তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও
অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে ইত্যাদি। এছাড়াও তেতুল সম্পর্কে আরো
জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং
তেতুলে কোন এসিড থাকে ছাড়াও তেতুল সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার
অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ জানতে পারবেন
এবং তেতুলের সঠিক স্বাস্থ্য উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনারা তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে
ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য এই রাইট বাটন ওয়েবসাইটে ক্লিক
করেছেন। আশা করি আপনি এখান থেকে খুব তেতুল সম্পর্কে জানা মজানা বিভিন্ন তথ্য
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্র,
কবিরাজি ও এলোপ্যাথিক চিকিৎসার শাস্ত্রে অনুযায়ী
তেতুল সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। তেতুল ছাড়াও এর সম্পূর্ণ গাছটি
পুষ্টিগুনে ভরপুর যেমন ধরুন এর পাতা গাছের ছাল ইত্যাদি ও বিভিন্ন রোগের ঔষধ
হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেমন ধরুন ক্যান্সার প্রতিরোধ, ওজন নিয়ন্ত্রণ, হার্ট
সুস্থ, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর, ডায়রিয়া প্রতিরোধ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, চোখ সুস্থ পেপটিক আলসার রোদ, চুলো ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা
দূর,
গলা ব্যথা স্নায়বিক বিভিন্ন সমস্যা দূর, লিভার সুরক্ষা ইত্যাদি আরো বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা সমাধান ও স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তেতুলে। যার কারণে আজ আমি
আপনাদের মাঝে শুধুমাত্র তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তেতুলে
কোন এসিড থাকে ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করছি না তেতুলে কোন এসিড থাকে, তেতুলের
পুষ্টি গুনাগুন,
ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয়, তেতুল কখন খেতে হয়, ওজন কমাতে তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম,
গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে, সকালে খালি পেটে তেঁতুল খেলে কি উপকার হবে?
ইত্যাদি ছাড়াও তেতুল সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি তেতুলের
কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে ছাড়াও নিম্নে লেখা
তেতুল সম্পর্কে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়বেন।
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আজ আমি আপনাদের মাঝে তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা ইত্যাদি নিয়ে
বিস্তারিত আলোচনা করব। তেতুল অত্যন্ত টক মিষ্টি সুস্বাদু ও পুষ্টিগুনো ভরপুর একটি
ফল। যা মূলত সকল মেয়েদের বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের অত্যন্ত একটি প্রিয় খাবার।
পাকা তেঁতুলে মোট খনিজ পদার্থ সব ফলের চেয়ে অনেক বেশি, তেতুলে খাদ্যশক্তির পরিমাণ
নারিকেল ও খেজুর বাদে সব ফলের চেয়ে বেশি পরিমাণে রয়েছে, ক্যালসিয়ামের পরিমাণ
রয়েছে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি এছাড়াও তেতুলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান
যেমন- প্রোটিন, শর্করা, ফাইবার, ফ্যাট, নিয়াসিন, ফোলেট, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম,
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি। যার কারণে মূলত প্রাচীনকাল থেকে
তেতুলের এই ঔষধি গুন সম্পূর্ণ
এ সকল উপাদানের জন্য চিকিৎসা ক্ষেত্রে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফল। ফলে এটি আমাদের
স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে গলা ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য,
সানস্ট্রোক, ওজন কমানো, হজম শক্তি বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির মত
সমস্যা সমাধানে চিকিৎসা ক্ষেত্রে তেতুলের ব্যবহার অনেক বেশি। তাই চলুন দেরি না
করে তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে নিম্ন
বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেই।
তেতুলের উপকারিতা
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে প্রথমে আমরা তেতুলের
উপকারিতা সম্পর্কে জানব। তেতুল এত বেশি স্বাস্থ্য উপকারিতা ও পুষ্টিগুণে ভরপুর যে
তেঁতুল দিয়ে কবিরাজি, আয়ূর্বেদীয়, হোমিও ও এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে ওষুধ
তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। তাই চলুন দেরি না করে তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও
অপকারিতা এর মধ্যে তেঁতুলের উপকারিতা গুলো জেনে নেই-
ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন নিয়ন্ত্রণে তেতুলের ভূমিকা অত্যন্ত বেশি তেতুল উচ্চ
ফাইবারযুক্ত একটি খাবারের সাথে সাথে এতে কোন প্রকার ফ্যাট নেই যার কারণে বিভিন্ন
গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে প্রতিদিন তেঁতুল খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব কারণ
এতে রয়েছে পলিফেনল(polyphenols), হাইড্রোক্সিসিট্রিক অ্যাসিড(hydroxycitric
acid) ও ফ্ল্যাভোনয়েড(flavonoids) যা খিদে কমানোর মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে
সাহায্য করে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ: আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাশাস্ত্রে তেতুল অনেক চিকিৎসার ঔষধ
হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে শুধু তেতুলি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার
করা হয় না ডায়রিয়া সমাধানে আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে তেঁতুলের পাতা ব্যবহার করা
হয় এছাড়াও পেটের প্রচণ্ড ব্যথা দূর করার জন্য তেঁতুলের কাছে ছাল ও শিকড়
ব্যবহার করা হয়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ও তেতুলের কোন তুলনা নেই তেতুলে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, টার্টারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড ইত্যাদি যা
আমাদের পাকস্থলীর পাচন ক্ষমতা বৃদ্ধি যার ফলে পাকস্থলীর সুস্থ থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর: তেঁতুলে রয়েছে টারটারিক অ্যাসিড, পটাসিয়াম এবং
ম্যালিক অ্যাসিড কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য
রোধের জন্য দুর্দান্ত উপাদান। এর জন্য একজন প্রশ্ন গঠন আক্রান্ত ব্যক্তি যদি
তেতুল খায় তাহলে তেতুলে থাকা এ সকল উপাদান সে ব্যক্তির কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে অনেক
বেশি সাহায্য করবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর
মধ্যে তেতুলের উপকারিতা হিসেবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এর জুড়ি মেলা ভার। তেতুলে
এক ধরনের এনজাইম রয়েছে যা হলো আলফা অ্যামাইলেজ(alpha-amylase) যা আমাদের শরীরে
কার্ডবোহাইড্রেট শোষণকে ধীর করে দেয় এবং শরীরে সাধারণ শর্করা বা চর্বি ও ইনসুলিন
বৃদ্ধির দিকে পরিচালনা করে। এছাড়াও এটি আমাদের শরীরের রক্তের শর্করার মাত্রা
স্থিতিশীল করে এবং অগ্নাশয় টিস্যু ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ: তেতুলে রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল সমৃদ্ধ
বৈশিষ্ট্য। যার কারণে কবিরাজি, হোমিও, আয়ুর্বেদিক, এলোপ্যাথিক ইত্যাদি চিকিৎসা
ক্ষেত্রে ঔষধ হিসেবে দাঁড়িয়েছে তেতুল। এর কারণে আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের
উপজাতিরা সেই প্রাচীনকাল থেকে ম্যালেরিয়া চিকিৎসার জন্য তেতুলের রস ব্যবহার করে
আসছে।
চোখ সুস্থ: বিভিন্ন গবেষণা থেকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তেতুলের বীজের
নির্যাস যুক্ত ড্রপগুলি প্রতিদিন চোখে চার থেকে পাঁচবার ব্যবহার করলে যে সকল
ব্যক্তির চোখের পানি কম থাকে তাদের চোখের উন্নতি ঘটে এবং বয়সের সাথে সাথে চোখ
দিয়ে পানি পড়া, চোখে ছানি পড়া এবং চোখ শুকিয়ে যাওয়া রোধে সক্ষম। এ সকল
ড্রপগুলোতে এক্সট্রাক্টের ১% অবধি থাকে।
পেপটিক আলসার রোধ: তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে
তেতুলের অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে রোধ করা। তেতুল পলিফেনলিক যৌগ সমৃদ্ধ একটি ফল যার
কারণে এটি আলসার অর্থাৎ পেটে বেদনা নাশক ঘা এবং ছোট অন্ত্রের ঘা এর বিরুদ্ধে
প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব ফেলে এছাড়াও তেতুলের বীজের নির্যাস ও আলসার ছাড়াতে বিশেষ
সহায়ক মূলক কাজ করে।
গলা ব্যথা প্রতিরোধ: তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি ইনফ্লামেটরি
বৈশিষ্ট্য যা ফ্রী রেডিক্যাল গুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং এবং এতে থাকা
শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টারটারিক অ্যাসিড শরীরের বিভিন্ন জয়ন্ত জয়েন্টে
ব্যথা এবং বিশেষ করে গলা ব্যথা দূর করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
চুল মজবুত: তেতুল এর হেয়ার প্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করলে এটি চুলের
ত্বকে সিবামের উৎপাদন করে ফলে চুল মজবুত এবং চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে এছাড়াও
এটি চুলের খুকশি, চুলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ উকুন ও চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে
সাহায্য করে।
ত্বক উজ্জ্বল: এটি প্রমাণিত হয়েছে যে তেতুল ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
বিশেষ করে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
ছাড়াও তেতুলে থাকা আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের মৃত কোষগুলোকে দূর করে নতুন
কোষ তৈরিতে সাহায্য করে এবং সেগুলোকে সতেজ রাখতে ও ছিদ্র বন্ধ করে দিতে
এক্সফোলিয়েটিং এজেন্ট হিসেবে দুর্দান্ত কাজ করে।
ত্বকের ব্রণ দূর করতে: তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন
এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে ব্রণ এবং
ব্রণের ফলে হওয়া ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রনের দাগ, ব্রণ স্থান গর্ত হয়ে
যাওয়া, চুলকানি এবং প্রদাহ ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এটি।
লিভার সুরক্ষা: এটি প্রমাণিত হয়েছে যে লিভার সুরক্ষিত রাখতে তেতুলের
ভূমিকা অনেক বেশি। এছাড়াও যারা অতিরিক্ত মধ্য পান করেন ফলে লিভার অতিরিক্ত
পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারা যদি নিয়মিত তেতুল পাতার রস খান তাহলে তাদের
ক্ষতিগ্রস্ত লিভারের চিকিৎসা অনেকটাই সহজ হয়ে আসে এবং লিভারকে সুস্থ করতে
সাহায্য করবে।
স্নায়ুতন্ত্রের জন্য: স্নায়ুতন্ত্রের সুষ্ঠু কার্যকলাপের জন্য থিয়ামিনে
প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা তেতুলে ভরপুর পরিমাণে রয়েছে।
বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে দূর: মৌসুমী বিভিন্ন রোগজীবাণু বা সংক্রমণ থেকে
বিশেষ করে সর্দি কাশি ও জ্বর নিরাময়ে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে তেঁতুল। কারণ
তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিহিস্টামিন বৈশিষ্ট্য ফলে এটি
খুব সহজে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে অর্থাৎ সর্দি কাশি থেকে প্রতিরোধ করার জন্য শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: তেতুলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এর
পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে অনেক বেশি সাহায্য করে এবং থাকা বিভিন্ন ধরনের
অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা প্রদান
করে।
হাঁপানির চিকিৎসায়: তেতুল যেমন আমাদের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে
সুরক্ষা প্রদান করে তেমনি এটি এলার্জিজনিত হাঁপানি চিকিৎসায় ও ব্যবহার করা হয়।
এর জন্য আপনার হাঁপানিজনিত কোন সমস্যা থাকলে তেঁতুল খেতে পারেন।
ক্ষত সারাতে: তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে আরেকটি
তেতুলের অন্যতম উপকারিতা। একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে তেঁতুলের বীজের
নির্যাস নিয়মিত খেলে দশ দিনের মধ্যে ক্ষত সম্পূর্নরূপে সারানোর মতো ক্ষমতা
রয়েছে এটি কারন এতে রয়েছে আশ্চর্যকর এঅ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিপাইরেটিক
এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য যা দ্রুত সারানোর জন্য অত্যন্ত উপকারী উপাদান।
ক্যান্সার প্রতিরোধ: বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে তেতুলের বীজের
নির্যাসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য কিডনি ক্যান্সারের তীব্রতা কমাতে এবং
কিডনির তীব্র ব্যথা সারাতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
হৃদ যন্ত্র সুস্থ: তেতুলে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড যা আমাদের খারাপ
কোলেস্টেরল বা এলডিএল এর মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল এর মাত্রা
বাড়াতে সাহায্য করে। আর আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক মাত্রায় থাকলে
এবং খারাপ কোলেস্টের মাত্র কমে গেলে এর যন্ত্র এমনিতে সুস্থ থাকবে যার কারণে
তেতুলকে বলা হয় হৃদয়ে বন্ধক ফল।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: আমরা জানলাম তেতুল আমাদের শরীরে খারাপ
কোলেস্টেরলর এর মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে এছাড়াও এতে
রয়েছে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম উপাদান আর আমরা জানি পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ
মোকাবেলায় কতটা উপকারী। এর জন্য উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আপনার খাদ্য
তালিকায় তেতুল যুক্ত করতে পারেন।
হার্ট শক্তিশালী: তেতুলে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং এ ছাড়া আরও বিভিন্ন
ধরনের উপাদান যা আমাদের রক্তের টাইগ্লিসারাইড অর্থাৎ রক্তে জমে যাওয়া এক ধরনের
চর্বি রোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে যার কারণে খাদ্য তালিকায় নিয়মিত তেতুল
রাখলে হার্ট সুস্থ ও শক্তিশালী হয়।
ব্রেনের বিকাশ ঘটাতে: তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, কপার,
ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি,
ফলিক অ্যাসিড ইত্যাদি যা আমাদের শরীর থেকে বিশেষ করে ব্রেনের টক্সিন বের করে দিতে
বিশেষভাবে কাজ করে থাকে ফলে মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশ ঘটে।
লোহিত কণিকা বৃদ্ধি: তেতুল আমাদের শরীরে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি
করতে সাহায্য করে যার ফলে আমাদের রক্তচাপ এবং হূদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
চর্বি ঝরাতে: তেঁতুল খেলে অনেক সময় পাতলা পায়খানা হয় এ লক্ষণটি শরীরের
জন্য কোন ক্ষতির বিষয় না বরং ভালো। আর এই পাতলা পায়খানায় একবারের বেশি হয় না
কারণ তেতুল আমাদের শরীর হতে ফ্যাট বা চর্বি গলিয়ে বের করে দেয় তবে আপনার যদি
পাতলা পায়খানা না হয় তাও এটি অনেক বেশি উপকার হবে পেট হতে চর্বি ঝরাতে।
অ্যান্টিডোড হিসেবে: তেতুল আমাদের শরীরে অ্যান্টিবোড হিসেবে বিশেষ করে।
অ্যালকোহল ও বিষক্রিয়াজনিত কোন খাবার খেলে তার প্রভাব দ্রুত কাটাতে তেতুলের শরবত
আমাদের শরীরে অনেক ভালো অ্যান্টিডোড হিসেবে কাজ করে।
মর্নিং সিকনেস দূর করতে: গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ক্ষেত্রে মর্নিং সিকনেস
একটি সাধারণ বিষয়। তেতুলের টক জাতীয় উপাদান গর্ভবতী মায়েদের সিকনেস থেকে
অনেকটাই মুক্তি দেয়য। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া নিরাপদ
বলে প্রমাণিত তবে অবশ্যই মাত্রা অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা বিশেষ করে ১০গ্রামের বেশি
নয়।
বাত ব্যথা ও জয়েন্টের ব্যথা দূর: তেতুলে রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি
বৈশিষ্ট্য যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ করে বাতের ব্যথা শরীরের জ্বালা বা
বিভিন্ন স্থানে প্রদাহ, রিউম্যাটিক পরিস্থিতি,গাউট জাতীয় সমস্যা ইত্যাদি হ্রাস
করতে সাহায্য করে।
কৃমি নাশক: বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে তেতুল পাতার রস চোখ ওঠা
এবং কৃমিনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এছাড়া তেতুল পাতা রস নিয়মিত কুলকুচি
করলে মুখের ঘা দূর হয় এবং তেঁতুল বমি ভাব দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর
মধ্যে তেতুলের হাজারো উপকারিতা মধ্যে উপরোক্ত তেতুলের উপকারিতা গুলো জেনে অনেক
বেশি উপকৃত হয়েছেন। যেহেতু তেতুল অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর ও ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি
ফল যার কারণে এর উপকারিতা বলে শেষ করা সম্ভব নয়।
তেতুলের অপকারিতা
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে আমরা তেতুলের উপকারিতা
সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা তেতুলের অপকারিতা সম্পর্কে জানব। তেতুলের সঠিক
স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য যেমন এটি সঠিক পরিমাণে ও সঠিক নিয়মে খাওয়ার
জরুরী তেমনি অত্যাধিক পরিমাণে বা মাত্র অতিরিক্ত খেলে কি ধরনের সমস্যা হতে পারে
তা নিম্নে আপনাদের মাঝে তেতুলের অপকারিতার মধ্য দিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরলাম-
- অতিরিক্ত পরিমাণে বা এন্টি প্ল্যাটিলেট ড্র্যাগ ,ওইস্পিরিন ইত্যাদি ঔষধ যদি খান এমন অবস্থায় থাকে এর পাশাপাশি তেঁতুল খেলে আপনার শরীরে রক্তপাত বৃদ্ধি হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণ তেতুল গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে তাই অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ অনুসারে সঠিক মাত্রায় তেঁতুল খাবেন।
- মাত্রা অতিরিক্ত তেঁতুল খেলে আপনার শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে হাইপোগ্লেসিমিয়াতে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে।
- তেতুলে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিড রয়েছে যার কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে গ্যাস্ট্রিং বা অ্যাসিটি জনিত সমস্যা বাড়তে পারে।
- যে সকল ব্যক্তি অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন কারণ এটি অ্যালার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সৃষ্টি করতে পারে।
- যে সকল ব্যক্তি রক্তনালীর সঙ্কীর্ণ হয়ে যাওয়ার রোগ বা ভাসোকনস্ট্রিকশনের সমস্যায় ভুগছেন তারা সম্পূর্ণরূপে তেতুল খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
- আমরা পূর্বে জেনেছি তেঁতুল আমাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণের বিশেষ ভূমিকা রাখে তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ওজন অনেক বেশি কমে যাবে।
- যাদের নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে অথবা তেতুল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
- অতিরিক্ত পরিমাণে তেঁতুল খেলে অনেক সময় দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় বিশেষ করে দাঁতের এনামেল নষ্ট দাঁতের ক্ষয় এর মত সমস্যা সৃষ্টি হয়।
- যে সকল মহিলারা বাচ্চাদেরকে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন তারা তেঁতুল খাওয়া থেকে বিশেষ বিরত থাকায় শ্রেয় অথবা চিকিৎসার পরামর্শ নিয়ে খাওয়া ভালো।
- না জেনে মাত্রা অতিরিক্ত তেতুল খেলে পিত্তথলির বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- জন্ডিসের মত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে অতিরিক্ত পরিমাণে তেঁতুল খেলে।
- তেতুলে বিভিন্ন ধরনের এসিড রয়েছে ফলে আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে তেঁতুল খান তাহলে আপনার শরীরে এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে যা মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়
- এছাড়া বাজারে অনেক প্যাকেট যার তেতুল পাওয়া যায় যা বিভিন্ন সময় ধরে প্যাকেট বন্ধ থাকে আবার অনেক সময় মেয়াদ উত্তীর্ণ থাকে যার কারণে অবশ্যই বা বাজারের প্যাকেট যা তেঁতুল খাওয়ার পূর্বে বিশেষ সতর্ক অবলম্বন করবেন।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন তেতুল সম্পর্কে শুধুমাত্র
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আমি আলোচনা করছি না নিম্নে
তেতুল সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। আশা করি তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে নিম্নত্ব
বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বেন যেমন-
- তেতুলে কোন এসিড থাকে
- তেতুলের পুষ্টি গুনাগুন
- ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয়
- তেতুল কখন খেতে হয়
- ওজন কমাতে তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে
- সকালে খালি পেটে তেঁতুল খেলে কি উপকার হবে?
তেতুলে কোন এসিড থাকে
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা-তেতুলে কোন এসিড থাকে এরমধ্যে এতক্ষণ
আমরা তেতুলের উপকারিতা ও তেতুলের অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা তেতুলে কোন
এসিড থাকে এ সম্পর্কে জানব। তেতুলে রয়েছে টারটারিক এসিড যা আমাদের স্বাস্থ্যের
জন্য অত্যন্ত উপকারী বিশেষ করে
পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে। যেমন ধরুন
পেটের ব্যথা হজম শক্তি বৃদ্ধি গ্যাস্ট্রিক নিয়ন্ত্রণে আনা ইত্যাদি এছাড়াও
শরীরের বিভিন্ন জ্বালাপোড়া, প্রদাহ, জয়েন্টে ব্যথা, বাত ব্যথা ইত্যাদি আরো অনেক
সমস্যা দূর করে।
তবে তেতুলে টারটারিক এসিডের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্ট উপাদান রয়েছে যেমন
প্রতি 100 গ্রাম তে তুলে থায়ামিন রয়েছে ৩৬%, আয়রন রয়েছে ৩৫%, ম্যাগনেসিয়াম
২৩%, ফসফরাস ১৬%, ইমোনিন, ইউরিক এসিড, সিনামিক এসিড, মিথাইল
স্যালিসিলেট,অ্যালকাইলথিয়াজোলস,পাইরাজিন ইত্যাদি ফাইটোকেমিক্যাল সমৃদ্ধ।
তেতুলের পুষ্টি গুনাগুন
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা-তেতুলে কোন এসিড থাকে ইত্যাদি জানার
পর এত গুণসম্পূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারী ফলের অর্থাৎ তেতুলের পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে
আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরী। তেতুলে খাদ্যশক্তির পরিমাণ নারিকেল ও খেজুর বাদে সব
ফলের চেয়ে বেশি পরিমাণে রয়েছে। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ রয়েছে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি।
চলুন তেতুলের পুষ্টি গুনাগুন গুলো জেনে নেই,
১০০ গ্রাম তেতুলে রয়েছে,
- শক্তি- ২৩৯ kcal (১,০০০ কিজু)
- শর্করা- ৬২.৫ গ্রাম
- চিনি- ৫৭.৪ গ্রাম
- খাদ্য আঁশ- ৫.১ গ্রাম
- স্নেহ পদার্থ- ০.৬ গ্রাম
- সুসিক্ত স্নেহ পদার্থ- ০.২৭২ গ্রাম
- এককঅসুসিক্ত- ০.১৮১ গ্রাম
- বহুঅসুসিক্ত- ০.০৫৯ গ্রাম
- প্রোটিন- ২.৮ গ্রাম
- ট্রিপ্টোফ্যান- ০.০১৮ গ্রাম
- লাইসিন- ০.১৩৯ গ্রাম
- মেথাইনিন- ০.০১৪ গ্রাম
ভিটামিন এর পরিমাণ রয়েছে,
- ভিটামিন এ - ২ μg
- ভিটামিন এ- ৩০ IU
- থায়ামিন (বি১)- ০.৪২৮ মিগ্রা
- রিবোফ্লাভিন (বি২)- ০.১৫২ মিগ্রা
- নায়াসিন (বি৩)- ১.৯৩৮ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক এর পরিমাণ রয়েছে,
- অ্যাসিড (বি৫)- ০.১৪৩ মিগ্রা
- ভিটামিন বি৬- ০.০৬৬ মিগ্রা
- ফোলেট (বি৯)- ১৪ μg
- কোলিন- ৮.৬ মিগ্রা
- ভিটামিন সি- ৩.৫ মিগ্রা
- ভিটামিন ই- ০.১ মিগ্রা
- ভিটামিন কে- ২.৮ μg
খনিজ এর পরিমাণ রয়েছে,
- ক্যালসিয়াম- ৭৪ মিগ্রা
- কপার- ০.৮৬ মিগ্রা
- লৌহ- ২.৮ মিগ্রা
- ম্যাগনেসিয়াম- ৯২ মিগ্রা
- ফসফরাস- ১১৩ মিগ্রা
- পটাশিয়াম- ৬২৮ মিগ্রা
- সেলেনিয়াম- ১.৩ μg
- সোডিয়াম- ২৮ মিগ্রা
- জিংক- ০.১ মিগ্রা
- পানি- ৩১.৪০ গ্রাম
ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয়
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে ইত্যাদি
সম্পর্কে আমরা জানলাম তবে অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে ছেলেরা তেঁতুল খেলে কি হয়।
তেঁতুল সম্পর্কে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ভুল ধারণা রয়েছে যার মধ্যে একটি হলো
ছেলেরা তেতুল খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় বিশেষ করে বীর্য পাতলা হয়ে যায় বা
স্পার্ম সংখ্যা কমে আসে।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
তবে এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। তেতুল যেমন মেয়েদের বা অন্যান্য মানুষের
স্বাস্থ্যকর উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে তেমনি পুরুষের জন্যও সে সকল সে সকল
স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এছাড়াও তেতুলে যেহেতু আমাদের শরীর হতে ফ্যাট বা
চর্বি কাটাতে সাহায্য করে যার কারণে পুরুষেরা তেঁতুল খেলে সেক্সুয়ালিটি আরো
বৃদ্ধি পায়।
তবে অবশ্যই সকলের জন্য যেমন অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক বা
ক্ষতিকর দিক রয়েছে তেমনি পুরুষদেরও অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
দেখা দিতে পারে। এর জন্য সঠিক মাত্রায় খেয়ে পুরুষেরা ও তেতুলের উপকারিতা ছাড়াও
হাজারো উপকারিতা পাবে নিশ্চিন্তে।
তেতুল কখন খেতে হয়
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে ইত্যাদি
সম্পর্কে আমরা উপর আলোচনা থেকে জানলাম তবে তেতুল কখন খেতে হয় বা কখন খেলে
তেঁতুলের সঠিক উপকারিতা বা স্বাস্থ্য উপকারিতা আমরা পাব তা সম্পর্কে আমাদের সঠিক
ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। আমরা পূর্বেই জেনেছি
তেঁতুল অত্যন্ত স্বাস্থ্য উপকারী ও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের ভরপুর একটি ফল।
তেতুল বিভিন্ন রোগের সমাধান বা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন
সময় খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে ও গবেষকরা।
তবে আপনি যদি ওজন কমাতে বা শরীর হতে অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে চান তাহলে সকালে তেঁতুল
ভিজিয়ে শুধুমাত্র এর রস খেতে পারেন।
তেঁতুলের রস শরীরে এইচসিএ বা হাইড্রোক্সিসিট্রিক এসিড এর মাত্রা বৃদ্ধি করে পেট
হতে অতিরিক্ত চর্বি বা ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে এছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় এটি
প্রমাণিত হয়েছে যে নিয়মিত সকালে তেতুলের রস খেলে এতে থাকা বিভিন্ন ধরনের
ভিটামিন ও খনির উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এনে শরীর হতে খারাপ কোলেস্টের মাত্রা
বের করে দিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি
অনেকটা কমিয়ে আনে।
ওজন কমাতে তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে ইতালি
সম্পর্কে জানলাম কিন্তু ওজন কমাতে তেতুল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে কি জানেন। আমরা
উপরোক্ত তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা থেকে জানলাম তেঁতুল খেয়ে খুব সহজেই চর্বি বা
ফ্যাট ঝরানো সম্ভব। তবে কোন নিয়মে খেলে দ্রুত আপনি ওজন কমাতে পারবেন চলুন জানি।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার ১৭ টি নিয়ম
প্রথমে তেতুল পানিতে বেশ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে নরম হয়ে আসলে তেতুলের ক্বাথ বের
করে নেব।
এবার এতে সামান্য ভাজা জিরে গুড়ো, বিট লবণ, সামান্য গোলমরিচ গুঁড়ো, একটা চামচ
মধু, পুদিনা পাতা ইত্যাদি ভালো করে মিশিয়ে পরিমাণ মত পানি দিয়ে তৈরি করুন এক
গ্লাস তেতুলের শরবত।
আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ প্রসেসে এই সর্বোচ্চ অনেক বেশি সহায়ক হিসেবে কাজ করবে তবে
অবশ্যই সঠিক মাত্রায় তেতুল ব্যবহার করে খাবেন। অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন
নিয়মিত ১০ গ্রামের বেশি কখনোই তেতুল খাবেন না। এতে আপনার অতিরিক্ত পরিমাণ ওজন
কমে শারীরিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে ইত্যাদি
সম্পর্কে আমরা জানলাম তবে গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে যদিও খাওয়া যায়
তবে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া কতটুক নিরাপদ। গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার
সম্পূর্ণ নিরাপদ তবে এটি গর্ভাবস্থার পরিস্থিতি এবং সঠিক মাথার ওপর নির্ভর করে
নিরাপদ কিনা বিবেচনা করা হয়।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন,
ফাইবার, স্বাস্থ্যকর শর্করা এন্টি মাইক্রোবায়াল ও আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি
সমৃদ্ধ। আর এ সকল পুষ্টি উপাদান একজন গর্ভবতী মহিলার ঔষধি দিক দিয়ে বিভিন্ন
ধরনের সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে বিশেষ করে ডায়রিয়া কোষ্ঠকাঠিন্য,
ডায়াবেটিস,
হাত-পা ব্যথা ও প্রদাহ কিংবা জ্বালাপোড়া প্রতিহত, শরীরের ফোলা ভাব দূর, উচ্চ
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। তবে বিভিন্ন গবেষণা এবং চিকিৎসকের মতে প্রথম তিন
মাসে তেতুল অতিরিক্ত পরিমাণে বা তেতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়ে থাকে কারণ
তেতুল দেহের আইবুপ্রোফেন শোষনের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় ফলে
তৃতীয় মাসে তেতুল খেলে আইবুপ্রোফেন সম্ভাব্যভাব শিশুর হার্ট প্যাসেজ স্থায়ীভাবে
বাধার কারণ হতে পারে। এছাড়াও রক্ত পাতলা করে দিতে পারে শিশু সঠিক পুষ্টি গ্রহণ
করতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে রক্তে শর্করার মাত্রা ভারসাম্যহীনতা দেখাতে পারে
আপনার রক্তচাপের ক্ষতি হতে পারে এছাড়াও আপনার
গর্ভ অবস্থায় যদি ফ্লুরোসিস হয় তাহলে কাচা তরল বা পাতলা তেতুল ভ্রূণের ক্ষতি
করতে পারে। এর জন্য অবশ্যই গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে বিশেষ
সতর্ক হিসেবে তেতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকা এবং অন্যান্য সময় সঠিক মাত্রায় তেতুল
খাবেন এছাড়াও অবশ্যই পরামর্শ নিয়ে তেঁতুল খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
সকালে খালি পেটে তেঁতুল খেলে কি উপকার হবে?
তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে জানার পর ও
অনেকে মনে প্রশ্ন থাকতে পারে সকালে খালি পেটে তেতুল খেলে কি উপকার হবে? সকালে
খালি পেটে তেঁতুল খেলে আপনি উপকার পাবেন তবে শর্তসাপেক্ষে। যেমন ধরুন যাদের
অতিরিক্ত পরিমাণে গ্যাস্ট্রিক বা হজমজনিত বা পেটের সমস্যা রয়েছে
তাদের জন্য সকালে খালি পেটে তেতুল খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন
ধরুন এসব সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে তেতুল। এছাড়া অপরদিকে সকালে খালি পেটে তেতুল
আপনার ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। তেতুলের রহস্য রয়েছে এইচসিএ বা
হাইড্রোক্সিসিট্রিক এসিড যা
পেটের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি গলাতে সাহায্য করে এছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় এটি
প্রমাণিত হয়েছে যে এতে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজাতীয় পদার্থ থাকার
কারণে সকালে খালি পেটে তেঁতুল দিয়ে তৈরি শরবত খেলে ব্লাড প্রেসার, উচ্চ রক্তচাপ
ও কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক থাকে এছাড়া হৃদ রোগের বিভিন্ন ঝুঁকি কমাতেও এটি
বিশেষ ভূমিকা রাখে।
লেখক এর মন্তব্য-তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও অপকারিতা
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের তেতুলের কার্যকারী ৪২টি উপকারিতা ও
অপকারিতা এবং তেতুলে কোন এসিড থাকে ইত্যাদি ছাড়াও তেতুল সম্পর্কে জানা-অজানা
বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি
আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য
শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url