নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার ইত্যাদি। এছাড়াও নিম পাতা সম্পর্কে আরো
জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার ছাড়াও নিম পাতা সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা
রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ
জানতে পারবেন এছাড়াও নিম পাতার সঠিক স্বাস্থ্য উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা- নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আজ আমি আপনাদের মাঝে প্রাকৃতিক ভেষজ অত্যন্ত গুণসম্পন্ন নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি
উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করব।
আশা করি আপনি এখান থেকে নিম পাতা সম্পর্কে জানা অজানা বিভিন্ন তথ্য বিভিন্ন
বিশেষজ্ঞ, আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র ও ডক্টরদের মত অনুসারে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।
নিম পাতা, নিম পাতার ডাল, ফুল, ফল, বাকল ইত্যাদি এতটাই গুণসম্পন্ন ও সুধী কোন
সম্পন্ন যে হাজার বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ে যেমন ডায়াবেটিস,
ক্যান্সার, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ, দাঁতের সমস্যা, জয়েন্টের সমস্যা, ইনফেকশন, ওজন
নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি ব্যবহার হয়ে আসছে। এ সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য
আশা করি,
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ইত্যাদি ইত্যাদি ছাড়াও রসুন নিয়ে লেখা সম্পর্কে সম্পন্ন পোস্টটি পড়বেন যেমন-
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার,খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়, ব্রণের জন্য
নিম পাতার ব্যবহার, নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, চুলের জন্য নিম পাতার
উপকারিতা, নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা,
নিম পাতা কখন খাওয়া উচিত?, নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি। তাই আশা করব নিম
পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার নিয়ে
লেখা সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়বেন কারণ আপনাদের মাঝে প্রত্যেকটি বিষয় বিস্তারিত সহজ
ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করব এবং সম্পূর্ণ পোস্টটি আপনার জন্য অনেক বেশি বেনিফিট
হবে।
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আজ আমরা অতি পরিচিত, অত্যন্ত জনপ্রিয় নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। এই পাতাটির ঔষধি গুন থাকার কারণে হাজার বছর ধরে
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাশাস্ত্রে এ পাতার ব্যবহার হয়ে আছে। এছাড়াও ঘরোয়া বিভিন্ন
টোটকার মধ্যে ও এ পাতা আমরা ব্যবহার করে থাকি।
আরো পড়ুনঃ ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার কার্যকরী
কিন্তু আজ আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে। বর্তমানে এটি সাইন্টিফিক ভাবে প্রমাণিত এই পাতা আমাদের
বিভিন্ন প্রকারের শারীরিক সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে থাকে।
এই পাতা যে শুধুমাত্র ডায়াবেটিস কন্ট্রোল বা আমাদের হার্ট হেলথকে প্রটেক্ট করে
রাখতে পারে তাই নয়। এর সাথে সাথে বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে এই পাতার মধ্যে। তাই
চলুন দেরি না করে নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এমনি
বিস্তারিত আলোচনা থেকে জেনে নেই।
নিম পাতার উপকারিতা/নিম পাতার উপকারিতা কি
আজ আমি আপনাদের মাঝে এই আশ্চর্যকর নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা
এর মধ্যে প্রথমে নিম পাতার উপকারিতা/নিম পাতার উপকারিতা কি সম্পর্কে জানব।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাশাস্ত্রে নিম পাতাকে বহু ঔষধির গুণাবলী উৎকৃষ্ট একটি গাছ বলা
হয়। তাই চলুন নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্য থেকে নিম
পাতার উপকারিতা গুলো জেনে নিন-
টক্সিন দূর: দূষিত আবহাওয়া, অস্বাস্থ্যকর খাবার, অনিয়মিত চলাফেরা
ইত্যাদির জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের দূষিত বা বিষাক্ত
পদার্থ প্রবেশ করছে। সে সমস্ত দূষিত পদার্থ গুলি আমাদের শরীরের জমা হতে হতে
আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। নিয়মিতভাবে সকালে চার থেকে পাঁচটি
নিম পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে,
নিম পাতার মধ্যে যে পাওয়ারফুল ক্লিনজিং ইফেক্ট রয়েছে এটি আমাদের শরীরের ওই
সমস্ত টক্সিন বা দূষিত পদার্থকে আমাদের শরীরের বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে
এবং বিভিন্ন প্রকারের দুরারোগ্য ব্যাধির থেকে আমাদেরকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ:
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে নিমপাতা রস এবং নিম পাতার
ফুল ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অসাধারণ কাজ করে। এটি আমাদের শরীরের মেটাবলিজম
বৃদ্ধি করে শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি বা ফ্যাট ঝরায় এবং পুনরায় তার জমতে
বাধা প্রদান করে বিশেষ করে
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার ১৭ টি নিয়ম
এটি আমাদের তলপেটে চর্বি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এর জন্য আপনি নিমপাতা দিয়ে
তৈরি চা খেতে পারেন অথবা নিম পাতার ফুল চূর্ণ করে এতে সামান্য লেবুর রস, এক চা
চামচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।
ডায়রিয়া: ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য নিমপাতা রস ২৫ থেকে ৩০ ফোঁটা নিয়ে
অর্ধেক গ্লাস পানিতে মিশে খেলে পাতলা পায়খানা জনিত সমস্যা থেকে অনেকটা আরাম
পাওয়া যায়। দ্রুত উপকারিতা পাওয়ার জন্য সকালে ও বিকালে খেতে পারেন।
ম্যালেরিয়া মুক্ত: ম্যালেরিয়ার মত সমস্যা দূর করার জন্য আপনি নিম পাতার
নির্যাস ব্যবহার করতে পারেন এর জন্য নিমপাতা পানির সঙ্গে ফুটিয়ে এর নির্যাস
গ্রহণ করলে অনেক ভালো উপকার পাবেন এছাড়াও এই নির্যাস ব্যবহারে আপনার মানসিক চাপ
ও মানসিক অশান্তি অনেকটা দূর হবে।
খোস পাচড়া: নিমপাতায় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ফাঙ্গাস বৈশিষ্ট্য
বিদ্যমান থাকায় এটি বিভিন্ন ধরনের খোস পাচড়া থেকে আমাদের শরীরকে দূরে রাখে এর
জন্য গোসলের সময় নিমপাতা সেদ্ধ করা পানি খোস পাচড়া স্থানে ব্যবহার করলে অথবা
নিম পাতার পেস্ট কিংবা ফুলের পেস্ট তৈরি করে খোস পাচড়া স্থানে ব্যবহার করলে অনেক
ভালো উপকার পাবেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে নিম পাতার উপকারিতা হিসেবে
অসাধারণ কাজ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে। নিম পাতার মধ্যে রয়েছে
ফ্ল্যাবোনাইট(Flavonoides), ট্রিট্রাপেনয়েট(Triterpenoides) এবং
গ্লাইকোসাইড(Glycoside) যেগুলো আমাদের ডায়াবেটিস এর মত সমস্যা সমাধান করতে
সক্ষম।
হয়তো আপনারা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন গ্লাইকোসাইড(Glycoside) বিভিন্ন ধরনের
ডায়াবেটিস মেডিসিনে ব্যবহার করা হয়। এক ডোজ গ্লাইকোসাইডে আপনার ফাস্টিং ব্লাড
সুগার ১৯% পর্যন্ত কম করতে সাহায্য করে এবং এক দোজ গ্লাইকোসাইড আপনার ইনসুলিন
রেজিস্ট্যান্সের এর মত সমস্যাকে ২৯% পর্যন্ত সমাধান করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
এর সাথে এ নিম পাতার মধ্যে রয়েছে এন্টি গ্লাইসেমিক এফেক্ট তাই যদি আপনি একজন
ডায়াবেটিসের পেশেন্ট হয়ে থাকেন প্রতিদিন সকালবেলা চার থেকে পাঁচটি নিম পাতা
চিবিয়ে খান অবশ্যই উপকৃত হবেন।
আলসার নিরাময়: নিয়মিতভাবে নিম পাতা এবং নিম পাতার বীজ খেলে এটি আমাদের
পেপটিক আলসার এবং ডিওডেনাল আলসার উপশম করতে অনেক বেশি সহায়তা করে।
জন্ম নিয়ন্ত্রণে: ভারতীয় একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে নিম পাতার
তেল মহিলাদের জন্য গর্ভনিরোধক হিসেবে কাজ করে এবং এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে
শুক্রাণু মেরে ফেলতে সক্ষম। যার কারণে আপনি যদি জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে
শক্তিশালী শুক্রানুনাশক হিসেবে নিম পাতা তেল ব্যবহার করতে পারেন।
এলার্জি দূর: নিম পাতায় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ফাংগাস , আন্টি
মাইক্রোবিয়াল, এন্ড টি ইনফ্লামেটরি, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য উপস্থিত
থাকায় এটি আমাদের শরীরের এলার্জি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে এর জন্য অবশ্যই
প্রতিদিন গোসলের সময় নিমপাতা ফোটানো পানি দিয়ে গোসল করবেন অথবা নিমপাতা এবং
হলুদ দিয়ে তৈরি পেস্ট সমস্ত শরীরে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে গোসল করে নেবেন।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ: নিম পাতার মধ্যে রয়েছে আন্টি হিসামিন ইফেক্ট
এটি আমাদের ব্লাড সার্কুলেশনে যে সমস্ত ব্লাড ভেসেল বা আটারি গুলি রয়েছে
সেগুলোকে প্রসারিত করে রাখতে সাহায্য করে। আমাদের ব্লাড ভেসেল বা আটারি গুলো যখন
প্রসারিত থাকে তখন ব্লাড সার্কুলেশন স্বাচ্ছন্দে হতে পারে এবং ব্লাড প্রেসার এর
মত সমস্যা সৃষ্টি হয় না। এছাড়াও আপনি যদি হাইপার টেনশনের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে
নিয়মিত সকালে চার থেকে পাঁচটি নিমপাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
চোখ সুস্থ: অনেক সময় আমাদের বিভিন্ন করেনের চোখে ব্যাথা হয় এ ব্যথা দূর
করার জন্য নিম পাতার সঙ্গে সামান্য আদা ও লবণ মিশিয়ে একটি পাতলা কাপড় ভিজিয়ে
চোখে ব্যবহার করলে অনেক বেশি উপশম পাওয়া যায়।
বাত ব্যথা দূর: আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে বহু কালো হতে নিমপাতা,
নিমপাতা তেল, নিম পাতার বীজ ও বাকোল বাতব্যথা দূর করার জন্য ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত
হচ্ছে। বাত ব্যথা দূর করার সবচাইতে সহজ উপায় হল নিম পাতা তেলের মাসাজ।
হাড় সুস্থ: নিম পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম তাই
প্রতিদিন সকাল নিম পাতা খাওয়ার অভ্যাস আপনার বিভিন্ন প্রকারের হাড়ের সমস্যা
থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। তাই আর্থারাইটিস এর মতো সমস্যা বা বয়সকালে
অস্টিওপোরোসিস এর মত সমস্যা এড়িয়ে এড়িয়ে চলার জন্যেও আপনি নিম পাতা প্রতিদিন
খেতে পারেন।
বমি ভাব দূর: নিম পাতা আমাদের বমি ভাব দূর করতে ও সাহায্য করে কিংবা বমি
হলে এমন সময় নিমপাতা রসের সঙ্গে সামান্য দুধ মিশিয়ে খেলে দ্রুত সময়ের ভেতরে
বমি দূর হয়ে যায়।
রক্তস্বল্পতা দূর: নিম পাতার মধ্যে আয়রন ও রয়েছে ভরপুর মাত্রাতে এবং
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো নিম পাতার মধ্যে ভিটামিন সি রয়েছে পর্যাপ্ত
পরিমাণে। যার কারণে নিম পাতার মধ্যে ভিটামিন সি এবং আয়রন সহজেই আমাদের শোষণ করতে
সাহায্য করে। আপনি যদি রক্তস্বল্পতারর মত সমস্যায় ভোগেন তাহলেও কিন্তু
নিয়মিতভাবে নিম পাতা খেতে পারেন। এ নিম পাতা আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং রক্তের লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বৃদ্ধি করতে ও
সাহায্য করে।
ক্ষত সারাতে: নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে নিম
পাতার আরেকটি অসাধারণ উপকারিতা হলো ক্ষত সারানো। নিম পাতায় যেহেতু এন্টি
ব্যাকটেরিয়াল, আন্টি ফাঙ্গাস, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার কারণে এটি ক্ষতস্থান দ্রুত সারাতে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এর
জন্য নিম পাতার সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ক্ষতস্থানে ব্যবহার করলে ব্যথা
উপশমের সাথে সাথে দ্রুত সময়ের ভিতরে ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
কফজনিত সমস্যা: নিম পাতা কবজনিত সমস্যার কারণে বুকে ব্যথা দূর করতে বিশেষ
কার্যকরী ভূমিকা রাখে এর জন্য নিম পাতা পেজ তৈরি করে এর রস বের করে ২৫ থেকে ৩০
ফোটা নিম পাতার রস নিয়ে সামান্য গরম করে তিন থেকে চার দিন খেলে কবজনিত কারণে হ
বুকে ব্যথা দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
ফ্রী রেডিকেলস দূর: নিম পাতার মধ্যে রয়েছে কইরেক্টিন(Quercetin) এবং
নিমবাইন(Nimbin) দুই ধরনের পাওয়ারফুল এন্ট্রিঅক্সিডেন্ট। এ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
গুলি আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেলগুলোকে ধ্বংস করে এবং আমাদের শরীরকে বিভিন্ন
প্রকারের ক্রনিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ এর থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। ক্রনিক
ইনফ্লামেটরি ডিজিজ বলতে আপনার এস্তেমা, ডায়াবেটিস, রুমে টয়েক্স আর্থ্রাইটিস,
ক্যান্সার, হার্ট ডিজিজ এ সমস্ত সমস্যা থেকে আপনাকে সাহায্য করবে এই নিমপাতা।
আঁচিল দূর: আঁচিল দূর করার জন্য নিম পাতার তেল এক বিষম্ম কর উপকারিতা
নিয়ে আসে এর জন্য দুই থেকে তিন ফোটা নিমপাতা তেল পানিতে মিশিয়ে আঁসলির উপরে
লাগালে আঁচিল দূর হওয়ার সাথে এটি পুনরায় ফিরে আসতে বাধা প্রদান করে।
সংক্রমণ দূর: নিম পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি মাইক্রোবিয়াল
প্রপার্টি এবং অ্যান্টিভাইরাল প্রপার্টি। তাই আপনি যদি প্রতিদিন তিন থেকে চারটি
করে নিম পাতা খেতে পারেন আপনার শরীরকে বিভিন্ন প্রকারের ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন
এবং ভাইরাল ইনফেকশন থেকে আপনাকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়াও আপনার শরীরের
মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করবে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: নিম পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,
অ্যান্টিফাঙ্গাস ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা আমাদের পাকস্থলীকে সুস্থ
রাখে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এছাড়াও অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক পেট ফাঁপা ও
কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে।
ত্বক উজ্জ্বল: নিমপাতা এবং হলুদের পেস্ট কিছুদিন যদি আপনার ত্বকে ব্যবহার
করতে পারেন তাহলে হাইপার পিকমেন্টেশন, রিংকেল, ফাইনলাইনস ইত্যাদি ত্বকের সমস্যা
থেকে আপনি অনেকখানি দূরে থাকতে পারবেন এবং নিমপাতা এবং হলুদের পেস্ট অ্যান্টি
এজিং ফেসপ্যাক হিসেবে ও ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার ২০টি উপায়
আপনি যদি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে অল্প বয়সেই আপনার শরীরের মধ্যে
বয়সের ছাপ করতে দেয় না এবং নিয়মিতভাবে নিম পাতা খেলে নিমপাতা ভেতর থেকে আপনার
ত্বককে উজ্জ্বল ও সুস্থ করে রাখতে সাহায্য করবে।
চুল সুস্থ: চুল শ্যাম্পু করার পরে নিমপাতা ফোটানোর পানি দিয়ে আপনি যদি
চুল পরিষ্কার করতে পারেন তাহলে এই পানি আপনার চুলের স্ক্যাল্পকে মশ্চারাইজার করে
রাখতে সাহায্য করে এবং তার সাথে সাথে নিম পাতার মধ্যে যে পাওয়ারফুল এন্টি
অক্সিডেন্ট রয়েছে সেগুলো চুল ওঠা বন্ধ করে। এছাড়াও নিম পাতায় যে
অ্যান্টিফাঙ্গাস প্রপার্টি রয়েছে সেগুলো আমাদের স্ক্যাল্পের মধ্যে খুশকি সমস্যা
ও দূর করতে সাহায্য করে।
উকুন দূর: নিম পাতার মধ্যে রয়েছে মাইক্রো অর্গানিজিম কিলিং এফেক্ট যার
কারণে আপনি যদি নিম পাতা ফোটানো পানি গোসলের সময় ব্যবহার করতে পারেন এটি আপনার
চুলে থাকা উকুন দূর করতে সাহায্য করবে।
দাঁত সুস্থ:
আপনি যদি প্রতিদিন নিমপাতা চিবিয়ে খেতে পারেন আপনার মুখের লালা রসের
অ্যালকালাইনকে লেভেলকে মেন্টেন করতে সাহায্য করে নিম পাতা। এর সাথে মুখের মধ্যে
যদি কোন প্রকার ক্ষতিকারক জীবাণু থাকে সেগুলোর সাথে লড়াই করে এবং সে সমস্ত
জীবনকে ধংস করে আপনার দাঁত ও দাঁতের মাড়িকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
লিভার সুস্থ: নিমপাতা লিভারের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ দূর করা সহজ লিভারকে
সুস্থ ও লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে কারণ এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও
আন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে আর এগুলো লিভারকে সুস্থ রাখার প্রধান উপাদান।
কৃমি দূর: শিশুদের মধ্যে কৃমির সমস্যা খুব কমন একটি সমস্যা। যে সমস্ত
শিশুরা কৃমির সমস্যায় ভুগছেন তাদেরকে হাফ চা চামচ নিমপাতার পেস্ট এক গ্লাস পানির
ভেতরে মিশ্রিত করে সারাদিনে অল্প করে পান করাতে পারেন তাহলে কিছুদিনের মধ্যে
দেখবেন আপনার শিশুর পেটে যে কৃমির সমস্যা সে সমস্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে। এর কারণ
নিম পাতার মধ্যে রয়েছে মাইক্রো অর্গানিজিম কিলিং এফেক্ট আর এটি কৃমির সমস্যার
সমাধান করতে সাহায্য করে।
জন্ডিস প্রতিরোধ: নিম পাতায় উপস্থিত এন্টিভাইরাল উপাদান জন্ডিসের ভাইরাস
অর্থাৎ হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাসের এর বিরুদ্ধে লড়াই করার সাথে সাথে আমাদের
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
আশা করি উপরুক্ত আলোচনার থেকে নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর
মধ্যে নিম পাতার উপকারিতা/নিম পাতার উপকারিতা কি সম্পর্কে জেনে অনেক বেশি উপকৃত
হয়েছেন।
নিম পাতার অপকারিতা/নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে এতক্ষণ আমি আপনাদের মাঝে
নিম পাতার উপকারিতা/নিম পাতার উপকারিতা কি সম্পর্কে আলোচনা করেছি এখন নিম পাতার
অপকারিতা/নিম পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আলোচনা করব। নিমপাতা সম্পূর্ণরূপে একটি
ভেষজ উপাদান যার কারনে এতে তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিকরা নেই তবে কিছু ক্ষেত্রে কিছু
মানুষের জন্য এটি অনেক বিপজ্জনক হতে পারে চলুন সেগুলো জেনে নেই,
- নিম পাতা অনেক সময় অনেক মহিলাদের জন্য বন্ধ্যাত্বতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এর জন্য যে সকল মহিলারা বাচ্চা নিতে চান সে সময় নিমপাতা না খাওয়াই ভালো।
- সদ্যসময়ে কোনো প্রকার অপারেশন করা সম্ভাবনা থাকলে অবশ্যই দুই সপ্তাহ আগে থেকে নিম পাতা খাওয়া বন্ধ করে দেবেন।
- যে সকল ব্যক্তির নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে তারা কখনোই নিম পাতা খাবেন না।
- গর্ভবতী মহিলাদের কখনোই গর্ভাবস্থায় নিমপাতা খাওয়া উচিত নয় এটি আপনার গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
- অনেক সময় নিমপাতা অনেক ব্যক্তিদের খাওয়ার পরে ডায়রিয়া বমি ভাব মাথা ব্যাথার মত সমস্যা হয় এর জন্য এ সকল সমস্যা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে নিম পাতা খাওয়া বন্ধ করে দেবেন।
- একটানা সাত দিনের বেশি নিম পাতার রস খালি পেটে খেলে কিডনির সমস্যা বা কিডনির বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
- এছাড়াও স্তন্যদানকারী মহিলাদের নিম পাতা কিংবা নিম পাতার রস খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।
- ছোট বাচ্চা কিংবা শিশুদের নিমপাতা তেল ব্যবহার থেকে বিরত রাখবেন অথবা নিম পাতার তেল খাওয়া থেকে বিরত রাখবেন কারণ এটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাচ্চাদের বমি ভাব কিংবা মস্তিষ্কের দুর্বলতা ব্যাধি দেখাইতে পারে।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন নিম পাতা সম্পর্কে
শুধুমাত্র নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আমি আলোচনা করছি না
নিম্নে নিম পাতা সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা উত্তর নিয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি। আশা করি নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
ছাড়াও নিম্নত্ব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বেন যেমন-
- চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
- খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
- ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
- নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
- চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা
- নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
- নিম পাতা কখন খাওয়া উচিত?
- নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম চলুন এখন চুলকানিতে
নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানি। নিম পাতা চুলকানি বা খোস পাচড়া দূর করতে বেশ
কার্যকরী ভূমিকা রাখে কারণ নিম পাতায় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিফাঙ্গাস বৈশিষ্ট্য রয়েছে আর এগুলোই চুলকানির
ব্যাকটেরিয়া ফাঙ্গাস বা ছত্রাক দূর করতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুনঃ লাল শাকে কি এলার্জি আছে-লাল শাকের উপকারিতা
এর জন্য আপনি নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে চুলকানিস্থানে ব্যবহার করতে পারেন অথবা
গোসলের সময় নিমপাতা সেদ্ধ করে এর পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন এছাড়াও নিমপাতা ও
হলুদ একসঙ্গে ভালো করে পেস্ট তৈরি করে চুলকানিস্থানে প্রলেপ লাগাতে পারেন এতে বেশ
ভালো উপকার পাবেন।
খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ইত্যাদি সম্পর্কে জানার পর কেউ যদি কখনো খালি পেটে নিমপাতা খেতে চান তাহলে আপনার
অবশ্যই খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা অত্যন্ত
জরুরী। নিম পাতার রস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
আমি উপরোক্ত আলোচনায় নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে নিম
পাতার উপকারিতা গুলো যে আলোচনা করেছি সেই উপকারিতাগুলো যদি আপনি পেতে চান বা
স্বাস্থ্য বেনিফিটগুলো পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি সে উপকারিতা গুলো শুধুমাত্র
খালি পেটে নিমপাতা খেলেই পাবেন।
কারণ খালি পেটে নিম পাতা খেলে নিম পাতায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এন্ড
ইনফ্লামেটরি, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ফাঙ্গাস, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম,
আয়রন ইত্যাদি উপাদান গুলো শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগ বা বিভিন্ন ধরনের ব্যাধি
থেকে দূরে রেখে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
তবে বিশেষ সতর্ক হিসেবে কখনোই নিয়মিতভাবে সাত দিনের বেশি নিম পাতা কিংবা নিম
পাতার রস খাবেন না। এতে আপনার উপকারিতার পরিবর্তে অপকারিতায় বেশি হবে। এছাড়াও
নিম পাতার রস কিংবা নিমপাতা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ার
চেষ্টা করবেন।
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ইত্যাদি সম্পর্কে তো আমরা জানলাম তবে ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার বা সঠিক
নিয়ম কি আপনি জানেন চলুন জেনে নেই। ব্রণ দূর করতে কিংবা ব্রণের দাগ দূর করতে নিম
পাতা অত্যন্ত উপকারী। এটি আমাদের ব্রণের ব্যাকটেরিয়া চিরতরে ধ্বংস করতে সাহায্য
করে
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায়
নিম পাতায় উপস্থিত এন্টি ব্যাকটেরিয়ার, এন্টি ফাঙ্গাস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও
এন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি। এর জন্য আপনি শুধুমাত্র নিমপাতার পেস্ট তৈরি করে
ব্যবহার করতে পারেন অথবা নিমপাতা ভালো করে শুকিয়ে গুড়ো করে নিয়ে এর সঙ্গে
সামান্য এলোভেরা জেল ব্যবহার করে ব্রণ স্থানে ব্যবহার করুন দেখবেন কিছুদিনের
ভিতরে ম্যাজিক্যাল রেজাল্ট পাবেন।
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ইত্যাদি সম্পর্কে তো আমরা জানলাম চলুন এখন নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
সম্পর্কে জেনে নেই। নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় বিভিন্ন রয়েছে।
- প্রথম হলো নিমপাতা পেস্ট, হলুদ পেস্ট অ্যালোভেরা জেল ও সামান্য মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহারে অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।
- নিমপাতা পেস্ট, বেসন, এলোভেরা জেল ও গোলাপজল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। এই পেস্টটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহারে বেশ ভালো ফলাফল পাবেন।
- নিম পাতার পেস্ট, মুলতানি মাটি, গোলাপ জল ও সামান্য মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। পেস্ট সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন।
- নিম পাতার পেস্ট, চালের আটা, আলুর রস ও সামান্য মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন এটিও সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন ভালো ফলাফল পাবেন।
- সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী নিমপাতা দিয়ে ফর্সা করার উপায় হল সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন নিম পাতার রস কিংবা তিন থেকে চারটি নিমপাতা চিবিয়ে খাওয়া।
চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ইত্যাদি সম্পর্কে তো আমরা জানলাম চলুন এখন চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা গুলো
জেনে নিই। চুল শ্যাম্পু করার পরে নিমপাতা ফোটানোর পানি দিয়ে আপনি যদি চুল
পরিষ্কার করতে পারেন তাহলে এই পানি আপনার চুলের স্ক্যাল্পকে মশ্চারাইজার করে
রাখতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ অ্যালোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম
তার সাথে সাথে নিম পাতার মধ্যে যে পাওয়ারফুল এন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে সেগুলো চুল
ওঠা বন্ধ করে, চুলের গোড়া মজবুত করে, চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং চুল নতুন ভাবে
গজাতে সাহায্য করে। এছাড়াও নিম পাতায় যে অ্যান্টিফাঙ্গাস প্রপার্টি রয়েছে
সেগুলো আমাদের স্ক্যাল্পের মধ্যে খুশকি সমস্যা ও দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও
নিম পাতার মধ্যে রয়েছে মাইক্রো অর্গানিজিম কিলিং এফেক্ট যার কারণে আপনি যদি নিম
পাতা ফোটানো পানি গোসলের সময় ব্যবহার করতে পারেন এটি আপনার চুলে থাকা উকুন দূর
করতে সাহায্য করবে।
নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ইত্যাদি সম্পর্কে জানার পর কেউ যদি কখনো নিম পাতার রস খেতে চান তাহলে অবশ্যই নিম
পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। নিম পাতার রস
আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
আমি উপরোক্ত আলোচনায় নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে নিম
পাতার উপকারিতা গুলো যে আলোচনা করেছি সেই উপকারিতাগুলো যদি আপনি পেতে চান বা
স্বাস্থ্য বেনিফিটগুলো পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি সে উপকারিতা গুলো শুধুমাত্র
নিম পাতার রস খেলেই পাবেন।
কারণ নিম পাতার রস তৈরি করে খেলে নিম পাতায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এন্ড
ইনফ্লামেটরি, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ফাঙ্গাস, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম,
আয়রন ইত্যাদি উপাদান গুলো শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগ বা বিভিন্ন ধরনের ব্যাধি
থেকে দূরে রেখে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
তবে বিশেষ সতর্ক হিসেবে কখনোই নিয়মিতভাবে সাত দিনের বেশি নিম পাতার রস খাবেন না।
এতে আপনার উপকারিতার পরিবর্তে অপকারিতায় বেশি হবে। এছাড়াও নিম পাতার রস খাওয়ার
পূর্বে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
নিম পাতা কখন খাওয়া উচিত?
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ইত্যাদি সম্পর্কে তো আমরা জানলাম তবে নিম পাতা কখন খাওয়া উচিত? অর্থাৎ নিমপাতা
কখন খেলে আপনি সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবেন চলুন জানি। নিমপাতা খাওয়ার
সবচেয়ে সঠিক সময় হলো সকাল বেলা খালি পেটে।
আরো পড়ুনঃ অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
এ সময় নিম পাতা খেলে বা নিম পাতার রস খেলে স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকার বয়ে
নিয়ে আসে কারণ এর পুষ্টি উপাদান গুলো সম্পূর্ণভাবে শরীরের সঠিকভাবে কাজ করতে
সক্ষম। তবে অবশ্যই খালি পেটে সকাল বেলা নিমপাতা এক সপ্তাহের বেশি কখনোই খাবেন না
কিছুদিন গ্যাপ দিয়ে পুনরায় খেতে পারেন। এছাড়াও কোন রোগ বা স্বাস্থ্য বেনিফিট
পাওয়ার জন্য নিমপাতা খেতে চাইলে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে কখন কি পরিমানে
খাবেন জানার পরেই খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম
নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ইত্যাদি জরুরী তেমনি সঠিকভাবে নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম জানাও অত্যন্ত জরুরী। আপনি
যদি সঠিকভাবে নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম না জানেন তাহলে আপনি কখনো নিম পাতার আসল
উপকারিতা পাবেন না অন্যথায় উপকারিতা তুলনায় আপনার অপকারিতায় বেশি হতে পারে।
নিম পাতা খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম সহজ উপায় হলো নিমপাতা
সকালে খালি পেটে দুই থেকে তিনটি চিবিয়ে খেয়ে এক গ্লাস পানি খাওয়া অথবা সাত
থেকে পাঁচ থেকে ছয়টি নিমপাতা ভালো করে পেস্ট তৈরি জুস তৈরি করে খাওয়া।
এছাড়াও আপনি নিম পাতার রসের ভেতরে সামান্য লেবুর রস বা মধু ব্যবহার করেও খেতে
পারেন। তবে অবশ্যই ডায়াবেটিস রোগীরা মধু ব্যতীত খাওয়ার চেষ্টা করবে এবং এতে
গোলমরিচ ব্যবহার করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
আসবে।
লেখক এর মন্তব্য- নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের নিম পাতার কার্যকরী ৩৬টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার ইত্যাদি ছাড়াও নিম পাতা সম্পর্কে
জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের
আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের
জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url