গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি। এছাড়াও গ্রিন কি সম্পর্কে আরো
জানা-অজানা তথ্য জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইলো।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা,
আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ছাড়াও গ্রিন টি সম্পর্কে আপনার যত প্রশ্ন ও সমস্যা
রয়েছে তার অবশ্যই সঠিক সমাধান ও উত্তর পাবেন এবং খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ
জানতে পারবেন এছাড়াও গ্রিন টি এর সঠিক স্বাস্থ্য উপকারিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভূমিকা-গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনারা গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার
উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য রাইট বাটন ওয়েবসাইটে ক্লিক
করেছেন। আশা করি আপনি এখান থেকে গ্রিন টিসম্পর্কে জানা অজানা বিভিন্ন তথ্য
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ, আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র ও ডক্টরদের মত অনুসারে সঠিক তথ্য জানতে
পারবেন।
আরো পড়ুনঃ কফির কার্যকরী ৩৪টি উপকারিতা ও অপকারিতা
গ্রিন টি এতটাই ঔষধি ও ভেষজ গুণসম্পন্ন যে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ে এটি
ব্যবহার হয় যেমন ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ, ওজন নিয়ন্ত্রণ
ইত্যাদি। এ সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য আশা করি গ্রিন টি এর কার্যকারী
৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি ছাড়াও
গ্রিন টি নিয়ে লেখা সম্পর্কে সম্পন্ন পোস্টটি পড়বেন যেমন- আসল গ্রিন টি চেনার
উপায়, গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম, ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম, গ্রিন টি
খাওয়ার সময়, খালি পেটে গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা, গ্রিন টি বানানোর নিয়ম,
গ্রিন টি কখন খেলে ওজন কমে, দিনে কতবার গ্রিন টি খাওয়া উচিত? ইত্যাদি।
তাই আশা করব গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার
উপায় ছাড়াও গ্রিন টি দিয়ে লেখা সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়বেন কারণ আপনাদের মাঝে
প্রত্যেকটি বিষয় বিস্তারিত সহজ ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করব এবং সম্পূর্ণ পোস্টটি
আপনার জন্য অনেক বেশি বেনিফিট হবে।
গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব। এ পৃথিবীতে যত ধরনের পানীয়
রয়েছে যেমন চা, কফি ইত্যাদি গ্রিন টি তাদের মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্য উপকারী পানীয়। এটি স্বাদ তেমন
সুস্বাদু জনক না হলেও এর গুনাগুন অসীম। আর এই অসীম গুনাগুনের জন্যই গ্রিন টিকে
পাকাপোক্তভাবে আপনার ডেইলি লাইফে স্থান করা উচিত।
কিন্তু এই কষা ও তেতো পানীয়টিকে পাকাপোক্তভাবে আপনার ডেইলি লাইফে স্থান দেবেন
কেন বা নিয়মিতভাবে আপনারা এই ড্রিংকটি পান করবেন কেন। এই নিয়ে আজ আমি আপনাদের
মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্য দিয়ে গ্রিন টি
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব।
গ্রিন টি এর উপকারিতা
গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে প্রথমে আমরা গ্রিন টি
এর উপকারিতা সম্পর্কে জানব। গ্রিন টি ভেষজ ও ঔষধি গুণসম্পন্ন অত্যন্ত স্বাস্থ্য
উপকারী ও পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি পানীয় যা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক দ্বারা
প্রমাণিত হয়েছে। তাই চলুন গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর
মধ্যে গ্রিন টি এর উপকারিতা গুলো জেনে নেই-
ফ্রি রেডিক্যাল: আমরা মোটামুটি ভাবে যে সমস্ত পানিও খেয়ে থাকি প্রত্যেকটি
পানীয় আমাদের শরীরকে হাইড্রেট করে রাখে কিন্তু গ্রিন টি আপনার শরীরকে হাইড্রেট
করে রাখার সাথে সাথে আপনার শরীরে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যগুণ দিতে সক্ষম। গ্রিন
টির মধ্যে পলিফেনল(Polypher) নামক এক ধরনের অর্গানিক কম্পাউন্ড থাকে যা আপনার
শরীরকে বিভিন্ন ধরনের ইনফ্লামেশন এর হাত থেকে দূরে রাখে।
এছাড়াও ক্যান্সার সেলের সাথে লড়াই করতে সক্ষম এই পলিফেনাল। গ্রিন টির মধ্যে
ইপিগেলনকেটেচেন ৩ গ্যালেট (EpiGallocatechin 3 Gallate) নামক এক ধরনের গ্যাটাচেন
যা আপনার শরীরের ফ্রি রেডিকেল ফর্মেশনে বাধা সৃষ্টি করে এছাড়াও আপনার শরীরে যে
সমস্ত ফ্রি রেডিকেলগুলি থাকে সেগুলোকে নিউট্রালাইস করতে সক্ষম।
আর আপনার শরীরের যখন ফ্রি রেডিক্যালস ফরমেশন কম হবে তখন দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার
এজিং প্রসেসও স্লো ডাউন হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রকারের ক্রনিক ডিজিজের থেকেও আপনি
অনেকখানি দূরে থাকতে পারছেন।
শরীর সতেজ: এ উপস্থিত রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্লেভোনয়েড যা
শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে এবং দ্রুত মেজাজ খিটখিটে ভাব দূর করে দেয়।
শরীর সুস্থ: গ্রিন টি এর মধ্যে খুব কম পরিমাণের হলেও বিভিন্ন প্রকারের
মিনারেলস রয়েছে। মোটামুটি ধরুন আপনার ৫% থেকে ৭% মিনারেল থাকে। মিনারেল বলতে
আপনার পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ইত্যাদি বিভিন্ন
ধরনের মিনারেল রয়েছে। সবকিছু মিলেমিশে আপনার শরীরকে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য
গুণ দিতে সক্ষম গ্রিন টি।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এরমধ্যে
আমরা মূলত ওজন নিয়ন্ত্রণ করার উপকারিতার জন্য গ্রিন টি চিনে থাকি। আপনি যদি
আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য খুব ভালো একটি ফুট সাপ্লিমেন্ট এর সন্ধানে
রয়েছেন তাহলে কিন্তু গ্রিন টি খুব ভালো একটি অপশন হতে পারে।
কারণ নিয়মিত ভাবে আপনি যদি গ্রিন টি খেতে পারেন তাহলে গ্রিন টি আপনার ফ্যাট
বার্ন করার প্রসেসকে ফাস্ট করে দিতে সাহায্য করবে এছাড়াও আপনার শরীরের মেটাবলিজম
পাওয়ারকে বাড়িয়ে দেয়। আর আপনার শরীরে যখন মেটাবলিজম পাওয়ার বুস্টআপ হবে তখন
দেখবেন আপনার শরীরের ওজন করতে অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।
এছাড়াও গ্রিনটের মধ্যে যে ক্যাফিন রয়েছে সেটি আপনার শরীরের এনার্জি বাড়িয়ে
দেয় ফলে আপনার শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন প্রকারের ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ
খুব সহজেই করতে পারবেন। তাই নিয়মিতভাবে গ্রিন টি খেতে পারেন আপনার শরীরের ওজন কম
করে নেয়ার জন্য। ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: গ্রিন টি এ রয়েছে ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি
ছাড়াও কেটেচিন নামক উপাদান যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে।
ব্রেনের ফাংশন উন্নত: গ্রিন টি আপনার ব্রেনের ফাংশানিংকে উন্নত করতে
সাহায্য করে। আমরা চা খায় বা কফি খায় তার মধ্যে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন
থাকে এই ক্যাফিন এর বেশ কিছু ভালো দিক রয়েছে তার সাথে সাথে ক্যাফিনের প্রচুর
পরিমাণে সাইড ইফেক্ট ও রয়েছে। তবে গ্রিন টির মধ্যে যে ক্যাফিন রয়েছে তার মাত্রা
খুবই কম এছাড়া
আরো পড়ুনঃ দারচিনির কার্যকারী ৩০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
যে ক্যাফিন রয়েছে তা হাই কোয়ালিটির ক্যাফিন তার ফলে গ্রিন টি যে ক্যাফিন সেটি
আপনার শরীরে তেমন কোনো সাইড ইফেক্ট সৃষ্টি করতে পারেনা। এই ক্যাফিন আমাদের
নিউরোনজিন এ যে ফায়ারিং হয় এ ফায়ারিং এর মাত্রা ইনক্রিজ করে এছাড়াও টোপামিন
গ্রিন এবং ননইপাআফরিনের(Dopamine and Norepinephrine) মত নিউরো ট্রান্সমিটারের
মাত্রা বৃদ্ধি করে। তার ফলে আমাদের ব্রেনের ফাংশানিংও অনেক ইমপ্রুভ হয়ে যায়।
ডিপ্রেশন: গ্রিন টি এর মধ্যে যে এলথানিন(L-Theanine) গাবা এর মত নিউরো
ট্রান্সমিটারের অ্যাক্টিভিটিও বৃদ্ধি করে তার ফলে আপনি বিভিন্ন প্রকারের এনজাইটি
বা ডিপ্রেশন এর থেকেও কি কিন্তু আপনি অনেক পরিমানে দূরে থাকতে পারেন। তাই
গবেষণায় দেখা গিয়েছে আপনি যদি নিয়মিত ভাবে গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে
আপনার ব্রেন ফাংশন নিয়ে প্রচুর পরিমাণে ইমপ্রুভমেন্ট দেখতে পাওয়া যায়।
এলার্জি দূর: গ্রিন টি নিয়মিত খেলে অনেকাংশে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি থেকে
উপকার পাওয়া যায় এছাড়াও নিয়মিত গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের স্মৃতিশক্তি
বৃদ্ধি ক্যান্সার থেকে প্রতিরোধ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ আনতে ও সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ: গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর
মধ্যে গ্রিন টির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা হল ক্যান্সার প্রতিরোধ
করা। ক্যান্সার হল আপনার শরীরের যেকোনো একটি স্থানের সেলের আনকন্ট্রোল গ্রোথ।
এছাড়াও সেলের অক্সিডেটিভ ড্যামেজ ক্রনিক ইনফ্লামেশন এর সৃষ্টি করে আর এই
ইনফ্লামেশন এর ফলে পরবর্তী ক্ষেত্রে ক্যান্সারের এর মত দুরারোগ্য রোগের সম্মুখীন
হতে হয়।
এজন্য আমরা আগেই বলেছি গ্রিন্টের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং
আন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি রয়েছে যা যদি আপনার নিয়মিত ভাবে সেবন করতে পারেন
তাহলে ২০% থেকে 30% পর্যন্ত আপনারা বেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায় , ৪০%
কোলোরাটাল ক্যান্সার থেকে দূরে থাকা সম্ভব এবং পুরুষদের খুব একটি কমন ক্যান্সার
হলো পোস্টেড ক্যান্সার। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে গ্রিন টি পান করেন তাহলে পোস্টেড
ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেকটা কমে যায়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: গ্রিন টির মধ্যে যে পলিফেনাল রয়েছে সেটি আমাদের
ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে ইমপ্রুভ করতে সক্ষম এছাড়া আমরা যে খাবার খায় খাদ্য
কণাগুলোকে সহজে ব্রেক ডাউন করতে ও সক্ষম। গ্রিন টির মধ্যে ইপিগেলনকেটেচেন ৩
গ্যালেট (EpiGallocatechin 3 Gallate) নামক এক ধরনের গ্যাটাচেন রয়েছে সেটি
আমাদের গ্যাস্ট্রো ইন্ডাস্ট্রিনাল ট্রাককে বিভিন্ন প্রকারের ইনফ্লামেশন থেকে দূরে
রাখে। তাই আপনি নিয়মিতভাবে গ্রিন টি পান করতে পারেন আপনার হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি
করার জন্য।
দাঁত সুস্থ:
গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে গ্রীন টির আরেকটি
স্বাস্থ্য উপকারিতা হলো দাঁত সুস্থ রাখার। আমাদের মুখের মধ্যে প্রতিনিয়ত প্রচুর
পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া তাদের বংশবিস্তার করে চলেছে আর এ সমস্ত ব্যাকটেরিয়ার কারণে
আমাদের মুখে বিভিন্ন প্রকারের ইনফেকশনের সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুনঃ পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর ১২ টি ঘরোয়া উপায়
গ্রিন টির মধ্যে যে ক্যাটেচিন থাকে সেটি এ সমস্ত ব্যাকটেরিয়াকে দমন করতে সক্ষম।
এছাড়া টেপ স্টেপ কিভাবে লিখবোটোকক্কাসমিউটেন(Streptococus Mutan) নামে এক ধরনের
ব্যাকটেরিয়া থাকে যেটি আমাদের মুখের ভেতরে বিভিন্ন প্রকারের ইনফেকশনের সাথে সাথে
দাঁতের মধ্যে প্লাগ এছাড়াও দাঁতের মধ্যে ক্যাভিটি সৃষ্টি করে। তাই আপনি যদি
নিয়মিতভাবে গ্রিন টি পান করেন তাহলে দাঁতের প্লাগ সহ বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন এবং
ক্যাভিটি থেকে আপনি অনেকখানি দূরে থাকতে পারবেন।
টাইপ টু
ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণ:
টাইপ টু ডায়াবেটিস এর প্রধান কারণ হলো ইনসুলিন রেজিনস্টেন। আপনি যদি নিয়মিত
ভাবে গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বেড়ে যায়
আর আপনার শরীরে যখন এটি বেড়ে যায় তখন আপনি টাইপ টু ডায়াবেটিস থেকে অনেকখানি
দূরে থাকতে পারবেন।
জাপানে এ নিয়ে একটি স্টাডি করা হয় যেখানে দেখা গিয়েছে আপনি যদি নিয়মিতভাবে
গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে আপনার টাইপ টু ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা ৪০% পর্যন্ত
কমে আসে। এছাড়াও আরও সাতটি তারিখ আয়োজন করা হয় যেখান গ্রিন টি এর উপকারিতা
নিয়ে সেই সমস্ত স্টাডিতে মোট ২ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭০১ জন মানুষকে নিয়মিতভাবে গ্রিন
টি পান করানো হয় এবং
সেখান থেকে জানা যায় ৮০% পর্যন্ত গড়ে টাইপ টু ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
তাই আপনি যদি নিয়মিতভাবে গ্রিন টি পান করেন তাহলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের হাত
থেকে আপনি অনেকটা দূরে থাকতে পারবেন আর ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এর মত আপনার যদি
সমস্যা না থাকে তাহলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের প্রকোপেও আপনাকে পড়তে হবে না।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গ্রিন টি অত্যন্ত উপকারী। গ্রিন টি সেবন করলে ডায়াবেটিস
পেশেন্টের ফাস্টিং গ্লুকোজ, এ আইসি, ফাস্টিং ইন্সুলিন কমতে দেখতে পাওয়া যায়।
ফলে নিয়মিত খাদ্য তালিকা গ্রিন টিযুক্ত করে ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণ আনা
সম্ভব।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি: রক্ত চলাচল স্বাভাবিক বা রক্ত সঞ্চালন
স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে ফলে নিয়মিত গ্রিন টি খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা
বা স্মৃতিশক্তি ও বৃদ্ধি পায়।
হার্ট সুস্থ: নিয়মিতভাবে গ্রিন টি পান আপনার হার্ট হেলথ এর জন্য যথেষ্ট
উপকারী প্রমাণিত হতে পারে। আপনি যদি নিয়মিতভাবে গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে
আপনার শরীরে এলডিএল এর মাত্রা বাড়েনা এলডিএল অর্থাৎ খারাপ কোলেস্ট্রল মাত্রা
আপনার শরীরে যখন বাড়ে না তখন আপনার হার্টের বিভিন্ন প্রকারের সমস্যা থেকে আপনি
অনেকখানি দূরে থাকতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
এছাড়াও আপনি যদি নতুন করে গ্রিন টি পান করতে শুরু করেন আপনার শরীরে যে সমস্ত
এলএলএল রয়েছে সে সকল এলইডিএলগুলোকে অক্সিডেশন থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। আর
আপনার শরীরের এলডিএল গুলো যখন অক্সিডাইজড হয় না তখন আপনার আটারির মধ্যে গিয়ে
জমাট বাঁধতেও কিন্তু সহজে সক্ষম হয় না। তাই আপনি নিয়মিত ভাবে যদি গ্রিন টি পান
করেন তাহলে হার্টের সমস্যা থেকে মৃত্যুর চান্স ৩১% পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
ত্বকের সমস্যা দূর: গ্রিন টির মধ্যে যে আন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি
রয়েছে এর জন্য আপনার বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা থেকেও অনেকটা দূরে থাকতে সক্ষম
হবেন। ত্বকের সমস্যা বলতে স্কিনে ইরিটেশন, স্কিন রেটনেস বিভিন্ন প্রকারের রেশ,
বিভিন্ন ধরনের ফাংগাল ইনফেকশন আপনার শরীরে যদি কোন সানবার্ন হয়ে থাকে বা ছোটখাটো
ক্ষত থাকে সে সমস্ত স্থানে আপনি গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে সে সমস্ত
সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে কমে আসে।
ডার্ক সার্কেল: চোখের নিচের কালচে ভাব বা ডার্ক সার্কেল এবং ঘুম থেকে উঠে
চোখের নিচের ফোলা ভাব দূর করার জন্য গ্রিন টি দীর্ঘ সময় ধরে অত্যন্ত উপকারী
ভূমিকা রাখছে। এজন্য গ্রিন টি এর ব্যাগ ফ্রিজে রেখে দিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট চোখে
নিচে চোখ বন্ধ করে রেখে দিন এতে আপনি লোকের নিচের ডার্ক সার্কেল বা ফোলা ভাব থেকে
থেকে মুক্তি পাবেন।
বার্ধক্য দূর: গ্রিন টি উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে বয়সের চাপ বা
বার্ধক্য দূর করতে সাহায্য করে। এর জন্য গ্রীন দিয়ে পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা
করে সংরক্ষণ করে স্প্রে বোতলে রেখে নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের স্বাস্থ্য উন্নত: বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, গ্রিন
টি এর মধ্যে যে হাই কোয়ালিটির ক্যাফিন রয়েছে সেটি চুলের জন্য যথেষ্ট লাভ দায়ক
হতে পারে। যদি আপনি সপ্তাহে সামান্য তুলা নিয়ে সমস্ত ক্যাল্পের মধ্যে গ্রিন টি
ব্যবহার করেন এবং ৪৫ মিনিট রাখার পর সিটি ধুয়ে ফেলুন।
কিছুদিন পরে আপনি বুঝতে পারবেন গ্রিন টি আপনার চুলকে ঘন করতে এবং চুলের দ্রুত
বৃদ্ধি হচ্ছে। এছাড়া সপ্তাহে একদিন যদি গ্রিন টি আপনার চুলের ক্যাল্পের মধ্যে
ম্যাসাজ করতে পারেন তাহলে আপনার ড্যানড্রাফ বা খুশির, সানবার্ন, ব্যাকটেরিয়াল
ইনফেকশ, ফাঙ্গাল ইনফেকশন ইত্যাদি ইনফেকশন থেকে ও অনেকখানি দূরে থাকতে পারবেন।
ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর: ফ্রিতে দুর্গন্ধ দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে গ্রিন
টি এর জন্য গ্রিন টি আর ব্যাগ একটি পাতলা নরম কাপড়ে বেঁধে ফ্রিজের এক কোনায়
রেখে দেবেন দেখবেন ফ্রিজের গন্ধ কিছুক্ষনের মধ্যে দূর হয়ে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত গ্রিন টি সঠিক পরিমাণে খেলে এটি আমাদের
শরীরে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে সেই সাথে সাথে এইচডিএল
কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে ধমনীর কার্যকারিতা বাড়ায় ফলে এটি আমাদের উচ্চ
রক্তচাপ এর ঝুঁকি প্রায় ৪০% থেকে ৭০% পর্যন্ত কমিয়ে আনে।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর
মধ্যে গ্রিন টি এর উপকারিতা গুলো জেনে অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন।
গ্রিন টি খাওয়ার অপকারিতা /গ্রিন টি খেলে কি ক্ষতি হয়
কাঁচা রসুন খাওয়ার কার্যকরী ৪০টি উপকারিতা, অপকারিতা ও নিয়ম এর মধ্যে এতক্ষণ
আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি এখন গ্রিন টি
খাওয়ার অপকারিতা /গ্রিন টি খেলে কি ক্ষতি হয় সম্পর্কে আলোচনা করব। গ্রিন টি
সম্পূর্ণরূপে একটি ভেষজ উপাদান যার কারনে এতে তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিকরা নেই তবে,
নির্দিষ্ট মাত্রা বা অতিরিক্ত এবং সঠিক নিয়মে না খেলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
না হয়ে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে তাই চলুন গ্রিন টি এর কার্যকারী
৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে গ্রিন টি খাওয়ার অপকারিতা /গ্রিন টি খেলে কি
ক্ষতি হয় সম্পর্কে জেনে নেই-
- গ্রিন টি এ উপস্থিত রয়েছে ক্যাফেইনে ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রিন টি খেলে অনিদ্রা এর মতো সমস্যা হতে পারে।
- অতিরিক্ত মাত্রা অতিরিক্ত গ্রিন টি খেলে মাথার ব্যথা শুরু হতে পারে এছাড়াও যারা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন তারা দিনে একবারের বেশি গ্রিন টি পান করা উচিত নয়।
- গর্ভবতী মহিলারা কোন সময় গ্রিন টি খেতে ইচ্ছুক হলে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- যে সকল ব্যক্তির কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা রয়েছে তারা গ্রিন টি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- গ্রিন টি এ উপস্থিত ট্যানিন ক্যানিক এসিড এর কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি, পেটে ব্যথা,বমি ভাব ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
- খালি পেটে গ্রিন টি খেলে এটি রক্তকে প্রবাহিত করে ফলে রক্ত জমাট বাধার কাজ যে সমস্ত প্রোটিন করে থাকে সেগুলোর পরিমাণ কমে যায় ফলে রক্ত পাতলা হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা বেড়ে যায়।
- যাদের রক্তস্বল্পতা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা কখনোই গ্রিন টি খাবেন না কারণ গ্রিন টির শরীরে আয়রনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
- অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রিন টি খেলে ডায়রিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- পাকস্থলীতে এসিডিটি তৈরি হতে শুরু করে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রিন টি খেলে এছাড়াও যাদের বাওয়েল সিনড্রোম রয়েছে তাঁদের একেবারেই গ্রিন টি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত
- যে সকল ব্যক্তিদের আয়রনের ঘাটতি রয়েছে শরীরে তারা কখনোই গ্রিন টি খাবেন না।
- মাত্র অতিরিক্ত গ্রিন টি খেলে আলসারের মতো সমস্যা হতে পারে ফলে যাদের পূর্ব থেকে পেপটিক আলসারের সমস্যা রয়েছে তারা একেবারে গ্রিন টি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- গ্রিন টি আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখে তবে যাদের পূর্ব থেকে হার্টের কোন প্রকার সমস্যা রয়েছে তারা গ্রিন টি খাবেন না।
- মাত্রা অতিরিক্ত গ্রিন টি খেলে মাথার ব্যথা।
- গ্রিন টি কখনো অতিরিক্ত গরম খাওয়া উচিত নয় এতে জিহ্বা, ঠোঁট কিংবা পাকস্থলীর ক্ষতি হয়।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে হাজারো গুণ সম্পন্ন গ্রিন টি সম্পর্কে
শুধুমাত্র গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আমি আলোচনা করছি
না নিম্নে গ্রিন টি সম্পর্কে আরো বিভিন্ন প্রশ্নের জানা অজানা উত্তর নিয়ে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে ছাড়াও নিম্নত্ব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বেন যেমন-
- আসল গ্রিন টি চেনার উপায়
- গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম
- ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম
- গ্রিন টি খাওয়ার সময়
- খালি পেটে গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা
- গ্রিন টি বানানোর নিয়ম
- গ্রিন টি কখন খেলে ওজন কমে
- দিনে কতবার গ্রিন টি খাওয়া উচিত?
আসল গ্রিন টি চেনার উপায়
উপরোক্ত আলোচনাতে আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করেছি এবং এ সকল উপকারিতা আপনি পাওয়ার জন্য
যদি গ্রিন টি খেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আসল গ্রিন টি চেনার উপায় টি জানতে
হবে তা না হলে আপনি কখনোই উপরোক্ত উপকারিতা গুলো পাবেন না।
আরো পড়ুনঃ আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়
মূলত আসল গ্রিন টি যখন আপনি পানিতে যুক্ত করবেন তখন এর রং জলপাই সবুজ বর্ণের হবে
এবং কিছুক্ষণের মধ্যে পরিবর্তন হয়ে হালকা সবুজ রঙের হয়ে যাবে তবে নকল গ্রিন টি
যখন আপনি পানিতে মিশ্রিত করবেন তখন এটি বাদামী বা কালচে রং হবে এবং কখনো এর রং
পরিবর্তন হবে না। তাই আশা করব সঠিক গ্রিন টি চিনে গ্রিন টি এর আসল স্বাস্থ্য
উপকারিতা উপভোগ করবেন।
গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম
উপরোক্ত আলোচনাতে আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি এখন
আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম অর্থাৎ সঠিকভাবে বাকি নিয়মে খেলে আপনি
গ্রিন টির সঠিক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবেন তা নিয়ে আলোচনা করব।
সারা দিনে আপনি দুই কাপ গ্রিন টি নিশ্চিন্তায়, নিঃসংকোচে, নির্দ্বিধায় খেতে
পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন গ্রিন টি কখনোই খালি পেটে খাবেন না। গ্রিন টি আপনি
কোন খাবার খাওয়ার দু'ঘণ্টা আগে কিংবা কোন খাওয়ার পর দু'ঘণ্টা পরে খাবেন। তাহলে
আপনার স্টমাক ইরিটেশনের মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন গ্রিন টি তৈরীর সময় কখনোই দুধ ব্যবহার করবেন না বা কোন
প্রকার মিষ্টি জাতীয় জিনিস ব্যবহার করবেন না। মিষ্টি জাতীয় খাবার বলতে গুড়,
বাতাসা, চিনি, মধু ইত্যাদি কোন প্রকার মিষ্টি জাতীয় জিনিস আপনি গ্রিন টি এ
ব্যবহার করবেন না। যদি কোন প্রকার মিষ্টি জাতীয় জিনিস বা দুধ গ্রিন টি এ ব্যবহার
করেন তাহলে গ্রিন টি এর গুণগত মান অনেকটা কমে যায়।
আপনি গ্রিন টি এর সঙ্গে আদা ব্যবহার করে খেতে পারেন, গ্রিন টি এর সঙ্গে গোল
মরিচের গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন, গ্রিন টি এর সাথে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে
পারেন এছাড়াও দারচিনি ব্যবহার করেও গ্রিন টি খেতে পারেন এবং আদা, তুলসী, লেবু
একসঙ্গে গ্রিন টির সঙ্গে মিশে ও খেতে পারেন এতে গ্রিন টি এর ভেষজ ঔষধি গুন এবং ও
এ সকল উপাদান গুলোর ঔষধি ভেষজ গুণগুলো একত্রে মিলে অনেক ভালো একটি পজিটিভ
উপকারিতা দিতে পারে আপনার শরীরে তাই নিয়মিতভাবে গ্রিন টি পান করুন এবং সুস্থ
থাকুন।
ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম
উপরোক্ত আলোচনাতে আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করেছি এখন
আমি আপনাদের মাঝে ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। মূলত
আমরা অনেকেই গ্রিন টি ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই চিনে থাকি তবে সঠিকভাবে ওজন
কমাতে গ্রিন টি খাবার নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা।
গ্রিন টি এ উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট,
ভিটামিন এ, বি, বি৫, ডি, ই, সি, ই, এইচ সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, জিংক, ক্যাফেইন ও
মেঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি
উপাদান৷ যা শরীরের ওজন ঝরাতে বেশ কার্যকর ছাড়াও শরীরকে সতেজ, রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্যান্সার প্রতিরোধ, ডায়াবেটিকস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও
হাজারো উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে।
আরো পড়ুনঃ ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার কার্যকরী
তবে এর সর্বোত্তম কাজ হল ফ্যাট বার্ন করা। কারণ এতে উপস্থিত রয়েছে পলিফেনাল নামক
উপাদান যা আমাদের ফ্যাট অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে আরো কার্যকর করে তোলে খাবার থেকে
ক্যালরি তৈরি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে ফলে এটি আমাদের শরীরে উপস্থিত অতিরিক্ত
ফ্যাট বার্ন হয়। একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে প্রতিদিন নিয়মিত নির্দিষ্ট
মাত্রায় বিএনপি খেলে শরীরে শহর ক্যালরি পর্যন্ত ফ্যাট ঝরে যায় অর্থাৎ বছরে সাত
পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব শুধুমাত্র গ্রিন টি খেয়ে।
তবে যেহেতু মানুষের ওজন বৃদ্ধি পায় অনিয়ন্ত্রিতভাবে খাবার খাওয়া এবং
পরিশ্রমহীন জীবন যাপন করা এর জন্য আপনি যদি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য খুব
ভালো একটি ফুট সাপ্লিমেন্ট এর সন্ধানে রয়েছেন তাহলে কিন্তু গ্রিন টি খুব ভালো
একটি অপশন হতে পারে। কারণ নিয়মিত ভাবে আপনি যদি গ্রিন টি খেতে পারেন তাহলে গ্রিন
টি আপনার ফ্যাট বার্ন করার প্রসেসকে ফাস্ট করে দিতে সাহায্য করবে এছাড়াও আপনার
শরীরের মেটাবলিজম পাওয়ারকে বাড়িয়ে দেয়।
আর আপনার শরীরে যখন মেটাবলিজম পাওয়ার বুস্টআপ হবে তখন দেখবেন আপনার শরীরের ওজন
করতে অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও গ্রিনটের মধ্যে যে ক্যাফিন রয়েছে সেটি
আপনার শরীরের এনার্জি বাড়িয়ে দেয় ফলে আপনার শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন
প্রকারের ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ খুব সহজেই করতে পারবেন।
তাই নিয়মিতভাবে গ্রিন টি খেতে পারেন আপনার শরীরের ওজন কম করে নেয়ার জন্য। ওজন
কমানোর জন্য এই গ্রিনটি তৈরীর সময় কখনোই দুধ ব্যবহার করবেন না বা কোন প্রকার
মিষ্টি জাতীয় জিনিস ব্যবহার করবেন না। মিষ্টি জাতীয় খাবার বলতে গুড়, বাতাসা,
চিনি, মধু ইত্যাদি কোন প্রকার মিষ্টি জাতীয় জিনিস আপনি গ্রিন টি এ ব্যবহার করবেন
না।
যদি কোন প্রকার মিষ্টি জাতীয় জিনিস বা দুধ গ্রিন টি এ ব্যবহার করেন তাহলে গ্রিন
টি এর গুণগত মান অনেকটা কমে যায়। আপনি গ্রিন টি এর সঙ্গে আদা ব্যবহার করে খেতে
পারেন, গ্রিন টি এর সঙ্গে গোল মরিচের গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন, গ্রিন টি এর
সাথে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন এছাড়াও দারচিনি ব্যবহার করেও গ্রিন টি খেতে
পারেন এবং
আদা, তুলসী, লেবু একসঙ্গে গ্রিন টির সঙ্গে মিশে ও খেতে পারেন এতে গ্রিন টি এর
ভেষজ ঔষধি গুন এবং ও এ সকল উপাদান গুলোর ঔষধি ভেষজ গুণগুলো একত্রে মিলে অনেক ভালো
একটি পজিটিভ উপকারিতা দিতে পারে আপনার শরীরে তাই নিয়মিতভাবে গ্রিন টি পান করুন
এবং সুস্থ থাকুন ও ওজন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হন।
গ্রিন টি খাওয়ার সময়
উপরোক্ত আলোচনাতে আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করেছি এখন আমি গ্রিন
টি খাওয়ার সময় বা গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক সময় টি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব।
গ্রিন টি তে প্রচুর পরিমাণে ক্যাটচিন এবং ক্যাফিন রয়েছে যার কারনে
আপনি যদি খালি পেটে সকালে গ্রিন টি খান তাহলে আপনার গ্যাস্ট্রিক বাস্টিটিউট
উৎপন্ন হতে পারে অপরদিকে রাতের বেলা খেলে এটি ঘুমের ব্যাঘাত এবং শরীরে পুষ্টি
শোষণে বাধা প্রদান করবে যার কারণে রাতে গ্রিন টি খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। এর
জন্য গ্রিন টি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো এবং সঠিক সময় হল কোন খাবার খাওয়ার দু'ঘণ্টা
আগে কিংবা কোন খাওয়ার পর দু'ঘণ্টা পরে খাওয়া।
খালি পেটে গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা
উপরোক্ত আলোচনাতে আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করেছি এখন
আমি আপনাদের মাঝে খালি পেটে গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার
চেষ্টা করব আপনারা যদি উপরোক্ত আলোচনার গ্রিনটি এতগুলো উপকারিতা জেনে কিংবা ওজন
দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার জন্য
খালি পেটে গ্রিন টি খেতে চান এবং মনে করেন যে এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য
উপকারিতা হবে তাহলে এ ধারণাটি আপনার সম্পূর্ণ ভুল। জি হ্যাঁ খালি পেটে গ্রিন টি
খাওয়ার কোন প্রকার স্বাস্থ্য উপকারিতা নেই বরং হাজারো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
রয়েছে বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি রয়েছে। মূলত গ্রিন টিয়ে রয়েছে পলিফেনল নামে
পরিচিত ট্যানিন ও ক্যাফেইন যা আমাদের
পাকস্থলীতে গ্যাসট্রিক বা এসিডিটির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় অনেক সময় আলসারের
ঝুঁকিও অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয় এছাড়াও খালি পেটে গ্রিন টি খেলে পেটে ব্যথা,
ডায়রিয়া, বুক জ্বালাপোড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি। অতএব আশাকরি আপনার বুঝতে
পেরেছেন খালি পেটে গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা যে রয়েছে এ কথাটি মোটেও সত্য নয়।
গ্রিন টি বানানোর নিয়ম
উপরোক্ত আলোচনাতে আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করেছি এবং এ
সকল উপকারিতা আপনি পাওয়ার জন্য যদি গ্রিন টি খেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে গ্রিন
টি বানানোর নিয়মটি জানতে হবে। চলুন গ্রিন টি বানানোর নিয়মটি জেনে নেই।
প্রথমে একটি সসপ্যানে নির্দিষ্ট পরিমাণে পানি নিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নেব এবার
পাত্রটি নামিয়ে গ্রিন টি এর সম্পূর্ণ প্যাকেটটি সে পানিতে যুক্ত করে পাঁচ থেকে
দশ মিনিট পর্যন্ত নাড়া দিতে থাকবো এবং আপনার ইচ্ছা অনুসারে বা স্বাদ অনুসারে
লেবুর রস, তুলসির পাতা, আদা ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন।
গ্রিন টি কখন খেলে ওজন কমে
উপরোক্ত আলোচনাতে আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করেছি এখন
আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি কখন খেলে ওজন কমে দ্রুত সময়ের ভেতরে এ সম্পর্কে জানব।
গ্রিন টি তে প্রচুর পরিমাণে ক্যাটচিন এবং ক্যাফিন রয়েছে যার কারনে আপনি যদি
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার ১৭ টি নিয়ম
খালি পেটে সকালে গ্রিন টি খান তাহলে আপনার গ্যাস্ট্রিক বাস্টিটিউট উৎপন্ন হতে
পারে অপরদিকে রাতের বেলা খেলে এটি ঘুমের ব্যাঘাত এবং শরীরে পুষ্টি শোষণে বাধা
প্রদান করবে যার কারণে রাতে গ্রিন টি খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। এর জন্য গ্রিন
টি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো এবং সঠিক সময় ওজন কমানোর জন্য হল কোন খাবার খাওয়ার
দু'ঘণ্টা আগে কিংবা কোন খাওয়ার খাওয়ার পর দু'ঘণ্টা পরে এছাড়া আপনি খাবার
আধাঘন্টা আগে বা পরে ও খেতে পারেন।
দিনে কতবার গ্রিন টি খাওয়া উচিত?
উপরোক্ত আলোচনাতে আমি আপনাদের মাঝে গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও
অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করেছি এখন
আমি আপনাদের মাঝে দিনে কতবার দিনে কতবার গ্রিন টি খাওয়া উচিত? এ সম্পর্কে জানার
চেষ্টা করব। মূলত গ্রিন টি আপনি সারা দিনে তিন থেকে পাঁচ কাপ পর্যন্ত খেতে পারি
তবে
এর সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এতে আপনার কোন প্রকার
স্বাস্থ্যঝুঁকি কিংবা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে না। তবে কোন প্রকার শারীরিক
জটিলতা বা কোন প্রকার ওষুধ গ্রহণ করলে এমন অবস্থায় অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে
কি পরিমানে এবং কি নিয়মে গ্রিন টি খাবেন তার সম্পর্কে অবগত হয়ে নেবেন।
লেখকের মন্তব্য-গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের গ্রিন টি এর কার্যকারী ৩৫টি উপকারিতা
ও অপকারিতা, আসল গ্রিন টি চেনার উপায় ইত্যাদি ছাড়াও গ্রিন টি সম্পর্কে
জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের
আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের
জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url