লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা
ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত ইত্যাদি। এছাড়াও লবঙ্গ সম্পর্কে
আরো জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত ছাড়াও লবঙ্গ সম্পর্কে আপনার যত
প্রশ্ন ও সমস্যা রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং খাওয়ার সঠিক
নিয়ম ও পরিমাণ জানতে পারবেন এছাড়াও লবঙ্গের সঠিক স্বাস্থ্য উপকারিতা গ্রহণ করতে
পারবেন।
ভূমিকা-লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনারা লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ
খাওয়া উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য রাইট বাটন ওয়েবসাইটে
ক্লিক করেছেন। আশা করি আপনি এখান থেকে লালসার সম্পর্কে জানা অজানা বিভিন্ন তথ্য
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও ডক্টরদের মত অনুসারে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ ফিটকিরির কার্যকরী ২৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা
স্বাস্থ্য উপকারিতা ও বিভিন্ন ধরনের রোগ সমাধান চিকিৎসকরা লবঙ্গ খাওয়ার পরামর্শ
দিয়ে থাকেন বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার রোগী, হাড় মজবুত, ডায়াবেটিস,
ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, হজম শক্তি
বৃদ্ধি,
গর্ভ অবস্থায়, ওজন নিয়ন্ত্রণ, কোষ্ঠকাঠিন্য ইতালি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
সমাধান। এ সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য আশা করি লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী
৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত ইত্যাদি ছাড়াও
লবঙ্গ নিয়ে লেখা সম্পর্কে সম্পন্ন পোস্টটি পড়বেন।
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আমি আপনাদের মাঝে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব। সে প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক
শাস্ত্রে আয়ুর্বেদিক থেকে ঔষধ তৈরিতে শুধুমাত্র লবঙ্গই নয় লবঙ্গের ফুল ডাল ও
পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে। লবঙ্গ আমাদের সকলের কাছে বেশ পরিচিত একটি মসলা।
এরকম খুব কম রয়েছে যাদের রান্নাঘরে লবঙ্গের ব্যবহার নেই। কিন্তু আপনি শুনলে
হয়তো আশ্চর্য হয়ে যাবেন ছোট আকারের এই মসলাটির মধ্যে রয়েছে আপনার লিভারকে
প্রটেক্ট করার মতো ক্ষমতা, শরীরে ক্যান্সার সেল থেকে থাকলে তাহলে সে ক্যান্সার
ছেলের সাথে লড়াই লড়াই করার মত ক্ষমতা, সেক্সুয়াল পাওয়ারকে বাড়ানোর মত
ক্ষমতা,
শরীরের বিভিন্ন প্রকারে ইনফ্লামেশনকে কম করার মত ক্ষমতা, আপনার দাঁত ও দাঁতের
মাড়ির বিভিন্ন প্রকার ইনফেকশন এবং তার সাথে সাথে যদি আপনি দাঁতের যন্ত্রণায়
কষ্ট পাচ্ছেন সে দাঁতের যন্ত্রণা কেউ কম করতে সক্ষম লবঙ্গ এরকম আরো অজস্র
উপকারিতা রয়েছে এ লবঙ্গের মধ্যে। এর জন্য আজ আমি আপনাদের মাঝে, লবঙ্গ খাওয়ার
কার্যকরী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর সাথে সাথে
আরো পড়ুনঃ লাল শাকের কার্যকরী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আমি আপনাদের মাঝে জানানোর চেষ্টা করব এ সমস্ত উপকারিতা লবঙ্গ দিতে সক্ষম কেন
এছাড়াও জেনে নেব লবঙ্গ খাওয়ার সঠিক নিয়ম বা পদ্ধতি অর্থাৎ কি পদ্ধতিতে খেলে
লবঙ্গের ম্যাক্সিমাম মেডিসিনাল বেনিফিট আমরা পেতে পারি এবং তার সাথে সাথে আমরা
জেনে নেব, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত অর্থাৎ কয়টা করে খেলে আমাদের কোন
প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হবে না,
লবঙ্গের পুষ্টি উপাদান, লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম, রাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা, খালি
পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা, লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে কি হয়, ওজন কমাতে লবঙ্গ
খাওয়ার উপায়?, লং খেলে কি কাশি ভালো হয়? ইত্যাদি বিষয়গুলো একটি একটি করে
প্রত্যেকটি বিষয় খুব সহজ ভাষায় আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই চলুন
দেরি না করে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো নিম্ন
বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেই।
লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে প্রথমে আমরা লবঙ্গ
খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব। লবঙ্গ অত্যন্ত স্বাস্থ্য উপকারী ও পুষ্টিগুণের
ভরপুর একটি মসলা তা বিভিন্ন চিকিৎসক ও গবেষক দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। তাই চলুন
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে লবঙ্গ খাওয়ার
উপকারিতা গুলো জেনে নেই-
হজম শক্তি বৃদ্ধি: আপনি যদি দীর্ঘদিন যাবত বদহজম বা হজমের সমস্যায় ভুগছেন
তাহলে আপনি নিয়মিতভাবে দুইটি করে লবঙ্গ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এর
কারণ লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে ইউজেনিক অ্যাসিড এবং ক্যাটাগলিক অ্যাসিড(Eugenic acid
and Crategolic acid)। এই দুইটি অ্যাসিড আপনার ডায়জাস্টিক সিস্টেমের বিভিন্ন
ডাইজেস্টিভ এনজাইমের সিক্রেশন বাড়িয়ে দেয়।
এর ফলে আপনি যে সমস্ত খাবার খান সে সমস্ত খাবারগুলি খুব সহজে হজম হয়ে যায়
এছাড়া আমাদের যে গ্যাস্ট্রো ইন্ডাস্টিনাল সিস্টেম এর ইনার ওয়ালে যে পাতলা
আস্তরণ থাকে সে পাতলা আস্তরনটিকে রিলেক্স করে দেয় তার ফলে আমাদের সমস্ত খাবার
খুব সহজে হজম হয়ে যায় আমাদের পেটে ব্যথা, গা বমি ভাব বা বমি হওয়ার মত যে
সমস্যা সে সমস্যাগুলি থেকে আমরা অনেক খানি দূরে থাকতে পারি।
বমি ভাব দূর: লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে
অন্যতম উপকারিতা হলো বমি ভাব দূর করা। লবঙ্গের নির্যাস বা সুগন্ধ বমি ভাব বা মাথা
ঘোরা দূর করে। যার কারণে যাদের যাত্রা পথে বমিভাব বা মাথা ঘুরে তারা মুখে একটি
অথবা দুইটি লবঙ্গ চুষতে পারেন। এছাড়াও গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্থায় বমি ভাব
মাথা ঘোরা দূর করার জন্য লবঙ্গের নির্যাস বা সুগন্ধ নিতে পারে।
আলসার নিরাময়: লবঙ্গ দিয়ে তৈরি লবঙ্গ তেল বা এসেন্সিয়াল ওয়েল
গ্যাস্ট্রিক মিউকাসের উপাদানের সাহায্য করে আর এই মিউকাস পাকস্থলীকে সংক্রমণের
হাত থেকে সুরক্ষা করে।
লিভার সুস্থ: লবঙ্গতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর এই
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো আমাদের শরীরের অর্গানগুলোকে ফ্রি রেডিক্যাল এর হাত থেকে
সুরক্ষা করে থাকে। বিশেষ করে আমাদের লিভারকে। আমাদের শরীরে যখন মেটাবলিজম হয় তখন
মেটাবলিজম হওয়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরে ফ্রী রেডিকেলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে
এবং এর সাথে সাথে আমাদের শরীরের
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে লবঙ্গ খেতে
পারেন তাহলে লবঙ্গে মধ্যে থাকা হেপাটো প্রটেকটিভ প্রপার্টি আপনার লিভারকে
প্রটেক্ট রাখতে সাহায্য করবে বা যে কোন প্রকার লিভারের সমস্যা অর্থাৎ আপনার
সিরোসিস অফ লিভার বা ফ্যাটি লিভারের মত সমস্যা ও কিন্তু সহজে হতে পারে না।
সাইনাস ইনফেকশনের প্রকোপ: লবঙ্গে ইগুয়েনাল নামক একটি উপাদান রয়েছে যার
কারণে সাইনোসাইটিসের রোগীদের চিকিৎসায় লবঙ্গ যেন ঔষধ হিসেবে কাজ করে কারণ এই
উপাদানটি সাইনাসের কষ্ট কম করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
বুকের ব্যথা: বুকের ব্যথায় লবঙ্গের তেলের মালিশ বেশ কার্যকরী ভূমিকা
রাখে। এর জন্য আপনার কোন কারণবশত বুকে ব্যথা হলে লবঙ্গের তেল মালিশ করতে পারেন
অথবা নিয়মিত আপনার সমস্ত শরীর লবঙ্গ তেল দিয়ে মালিশ করতে পারেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিতভাবে যদি আপনি লবঙ্গ খেতে পারেন তাহলে
আপনার শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্রেশনের মত যে সমস্যা সে সমস্যা কে ধীরে ধীরে কমিয়ে
নিয়ে আসে তার ফলে আপনি যদি টাইপ টু ডায়াবেটিসের পেশেন্ট হয়ে এর মত সমস্যায়
ভুগেন তাহলে কিন্তু টাইপ টু ডায়াবেটিস কন্ট্রোলের জার্নিতে লবঙ্গ আপনাকে অনেক
খানি সাহায্য করতে পারবে।
এর সাথে সাথে লবঙ্গ আপনার শরীরে মধ্যে কার্বোহাইড্রেটের শোষণকে কমাতে সাহায্য করে
তার ফলে যে কোন খাবার খাওয়ার পরে হঠাৎ করে রক্তের মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা যে
বৃদ্ধি পেয়ে যায় হঠাৎ করে সেই গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি হতে দেয় না।
এছাড়াও লবঙ্গের নির্যাস শরীরের ইনসুলের সেনসিটিভিটিকে বাড়িয়ে দেয় ফলে শরীরে
ইনসুলিন সেনসিটিভিটির পরিমাণ বেড়ে গেলে তখন কম পরিমাণে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বেশি
পরিমাণে সেনসিটিভিটিকে ব্রেক ডাউন করে এনার্জি বাড়িয়ে আপনার সেল এ পৌঁছে দিতে
পারে তারপরে ডায়াবেটিসের মতো সমস্যার কিন্তু অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
ব্যথা কমাতে: লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা এরমধ্যে
লবঙ্গের আইটি স্বাস্থ্যের উপকারিতা হলো বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করা। লবঙ্গে থাকা
বিভিন্ন ধরনের মেডিসিন আর উপাদান শরীরের বিভিন্ন ধরনেরর ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য
করে থাকে ফলে আপনার যদি মাথাব্যথা বা সমস্ত শরীর কোন কারণবশত ব্যথা করে তাহলে
দুইটি করে লবঙ্গ মুখের ভেতর নিয়ে চুষতে পারেন।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: লবঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা
আমাদের হাটকে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রেখে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে রক্তনালীর
কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য উন্নত করে। এছাড়াও এটি রক্তের
বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থকে দূর করে রক্ত পরিশোধন করতে সাহায্য করে।
হাড় মজবুত: লবঙ্গের মধ্যে ইউজিনল, ফ্ল্যাবোন্স, আইসোফ্লাবন্স এর মত
হাইড্রঅ্যালকোহলিক নির্যাস থাকার জন্য আপনি যদি নিয়মিতভাবে লবঙ্গ খেতে পারেন
তাহলে আপনার হাড়ের ঘনত্ব বা যেটিকে আমরা বোন ডেনসিটি বলে থাকি সেই বোন ডেনসিটি
ঠিকঠাক থাকে এবং তার সাথে সাথে আপনার হাড়ের মধ্যে যে সমস্ত খনিজ পদার্থ থাকে সে
খনিজ পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা করতেও সাহায্য করে।
এছাড়া লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ আর এটি আমাদের যে সমস্ত
কাটিলেজ রয়েছে এই কাটিলেজ এর যে সমস্ত কানেক্টিভিটি টিস্যু বা যোজক কলা রয়েছে
সে যোজক কলা গুলোকে সংযোজন বিশ্লেষিত করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা ওমেগা থ্রি
ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম এর শোষণকে বাড়িয়ে দেয় আর আমাদের
শরীরে যখন ক্যালসিয়ামের শোষণ বেড়ে যায়
তখন আমাদের হাড় এবং মাংসপেশি থাকে মজবুত। লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন সি আর এটি আমাদের শরীরে কলা জিন প্রোডাকশনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এর মধ্যে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে আর এটি আমাদের হাড়ের মধ্যে থাকা অস্ট্রিওক্লাস
সেল একটিভিটি রেগুলেট পড়তে সাহায্য করে তাই আপনার হাড়কে মজবুত এবং সুস্থ রাখার
জন্য আপনি কিন্তু নিয়মিতভাবে আপনার খাদ্য তালিকায় লবঙ্গ যুক্ত করতে পারেন।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি: লবঙ্গে রয়েছে ইউজেনল যা মস্তিষ্কের
বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ও কোষগুলোকে অতিরিক্ত চাপ থেকে রক্ষা করে থাকে যার কারণে
লবঙ্গ স্নায়বিক রোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
স্ট্রেস কমাতে: অতিরিক্ত পরিমাণে স্ট্রেস বা উৎকণ্ঠা কমায় কমানোর জন্য
নিয়মিতভাবে লবঙ্গ দিয়ে তৈরি চা কিংবা দুইটি করে লবঙ্গ চুষে খেতে পারেন। এতে
থাকা বিভিন্ন ধরনের মেডিসিনাল উপাদান আপনার স্টেস কমিয়ে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখতে
সাহায্য করবে।
ইনফেকশন দূর: বঙ্গের সমস্ত উপকারিতার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য উপকারিতা
হলো লবঙ্গের মধ্যে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি বা অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল
প্রপার্টি আর এটি থাকার কারণে যেকোনো প্রকারের ইনফেকশনের থেকে আপনার শরীরকে
কিন্তু লবঙ্গ দূরে রাখতে সাহায্য করবে। তার ফলে আপনি যদি নিয়মিতভাবে লবঙ্গ খেতে
পারেন
এই সমস্ত ইনফেকশনের কারণে যে সমস্ত রোগ সৃষ্টি হয় আপনার শরীরে সে সমস্ত রোগ
থেকেও কিন্তু আপনি অনেকটাই দূরে থাকতে পারবেন এবং তার সাথে সাথে আপনার মুখের
ভেতরে যে কোন প্রকারের ইনফেকশন মুখের ভেতরে ইনফেকশন বলতে পাইরিয়া, মারি ইনফেকশন,
দাঁতের মধ্যে যে কোন প্রকার ইনফেকশন আর এই সমস্ত ইনফেকশন থেকে লবঙ্গ আপনাকে দূরে
রাখতে সাহায্য করবে।
ব্রণ দূর: ব্রণ কিংবা ব্রণের দাগ তখতে দূর করার জন্য লবঙ্গের পেস্ট
চিকিৎসা ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত। এর জন্য লবঙ্গের গুঁড়ো তৈরি করে গোলাপজল দিয়ে
পেস্ট তৈরি করে ব্রণ স্থানে কিংবা ব্রণের দাগ স্থানে ব্যবহার করুন। এছাড়া
নিয়মিতভাবে একটি অথবা দুইটি লবঙ্গ খেয়েও আপনি চিরতরে ত্বক থেকে ব্রণ দূর করতে
পারেন।
শ্বসনতন্ত্রের জন্য: স্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার মহা ঔষধ হিসেবে সে
প্রাচীনকাল থেকে লবঙ্গ ব্যবহার চলে আসছে কারণ লবঙ্গে রয়েছে জীবাণুরোধী বিভিন্ন
বৈশিষ্ট্য যার কারণে সর্দি-কাশি, কফ ওঠা, অ্যাজমা ইত্যাদি জনিত শ্বাসযন্ত্রের
সমস্যাগুলো দূর করতে বেশ উপকারী ভূমিকা রাখে লবঙ্গ।
দাঁতের সমস্যা দূর: লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা
এরমধ্যে লবঙ্গের আরেকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা হলো দাঁতের সমস্যা দূর করা। আপনি যদি
দাঁতের যন্ত্রণা অত্যন্ত কষ্ট পান তখন লবঙ্গের তেল দাঁতের যন্ত্রণা স্থানে লাগাতে
পারেন দেখবেন খুব কম সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ওই দাঁতের যন্ত্রণার ইনস্ট্যান্ট রিলিফ
দিতে সক্ষম ওই লবঙ্গের তেল।
আরো পড়ুনঃ পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর ১২ টি ঘরোয়া উপায়
যদি সে মুহূর্তে আপনি লবঙ্গের তেল সংগ্রহ করতে না পারেন তাহলে আপনি আস্ত লবঙ্গ
নিয়ে যে দাঁতে ব্যথা হচ্ছে সে দাঁতের মধ্যে চেপে ধরতে পারেন দেখবেন কিছু সময়
পড়ে ধীরে ধীরে আপনার দাঁতের যন্ত্রণা কমে এসেছে এ সমস্ত ব্যথা ও বেদনা এবং এ
সমস্ত ইনফেকশন থেকে দূরে থাকার প্রধান কারণ হলো লবঙ্গের মধ্যে থাকা এন্টি
মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টি।
রক্ত পরিষ্কার: লবঙ্গে থাকা বিভিন্ন ধরনের মেডিসিনাল উপাদান রক্তে থাকা
বিভিন্ন ধরনের টক্সিন বা খতিয়ান পদ্ম দূর করে রক্তের পরিশোধিত করতে সাহায্য করে
এবং রক্ত পরিষ্কার রাখে।
বয়সের ছাপ দূর করতে: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার বয়সের ছাপ বা
ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। লবঙ্গের এপিজেনেটিক কিউস’ এবং
‘মাইটোকন্ড্রিয়াল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে বাধা
প্রদান করে।
টেস্টোস্টেরন হরমোন: লবঙ্গ আপনার শরীরে অ্যাপ্রুডেসিক
প্রপার্টি(Aphrodisiac Properties) বা কাম উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। বায়োমেট
সেন্টাল কমপ্লিমেন্টারি এন্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিন জার্নাল(Biomed Central
Complement and Altrnativ Medicine Journal) এর মতে একজন পুরুষ যদি নিয়মিতভাবে
লবঙ্গ খেতে পারে তাহলে সে লবঙ্গ পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা
বৃদ্ধি করে।
আর সে পুরুষটির শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে সে
পুরুষদের মধ্যে যদি কোন প্রকার সেক্সুয়াল ডিসফাংশন এর মত সমস্যা ছিল সে সমস্ত
সমস্যাগুলো থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পেতে পারে। তাই আপনি যদি এর ইরেক্টাল ডিসফাংশন
বা শীঘ্রই পতনের মত সমস্যায় ভুগছেন তাহলে কিন্তু আপনি অবশ্যই প্রতিদিন দুইটি করে
লবঙ্গ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।
রুচি বৃদ্ধি: অনেক সময় জ্বর কিংবা কোনপ্রকার রোগ থেকে সেরে ওঠার পর
খাওয়ার প্রতি অরুচি সৃষ্টি হয় এ অরচি দূর করার জন্য নিয়মিতভাবে খালি পেটে
লবঙ্গ চূর্ণ খেতে পারেন।
অতিরিক্ত পিপাসা: অনেকেরই অতিরিক্ত পিপাসা বা অতিরিক্ত পানি পানির
বিড়ম্বনা দূর করার জন্য সকালে খালি পেটে ও বিকালে একটি অথবা দুইটি করে লবঙ্গ
চিবিয়ে খেতে পারেন এতে অতিরিক্ত পরিমাণে পানি পানের পিপাসা দূর হবে।
ক্যান্সার: দা ইউনিভার্সিটি অফ মিনিসোটা, দা ইউনিভার্সিটি অফ পিটারবার্ড
এন্ড চায়না ক্যাপিটাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটি(University of Minnessota,
University of Pittsburg and Capital Medical University) এর যে সমস্ত
সায়েন্টিস্ট বা বিজ্ঞানীরা রয়েছে তাদের গবেষণায় থেকে জানা গেছে যে, আপনি যদি
নিয়মিতভাবে লবঙ্গ খেতে পারেন তাহলে সে লবঙ্গের মধ্যে থাকা মেডিসিনের প্রপার্টি
ইউজিনাল(Eugenol) যে রয়েছে সেটি আপনার শরীরে
কোলন ক্যান্সার, বেস্ট ক্যান্সার, করোরিক্সাল ক্যান্সার, ওভারিয়ান ক্যান্সার এবং
লিভার ক্যান্সার থেকে কিন্তু আপনাকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে এবং এর সাথে সাথে
ইউজিনাল আপনার শরীরে যে কোন প্রকার মেলিগ্রেড টিউমার ফরমেশনে বাধা সৃষ্টি করে।
তাই আপনি যদি নিয়মিতভাবে দুইটি করে লবঙ্গ খেতে পারেন তাহলে এই দুইটি করে লবঙ্গ
আপনার শরীরকে ক্যান্সারের সাথে লড়াই করার জন্য আপনার শরীরকে সক্ষম করে তোলে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: উচ্চ রক্তচাপ জড়িত সমস্যা দূর করার জন্য বা
নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিয়মিত ভাবে একটি অথবা দুটি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন
অথবা সকালে খালি পেটে লবঙ্গের চূর্ণ গরম পানিতে ফুটিয়ে মধু সহকারে খেতে পারেন।
মাথাব্যথা: আপনি যদি মাথার যন্ত্রণায় কষ্ট পান বা আপনি যদি একজন
মাইগ্রেনের পেশেন্ট হয়ে থাকেন এবং এর কারণে প্রচণ্ড পরিমাণে মাথায় যন্ত্রণায়
ভোগেন তাহলে কিন্তু এ লবঙ্গ আপনার মাথা যন্ত্রণা কম করতে সাহায্য করবে। কয়েকটা
লবঙ্গ নিয়ে সেই গুলোকে ব্লেন্ড করে একটি রুমালের মধ্যে পুটলি বেঁধে নেন। এরপর
সেই লবঙ্গ বাধা পুটলিটি আপনার নাকের মধ্যে নিয়ে এর ঘ্রাণ নিতে থাকুন।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত লবঙ্গ বাধা পুটলিটির ঘ্রান নিতে থাকবেন যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার
মাথার যন্ত্রণা কমে না যায়। দেখবেন কিছু সময় পরে ধীরে ধীরে আপনার মাথার
যন্ত্রণা কমে এসেছে এর কারণ লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কুলিং এবং পেন
রিলিভিয়িং এজেন্ট যেগুলো আপনার মাথা যন্ত্রণাকে নেমে এসে কম করতে সক্ষম।
গ্যাস্ট্রিক দূর করতে: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি অথবা দুইটি লবঙ্গ
চিপে খেলে পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিশেষ করে পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা, বদ হজম এর
মত সমস্যা দূর হয়। কারণ লবঙ্গ রয়েছে শক্তিশালী ইউজেনল অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল
উপাদান যা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে যে গ্যাস্ট্রিকের কারণে ব্যাকটেরিয়া
সৃষ্টি হয় তা ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: লবঙ্গে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও ব্লাড পিওরিফিকেশন উপাদান আর এ সকল
উপাদানগুলো আমাদের রক্ত থেকে বিভিন্ন ধরনের টক্সিন বা দূষিত পথ দূর করতে সাহায্য
করে যার কারণে মৌসুমী বিভিন্ন সর্দি-কাশি জ্বর ইত্যাদি হাত থেকে সুরক্ষা প্রদান
করতে সাহায্য করে লবঙ্গ।
কোষ্ঠকাঠিন্য: কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা ছাড়াতে লবঙ্গের তুলনা হয় না।
নিয়মিত খাদ্য তালিকায় বিশেষ করে সকালে খালি পেটে লবঙ্গ খেলে পেট পরিষ্কার এবং
বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় ফলে কোষ্ঠকাঠনের মত সমস্যা ও অনায়েসে নিরাময় করা সম্ভব
হয়।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর
মধ্যে লবঙ্গের হাজার উপকারী থেকে উপরুক্ত লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে অনেক
বেশি উপকৃত হয়েছেন। যেহেতু লবঙ্গর অনেক বেশি স্বাস্থ্য উপকরণ ও ঔষধি গুণ রয়েছে
যার কারণে এর উপকারিতা বলে শেষ করা সম্ভব নয়।
লবঙ্গ বেশি খেলে কি ক্ষতি হয়/লবঙ্গের অপকারিতা
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা এরমধ্যে এতক্ষণ আমরা লবঙ্গ
খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা লবঙ্গ বেশি খেলে কি ক্ষতি হয়/লবঙ্গের
অপকারিতা সম্পর্কে জানব। লবঙ্গ সম্পূর্ণরূপে একটি ভেষজ উপাদান। লবঙ্গে তেমন কোন
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তবে নির্দিষ্ট মাত্রায় বা অতিরিক্ত এবং সঠিক নিয়মে
না খেলে এটি উপকারিতা তো বইয়ে আনবে না বরং বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বয়ে
আনতে পারে তাই চলুন লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা এরমধ্যে
লবঙ্গ বেশি খেলে কি ক্ষতি হয়/লবঙ্গের অপকারিতা গুলো জেনে নেই-
- আপনি যদি লবঙ্গ বেশি মাত্রায় খেয়ে ফেলেন তাহলে লবঙ্গের মধ্যে থাকা মেডিসিনাল প্রপারটি রয়েছে ইউজিনাল এই ইউজিনাল বেশি মাত্রায় আপনার শরীরে প্রবেশ করলে সেটি টক্সিন এর মত কাজ করে। এর ফলে আপনার শরীরে বিভিন্ন প্রকারের সমস্যার সাথে আপনার লিভার ড্যামেজ এর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য অবশ্যই লবঙ্গ খান কিন্তু সঠিক মাত্রা এবং সঠিক পদ্ধতি।
- যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে লবঙ্গের তেল ব্যবহার করলে এলার্জি পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে বা হঠাৎ অ্যালার্জি শুরু হয়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে যকৃতের সৃষ্টি হতে পারে।
- মাত্র অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে শরীরে রক্তপাত করতে পারে।
- ১৫ বছরের নিচে বাচ্চাদের কখনোই লবঙ্গ দিয়ে তৈরি চা কিংবা শরবত খাওয়ানো থেকে বিরত থাকবেন।
- হাইপোগ্লাইসেমিয়ার এর সমস্যা হতে পারে অত্যাধিক পরিমাণে লবঙ্গ খেলে।
- যে সকল ব্যক্তিদের রক্তে শর্করার মাত্রা অতি কম তারা কখনোই বেশি পরিমাণে লবঙ্গ খাবেন না কারণ লবঙ্গ রক্তের শর্করা মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন লবঙ্গ সম্পর্কে শুধুমাত্র
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আমি আলোচনা করছি না
নিম্নে লবঙ্গ সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা উত্তর নিয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি। আশা করি লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
নিম্নত্ব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বেন যেমন-
- প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত
- লবঙ্গের পুষ্টি উপাদান
- লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম
- রাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
- খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
- লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে কি হয়
- ওজন কমাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপায়?
- লং খেলে কি কাশি ভালো হয়?
প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত
উপরোক্ত আলোচনা থেকে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
আশা করি আপনারা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। এখন আমি আপনাদের মাঝে প্রতিদিন কয়টি
লবঙ্গ খাওয়া উচিত তা জানাবো। প্রতিদিন আপনি ১ গ্রাম বা ২ গ্রাম লবঙ্গ খেতে পারেন
তবে আপনি যদি
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন কয়টা কাঠবাদাম খাওয়া উচিত
প্রতিদিন এক গ্রাম বা ২ গ্রাম লবঙ্গ খান তাহলে কিন্তু ১৫ দিন খাবেন
এবং ১৫ দিনের একটি গ্যাপ দেবেন। কিন্তু আমার মতামতে সবচেয়ে ভালো হলো আপনি
প্রতিদিন দুইটি করে লবঙ্গ খান তাহলে মাঝখানে গ্যাপ দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই
আপনার নিয়মিতভাবে নির্দ্বিধায় নিয়মিত লবঙ্গ খেতে পারেন।
লবঙ্গের পুষ্টি উপাদান
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া
উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে আপনাদের মাঝে উপস্থিত আলোচনা করেছি তবে এত গুণসম্পন্ন
স্বাস্থ্য উপকারী লবঙ্গের পুষ্টি উপাদান গুলো কি কি এ সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা
থাকা জরুরী। তাই চলুন দেরি না করে লবঙ্গের পুষ্টি উপাদান অর্থাৎ লবঙ্গ দিয়ে তৈরি
তেলে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে জেনে নেই,
লবঙ্গ দিয়ে তৈরি তেলে রয়েছে,
- ক্যালোরি- ২৭৪ কিলোক্যালোরি
- মোট চর্বি- ১৩.৩ গ্রাম
- সোডিয়াম- ২৭৭ মিলিগ্রাম
- পটাসিয়াম- ১০২০ মিলিগ্রাম
- মোট কার্বোহাইড্রেট- ৬৫.৫ গ্রাম
- ডায়েটারি ফাইবার- ৩৩.৯ গ্রাম
- চিনি- ২.২ গ্রাম
- প্রোটিন- ৬ গ্রাম
- ভিটামিন কে- ১৪১ মাইক্রোগ্রাম
- ম্যাঙ্গানিজ- ৫৫.৫ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি- ৮১ মিলিগ্রাম
এছাড়া লবঙ্গ দিয়ে তৈরি তেলে রয়েছে,
- অ্যাসিটাইল ইউজেনল
- র্যা ম্নেটিন
- ইউজেনটিন
- ভ্যানিলিন
- ট্রি-টেরপেনয়েড
- ট্যানিন
- মিথাইল স্যালিসাইলেট
- ফ্ল্যাভানয়েড
- ইউজেনিন
- গ্যালোট্যানিক অ্যাসিড
- ক্লিনোলিক অ্যাসিড
- বেটা-ক্যারোফাইলিন
- স্টিগ্মাস্টেরল
- ক্র্যাটেগলিক অ্যাসিড
- সেস্কুইটার্পিন
- আয়রন
- পটাশিয়াম
- ম্যাগনেশিয়াম
- ফসফরাস
- ক্যালসিয়াম
- সোডিয়াম এবং জিঙ্ক উপাদান
লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া
উচিত ইত্যাদি ছাড়াও চলুন লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানি। প্রায়শই আমরা
লবঙ্গ রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি অনেকে লবঙ্গ চায়ের সাথে ব্যবহার করে থাকে
অনেকে আবার দুধের সাথে ফুটিয়ে খেয়ে থাকেন তবে সবচেয়ে ভালো এবং সহজ পদ্ধতিতে
লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম হল,
মুখের ভিতর লবঙ্গের একটি দানা নিয়ে তারপর সেটি ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান এক্ষেত্রে
আপনার লাভ হবে মুখের মধ্যে কোন প্রকার দুর্গন্ধ থাকে সে দুর্গন্ধ, আপনার দাঁতের
মধ্যে কিংবা দাঁতের মাড়িতে কোন প্রকারের ইনফেকশন থেকে থাকে সে ইনফেকশনটি খুব
সহজে দূর হয়ে যাবে। আরো একটি পদ্ধতির রয়েছে লবণকার সেটি হল রাতে ঘুমানোর আগে
দুটি লবঙ্গ নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি খেয়ে আপনি ঘুমিয়ে যান।
এভাবেও কিন্তু আপনি লবঙ্গের ম্যাক্সিমাম বেনিফিট পেতে পারেন।
রাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া
উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে আপনাদের মাঝে উপরুক্ত বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর
চেষ্টা করেছি। তবে অনেকেই মনে প্রশ্ন জাগতে পারে রাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
রয়েছে কিনা। অবশ্যই রাতের লবঙ্গ খেলে স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা
রয়েছে।
লবঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও আন্টি
মাইক্রোপিয়াল উপাদান ছাড়াও এতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, ডায়েটারি ফাইবার,
প্রোটিন, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, সোডিয়াম ইত্যাদি। যার
কারণে প্রতিদিন একজন ব্যক্তি যদি নিয়মিত ঘুমানোর সময় একটি অথবা দুইটি করে লবঙ্গ
খেয়ে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করে তাহলে তার বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য
উপকারিতা পাবে
বিশেষ করে হজম শক্তি তার উন্নত হবে গ্যাস্ট্রিক জনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন বদহজম
পেটে ব্যথা পেট ফাঁপা ইত্যাদি থেকে উপকৃত হবে এবং মৌসুমী সংক্রমণ জড়িত বিভিন্ন
সমস্যা যেমন সর্দি কাশি গলা ব্যথা এছাড়াও হাড় মজবুত, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ,
ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত, মস্তিষ্ক ঠান্ডা এবং ক্যান্সার এর মত মরণব্যাধি রোগ
থেকেও সুরক্ষা পাওয়া যায় এই লবঙ্গ থেকে। তাই আশা করি বুঝতে পেরেছেন রাতে লবঙ্গ
খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
ইতোমধ্যে আমি আপনাদের মাঝে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে উপরোক্ত বিস্তারিত আলোচনার
মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। অনেকেই প্রশ্ন করেন খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার
উপকারিতা কি রয়েছে। জি হ্যাঁ খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি
রয়েছে।
মূলত আমি উপরুক্তে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে যে
আলোচনাগুলো করেছি সেগুলো আপনি তখনই পাবেন যখন আপনি খালি পেটে লবঙ্গ খাবেন। কারণ
খালি পেটে লবঙ্গ খেলে এর কার্যকারিতা বা উপাদান গুলোর কার্যকারিতা বেশি
স্বাস্থ্যের জন্য কার্যকরী হয়।
যার কারণে আপনি যদি সকাল লবঙ্গ খান তাহলে এটি আপনার গ্যাস্ট্রিকের বিভিন্ন
সমস্যা, খাবারে রুচি ফিরে আনা, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগের কম, স্ট্রেস
কম, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ওজন নিয়ন্ত্রণ,
ক্যান্সার, বিভিন্ন প্রকার ইনফেকশন, দাঁতের ব্যথা ও দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
ইত্যাদির মত সমস্যাগুলো থেকে সুরক্ষা প্রদান করে এই লবঙ্গ।
লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে কি হয়
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া
উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে উপরোক্ত বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা
করেছি তবে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে কি হয় এ সম্পর্কে অনেকেই ভুল ধারণা রয়েছে। আপনি
লবঙ্গ চিবিয়ে খান কিংবা এর শরবত বা চা তৈরি করে খান এর লবঙ্গের উপকারিতার কোন
কমতি হবে না।
আপনি যেভাবেই লবঙ্গ খান না কেন এর পুষ্টি উপাদান ও মেডিসিনার উপাদান গুলি আপনার
জন্য শুধুমাত্র স্বাস্থ্য উপকারিতায় বইয়ে নিয়ে আসবে। শুধুমাত্র এটি
স্বাস্থ্যের জন্য তখনই ক্ষতিকারক হবে যখন আপনি এটি অতিরিক্ত পরিমাণে কিংবা সঠিক
নিয়মে খাবেন না।
ওজন কমাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপায়?
ইতোমধ্যে লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ
খাওয়া উচিত এটা দিয়ে সম্পর্ক করতে আলোচনা থেকে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি।
ওজন কমাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপায়? বা সঠিক পদ্ধতি যদি না জেনে থাকেন তাহলে সম্পন্ন
পোস্ট করার বিশেষ অনুরোধ রইলো। ওজন কমাতে লবঙ্গের ভূমিকা অনেক বেশি।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার ১৭ টি নিয়ম
লবঙ্গে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার ও বিভিন্ন ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ওজন
নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য
লবঙ্গ, দারচিনি, লেবুর রস ও জিরা একসঙ্গে এক গ্লাস পানিতে একটি পাত্রে পাঁচ মিনিট
পর্যন্ত ফুটিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় খেলে কিছুদিনের ভিতরে ওজন নিয়ন্ত্রণ হতে
শুরু করে।
লং খেলে কি কাশি ভালো হয়?
লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া
উচিত ইত্যাদি জানার পর আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে লং খেলে কি কাশি ভালো
হয়? জি হ্যাঁ রং খেলে কাশি ভালো হয়। প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা
শাস্ত্রে সর্দি কাশি জ্বর বা বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা প্রদানের জন্য
ব্যবহার হয়ে আছে।
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি
মাইক্রোবিয়াল উপাদান যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস ও
সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা প্রদানের একটি দেয়াল তৈরি করেন। ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সংক্রমণ জড়িত যেমন সর্দি কাশি থেকে সহজে সুরক্ষা পাওয়া
যায়।
লেখক এর মন্তব্য-লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের লবঙ্গ খাওয়ার কার্যকরী ৩৪টি
উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত ইত্যাদি ছাড়াও লবঙ্গ
সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা
করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও
বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url