কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ
আসসালামু আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় হলো কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি -
কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ এবং কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি ইত্যাদি ছাড়াও
কম্পিউটার সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য। এই পোস্টে থাকছে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এর কয়টি অংশ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক।
পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো, যাতে আপনি কম্পিউটারের কয়টি
অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ এবং কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। আশা করছি, এতে আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর এবং
সঠিক নির্দেশনা পাবেন।
কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ
এখন আমি আপনাদের সাথে কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের
কাজ সম্পর্কে শেয়ার করতে যাচ্ছি। কম্পিউটার একটি অত্যন্ত জটিল মেশিন, যা বিভিন্ন
হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার উপাদানের সমন্বয়ে কাজ করে। কম্পিউটারের মূল অংশগুলো
সাধারণত দুইটি বড় বিভাগে ভাগ করা যায়ঃ হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার।
আরো পড়ুনঃ দিনে ৫০০ টাকা ইনকাম apps গুলোর নাম জেনে নিন
এর মধ্যে হার্ডওয়্যার অংশগুলি কম্পিউটারের শারীরিক উপাদান এবং সফটওয়্যার হল সেই
প্রোগ্রাম এবং অপারেটিং সিস্টেম যা হার্ডওয়্যারকে পরিচালনা করে। এখানে
কম্পিউটারের প্রধান প্রধান অংশের বর্ণনা দেওয়া হলোঃ
কম্পিউটারের প্রধান হার্ডওয়্যার অংশসমূহঃ
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU)ঃ CPU হল কম্পিউটারের "মস্তিষ্ক"। এটি
সমস্ত গণনা এবং নির্দেশনা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এতে তিনটি মূল অংশ থাকে:
- অ্যালু (ALU)ঃ এটি গণনা এবং লজিক্যাল কাজ সম্পন্ন করে।
- কন্ট্রোল ইউনিট (CU)ঃ এটি সমস্ত অপারেশনের নির্দেশনা দেয় এবং ডেটার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
- রেজিস্টারঃ অস্থায়ীভাবে ডেটা সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
মেমরিঃ মেমরি কম্পিউটারের তথ্য সংরক্ষণ করে। এটি প্রধানত দুই ধরনেরঃ
- র্যাম (RAM): র্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমরি, যা কম্পিউটার চালু থাকা অবস্থায় প্রোগ্রাম এবং ডেটা ধারণ করে। এটি অস্থায়ী মেমরি, অর্থাৎ কম্পিউটার বন্ধ করলে এটি মুছে যায়।
- রোম (ROM): রিড-অনলি মেমরি, যেখানে কম্পিউটারের বেসিক ইনস্ট্রাকশন বা বুট সিকোয়েন্স থাকে। এটি স্থায়ী মেমরি।
স্টোরেজ ডিভাইসঃ স্টোরেজ ডিভাইসগুলি দীর্ঘ সময় ধরে তথ্য সংরক্ষণ
করে। এখানে দুটি প্রধান ধরনের স্টোরেজ আছেঃ
- হাডড্রাইভ (HDD): হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ, যা বৃহৎ পরিমাণ ডেটা সংরক্ষণ করতে ব্যবহৃত হয়।
- এসএসডি (SSD): সলিড স্টেট ড্রাইভ, যা দ্রুতগতিতে তথ্য প্রবাহিত করতে পারে এবং এটি আরো টেকসই।
ইনপুট ডিভাইসঃ ইনপুট ডিভাইসগুলি কম্পিউটারে ডেটা প্রবাহিত করার জন্য
ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছেঃ
- কীবোর্ডঃ তথ্য টাইপ করার জন্য।
- মাউসঃ কম্পিউটারের পর্দায় নির্বাচিত আইটেম বা মেনুতে ক্লিক করার জন্য।
- স্ক্যানারঃ ডকুমেন্ট বা ইমেজ কম্পিউটারে স্ক্যান করে।
আউটপুট ডিভাইসঃ আউটপুট ডিভাইসগুলি কম্পিউটারের প্রক্রিয়া করা তথ্য
ব্যবহারকারীর কাছে উপস্থাপন করে। এর মধ্যে রয়েছেঃ
- মনিটরঃ গ্রাফিক্যাল এবং টেক্সট ভিত্তিক তথ্য প্রদর্শন করে।
- প্রিন্টারঃ কম্পিউটার থেকে প্রাপ্ত ডিজিটাল তথ্য প্রিন্ট করার জন্য।
মাদারবোর্ডঃ মাদারবোর্ড হল কম্পিউটারের প্রধান সার্কিট বোর্ড, যা সমস্ত
হার্ডওয়্যার অংশকে একত্রিত করে এবং তাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে।
কম্পিউটার সফটওয়্যারঃ
অপারেটিং সিস্টেম (OS)ঃ অপারেটিং সিস্টেম হল সফটওয়্যার যা কম্পিউটারের
হার্ডওয়্যার এবং অন্যান্য সফটওয়্যার প্রোগ্রামের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে। এটি
ইউজারের সাথে কম্পিউটারের ইন্টারফেসও প্রদান করে। জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমগুলোর
মধ্যে Windows, macOS, এবং Linux অন্যতম।
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারঃ অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার হল এমন প্রোগ্রাম যা
বিশেষ কোনো কাজের জন্য ডিজাইন করা হয়। যেমন, Microsoft Word (লেখার জন্য), Adobe
Photoshop (গ্রাফিক ডিজাইন), এবং Google Chrome (ইন্টারনেট ব্রাউজিং)।
কম্পিউটারের কাজঃ কম্পিউটার বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। এর প্রধান
কাজগুলো হলোঃ
- ইনপুট গ্রহণঃ কম্পিউটার ইনপুট ডিভাইস (যেমন কীবোর্ড বা মাউস) ব্যবহার করে তথ্য গ্রহণ করে।
- প্রক্রিয়াঃ সিপিইউ ইনপুট তথ্য প্রক্রিয়া করে এবং নির্দিষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী ফলাফল তৈরি করে।
- আউটপুট প্রদানঃ প্রক্রিয়া করা ফলাফল আউটপুট ডিভাইসের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়, যেমন মনিটরে।
- স্টোরেজঃ প্রক্রিয়া করা তথ্য স্টোরেজ ডিভাইসে সংরক্ষণ করা হয়, যাতে পরে আবার ব্যবহার করা যায়।
কম্পিউটারের উপকারিতাঃ কম্পিউটার মানবজীবনে বিপুল উপকারে আসেঃ
- তথ্য প্রক্রিয়াকরণঃ বৃহৎ পরিমাণ তথ্য দ্রুত এবং সঠিকভাবে প্রক্রিয়া করা যায়।
- যোগাযোগঃ ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্রুত যোগাযোগের সুযোগ প্রদান করে।
- শিক্ষা ও গবেষণাঃ শিক্ষার ক্ষেত্রে কম্পিউটার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তথ্য অনুসন্ধান, বিশ্লেষণ এবং সিমুলেশন করার সুযোগ দেয়।
- অটোমেশনঃ বিভিন্ন উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য কাজ অটোমেশন করতে কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি
এখানে আপনার পাঠ্যটি অনেকাংশে সঠিক, তবে কিছু বানান এবং বাক্য গঠন সংশোধন করা
হয়েছে। নিচে সঠিক সংস্করণটি দেওয়া হলোঃ কম্পিউটার বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিভক্ত
করা যায়, এবং এগুলোর প্রকারভেদ ব্যবহারের উদ্দেশ্য, কার্যক্ষমতা এবং আকার
অনুসারে করা হয়। সাধারণত, কম্পিউটার প্রধানত চারটি প্রকারে ভাগ করা যায়ঃ
- আকার অনুযায়ী কম্পিউটারঃ কম্পিউটারগুলি আকার এবং ক্ষমতার ভিত্তিতে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। কিছু কম্পিউটার বৃহৎ আকারের এবং কিছু ছোট আকারের। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ প্রকারগুলো হলোঃ
- মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer): মেইনফ্রেম কম্পিউটার অত্যন্ত শক্তিশালী এবং উচ্চ ক্ষমতার কম্পিউটার। এই ধরনের কম্পিউটার সাধারণত বড় প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস, ব্যাংক, বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণাগারে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণঃ IBM Z-series। বড় পরিমাণে ডেটা প্রক্রিয়া করা, হাজার হাজার ব্যবহারকারীকে একসাথে সেবা প্রদান।
- মিনিকম্পিউটার (Minicomputer): মিনিকম্পিউটারগুলি মেইনফ্রেমের তুলনায় ছোট এবং কম শক্তিশালী হলেও, এটি উচ্চ ক্ষমতার একটি কম্পিউটার যা একাধিক ব্যবহারকারীকে সেবা প্রদান করতে সক্ষম। উদাহরণঃ PDP-11। ছোট আকারের সংস্থাগুলোতে ব্যবহৃত হয়, যেমন গবেষণাগার বা ছোট অফিসে।
- মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer): মাইক্রোকম্পিউটার হলো ব্যক্তিগত কম্পিউটার (PC), যা সাধারণভাবে মানুষের দৈনন্দিন কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলো ছোট আকারের এবং সহজে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণঃ ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট। ব্যক্তিগত কাজ, অফিস কাজ, শিক্ষা, বিনোদন ইত্যাদি।
- সুপারকম্পিউটার (Supercomputer): সুপারকম্পিউটার হলো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটার। এগুলি অত্যন্ত দ্রুত গতি এবং বিশাল পরিমাণের ডেটা প্রক্রিয়াকরণে সক্ষম। উদাহরণঃ "Titan", "Fugaku"। উচ্চ পরিমাণে গণনা, গবেষণা, আবহাওয়া পূর্বাভাস, ভৌত বিজ্ঞান এবং নিউক্লিয়ার গবেষণার মতো বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
ব্যবহার এবং উদ্দেশ্য অনুযায়ী কম্পিউটারঃ কম্পিউটারগুলি তাদের
ব্যবহার এবং উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
- ব্যক্তিগত কম্পিউটার (Personal Computers - PC): এগুলি ব্যবহারকারীর একক প্রয়োজনের জন্য ডিজাইন করা হয় এবং সাধারণত ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ আকারে পাওয়া যায়। উদাহরণঃ ডকুমেন্ট লেখা, ইমেল পাঠানো, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গেমিং, মিডিয়া প্লে ইত্যাদি।
- অ্যামবেডেড কম্পিউটার (Embedded Computer): এগুলি বিশেষ কাজের জন্য তৈরি করা হয় এবং সাধারণত কোনো বড় সিস্টেমের অংশ হিসেবে কাজ করে। উদাহরণঃ মাইক্রোওয়েভ, সেলফ-ড্রাইভিং গাড়ি, স্মার্টফোনের ইন্টারনাল সিস্টেম। বাড়ির যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সরঞ্জাম, গাড়ি, রোবোটিক সিস্টেম ইত্যাদি।
- ওয়ার্কস্টেশন (Workstation): এই কম্পিউটারগুলি সাধারণ পিসি থেকে বেশি শক্তিশালী এবং বিশেষত গ্রাফিক্স, 3D ডিজাইন এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্টিফিক গবেষণা, ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি ইত্যাদি।
- সার্ভার (Server): সার্ভার হলো এমন কম্পিউটার যা একাধিক ক্লায়েন্ট বা ব্যবহারকারীকে সেবা প্রদান করে। এগুলি সাধারণত তথ্য সংরক্ষণ, ওয়েব হোস্টিং, ডেটাবেস ব্যবস্থাপনা ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়। ওয়েবসাইট হোস্টিং, ই-মেইল সেবা, ডেটাবেস ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
নেটওয়ার্ক ভিত্তিক কম্পিউটারঃ কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ভিত্তিতে নানা
ধরনের ক্লায়েন্ট এবং সার্ভার ব্যবহার করে।
- থিন ক্লায়েন্ট (Thin Client): এই ধরনের কম্পিউটার অনেকটা সাধারণ কনসোল, যা একটি শক্তিশালী সার্ভারের মাধ্যমে কাজ করে। এটি শুধুমাত্র ইন্টারফেস প্রদানে সক্ষম এবং সার্ভারের উপর নির্ভরশীল। ক্লাউড কম্পিউটিং, লাইটওয়েট অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের জন্য।
- থিক ক্লায়েন্ট (Thick Client): থিক ক্লায়েন্টগুলি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার, যার নিজস্ব সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশন থাকে। এগুলোর কোনো কেন্দ্রীয় সার্ভার বা নেটওয়ার্কের সাথে নির্ভরশীল হতে হয় না। ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি।
অন্যান্য ধরণের কম্পিউটারঃ
- কোয়ান্টাম কম্পিউটার (Quantum Computer): কোয়ান্টাম কম্পিউটার একটি বিশেষ ধরনের কম্পিউটার যা কোয়ান্টাম বিট (qubits) ব্যবহার করে কাজ করে, এবং এটি মূলত একাধিক কাজ সমান্তরালে করার সক্ষমতা রাখে। জটিল সমস্যা সমাধান, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোড ভাঙা, রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানে।
সংক্ষেপেঃ কম্পিউটারগুলো প্রধানত চারটি প্রধান প্রকারে ভাগ করা যায়ঃ
- আকার অনুযায়ীঃ মেইনফ্রেম, মিনিকম্পিউটার, মাইক্রোকম্পিউটার, সুপারকম্পিউটার।
- উদ্দেশ্য অনুযায়ীঃ ব্যক্তিগত কম্পিউটার, অ্যামবেডেড কম্পিউটার, ওয়ার্কস্টেশন, সার্ভার।
- নেটওয়ার্ক ভিত্তিকঃ থিন ক্লায়েন্ট, থিক ক্লায়েন্ট।
- অন্যান্যঃ কোয়ান্টাম কম্পিউটার।
এই প্রকারভেদের ভিত্তিতে কম্পিউটারগুলি বিভিন্নভাবে কাজ করে এবং নানা ক্ষেত্রের
প্রয়োজন মেটাতে ব্যবহৃত হয়।
কম্পিউটার কয়টি ধাপে কাজ করে ও কি কি
উপরোক্ত আলোচনায় আমি আপনাদের মাঝে কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের
বিভিন্ন অংশের কাজ জানিয়েছি চলুন এখন কম্পিউটার কয়টি ধাপে কাজ করে ও কি কি
জানি। কম্পিউটার মূলত চারটি ধাপে কাজ করে, এবং প্রতিটি ধাপই তার নিজস্ব
গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে। এই চারটি ধাপ হলোঃ
ইনপুট (Input)ঃ প্রথম ধাপে, কম্পিউটার ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ
করে। এই তথ্য হতে পারে টেক্সট, সংখ্যা, ছবি, বা অন্যান্য ডেটা। ইনপুট ডিভাইস
(যেমন কীবোর্ড, মাউস, স্ক্যানার ইত্যাদি) ব্যবহার করে ব্যবহারকারী এই তথ্য
কম্পিউটারে প্রবাহিত করেন। উদাহরণঃ কীবোর্ডের মাধ্যমে আপনি টেক্সট টাইপ করছেন।
মাউস দিয়ে কোনো ফাইল বা ফোল্ডার নির্বাচন করছেন।
প্রসেসিং (Processing)ঃ দ্বিতীয় ধাপে, ইনপুট হিসেবে প্রাপ্ত ডেটা
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU) দ্বারা প্রক্রিয়া করা হয়। CPU এই ডেটাকে বিভিন্ন
গণনা বা লজিক্যাল অপারেশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফলাফল তৈরি করে। এই ধাপে, অ্যালু
(ALU) গাণিতিক কাজগুলো সম্পন্ন করে এবং কন্ট্রোল ইউনিট (CU) সঠিক নির্দেশনা
প্রদান করে। উদাহরণঃ আপনি কম্পিউটারে ৫ + ৩ গাণিতিক প্রশ্ন দেন, এবং CPU সঠিক
ফলাফল ৮ প্রদর্শন করবে।
আউটপুট (Output)ঃ তৃতীয় ধাপে, প্রসেস করা তথ্য আউটপুট ডিভাইস (যেমন মনিটর,
প্রিন্টার, স্পিকার ইত্যাদি) দ্বারা ব্যবহারকারীর কাছে প্রদর্শিত হয়। কম্পিউটার
ফলস্বরূপ প্রক্রিয়া করা তথ্য ব্যবহারকারীর সামনে উপস্থাপন করে। উদাহরণঃ
কম্পিউটারে টাইপ করা টেক্সট মনিটরে প্রদর্শিত হবে। গণনা করা ফলাফল (যেমন ৫ + ৩ =
৮) স্ক্রীনে দেখানো হবে।
স্টোরেজ (Storage)ঃ চতুর্থ ধাপে, প্রসেস করা তথ্য কম্পিউটারের স্টোরেজ
ডিভাইসে (যেমন হার্ড ড্রাইভ, SSD, USB ড্রাইভ ইত্যাদি) সংরক্ষণ করা হয়। এই তথ্য
পরবর্তীতে ব্যবহার করার জন্য সংরক্ষিত থাকে। উদাহরণঃ আপনি যে ডকুমেন্টটি তৈরি
করেছেন তা হার্ড ড্রাইভে সংরক্ষণ করতে পারেন। ছবি বা ভিডিও ফাইলগুলোও স্টোরেজ
ডিভাইসে সংরক্ষিত থাকে।
সংক্ষেপেঃ কম্পিউটার চারটি ধাপে কাজ করেঃ
- ইনপুটঃ তথ্য গ্রহণ।
- প্রসেসিংঃ তথ্য প্রক্রিয়া করা।
- আউটপুটঃ প্রক্রিয়া করা ফলাফল প্রদর্শন করা।
- স্টোরেজঃ তথ্য সংরক্ষণ।
এই চারটি ধাপের মাধ্যমে কম্পিউটার তথ্য প্রক্রিয়াকরণ সম্পন্ন করে এবং
ব্যবহারকারীকে তাদের প্রয়োজনীয় ফলাফল প্রদান করে।
কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এর কয়টি অংশ
কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ এবং কম্পিউটার কত
প্রকার ও কি কি সম্পর্কে জানলাম চলুন এখন জানি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এর কয়টি
অংশ সম্পর্কে।কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার মূলত অনেকগুলি উপাদান নিয়ে গঠিত,
যা একত্রিত হয়ে কম্পিউটারের কাজ সম্পাদন করে। কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার অংশগুলো
বিভিন্নভাবে শ্রেণিবদ্ধ করা যায়, তবে সাধারণত তা কয়েকটি প্রধান ভাগে বিভক্ত হয়।
এখানে আমি এই অংশগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার অংশসমূহঃ
- সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU)ঃ CPU কম্পিউটারের "মস্তিষ্ক" হিসেবে পরিচিত, যেখানে সমস্ত গাণিতিক এবং লজিক্যাল কাজ প্রক্রিয়া হয়। এটি নির্দেশনা অনুযায়ী ডেটা প্রক্রিয়া করে এবং ফলাফল তৈরি করে।
- অ্যালু (ALU): গাণিতিক এবং লজিক্যাল অপারেশন সম্পাদন করে।
- কন্ট্রোল ইউনিট (CU): সিস্টেমের সকল অংশের মধ্যে নির্দেশনা এবং নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে।
মেমরিঃ মেমরি কম্পিউটার সিস্টেমে ডেটা এবং প্রোগ্রাম সংরক্ষণ করার জন্য
ব্যবহৃত হয়। এটি দুটি প্রধান ধরনেরঃ
- RAM (র্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমরি): এটি অস্থায়ী মেমরি, যা কম্পিউটার চালু থাকাকালীন সময়ে ডেটা এবং প্রোগ্রাম ধারণ করে।
- ROM (রিড-অনলি মেমরি): এটি স্থায়ী মেমরি, যেখানে কম্পিউটারের বেসিক ইনস্ট্রাকশন বা বুট সিকোয়েন্স সংরক্ষিত থাকে।
স্টোরেজ ডিভাইসঃ স্টোরেজ ডিভাইসগুলো তথ্য দীর্ঘমেয়াদীভাবে সংরক্ষণ করে।
প্রধান দুটি ধরনের স্টোরেজ ডিভাইস:
- HDD (হার্ড ড্রাইভ): এটি বড় আকারের স্টোরেজ ডিভাইস যা সস্তা হলেও, তুলনামূলকভাবে ধীর গতির।
- SSD (সলিড স্টেট ড্রাইভ): এটি দ্রুতগতির স্টোরেজ ডিভাইস যা আরও টেকসই এবং উচ্চ পারফরম্যান্স প্রদান করে।
ইনপুট ডিভাইসঃ ইনপুট ডিভাইসগুলি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তথ্য কম্পিউটারে
প্রবাহিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিছু সাধারণ ইনপুট ডিভাইসঃ
- কীবোর্ডঃ তথ্য টাইপ করা।
- মাউসঃ কম্পিউটারের পর্দায় নির্বাচিত আইটেম বা মেনুতে ক্লিক করা।
- স্ক্যানারঃ ডকুমেন্ট বা ছবির স্ক্যান করা।
আউটপুট ডিভাইসঃ আউটপুট ডিভাইসগুলো কম্পিউটার দ্বারা প্রক্রিয়াকৃত তথ্য
ব্যবহারকারীর কাছে প্রদর্শন করে। কিছু সাধারণ আউটপুট ডিভাইসঃ
- মনিটরঃ টেক্সট ও গ্রাফিক্স প্রদর্শন করা।
- প্রিন্টারঃ ডিজিটাল তথ্য কাগজে প্রিন্ট করা।
- স্পিকারঃ অডিও বা শব্দ উৎপাদন।
মাদারবোর্ডঃ মাদারবোর্ড হল কম্পিউটারের প্রধান সার্কিট বোর্ড, যা
সমস্ত হার্ডওয়্যার উপাদানকে একত্রিত করে এবং তাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে। এটি
সব কম্পিউটারের অংশের জন্য পাওয়ার সরবরাহ এবং সংযোগ স্থাপন করে।
পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট (PSU)ঃ পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট কম্পিউটারের সকল অংশে
বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এটি সিস্টেমের শক্তি উৎপাদন এবং পরিবহন নিশ্চিত করে।
গ্রাফিক্স প্রক্রেসিং ইউনিট (GPU)ঃ GPU হল একটি বিশেষ ধরনের প্রসেসর, যা
মূলত গ্রাফিক্স এবং ভিডিও প্রসেসিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি গেমিং, ভিডিও এডিটিং
এবং অন্যান্য গ্রাফিক্যাল কাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাউন্ড কার্ডঃ সাউন্ড কার্ড কম্পিউটারকে অডিও সিগন্যাল প্রক্রিয়া করতে
সক্ষম করে। এটি মিউজিক, অডিও ক্লিপ, ভয়েস রেকর্ডিং ইত্যাদি শোনার জন্য ব্যবহৃত
হয়।
সারসংক্ষেপঃ কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার অংশগুলো একত্রিত হয়ে সিস্টেমের
কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করে। এগুলো মূলত CPU, মেমরি, স্টোরেজ ডিভাইস, ইনপুট ও আউটপুট
ডিভাইস, মাদারবোর্ড, পাওয়ার সাপ্লাই, গ্রাফিক্স কার্ড এবং সাউন্ড কার্ড ইত্যাদি।
প্রতিটি অংশের নিজস্ব কাজ এবং গুরুত্ব রয়েছে, এবং একসাথে তারা কম্পিউটার
সিস্টেমের কার্যক্রম সম্পাদন করে।
কম্পিউটার যন্ত্রাংশের নাম ও দাম
উপরোক্ত আলোচনায় কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ
এবং কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি জানিয়েছি চলুন এখন কম্পিউটার যন্ত্রাংশের নাম ও
দাম সম্পর্কে জানি। কম্পিউটার যন্ত্রাংশের নাম এবং দাম সম্পর্কে আলোচনা করতে
গেলে, প্রথমে জানা প্রয়োজন যে কম্পিউটার যন্ত্রাংশের দাম বিভিন্ন উপাদানের ধরন,
ব্র্যান্ড, ক্ষমতা এবং বাজারের চাহিদার উপর নির্ভর করে। প্রতিটি যন্ত্রাংশের দাম
সাধারণত বাজারের অবস্থান এবং এর কার্যক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। নিচে কম্পিউটার
যন্ত্রাংশের নাম ও তাদের মূল্য সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া হলোঃ
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU)ঃ CPU কম্পিউটারের মস্তিষ্ক হিসেবে কাজ করে
এবং এটি গাণিতিক ও লজিক্যাল কাজ সম্পাদন করে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের CPU পাওয়া যায়,
যেমন Intel, AMD।
দামঃ
- Intel Core i3 (বাজেট প্রসেসর): প্রায় ৭,০০০ - ১০,০০০ টাকা।
- Intel Core i7 (মধ্যম ক্ষমতার প্রসেসর): প্রায় ২০,০০০ - ৩০,০০০ টাকা।
- AMD Ryzen 9 (উচ্চ ক্ষমতার প্রসেসর): প্রায় ৩০,০০০ - ৪৫,০০০ টাকা।
মাদারবোর্ডঃ মাদারবোর্ড হল কম্পিউটারের মূল সার্কিট বোর্ড, যেখানে CPU, RAM,
স্টোরেজ এবং অন্যান্য উপাদানগুলি সংযুক্ত থাকে।
দামঃ
- অফিসিয়াল/বাজেট মাদারবোর্ডঃ প্রায় ৩,০০০ - ৮,০০০ টাকা।
- গেমিং মাদারবোর্ডঃ প্রায় ১৫,০০০ - ৩০,০০০ টাকা।
র্যাম (RAM)ঃ RAM কম্পিউটারের অস্থায়ী মেমরি হিসেবে কাজ করে, যা
প্রোগ্রাম চলাকালীন সময়ে ডেটা সংরক্ষণ করে রাখে।
দামঃ
- ৪GB DDR4 RAM: প্রায় ২,০০০ - ৩,০০০ টাকা।
- ৮GB DDR4 RAM: প্রায় ৪,০০০ - ৭,০০০ টাকা।
- ১৬GB DDR4 RAM: প্রায় ৮,০০০ - ১৫,০০০ টাকা।
স্টোরেজ ডিভাইসঃ স্টোরেজ ডিভাইসের মধ্যে দুটি প্রধান ধরন রয়েছে: HDD
(হার্ড ড্রাইভ) এবং SSD (সলিড স্টেট ড্রাইভ)। HDD (Hard Disk Drive):
- ১TB HDD: প্রায় ৩,০০০ - ৫,০০০ টাকা।
- ২TB HDD: প্রায় ৬,০০০ - ৮,০০০ টাকা।
- SSD (Solid State Drive):
- ২৪০GB SSD: প্রায় ২,৫০০ - ৪,০০০ টাকা।
- ৫১২GB SSD: প্রায় ৪,৫০০ - ৮,০০০ টাকা।
- ১TB SSD: প্রায় ৮,০০০ - ১২,০০০ টাকা।
গ্রাফিক্স প্রক্রেসিং ইউনিট (GPU)ঃ GPU কম্পিউটারের গ্রাফিক্স এবং
ভিডিও প্রক্রিয়াকরণে সহায়তা করে। গেমিং, ভিডিও এডিটিং এবং অন্যান্য গ্রাফিক্যাল
কাজের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দামঃ
- NVIDIA GTX 1650 (বাজেট গ্রাফিক্স কার্ড): প্রায় ১৫,০০০ - ২০,০০০ টাকা।
- NVIDIA RTX 3060 (মাঝারি-গেমিং গ্রাফিক্স কার্ড): প্রায় ৩০,০০০ - ৪০,০০০ টাকা।
- NVIDIA RTX 4090 (উচ্চ গেমিং গ্রাফিক্স কার্ড): প্রায় ১,৫০,০০০ - ২,০০,০০০ টাকা।
পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট (PSU)ঃ পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট (PSU) কম্পিউটারের
অন্যান্য উপাদানগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
দামঃ
- ৩৫০W PSU: প্রায় ১,৫০০ - ২,৫০০ টাকা।
- ৬৫০W PSU: প্রায় ৩,৫০০ - ৬,০০০ টাকা।
- ৮০০W PSU: প্রায় ৭,০০০ - ১০,০০,০০০ টাকা।
কীবোর্ডঃ কীবোর্ড একটি ইনপুট ডিভাইস, যা কম্পিউটারের সাথে ব্যবহারকারীকে
যোগাযোগ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
দামঃ
- বাজেট কীবোর্ডঃ প্রায় ৫০০ - ১,৫০০ টাকা।
- মেকানিক্যাল কীবোর্ডঃ প্রায় ২,০০০ - ৮,০০০ টাকা।
মাউসঃ মাউস হল একটি ইনপুট ডিভাইস, যা কম্পিউটারের পয়েন্টার
নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।
দামঃ
- বাজেট মাউসঃ প্রায় ৩০০ - ১,০০০ টাকা।
- গেমিং মাউসঃ প্রায় ১,৫০০ - ৫,০০০ টাকা।
মনিটরঃ মনিটর কম্পিউটারের আউটপুট ডিভাইস, যা ব্যবহারকারীর কাছে
প্রক্রিয়াকৃত তথ্য প্রদর্শন করে।
দামঃ
- ২১ ইঞ্চি LED মনিটর: প্রায় ৭,০০০ - ১০,০০০ টাকা।
- ২৭ ইঞ্চি 4K মনিটর: প্রায় ২৫,০০০ - ৫০,০০০ টাকা।
প্রিন্টারঃ প্রিন্টার হল একটি আউটপুট ডিভাইস যা ডিজিটাল তথ্য কাগজে
প্রিন্ট করে।
দামঃ
- বাজেট ইনকজেট প্রিন্টারঃ প্রায় ২,০০০ - ৪,০০০ টাকা।
- লেজার প্রিন্টারঃ প্রায় ৮,০০০ - ১৫,০০,০০০ টাকা।
CPU এর প্রধান অংশ কয়টি ও কি কি?
কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ এবং কম্পিউটার কত
প্রকার ও কি কি সম্পর্কে জানলাম চলুন এখন জানি CPU এর প্রধান অংশ কয়টি ও কি কি?
সম্পর্কে। CPU (Central Processing Unit) কম্পিউটারের প্রধান অংশ যা সমস্ত
গাণিতিক, লজিক্যাল এবং নিয়ন্ত্রণ কাজ সম্পাদন করে।
এটি কম্পিউটারের মস্তিষ্ক হিসেবে পরিচিত। CPU-র প্রধান কাজ হল ইনপুট ডেটা
প্রক্রিয়া করা এবং আউটপুট প্রদান করা। CPU-এর মূল অংশগুলো একে অপরের সাথে সমন্বয়
করে কাজ করে, এবং সাধারণত এটি ৩টি প্রধান অংশে বিভক্ত হয়ঃ
অ্যালু (ALU - Arithmetic Logic Unit)ঃ অ্যালু হল CPU-এর একটি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা সমস্ত গাণিতিক (যেমন যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ) এবং লজিক্যাল
(যেমন তুলনা, শর্তানুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ) কাজ পরিচালনা করে। এটি কম্পিউটারের
কাজের গতি এবং কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। উদাহরণঃ ৫ + ৩ = ৮ এর মতো গণনা।
সংখ্যা বা ডেটার মধ্যে তুলনা করা (যেমন: বড়, ছোট, সমান)।
কন্ট্রোল ইউনিট (CU - Control Unit)ঃ কন্ট্রোল ইউনিট CPU-এর কার্যক্রমের
সমন্বয়কারী। এটি সিস্টেমের অন্যান্য উপাদান (যেমন RAM, স্টোরেজ, ইনপুট/আউটপুট
ডিভাইস) এর মধ্যে নির্দেশনা পাঠায় এবং তাদের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। CU মূলত
ইনস্ট্রাকশন কোড (ইন্সট্রাকশন সেট) ধরে কাজ করে এবং,
একটি নির্দিষ্ট সিকোয়েন্সে সকল কাজ সম্পাদন করার জন্য সমন্বয় প্রদান করে।
উদাহরণঃ কম্পিউটার যেভাবে নির্দেশনা গ্রহণ করে এবং সেটা অনুযায়ী কাজ করে।
নির্দিষ্ট প্রসেসের জন্য কম্পিউটার মেমরি এবং ডিভাইসের মধ্যে তথ্য স্থানান্তর
করা।
রেজিস্টারস (Registers)ঃ রেজিস্টারস হল CPU-এর খুব দ্রুতগতি সম্পন্ন ছোট
মেমরি ইউনিট, যা অস্থায়ীভাবে ডেটা এবং নির্দেশনা সংরক্ষণ করে। এগুলি CPU-এর
অন্যান্য অংশের সাথে দ্রুত তথ্য বিনিময়ে সহায়তা করে। রেজিস্টারগুলো CPU-র মধ্যে
দ্রুততম মেমরি, যেখানে শুধুমাত্র প্রাথমিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ডেটা রাখা হয়।
উদাহরণঃ ডেটা প্রসেস করার জন্য প্রয়োজনীয় অস্থায়ী মান। চলমান প্রোগ্রামের মধ্যে
দরকারি তথ্য সংরক্ষণ।
CPU-এর প্রধান অংশগুলো হলোঃ
- অ্যালু (ALU) - গাণিতিক ও লজিক্যাল অপারেশন সম্পাদন করে।
- কন্ট্রোল ইউনিট (CU) - নির্দেশনা পাঠায় এবং সিস্টেমের অন্যান্য অংশের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে।
- রেজিস্টারস - অস্থায়ীভাবে দ্রুতগতি সম্পন্ন ডেটা সংরক্ষণ করে।
এই তিনটি অংশ একত্রিত হয়ে CPU-কে কার্যক্ষম করে এবং কম্পিউটারের সকল কাজ
সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে সাহায্য করে। CPU এর প্রতিটি অংশের নিজস্ব ভূমিকা রয়েছে
এবং একে অপরের সাথে মিলিয়ে কাজ করে।
কম্পিউটারের ইতিহাস
উপরোক্ত আলোচনায় কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ
এবং কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি জানিয়েছি চলুন এখন কম্পিউটারের ইতিহাস সম্পর্কে
জানি। কম্পিউটারের ইতিহাস একটি দীর্ঘ পথপরিক্রমা, যা হাজার বছর ধরে বিভিন্ন
বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবকদের প্রচেষ্টায় বিকশিত হয়েছে। প্রথমদিকে গণনা করতে ব্যবহৃত
যন্ত্র যেমন অ্যাবাকাস ও প্যাস্কালাইন ছিল।
১৮৩০ সালে চার্লস ব্যাবেজ তার "অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন" তৈরি করেন, যা আধুনিক
কম্পিউটারের পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচিত। ২০ শতকের মধ্যভাগে, ENIAC (1945) এবং IBM
701 এর মতো প্রথম বৈদ্যুতিন কম্পিউটার তৈরি হয়, যা ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করে
কাজ করত। পরবর্তী সময়ে, ট্রানজিস্টর এবং ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট এর আবিষ্কারে
কম্পিউটারের আকার ছোট হয়ে যায় এবং তার গতি বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুনঃ এড দেখে টাকা ইনকাম বিকাশে পেমেন্ট
১৯৭০ এর দশকে মাইক্রোপ্রসেসর এর উদ্ভাবনে কম্পিউটার আরও সাশ্রয়ী এবং ব্যক্তিগত
ব্যবহারের জন্য উপযোগী হয়ে ওঠে। বর্তমানে, কোয়ান্টাম কম্পিউটার এবং আর্টিফিশিয়াল
ইন্টেলিজেন্স এর মতো প্রযুক্তি কম্পিউটারের ক্ষমতা এবং গতি এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে
গেছে, যা আগামী দিনে আরও উন্নত হবে।
কম্পিউটারের ব্যবহার
কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ এবং কম্পিউটার কত
প্রকার ও কি কি সম্পর্কে জানলাম চলুন এখন জানি কম্পিউটারের ব্যবহার সম্পর্কে।
কম্পিউটার বর্তমান যুগে প্রতিটি ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি
অফিসের কাজ, গবেষণা, শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যাংকিং, যোগাযোগ, গেমিং, ডিজাইন এবং
বিজ্ঞাপনসহ বহু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি কম্পিউটারের সাহায্যে তথ্য সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ এবং দ্রুত
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। শিক্ষার ক্ষেত্রে, কম্পিউটার অনলাইন কোর্স, ইন্টারনেট
গবেষণা এবং ডিজিটাল লার্নিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি
শক্তিশালী টুল হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্যখাতে, রোগী ডেটা সংরক্ষণ, রোগ নির্ণয় এবং
চিকিৎসার জন্য উন্নত সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে।
এছাড়া, কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে যোগাযোগের মাধ্যম যেমন ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া
এবং ভিডিও কনফারেন্সিং দ্রুতগতিতে সম্ভব হয়েছে। সাধারণভাবে, কম্পিউটার আমাদের
দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ এবং দ্রুততর করে তুলছে।
কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ কোনটি
উপরোক্ত আলোচনায় কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ
এবং কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি জানিয়েছি চলুন এখন কম্পিউটারের সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ অংশ কোনটি সম্পর্কে জানি। কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU)। এটি কম্পিউটারের "মস্তিষ্ক" হিসেবে কাজ করে,
যা সমস্ত গাণিতিক, লজিক্যাল এবং নিয়ন্ত্রণ কাজ সম্পাদন করে। CPU ইনপুট ডেটা
প্রক্রিয়া করে এবং সঠিক আউটপুট তৈরি করে, যা কম্পিউটার সিস্টেমের কার্যক্ষমতা
নির্ধারণ করে। এর দুটি প্রধান উপাদান হলো অ্যালু (ALU),
যা গাণিতিক এবং লজিক্যাল কাজ করে, এবং কন্ট্রোল ইউনিট (CU), যা সিস্টেমের
অন্যান্য অংশের সাথে সমন্বয় করে নির্দেশনা প্রদান করে। সুতরাং, CPU ছাড়া
কম্পিউটার সিস্টেম কোনো কার্যকর ফলাফল প্রদান করতে সক্ষম নয়, কারণ এটি সকল কাজের
সমন্বয় এবং প্রক্রিয়াকরণ নিশ্চিত করে।
লেখক এর মন্তব্য- কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি - কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি -
কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ এবং কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি ইত্যাদি ছাড়াও
কম্পিউটার সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর
চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন
ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url