দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি। এছাড়াও দারচিনি সম্পর্কে আরো
জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ছাড়াও দারচিনি সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা
রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ
জানতে পারবেন এছাড়াও দারচিনির সঠিক স্বাস্থ্য উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনারা দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে
ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য রাইট বাটন ওয়েবসাইটে ক্লিক করেছেন।
আশা করি আপনি এখান থেকে দারচিনি সম্পর্কে জানা অজানা বিভিন্ন তথ্য বিভিন্ন
বিশেষজ্ঞ, আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র ও ডক্টরদের মত অনুসারে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।
দারচিনি এতটাই ভেষজ গুণসম্পন্ন যে এটি ঔষধি গুনাগুনের জন্য হাজার বছর ধরে বিভিন্ন
ধরনের রোগ নিরাময়ে যেমন ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ, দাঁতের
সমস্যা, জয়েন্টের সমস্যা, ইনফেকশন, এইচআইভি, ওজন নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি ছাড়াও
প্রাচীন মিশরীয়রা মমি সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় দারচিনি ব্যবহার করত।
এছাড়াও তারা মৃতদেহ পোড়াতেও
দারচিনি ব্যবহার করত যার কারণ রোমানদের কাছে এটি একটি পবিত্র ভেষজ। এ সকল
স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য আশা করি দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি ছাড়াও দারচিনি নিয়ে লেখা সম্পর্কে
সম্পন্ন পোস্টটি পড়বেন
যেমন- দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে, দারুচিনি খাওয়ার নিয়ম, দারচিনি ইংরেজি
কি-দারচিনি গাছ, দারচিনির পুষ্টিগুণ, প্রতিদিন দারুচিনি খাওয়া কি ভালো?, রাতে
দারুচিনি খাওয়ার উপকারিতা. দারচিনি কখন খাওয়া উচিত?, প্রতিদিন কতটুকু দারুচিনি
পানি পান করা উচিত?, সকালে খালি পেটে দারুচিনি খেলে কি হয়?, গর্ভাবস্থায়
দারুচিনি খাওয়া যাবে কি।
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আমি আপনাদের মাঝে দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব। দারচিনি এমন এক ধরনের ভেষজ উপাদান
কমবেশি প্রত্যেকটি পরিবারের রান্নাঘরে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটির স্বাদ ও সুগন্ধের
জন্য মসলা হিসেবে বেশিভাগ ব্যবহৃত হয় কিন্তু কিছু সাইন্টিফিক স্টাডিতে প্রমাণিত
হয়েছে যে,
আরো পড়ুনঃ লাল শাকে কি এলার্জি আছে-লাল শাকের উপকারিতা
দারচিনির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মেডিসিনাল প্রপার্টি। যে মেডিসিনের প্রপার্টি
থাকার জন্য আমরা যদি নিয়মিতভাবে দারচিনি খেতে পারি তাহলে কিন্তু আমরা বেশ কিছু
অ্যামেজিং হেলথ বেনিফিট পেতে পারি। এবারও চিনি আপনার ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে,
হাটকে সুস্থ রাখতে সক্ষম, ব্রেন কে সঠিকভাবে ফাংশনইন করতে সাহায্য করে,
ক্যান্সারকে প্রটেক্ট করে এরকম অজস্র হেলথ বেনিফিট রয়েছে দারচিনির।
তাই আজ আমরা আপনাদের মাঝে দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও এর
সাথে সাথে দারচিনি খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি অর্থাৎ কি পদ্ধতিতে আপনি দারুচিনি খেলে
দারচিনির মেক্সিমাম হেলথ বেনিফিট পেতে পারেন এবং সবশেষে জেনে নেব দারুচিনি সঠিক
ডোজ অর্থাৎ কি ডোজে দারচিনি খেলে আপনি দারুচিনির ম্যাক্সিমাম বেনিফিট তার সাথে
সাথে
কোন প্রকার সাইড এফেক্ট এর সম্মুখীন আপনাকে হতে হবে না। তাই আশা করব দারচিনির
কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও দারুচিনি দিয়ে লেখা সম্পূর্ণ পোস্টটি
পড়বেন কারণ আপনাদের মাঝে প্রত্যেকটি বিষয় বিস্তারিত সহজ ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা
করব এবং সম্পূর্ণ পোস্টটি আপনার জন্য অনেক বেশি বেনিফিট হবে।
দারচিনির উপকারিতা
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে প্রথমে আমরা দারচিনির
উপকারিতা সম্পর্কে জানব। দারচিনি ভেষজ গুণসম্পন্ন অত্যন্ত স্বাস্থ্য উপকারী ও
পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি মসলা যা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক দ্বারা প্রমাণিত
হয়েছে। তাই চলুন দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে দারচিনির
উপকারিতা গুলো জেনে নেই-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: দারচিনির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং দারচিনির মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টটি রয়েছে সেটি
অত্যন্ত পাওয়ারফুল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যে সমস্ত ভেষজ উপাদানের মধ্যে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় এরকম ২৬ টি ভেষজ উপাদান নিয়ে একটি গবেষণা করা
হয় সেই গবেষণায় যে তথ্য উঠে আসে সে তথ্যটি হল
সমস্ত ভেষজ উপাদানের মধ্যে দারুচিনির মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টটি রয়েছে সে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টটি সবচাইতে পাওয়ারফুল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এমনকি এতদিন
ধরে ভাবা হতো রসুনের মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে সে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
টি সবচাইতে বেশি পাওয়ারফুল। কিন্তু এই গবেষণায় দেখা যায় দারচিনির মধ্যে যে
আরো পড়ুনঃ ফিটকিরির কার্যকরী ২৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তার নাম হল পলিফেনল এই পলিফেনোল সমস্ত
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এরমধ্যে সবচাইতে বেশি পাওয়ারফুল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের আমাদের শরীরে কাজ হল আমাদের শরীরে যে সমস্ত ফ্রি রেডিকেল
গুলো থাকে সেগুলোকে দমন করে রাখা বা সে ফ্রি রেডিকেল গুলোকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করা।
আমাদের শরীরে ফ্রী রেডিকেলগুলি যখন দমন হয়ে থাকে বা ফ্রি মেডিকেলগুলো যখন ধীরে
ধীরে ধ্বংস হয়ে যায় তখন আমরা বিভিন্ন প্রকারের ক্রনিক ডিজিজের হাত থেকে
অনেকখানি দূরে থাকতে পারি এছাড়াও এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের এজিং প্রসেস কে
ফ্লুডাউন করতে ও সক্ষম তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর লাভ পেতে আপনি কিন্তু
নিয়মিতভাবে দারচিনি খেতে পারেন।
সর্দি কাশি পশম: দারচিনিতে উপস্থিত আন্টি ইনফর্মেটরি উপাদান এবং শক্তিশালী
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং
ক্ষতিকর টিস্যু মেরামত করতে সাহায্য করে ফলে সর্দি কাশি জনিত মৌসুমী সংক্রমণ থেকে
দারচিনির চা বা দারচিনি খেয়ে সুরক্ষিত থাকা যায়।
প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ: দারুচিনিতে এমন কিছু মেডিসিনাল ও ভেষজ উপাদান রয়েছে
যেগুলো শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রাচীন মিশরীয়রা
তাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ দূর করার জন্য মলম তৈরিতে দারুচিনি ব্যবহার
করতেন।
এন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি: দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও
অপকারিতা এরমধ্যে দারচিনির অন্যতম গুণ হলো এটি এন্টি ইনফ্লামেটরি। দারচিনির মধ্যে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি আর এটি আমাদের শরীরের
অভ্যন্তরীণ যে সমস্ত ইনফ্লামেশন হয় সে সমস্ত ইনফ্লামেশন এর থেকে শরীর থেকে
অনেকখানি দূরে রাখে অর্থাৎ আমাদের শরীরে
যে সকল কারণে ইনফ্লামেশন হয় সেগুলো হল ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং কোন প্রকারের
কোন আঘাত জনিত কারণ। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি
প্রবেশ করছে। আমাদের শরীরে যে ইমিউনো সিস্টেম সে সিস্টেম ব্যাকটেরিয়া ও
ভাইরাসগুলোর সাথে লড়াই করে এবং সেগুলি ধ্বংস করে।
প্রয়োজন হলে সে সকল ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সাথে লড়াই করার জন্য সাময়িকভাবে
সাময়িকভাবে আমাদের শরীরে বেশ কিছু ইনফ্লামেশন এর সৃষ্টি হয় এছাড়া ধরনের কোন
প্রকারের আঘাত জনিত কারণেও আমাদের শরীরে কিন্তু ইনফ্লামেশন হতে পারে। আমাদের
শরীরে ইমিউন সিস্টেমের জন্য সে ইনফ্লামেশন গুলি কমে যায় কিন্তু সেই ইনফ্লামেশন
গুলো যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় সেক্ষেত্রে কিন্তু বিভিন্ন প্রকারের কঠিন সমস্যার
সম্মুখীন হতে হয় এছাড়াও ধরুন
আর্থাইটিস এর জন্য জয়েন্টে যে সমস্ত ইনফ্লামেশন হয় বা হার্ট এর মধ্যে কোন
প্রকার যদি ইনফ্লামেশন হয় সে ক্ষেত্রে সে সমস্ত ইনফ্লামেশন থেকে কিন্তু আন্টি
ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি দারুচিনির মধ্যে রয়েছে সেটি কিন্তু আমাদেরকে অনেকখানি
দূরে রাখতে সাহায্য করবে। আপনি যদি নিয়মিতভাবে দারুচিনি খেতে পারেন তাহলে এর সকল
বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ ইনফ্লামেশনের থেকে আপনার শরীরকে অনেকখানি দূরে রাখতে
সাহায্য করবে।
হার্ট সুস্থ: যদি আপনার হার্ট সংক্রান্ত কোনো প্রকারের কোন সমস্যা থেকে
থাকে যেমন ধরুন আটারিয়াল ডিজিট, ব্লাড প্রেসার এর সমস্যা, কোলেস্টেরলের সমস্যা
এরকম কোন ধরনের সমস্যা যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে কিন্তু দারুচিনি খুব ভালো একটি
হোম রেমিটি হতে পারে। দারুচিনি আপনার ব্লাড প্রেসারকে কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে,
কোলেস্টেরল লেভেলকে মেন্টেন করে বা বলা ভালো লিপিড প্রোফাইলকে মেন্টেন করতে
সাহায্য করে। এই দারুচিনি টোটাল কোলেস্টেরলকে কম সাহায্য করে এছাড়াও আপনার
শরীরের এলডিএল বা লো ডেনসিটি লাইফোপ্রটিন যেটিকে আমরা খারাপ কোলেস্ট্রল বলে থাকি
আর এই খারাপ কোলেস্টেরল পরবর্তী ক্ষেত্রে গিয়ে অথোরসকেরোসিস এর সম্মুখীন করে
এই খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা ধীরে ধীরে কম করতে সাহায্য করে এবং তার সাথে সাথে
আপনার শরীরকে এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই
আপনার লিপিড প্রোফাইল কে মেন্টেন করার জন্য আপনার ব্লাড প্রেসার কে মেন্টেন করার
জন্য নিয়মিতভাবে দারুচিনি খেতে পারেন।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: দারুচিনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্রি বায়োটিক
বৈশিষ্ট্য যার কারণে এটি আমাদের পাকস্থলীর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া গুলোর ভারসাম্য
বজায় রাখে যার কারণে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং হজম জড়িত বিভিন্ন সমস্যা গুলো
খুব সহজে দূর হয়।
দাঁতের ব্যথা: যেহেতু দারচিনিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টি
ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ইনফ্লামেটরি রয়েছে যার কারনে এটি দাঁতের মধ্যে থাকা
বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া কারণে হওয়া ইনফেকশন ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং
দাঁতের ব্যথা ও দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
টাইপ টু ডায়াবেটিক্স: এন্ডক্রিয়াস আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি
করা সত্ত্বেও সেই ইনসুলিন যদি আমাদের শরীরে ঠিকঠাক ভাবে কাজ না করে অর্থাৎ
ইনসুলিন এর যেটি প্রধান কাজ আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম করতে সাহায্য করে
বা সুগারের মাত্র কম করতে সাহায্য করে। এখন প্যানক্রিয়াস ঠিকঠাক ভাবে ইনসুলিন
তৈরি করা সত্ত্বেও যদি
আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম না হয় সে ক্ষেত্রে আমাদেরকে টাইপ টু
ডায়াবেটিসের মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে দারচিনি খেতে
পারেন তাহলে আপনার ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বেড়ে যায় এবং টাইপ টু ডায়াবেটিক্স থেকে
কিন্তু আপনি অনেকখানি দূরে থাকতে পারেন।
নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ: দারচিনিতে থাকা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াল
প্রপার্টি মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করে ফলে নিঃশ্বাসে যে দুর্গন্ধ
অনেকটাই কমে যায় । যার কারণে আপনি যদি নিয়মিত দার্জিলিং কান তাহলে আপনার মুখের
ভেতরের বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন সমস্যা দূর হওয়া ছাড়াও মুখের দুর্গন্ধও দূর হবে।
অনিদ্রা দূর: ঘুমের সমস্যা বা অনিদ্রা দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে
দারুচিনি এর জন্য রাতে এক গ্লাস পরিমাণে দুধের সঙ্গে দার চেনার গুঁড়া মিশে খেলে
প্রশান্তির ঘুম আসে।
ডায়াবেটিকস: আমাদের ডায়াবেটিসের আরো একটি কারণ হলো সেটি হল
প্যানক্রিয়াস যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করতেই পারেনা। ইনসুলিন যখন
পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না তখন আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ও মেন্টেন হয়
না সে ক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত ভাবে খেতে পারেন। দারুচিনি অনেক সময় ইনসুলিনকে
মিমিক করে অর্থাৎ সেটি আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
ইনসুলিনের মত কাজ করে আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাকে মেইনটেন করতে সাহায্য করে
এছাড়াও আপনি যদি নিয়মিত দারুচিনি খেতে পারেন তাহলে আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট
শোষণের মাত্রা কমে যায়। কার্বোহাইড্রেট মেটাবলিজম যে প্রসেস সে প্রসেসটিও স্লো
ডাউন হয়ে যায় তার ফলে কিন্তু আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায় না তাই
আপনার টাইপ অন ডায়াবেটিক্স হোক না কেন বা টাইপ টু ডায়াবেটিসই হোক কেন নিয়মিত
দারুচিনি খেলে আপনি যথেষ্ট উপকৃত হবেন।
চুলের যত্নে: চুলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান
প্রোসিয়ানিডিন যা দারুচিনিতে উপস্থিত রয়েছে এবং এটি চুলের ফলিকলকে উদযাপিত করে
এবং দ্রুত চুল গজাতে সাহায্য করে ফলে চুল ওঠা বন্ধ করা প্রতিরোধ করতে আপনার খাদ্য
তালিকায় দারুচিনি যুক্ত করতে পারেন।
বমি ভাব দূর: দারুচিনিতে উপস্থিত মেডিসিনাল বিভিন্ন ধরনের প্রপার্টি বমি
ভাব দূর করা সহ পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখতে
সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে: ত্বকের যত্নে কার্যনির ভূমিকা অনেক বেশি ত্বকের বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা যেমন- ব্রণ, উজ্জ্বলতা হারিয়ে যাওয়া, কালচে ভাব ইত্যাদি দূর করতে
সাহায্য করে এর জন্য হলুদ দারচিনি ও মধুসহকারে ত্বকে লাগান এটি ত্বকের তৈলাক্ততা
ও দূর করে।
ব্রেনের ফাংশন উন্নত: দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
এরমধ্যে তার ছেলের আরেকটি উপকারিতা হল ব্রেনের ফাংশন উন্নত করা। নিয়মিত ভাবে
দারুচিনি সেবন আপনাকে নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজিজ থেকেও সুরক্ষা প্রদান করে। আপনি যদি
নিয়মিত ভাবে খেতে পারেন তাহলে আপনার ব্রেনকে ঠিকঠাক ভাবে ফাংশনিং করতে সাহায্য
করে,
নিউরো শক্তিশালী হয়, নিউরোডিজেনারেশনকেও অনেক কম করতে সাহায্য করে। এমন দুটি কমন
রোগ রয়েছে যে রোগগুলো প্রায়শই অনেক মানুষের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় এবং সে
রোগের প্রধান কারণ হলো নিউরোডিজেনারেশন সে গুলো হলো হল পারকিনসন
ডিজিজ(Parkinson's Disease) এবং এলমাইনার ডিজিস। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে দারচিনি
খেতে পারেন তাহলে এ সকল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।
গর্ভাবস্থায়: চিকিৎসকের মতে দারুচিনিতে উপস্থিত উপাদান গুলো নারীদের
ওভালুশান প্রক্রিয়ার হরমোন উৎপাদনে সহায়ক হিসেবে কাজ করে এতে করে গর্ভধারণের
সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।
পিসিওএস নিয়ন্ত্রণ: পিসিওএস রোগ যার কারণে মহিলাদের অনিয়ন্ত্রিত ওজন
বৃদ্ধি, অনিয়মিত ঋতুচক্র অতিরিক্ত চুল ঝরা ইত্যাদি হয়ে থাকে। একে মূলত পলি
সিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বলা হয় এবং এটি মহিলাদের হরমোন উৎপাদন সংক্রান্ত
একটি রোগ। তবে দারুচিনিতে উপস্থিত সিনেমালডিহাইড পিসিওএসে আক্রান্ত একজন নারীর
শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে ফলে হরমোন নিয়ন্ত্রণ
থাকে।
রক্ত জমাট বাধা: দারুচিনি রক্ত জমাট বাধা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
অর্থাৎ হিমোফিলিয়া রোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে এছাড়া ওমারন ব্যাধি
লিম্ফোসাইটিক লিউকোমিয়ার বিস্তার রোধ করে।
গ্যাস্ট্রিক: দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে
দারচিনির অন্যতম স্বাস্থ্য উপকারিতা হলো গ্যাস্ট্রিক জনিত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখা। দারচিনি গুড়ো উষ্ণ গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে
পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণে আসে।
ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ: দারুচিনি কিন্তু ক্যান্সার প্রটেক্ট করতে ও সক্ষম
গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিতভাবে যদি দারুচিনি খেতে পারেন ডাইজেস্টিভ
সিস্টেমের, ক্যান্সার কোলন ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার বা লাঞ্চ ক্যান্সারের
ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও যে সমস্ত মানুষরা অলরেডি ক্যান্সারের মতো
সমস্যায় ভুগছেন সে সমস্ত মানুষেরা ট্রিটমেন্ট এর পাশাপাশি নিয়মিতভাবে দারুচিনি
খেতে পারেন তাহলে তাদের শরীরে ক্যান্সার সেলের যে গ্রোথ সে গ্রোথ ও অনেকটা কমে
যায়।
ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণ: দারচিনির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি
ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল প্রপার্টি। যার ফলে আমরা যদি নিয়মিতভাবে
দারুচিনি খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরে যদি কোন প্রকারের ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন
থাকে বা কোন প্রকারের ক্রনিক যদি ফাংগাল ইনফেকশন থাকে সে সমস্ত ইনফেকশন গুলি ধীরে
ধীরে কমে নিয়ে আসে এবং নতুন করে যেন আমাদের শরীরে কোন প্রকারের ব্যাকটেরিয়াল
ইনফেকশন না হয় আমাদের শরীরকে সেদিক থেকেও সাহায্য করে।
এইচআইভি প্রতিরোধ: দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্য
দারচিনির আরেকটি গুণ হলো এইচআইভি প্রতিরোধ করা। এইচআইভির এর নাম আমরা মোটামুটি
অনেকেই শুনেছি। এইচআইভি নামটি আমাদের অনেকের কাছে দুঃস্বপ্নের মত। এটি এক ধরনের
ভাইরাস। এ ভাইরাসের নাম হলো হিউম্যান ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস(Human
Immunodeficiency Virus)।
এ ভাইরাস যখন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে এবং ধীরে ধীরে যখন প্রভাব বিস্তার করতে
শুরু করে বা বলা ভালো আমাদের শরীরে যখন ইনফেকশন করতে শুরু করে তখন আমাদের শরীরে
যে ইমিউনিটি পাওয়ার সে ইমিউনিটি পাওয়ার ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তার ফলে আমাদের যে
রোগের সৃষ্টি হয় তা হল এডস(AIDS)।
এ রোগের প্রধান লক্ষণ হল আপনার শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ক প্রতিরোধ ক্ষমতা
সেটি ধীরে ধীরে কমে যাওয়া। তারপরে যেকোনো ধরনের ছোট খাটো ইনফেকশনও কিন্তু আপনার
শরীরে বড় আকার ধারণ করে এবং সে ছোট ইনফেকশনটি পরবর্তী ক্ষেত্রে আপনার মৃত্যুর
কারণও হতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে আপনি যদি নিয়মিতভাবে দারচিনি খেতে পারেন
তাহলে দারচিনি এইচআইভি রোগের থেকে লড়াই করতে ও সক্ষম।
রুচি বৃদ্ধি: যাদের খাবারে অনীহা রয়েছে বা খাবার খাওয়ার প্রতি অরুচি বোধ
রয়েছে তারা ক্ষুধা বৃদ্ধি করার জন্য দারচিনি খেতে পারেন। এছাড়াও আপনি দারুচিনি,
এলাচ এবং শুঁথি চুর্ণ একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
বাত ব্যথা দূর: দারুচিনিতে উপস্থিত এন্ড ইনফ্লামেটর উপাদান বাতের ব্যথা
এবং আর্থারাইটিস এর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে
বিশেষ ভূমিকা রাখে। এর জন্য এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে এক চা চামচ দারচিনি ও মধু
মিশিয়ে খেতে পারেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: ৯৯% মানুষ ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দারুচিনি ব্যবহার করে
থাকে এর কারণ দারুচিনির মধ্যে রয়েছে থার্মো জেনিক ইফেক্ট। এই ইফেক্ট শরীরে
এক্সট্রা ক্যালরিকে বার্ন করতে সাহায্য করে এছাড়া আপনারা যদি নিয়মিত দারুচিনি
খেতে পারি তাহলে শরীরের কার্বোহাইড্রেট শোষণ কমে যায়। আর আমাদের শরীরে যখন
কার্বোহাইড্রেট ওজন কম করতে খুব সহজ হয়ে যায়। তাই আপনার ওজন কমানোর জার্নিতে
দারুচিনিকে অবশ্যই রাখতে পারেন।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এরম
ধ্যে দারচিনির হাজার উপকারিতা থেকে উপরোক্ত দারচিনির উপকারিতা গুলো জেনে অনেক
বেশি উপকৃত হয়েছেন।
দারচিনির অপকারিতা/দারচিনি খেলে কি ক্ষতি হয়
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এরমধ্যে এতক্ষণ আমি আপনাদের মাঝে
দারচিনির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি এখন দারচিনির অপকারিতা/দারচিনি খেলে কি
ক্ষতি হয় সম্পর্কে আলোচনা করব। দার জিনিস সম্পূর্ণরূপে একটি ভেষজ উপাদান
দারচিনির তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিকরা নেই তবে
নির্দিষ্ট মাত্রা বা অতিরিক্ত এবং
সঠিক নিয়মে না খেলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী না হয়ে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য
ঝুঁকি হতে পারে তাই চলুন দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে
দারচিনির অপকারিতা/দারচিনি খেলে কি ক্ষতি হয় সম্পর্কে জেনে নেই-
- অতিরিক্ত পরিমাণে দারুচিনি খেলে লিভারের সমস্যা হতে পারে।
- চিকিৎসকরা বলে থাকে যে সকল ডায়াবেটিস রোগী রক্ত তরল করার ওষুধ খান তারা কখনোই বেশি মাত্রায় দার্জিলিং খাবেন না।
- গর্ভকালীন সময়ে কোন প্রকার জটিলতা থাকলে দারচিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন কারণ এটি গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়ি দিতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে দারচিনি খেলে মাথাব্যথা সমস্যা সৃষ্টি ছাড়াও পেটের বিভিন্ন ধরনের গোলযোগ হতে পারে।
- জরায়ুতে দারুচিনি রাখলেও গর্ভধারণ হয়।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন লবঙ্গ সম্পর্কে শুধুমাত্র
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আমি আলোচনা করছি না নিম্নে
দারচিনি সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। আশা করি দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে নিম্নত্ব
বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বেন যেমন-
- দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে
- দারুচিনি খাওয়ার নিয়ম
- দারচিনি ইংরেজি কি-দারচিনি গাছ
- দারচিনির পুষ্টিগুণ
- প্রতিদিন দারুচিনি খাওয়া কি ভালো?
- রাতে দারুচিনি খাওয়ার উপকারিতা
- দারচিনি কখন খাওয়া উচিত?
- প্রতিদিন কতটুকু দারুচিনি পানি পান করা উচিত?
- সকালে খালি পেটে দারুচিনি খেলে কি হয়?
- গর্ভাবস্থায় দারুচিনি খাওয়া যাবে কি
দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে
উপরোক্ত আলোচনা থেকে দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে
আশা করি অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন। এখন আমি আপনাদের মাঝে দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে
এ সম্পর্কে আলোচনা করব। জি হ্যাঁ দারুচিনি খেলে ওজন কমেই মূলত ৯৯% মানুষ ওজন
নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দারুচিনি ব্যবহার করে থাকে এর কারণ দারুচিনির মধ্যে রয়েছে
থার্মো জেনিক ইফেক্ট।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার ১৭ টি নিয়ম
এই ইফেক্ট শরীরে এক্সট্রা ক্যালরিকে বার্ন করতে সাহায্য করে এছাড়া আপনারা যদি
নিয়মিত দারুচিনি খেতে পারি তাহলে শরীরের কার্বোহাইড্রেট শোষণ কমে যায়। আর
আমাদের শরীরে যখন কার্বোহাইড্রেট ওজন কম করতে খুব সহজ হয়ে যায়। তাই আপনার ওজন
কমানোর জার্নিতে দারুচিনিকে অবশ্যই রাখতে পারেন।
দারুচিনি খাওয়ার নিয়ম
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি
সম্পর্কে আমি উপরোক্ত আপনাদের আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি এখন আমরা
জানবো সঠিক দারুচিনি খাওয়ার নিয়ম অর্থাৎ কি পদ্ধতিতে আপনি খেলে দারুচিনির
ম্যাক্সিমাম মেডিসিনাল বেনিফিট পেতে পারেন।
দারুচিনি অনেকে অনেক ভাবে খেয়ে থাকে কেউ রান্নার সাথে মশলা হিসেবে ব্যবহার করে
থাকে আবার কেউ কেউ মিষ্টি স্বাদ বিধায় ন্যাচারাল সুইটনাল হিসেবে ব্যবহার করে
থাকে। তবে আমার মতে দারুচিনি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো, সহজ এবং ইফেক্টিভ প্রোসেস
আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আপনারা একটি প্যানে দুই কাপ পরিমাণে পানি নিয়ে সেই
পানিতে
এক ইঞ্চি পরিমাণে একটি আদার টুকরোকে থেঁতো করে সে পানির ভেতরে দিয়ে দিন এবং তার
মধ্যে দুই থেকে তিন ইঞ্চি সাইজের দারচিনির টুকরো তার ভেতরে দিয়ে দিন। এবার এটিকে
৬ থেকে ৮ মিনিট পর্যন্ত ফুটিয়ে নিন। ৬ থেকে ৮ মিনিট পর্যন্ত ভালো করে ফুটানোর পর
চুলার জাল বন্ধ করে দিয়ে ঢাকনা দিয়ে রেখে দিন যতক্ষণ পর্যন্ত মিশ্রণটি কুসুম
গরম অবস্থায় না আসে।
এবার উষ্ণ গরম যখন পানিওটি হয়ে যাবে তখন তার ভেতরে এক চা চামচ মধু বা এক চা চামচ
লেবুর রস ব্যবহার করে নিন। লেবু বা মধু ব্যবহার করলে স্বাদ উন্নত হবে এবং
মেডিসিনাল বেনিফিট ও পাবেন। একে দারুচিনির চা বলে থাকে অনেকে। এই চাটি খাওয়ার
সবচেয়ে ভালো এবং সবচেয়ে বেশি বেনিফিট পাওয়া যাবে যখন এটি সন্ধ্যা বেলা বা
বিকেলে চায়ের পরিবর্তে এই চাটি চুমুক দিয়ে খাবেন।
একজন সাধারণ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তি সাধারণত সারাদিনে দুই থেকে তিন গ্রাম
দারুচিনি নির্দ্বিধায় খেতে পারে। তবে আমার মতামত সপ্তাহে পাঁচ দিন এই দারুচিনির
চা খেতে পারেন অর্থাৎ ধরুন আপনি যদি সোমবার থেকে শুরু করেন তাহলে শুক্রবার
পর্যন্ত খেতে পারেন এবং শনিবার ও রবিবার বাদ দিয়ে পুনরায় সোমবার থেকে শুরু করতে
পারেন। এক্ষেত্রে কিন্তু কোন প্রকার সাইডএফেক্ট সম্মুখীন আপনাকে হতে হবে না।
দারচিনি ইংরেজি কি - দারচিনি গাছ
ইতোমধ্যে আমি আপনাদের মাঝে দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এখন আমি
আপনাদের মাঝে দারচিনি ইংরেজি কি - দারচিনি গাছ দেখতে কেমন চিত্রের মাধ্যমে
জানানোর চেষ্টা করব। দারচিনির ইংরেজি হল সিনেমন(Cinnamon) এর বৈজ্ঞানিক নাম
হল(Cinnamomus Zeylanicum)।
এটি সাধারণত মসলার হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। দারচিনি এর আদি নিবাস শ্রীলঙ্কায়
তবে বর্তমানে বাংলাদেশ চীন ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় এটি রোপন করা হচ্ছে। এটি
স্বাভাবিক পরিবেশে ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর গাছ দেখতে
অনেকটা তেজপাতা গাছের মতো হয়ে থাকে তবে এর চামড়াটি দারচিনি বা মশলা হিসেবে
ব্যবহার করা হয়। চামড়া বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি ও তেল তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়।
দারচিনি গাছ
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি জানার পর চলুন এখন দারচিনির গাছটি চিনে নেই-
দারচিনির পুষ্টিগুণ
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে এটা
দিয়ে সম্পর্কে আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করেছি তবে এতগুলো সম্পন্ন ও ভেষজ
স্বাস্থ্য উপকারী দারচিনির পুষ্টিগুণ উপাদান গুলো কি কি এ সম্পর্কে আমাদের সঠিক
ধারণা থাকা জরুরী। তাই চলুন দেরি না করে দারচিনির পুষ্টিগুণ উপাদানগুলো অর্থাৎ
দারচিনিতে কি কি পুষ্টি উপাদান কি পরিমাণ রয়েছে-
১০০ গ্রাম দারচিনিতে রয়েছে,
- ক্যালরি- ২৪৭ গ্রাম
- ফ্যাট- ১.২ গ্রাম
- স্যাচুরেটেড ফ্যাট-০.৩ গ্রাম
- কোলেস্টেরল- শুন্য
- সোডিয়াম-১০ মিলিগ্রাম
- পটাসিয়াম-৪৪১ মিলিগ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট- ৮১ গ্রাম
- ডায়েটারি ফাইবার- ৫৩ গ্রাম
- চিনি- ২.২ গ্রাম
- প্রোটিন- ৪ গ্রাম 8%
- ভিটামিন সি ৬%
- ক্যালসিয়াম- ১০০%
- আয়রন- ৪৬%
- ভিটামিন ডি- শুন্য
- ভিটামিন বি ৬১০%
- ম্যাগনেসিয়াম- ১৫%
প্রতিদিন দারুচিনি খাওয়া কি ভালো?
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি
জানার পর আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে প্রতিদিন দারুচিনি খাওয়া কি ভালো?।
দারচিনি প্রতিদিন খেলে কোন প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই
তবে অবশ্যই মাত্রা ঠিক রেখে এবং সঠিক নিয়মে।
তবে আমার মতে দারচিনি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো চা তৈরি করে যেটি আপনি
সপ্তাহে পাঁচ দিন খেতে পারেন এতে আপনার কোন প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে না তবে আপনি প্রতিদিন খেলে এক মাস বা ২০ দিন খাওয়ার পরে এক সপ্তাহ
বিরতি দিয়ে পুনরায় খাবেন।
রাতে দারুচিনি খাওয়ার উপকারিতা
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি
জানার পর কেউ যদি রাতে দারচিনি খেতে চাই তাহলে রাতে দারুচিনি খাওয়ার উপকারিতা
আছে কিনা জানা জরুরি। দার্জিলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিভাইরাস, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল আন্টিইনফ্লামেটরি,
এন্টি ফাঙ্গাস ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার ২০টি উপায়
যার কারণে আপনি যদি রাতের বেলা সঠিক মাত্রায় ঘুমানোর পূর্বে দারুচিনি খান তাহলে
আপনার বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা হবে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পাবে, ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত হবে, চুল পড়া বন্ধ হবে, ঘুম ভালো হবে, হাড় মজবুত
হবে ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য বেনিফিট পাবেন।
দারচিনি কখন খাওয়া উচিত?
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে
সম্পর্কিত আমি আপনাদের মাঝে জানিয়েছি তবে দারচিনি কখন খাওয়া উচিত? অর্থাৎ কখন
খেলে আপনি সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য বেনিফিট পাবেন। দারচিনি অনেকে অনেক সময় খেয়ে
থাকে তবে দারচিনি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো স্বাস্থ্য উপকারিতা আপনি তখনই পাবেন যখন
এটি চা তৈরি করে সন্ধ্যা সময় বা বিকেলে খাবেন।
প্রতিদিন কতটুকু দারুচিনি পানি পান করা উচিত?
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে জানার পর
চলুন এখন প্রতিদিন কতটুকু দারুচিনি পানি পান করা উচিত? জেনে নেই। একজন সাধারণ
প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তি সাধারণত সারাদিনে দুই থেকে তিন গ্রাম দারুচিনি
নির্দ্বিধায় খেতে পারে।
তবে আমার মতামত সপ্তাহে পাঁচ দিন এই দারুচিনির চা খেতে
পারেন অর্থাৎ ধরুন আপনি যদি সোমবার থেকে শুরু করেন তাহলে শুক্রবার পর্যন্ত খেতে
পারেন এবং শনিবার ও রবিবার বাদ দিয়ে পুনরায় সোমবার থেকে শুরু করতে পারেন।
এক্ষেত্রে কিন্তু কোন প্রকার সাইডএফেক্ট সম্মুখীন আপনাকে হতে হবে না।
সকালে খালি পেটে দারুচিনি খেলে কি হয়?
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি
সম্পর্কে জানার পর কেউ যদি সকালে খালি পেটে দারুচিনি খেতে চান তাহলে সকালে খালি
পেটে দারুচিনি খেলে কি হয়? এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। আমরা
পূর্বে জেনেছি দারচিনি পেটের জন্য এবং হজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ফলে আপনি যদি সকাল বেলা খালি পেটে দারুচিনি খান তাহলে এটি আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধি
করবে এবং এতে উপস্থিত আন্টি অক্সিডেন্ট পেটের বিভিন্ন ধরনের রোগ বিশেষ করে পেট
ফাঁপা, বমি ভাব, পেটে ব্যথা ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করবে। তাছাড়াও আযুর্বেদিক
স্বাস্থ্য অনুযায়ী এটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল যে দার্জিলিং সবচেয়ে ভালো
উপকারিতা পেতে হলে একটি খালি পেটে খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় দারুচিনি খাওয়া যাবে কি
দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি
সম্পর্কে জানার গর্ব অবস্থায় কেউ যদি দারুচিনি খেতে চায় তাহলে গর্ভাবস্থায়
দারুচিনি খাওয়া যাবে কি না চলুন জানি। মূলত দারুচিনি গর্ভাবস্থার পূর্বে হাওয়া
একজন মহিলার জন্য অত্যন্ত উপকারী কারণ এটি মহিলাদের ঋতুচক্র স্বাভাবিক, হরমোনাল
বিভিন্ন সমস্যা দূর,
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
অতিরিক্ত চুল উঠা ও ত্বকে মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। তবে গর্ভাবস্থায় কোন
প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি ঘটে কিনা এ সম্পর্কে কোন তথ্য গবেষণা থেকে জানা যায়নি।
তবে আপনার যদি কোন গর্ভকালীন সমস্যা বা জটিলতা না থাকে তাহলে অতি সামান্য পরিমাণে
ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন। এটি গর্ভ অবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ, বমি ভাব,
অরুচি ভাব, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করবে।
লেখকের মন্তব্য-দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, দারুচিনি খেলে কি ওজন কমে ইত্যাদি ছাড়াও দারচিনি সম্পর্কে জানা-অজানা
বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি
আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য
শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url