পারে তেমনি এর
পাশাপাশি শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা খুব সহজেই দূর করে স্বাস্থ্য সুস্থ ও সুরক্ষা
রাখতে সক্ষম।
গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার
উপকারিতা যদি সম্পর্কে আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানিয়েছি কিন্তু আপনি যদি একজন
গর্ভবতী মহিলা হন এবং গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি না এই নিয়ে দ্বিধাদান্তে
রয়েছেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে ক্লিক করেছেন।
করলা বাচ্চা কিংবা বড় সকলের জন্য অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার তবে গর্ভ
অবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কিনা এই নিয়ে এখনো অনেক বিতর্ক রয়েছে। অনেক গবেষণায়
দেখা গিয়েছে গর্ভবতী মহিলা গর্ভ অবস্থায় করলার জুস খেলে বাচ্চার বিভিন্ন ধরনের
স্বাস্থ্য ক্ষতি হতে পারে এছাড়াও সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো গর্ভপাতের মত সমস্যা হতে
পারে কারণ
তেতো জাতীয় খাবার মহিলাদের ঋতুস্রাবের বৃদ্ধি করে। কারণ করলাতে রয়েছে ভাসিনা
অণু যা রক্তাল্পতা ঘটায়। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে কেরালায়
গ্লাইকোসাইড, কুইনাইন, মোমোর্ডিকা ইত্যাদির মতো অনু রয়েছে যা শরীরের বিষক্রিয়া
সৃষ্টি করতে পারে ফলে
একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে ক্লান্তি ভাব, বমি বমি ভাব, অতিরিক্ত লালা উৎপাদন,
দৃষ্টিশক্তি, অন্তের ব্যথা, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, বদহজম ইত্যাদির মত সমস্যা
দেখা দিতে পারে। এগুলো জানার পরও যদি আপনি গর্ভাবস্থায় করলা খেতে চান তাহলে
অবশ্যই আপনার ডক্টরের সাথে পরামর্শ নিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
ওজন কমাতে করলা কিভাবে খাবেন?
ইতোমধ্যে আমরা করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে
করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে জেনেছি। আপনি যদি ওজন কমাতে চান বা
ওজন কমানোর প্রসেসর রয়েছেন তাহলে ওজন কমাতে করলা কিভাবে খাবেন? চলুন জেনে নেই।
ওজন কমানোর জন্য আপনি করলা বিভিন্নভাবে খেতে পারেন তবে সবচেয়ে উত্তম হল জুস করে
খাওয়া। এর জন্য প্রথমে করলা ভালো করে ধুয়ে ব্লেন্ডারে জুস তৈরি করে নেবেন এরপর
করলা জুসে আপনার ইচ্ছা অনুসারে লেবু কিংবা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এটি ওজন কমানোর
সবচাইতে উত্তম উপায়।
করলার জুস বানানোর নিয়ম
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার
উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কিত জানলাম কিন্তু করলার জুস বানানোর নিয়ম সম্পর্কে কি
আপনি জানেন। করলার জুস বানানোর নিয়ম আপনি বলতে পারেন খাওয়ার থেকেও অনেক বেশি
সহজ। এর জন্য প্রথমে আপনাকে
একটি পাত্রে পানি নিয়ে করলাগুলো ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এবার মাঝখান দিয়ে
করলা কেটে বা গোল করে কেটে মাঝখান থেকে বিচিগুলো বের করে নিতে হবে। এবার ছোট ছোট
টুকরো করে ব্লেন্ডারের সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
এবার একটি ছাকনির সাহায্যে ভালো করে ছেঁকে নেব। এবার এই করলার জুসের ভেতরে পরিমান
মত পানি দিলেই তৈরি হয়ে গেল করলার জুস। আপনার ইচ্ছা অনুসারে এর ভেতরে লেবুর রস,
মধু ইত্যাদি ব্যবহার করে খেতে পারেন। এছাড়া যদি এভাবে জুস করে খেতে আপনার সমস্যা
হয় তাহলে আস্ত করলা সেদ্ধ করে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করেও খেতে পারেন।
করলার জুস খেলে কি ওজন কমে
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে জানার পর কেউ যদি ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় থাকেন এবং করলার জুস
খেলে কি ওজন কমে এমন প্রশ্ন মনের ভেতরে ঘুরছে তাহলে সম্পূর্ণ পোস্ট করুন আশা করি
সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন।
আমরা পূর্বেই জেনেছি করলাতে অত্যাধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন সি,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি পুষ্টিগুণ আগুন রয়েছে আর এই সকল উপাদান আমাদের
পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং হজম শক্তি উন্নত করে এছাড়াও এটি অ্যাডিপোজ কোষ
যেখানে মূলত চর্বি বা ফ্যাট সংরক্ষণ হয় তা বন্ধ করতে বিশেষ সাহায্য করে অর্থাৎ
আমাদের শরীরের ফ্যাট সেলগুলোকে ঝরাতে তো সাহায্য করেই আবার নতুন করে চর্বি জমা
হতেও প্রতিরোধ করে যার থাকে। এ থেকে আমরা খুব সহজে বুঝতে পারছি যে ওজন কমাতে
করলার জুস কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য আপনি যদি ওজন কমানোর প্রসেসে থাকেন তাহলে
নিয়মিত সকালে খালি পেটে এক গ্লাস করলা জুসের সঙ্গে সামান্য লেবু মিশিয়ে খেতে
পারেন।
করলার জুস কখন খেতে হয়
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার
উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে আমরা উপরুক্ত আলোচনা থেকে জানলাম কিন্তু করলার জুস কখন
খেতে হয় অর্থাৎ কখন খেলে করলা জুসের সঠিক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবো চলুন জানি।
করলার জুস খাওয়ার সবচাইতে ভালো সময় হলো সকালে অর্থাৎ যখন আপনি খালি পেটে
থাকবেন।
এ সময় খেলে আপনি করলা জুসের সঠিক উপকারিতা পাবেন যেমন ধরুন যারা ডায়াবেটিস রোগী
রয়েছেন তাদের সকালে তেতো করলার জুস খেলে সারাদিন ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে
থাকবে, যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের প্রসেসে রয়েছেন তারা সকালে খালি পেটে তো খেলে কতটা
উপকারী তা বলা বাহুল্য নয়। এছাড়া ব্লাড প্রেসার, কোলেস্টেরল, ত্বক ও চুলের
স্বাস্থ্য উন্নত ইত্যাদি আরও হাজারো স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে চেষ্টা করবেন খালি
পেটে বিশেষ করে সকালে খালি পেটে করলার জুস খাওয়া।
করলার রস খেলে কি সত্যিই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে
করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার
উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানলাম কিন্তু করলার রস খেলে কি সত্যিই ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণে থাকে চলুন সত্যিটা জেনে নেই। করলার জুসে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র ১৭
এবং এর গ্লাইসেমিক লোড হল মাত্র ০. ৬৭। এর সাথে সাথে ১০০ গ্রাম করলার জুসে
কার্বোহাইড্রেট থাকে মাত্র ১৭ গ্রাম।
এছাড়াও করলার মধ্যে চ্যারেনটিন এবং পলি পেপটাইড পি নামক বিশেষ এক ধরনের বায়ো
কম্পাউন্ড রয়েছে যেগুলো আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন
করে। তবে করলাতে যে পরিমানে চ্যারেনটিন এবং পলি পেপটাইড পি রয়েছে তা দিয়ে
সম্পূর্ণরূপে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
ধরুন আপনার পরিবারের সদস্য সংখ্যা চারজন এবং তাদের দৈনিক ২০ লিটার পানির প্রয়োজন
হয় কিন্তু আপনি তাদেরকে এক লিটার পানি দিলেন তাহলে তারা চাহিদা অনুযায়ী পানি
পেল না যার কারণে তাদের চাহিদা থেকে যাবে তেমনটি করলাতে চ্যারেনটিন এবং পলি
পেপটাইড পি এর পরিমাণ রয়েছে।
যার কারণে আপনি যদি শুধুমাত্র করলা দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে চান তাহলে
কখনোই তা সম্ভব হবে না। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে
ডায়াবেটিসের ঔষধের পাশাপাশি করলার জুস খেতে পারবেন। আশা করি আপনাদের মাঝে
বিষয়টি ক্লিয়ার করতে পেরেছি।
লেখক এর মন্তব্য-করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা খাওয়ার নিয়ম
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের করলার ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা-করলা
খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা ইত্যাদি ছাড়াও করলা
সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা
করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও
বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url