ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় জেনে রাখুন
আসসালামু আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় হলো ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি
উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট খোলার নিয়ম ইত্যাদি ছাড়াও ফাইভার সম্পর্কে জানা-অজানা
বিভিন্ন তথ্য। এই পোস্টে থাকছে ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি এবং অন্যান্য
গুরুত্বপূর্ণ দিক।
পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো, যাতে আপনি ফাইভারে দ্রুত কাজ
পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
পারেন। আশা করছি, এতে আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর এবং সঠিক নির্দেশনা পাবেন।
ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় জেনে রাখুন
এখন আমি আপনাদের সাথে ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় সম্পর্কে শেয়ার করতে
যাচ্ছি। ফাইভার (Fiverr) হলো একটি জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেখানে
ফ্রিল্যান্সাররা তাদের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পেতে পারেন। তবে, দ্রুত কাজ পাওয়ার
জন্য কিছু কৌশল এবং পদক্ষেপ অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে ফাইভারে দ্রুত
কাজ পাওয়ার ২০টি উপায় তুলে ধরা হলোঃ
- প্রফাইল পূর্ণ ও আকর্ষণীয় করুনঃ আপনার ফাইভার প্রোফাইল সম্পূর্ণ ও আকর্ষণীয় হওয়া উচিত। প্রোফাইল পিকচার, কভার ফটো, আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, এবং কাজের ক্ষেত্র সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য দিন। ভালোভাবে সাজানো প্রোফাইলই প্রথম পদক্ষেপ।
- স্পষ্ট গিগ শিরোনাম দিনঃ গিগের শিরোনামটি সরল, স্পষ্ট এবং আকর্ষণীয় হওয়া উচিত। যেটি সহজেই গ্রাহকদের কাছে আপনার সেবা বর্ণনা করে। এটি সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্কিং বাড়াতে সাহায্য করে।
- বিস্তারিত গিগ বিবরণ দিনঃ আপনার সেবা সম্পর্কে একটি বিস্তারিত এবং স্পষ্ট বিবরণ দিন। গ্রাহকরা আপনার সেবা সম্পর্কে যতটা সম্ভব বেশি জানুক, তত ভালো। এখানে কীভাবে আপনি গ্রাহকের সমস্যা সমাধান করবেন, তা বর্ণনা করুন।
- কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন করুনঃ আপনার গিগে এমন কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন, যা গ্রাহকরা সার্চ করলে আপনার গিগ শো হবে। গিগের শিরোনাম, বিবরণ এবং ট্যাগে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
- পোর্টফোলিও তৈরি করুনঃ আপনার পূর্ববর্তী কাজগুলির উদাহরণ দিয়ে একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও তৈরি করুন। এটি ক্লায়েন্টদের আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ধারণা দেবে।
- গিগ ভিডিও তৈরি করুনঃ গিগ ভিডিও তৈরি করুন যা আপনার সেবা ও দক্ষতা প্রদর্শন করবে। ভিডিও গিগের ভিউয়ারশিপ এবং অর্ডার বাড়ানোর ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর।
- প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ করুনঃ যতটা সম্ভব, আপনার প্রথম কিছু গিগের জন্য প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ করুন। এটি আপনাকে দ্রুত ক্লায়েন্ট আকর্ষণ করতে সাহায্য করবে।
- দ্রুত উত্তর দিনঃ যত দ্রুত সম্ভব ক্লায়েন্টদের বার্তা এবং প্রশ্নের উত্তর দিন। সময়মতো সাড়া দেওয়া গ্রাহকদের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি করে।
- রিভিউ সংগ্রহ করুনঃ প্রথম কাজগুলি থেকে ভালো রিভিউ পেতে চেষ্টা করুন। রিভিউ আপনার প্রোফাইলের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করবে এবং ভবিষ্যতে আরও কাজের সুযোগ তৈরি করবে।
- ওভারডেলিভারি করুনঃ প্রথম কিছু ক্লায়েন্টকে অতিরিক্ত সুবিধা দিন বা তাদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মানসম্পন্ন কাজ করে দিন। এতে করে তারা সন্তুষ্ট হবে এবং আপনাকে ভালো রিভিউ দেবেন।
- বিশেষ অফার দিনঃ গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য বিশেষ ছাড় বা প্রমোশনাল অফার দিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, প্রথম ১০ জন ক্লায়েন্টের জন্য ডিসকাউন্ট।
- বাজেট অনুযায়ী সেবা দিনঃ আপনার সেবার জন্য নানা বাজেটের প্যাকেজ তৈরি করুন, যাতে নতুন গ্রাহকরা অল্প খরচে আপনার সেবা গ্রহণ করতে পারে।
- সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করুনঃ আপনার ফাইভার প্রোফাইল বা গিগ শেয়ার করতে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন ইত্যাদি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করুন। এটি আপনার কাজের প্রসার বাড়াবে।
- থাম্বনেইল ডিজাইন করুনঃ গিগের জন্য আকর্ষণীয় থাম্বনেইল ডিজাইন করুন। একটি ভালো থাম্বনেইল আপনার গিগকে অন্যান্য গিগের তুলনায় আলাদা করে তুলবে।
- প্রফেশনাল টোনে কমিউনিকেট করুনঃ আপনার প্রোফাইল এবং গিগের বর্ণনা সবসময় পেশাদার এবং বিশ্বাসযোগ্য রাখুন। ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগের সময় নম্র ও পেশাদার ভাষায় কথা বলুন।
- মুনাফা বৃদ্ধি করতে আপসেলিং করুনঃ আপনার সেবার সাথে অতিরিক্ত কিছু সুবিধা যোগ করুন, যাতে ক্লায়েন্টরা আরও বেশি প্যাকেজ কিনতে উৎসাহিত হন।
- বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করুনঃ আপনার কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে নিজেকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থাপন করুন। এটি আপনাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে।
- নতুন গিগ তৈরি করুনঃ বিভিন্ন ধরনের সেবা যোগ করে নতুন গিগ তৈরি করুন, যাতে আপনি নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, এমন সেবা প্রদান করুন যা কম প্রতিযোগিতায় থাকে।
- ফ্রি সেবা বা পরামর্শ দিনঃ কখনও কখনও ক্লায়েন্টদের পরামর্শ বা ছোট একটি সেবা বিনামূল্যে দিতে পারেন, যাতে তাদের আস্থা অর্জিত হয় এবং তারা আপনার সেবা ব্যবহার করতে আগ্রহী হন।
- ধৈর্য রাখুনঃ ফাইভারে সফল হতে সময় লাগে। প্রথমে কিছু সময় কাজ পাওয়া কঠিন হতে পারে, তবে ভালো কাজ এবং সঠিক কৌশল অনুসরণ করলে ধীরে ধীরে আপনার কাজের পরিমাণ বাড়বে।
ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার জন্য এই কৌশলগুলো অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। নিজের
প্রোফাইল, গিগ এবং সেবার মান নিয়ে আপগ্রেড করতে থাকুন, এবং পরিশ্রম ও সময়ের
মাধ্যমে আপনি সফল হতে পারবেন।
ফাইভার একাউন্ট খোলার নিয়ম
উপরোক্ত আলোচনায় আমি আপনাদের মাঝে ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায়
জানিয়েছি চলুন এখন ফাইভার একাউন্ট খোলার নিয়ম জানি। ফাইভার (Fiverr) হলো একটি
জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান
করে আয় করতে পারেন।
আপনি যদি ফাইভারে কাজ শুরু করতে চান, তবে প্রথমে আপনাকে একটি একাউন্ট তৈরি করতে
হবে। এখানে ফাইভার একাউন্ট খোলার সম্পূর্ণ পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলোঃ
ফাইভারের ওয়েবসাইটে যানঃ প্রথমে আপনার ওয়েব ব্রাউজারে www.fiverr.com
ওয়েবসাইটে যান। এখানেই আপনি ফাইভারে একাউন্ট খুলতে পারবেন।
"Join" বাটনে ক্লিক করুনঃ ওয়েবসাইটে গিয়ে, উপরের ডান দিকে "Join" বা "সাইন আপ" বাটনে ক্লিক করুন। এটি আপনাকে রেজিস্ট্রেশন পেজে নিয়ে যাবে।
রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি নির্বাচন করুনঃ ফাইভার একাউন্ট খোলার জন্য কয়েকটি
পদ্ধতি রয়েছে:
- ইল দিয়ে সাইন আপঃ আপনি আপনার ইমেইল ঠিকানা দিয়ে একাউন্ট খুলতে পারেন। এজন্য ইমেইল ঠিকানা এবং একটি পাসওয়ার্ড দিন, এরপর "Join" বাটনে ক্লিক করুন।
- গুগল বা ফেসবুক একাউন্ট ব্যবহার করে সাইন আপঃ আপনি আপনার গুগল বা ফেসবুক একাউন্ট দিয়ে দ্রুত সাইন আপ করতে পারেন।
ইমেইল ভেরিফিকেশন করুনঃ ফাইভার আপনাকে একটি কনফার্মেশন ইমেইল পাঠাবে।
আপনার ইনবক্সে গিয়ে ইমেইলটি ওপেন করুন এবং "Verify Email" বা "ইমেইল ভেরিফাই
করুন" বাটনে ক্লিক করুন। এর মাধ্যমে আপনার একাউন্ট নিশ্চিত হবে।
প্রোফাইল পূর্ণ করুনঃ এবার আপনার ফাইভার প্রোফাইল তৈরি করুন। একটি ভালো প্রোফাইল আপনার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হলোঃ
প্রোফাইল পূর্ণ করুনঃ এবার আপনার ফাইভার প্রোফাইল তৈরি করুন। একটি ভালো প্রোফাইল আপনার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হলোঃ
- প্রোফাইল ছবিঃ একটি পেশাদার প্রোফাইল ছবি আপলোড করুন।
- নাম এবং বায়োঃ আপনার নাম এবং নিজের সম্পর্কে একটি আকর্ষণীয় বায়ো লিখুন। এখানে আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের ক্ষেত্র উল্লেখ করুন।
- ভাষা দক্ষতাঃ আপনি কোন ভাষায় কথা বলতে পারেন তা উল্লেখ করুন।
আপনার দক্ষতা এবং কাজের ক্ষেত্র নির্বাচন করুনঃ ফাইভারে কাজ করার জন্য
আপনি যেসব সেবা দিতে চান, সেই ক্ষেত্র বা দক্ষতা নির্বাচন করুন। উদাহরণস্বরূপ,
আপনি গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি সেবা দিতে পারেন।
গিগ তৈরি করুনঃ গিগ হলো সেই সেবা যা আপনি ফাইভারে বিক্রি করবেন। প্রোফাইল
সম্পূর্ণ হওয়ার পর, আপনি আপনার প্রথম গিগ তৈরি করতে পারবেনঃ
- গিগের শিরোনামঃ পরিষ্কার, আকর্ষণীয় এবং সঠিক শিরোনাম নির্বাচন করুন, যাতে গ্রাহকরা সহজে বুঝতে পারে আপনি কি ধরনের সেবা প্রদান করছেন।
- গিগের বিবরণঃ আপনার সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ লিখুন। কিভাবে আপনি কাজ করবেন এবং গ্রাহকের সমস্যার সমাধান করবেন তা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করুন।
- মূল্য নির্ধারণঃ গিগের জন্য উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করুন। আপনি তিনটি প্যাকেজ (বেসিক, স্ট্যান্ডার্ড, প্রিমিয়াম) দিতে পারেন।
- থাম্বনেইল এবং ভিডিও: একটি আকর্ষণীয় থাম্বনেইল এবং প্রফেশনাল ভিডিও তৈরি করুন, যা গ্রাহকদের আপনার গিগের প্রতি আগ্রহী করবে।
কাস্টমার সাপোর্ট এবং যোগাযোগঃ ফাইভারে ক্লায়েন্টদের সঙ্গে দ্রুত এবং
পেশাদারী যোগাযোগ রাখুন। আপনার গিগে যদি কোনো প্রশ্ন বা বার্তা আসে, তাহলে যত
দ্রুত সম্ভব সেগুলোর উত্তর দিন। ক্লায়েন্টদের প্রতি সদয় ও প্রফেশনাল মনোভাব রাখা
খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পেমেন্ট সেটআপ করুনঃ ফাইভার থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করার জন্য আপনাকে একটি
পেমেন্ট মেথড যুক্ত করতে হবে। এটি আপনি PayPal, Payoneer বা অন্য যে কোনো পেমেন্ট
পদ্ধতির মাধ্যমে করতে পারেন।
গিগের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করুনঃ গিগ তৈরি করার পর, এর কার্যকারিতা
মনিটর করুন। কীভাবে আপনার গিগের ভিউ এবং অর্ডার বাড়ানো যায়, তা জানুন। আপনি যদি
গিগে পরিবর্তন বা আপডেট করতে চান, তাহলে নিয়মিত সেই কাজটি করুন।
ক্লায়েন্টদের থেকে রিভিউ সংগ্রহ করুনঃ প্রথম কাজটি পেলে ক্লায়েন্টদের কাছ
থেকে ভালো রিভিউ পাওয়ার চেষ্টা করুন। ভালো রিভিউ ও রেটিং আপনার প্রোফাইলের
বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াবে এবং পরবর্তীতে আরও কাজ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে।
আরো পড়ুনঃ দিনে ৫০০ টাকা ইনকাম apps গুলোর নাম জেনে নিন
ফাইভারে একাউন্ট খোলা একটি সহজ প্রক্রিয়া, তবে আপনার সেবার মান উন্নত এবং পেশাদার
হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একবার যদি আপনি ভালোভাবে প্রোফাইল এবং গিগ তৈরি করেন,
তাহলে আপনি সহজেই গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে পারবেন এবং সফল ফ্রিল্যান্সার হতে
পারবেন।
ফাইবার মার্কেটপ্লেস পরিচিতি
উপরোক্ত আলোচনায় ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট
খোলার নিয়ম জানিয়েছি চলুন এখন ফাইবার মার্কেটপ্লেস পরিচিতি সম্পর্কে জানি।
ফাইভার (Fiverr) একটি বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস, যেখানে
ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করে এবং গ্রাহকরা তাদের প্রয়োজনীয়
কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সারদের নিয়োগ করতে পারেন।
ফাইভারের সূচনা ২০১০ সালে, এবং এটি মূলত একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিত যেখানে
ছোট এবং নির্দিষ্ট কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সাররা তাদের সেবা শুরু করেন মাত্র ৫ ডলার
থেকে। এখানে বিভিন্ন ধরনের সেবা যেমন গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট
রাইটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং, অনুবাদ সেবা এবং আরও অনেক কিছু
পাওয়া যায়।
ফাইভারে সেবা প্রদানকারীরা নিজেদের "গিগ" তৈরি করেন, যেখানে তারা পরিষ্কারভাবে
তাদের সেবা, মূল্য এবং অন্যান্য তথ্য উল্লেখ করেন। গ্রাহকরা এই গিগের মাধ্যমে
তাদের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য সেরা ফ্রিল্যান্সার নির্বাচন করতে পারেন।
এটি একটি ব্যবহারকারী-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম যা যেকোনো ব্যক্তি, যেকোনো স্থান থেকে
তাদের দক্ষতা ব্যবহার করে আয় করার সুযোগ প্রদান করে। ফাইভার সারা পৃথিবী থেকে
হাজার হাজার ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টদের সংযোগ প্রদান করে, যার মাধ্যমে একটি
বৈশ্বিক ফ্রিল্যান্সিং কমিউনিটি তৈরি হয়েছে।
ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি
ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
জানলাম চলুন এখন জানি ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে। ফাইভার (Fiverr) হলো
একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি বিভিন্ন সেবা প্রদান করে
অনলাইনে আয় করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ কুইজ খেলে টাকা ইনকামের উপায় জেনে নিন
সঠিকভাবে একটি গিগ তৈরি করা হলে, এটি আপনাকে অনেক দ্রুত ক্লায়েন্টদের কাছে
পৌঁছাতে সাহায্য করবে। ফাইভারে গিগ তৈরি করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
নিচে বর্ণনা করা হলো, যেগুলো আপনি অনুসরণ করতে পারেনঃ
- ফাইভার প্রোফাইল তৈরি ও পরিপূর্ণ করুনঃ ফাইভারে গিগ তৈরি করার আগে আপনাকে প্রথমে একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। আপনার প্রোফাইলের ছবি, নাম, দক্ষতা, এবং অভিজ্ঞতা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন। একটি ভালো প্রোফাইল ক্লায়েন্টদের বিশ্বাস অর্জন করতে সাহায্য করবে। প্রোফাইলের বায়োতে আপনি কোন ধরনের কাজ করতে চান এবং আপনার দক্ষতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লিখুন।
- গিগের শিরোনাম তৈরি করুনঃ গিগের শিরোনাম এমন হতে হবে যা পরিষ্কার এবং আকর্ষণীয়। এটি গ্রাহকদের আকর্ষণ করবে এবং তাদের বুঝতে সাহায্য করবে আপনি কোন সেবা প্রদান করছেন। উদাহরণস্বরূপ, "আমি আপনার ব্যবসার জন্য পেশাদার গ্রাফিক ডিজাইন তৈরি করব"। শিরোনামটি ৫-৭ শব্দের মধ্যে রাখুন এবং পরিষ্কারভাবে আপনার সেবা বোঝান।
- গিগের ক্যাটেগরি ও সাব-ক্যাটেগরি নির্বাচন করুনঃ আপনার সেবা কী ধরনের, সেটি সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে গিগের ক্যাটেগরি এবং সাব-ক্যাটেগরি সঠিকভাবে নির্বাচন করুন। এটি আপনার গিগের দৃশ্যমানতা বাড়াতে সাহায্য করবে এবং ক্লায়েন্টরা সহজেই আপনাকে খুঁজে পাবেন।
- গিগের বিবরণ দিনঃ গিগের বিবরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আপনি কীভাবে আপনার সেবা প্রদান করবেন, ক্লায়েন্টদের কী ধরনের ফলাফল আশা করা উচিত, আপনার কাজের পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লিখুন। গিগের বিবরণ পরিষ্কার, সংক্ষিপ্ত এবং আকর্ষণীয় হওয়া উচিত। আপনি আপনার অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং পোর্টফোলিওর উদাহরণও উল্লেখ করতে পারেন।
- কীওয়ার্ড এবং ট্যাগ ব্যবহার করুনঃ গিগের জন্য কীওয়ার্ড এবং ট্যাগ নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার গিগকে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো র্যাঙ্ক করতে সাহায্য করবে এবং গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে সহায়ক হবে। ট্যাগ এমনভাবে ব্যবহার করুন যাতে তারা আপনার সেবার সাথে সম্পর্কিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, "গ্রাফিক ডিজাইন", "ওয়েব ডিজাইন", "কন্টেন্ট রাইটিং" ইত্যাদি।
- গিগ প্যাকেজ তৈরি করুনঃ ফাইভারে গিগ তৈরি করার সময় বিভিন্ন প্যাকেজ তৈরি করুন। প্রতিটি প্যাকেজে বিভিন্ন ধরনের সেবা বা সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করুন, যেমন: একটি বেসিক, স্ট্যান্ডার্ড এবং প্রিমিয়াম প্যাকেজ। প্যাকেজগুলো কাস্টমাইজ করা হলে গ্রাহকদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় হবে এবং আপনার আয়ও বাড়বে।
- প্রফেশনাল থাম্বনেইল ডিজাইন করুনঃ গিগের জন্য একটি আকর্ষণীয় থাম্বনেইল তৈরি করুন। থাম্বনেইলটি প্রথমে গ্রাহকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং এটি আপনার গিগকে অন্যান্য গিগের তুলনায় আলাদা করে তুলবে। এটি আপনার সেবার বিষয়ে আরও ধারণা দিতে পারে, যেমন: ছবি, লোগো, অথবা একটি সৃজনশীল কনসেপ্ট।
- গিগ ভিডিও তৈরি করুনঃ গিগ ভিডিও তৈরি করা আপনার গিগের দর্শক সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। ভিডিওতে আপনি নিজের সেবা এবং আপনার কাজের উদাহরণ বা পোর্টফোলিও দেখাতে পারেন। এই ভিডিও গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে এবং তাদের নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে যে আপনি একজন দক্ষ পেশাদার।
- প্রথম অর্ডার পেতে চেষ্টা করুনঃ নতুন গিগ তৈরি করার পরে প্রথম কিছু অর্ডার পাওয়ার জন্য চেষ্টা করুন। প্রথমে যদি আপনি কিছু ডিসকাউন্ট বা অফার দেন, তবে ক্লায়েন্টরা আপনার সেবা গ্রহণে আগ্রহী হতে পারেন। এছাড়াও, আপনি আরও বেশি রিভিউ সংগ্রহ করতে পারবেন।
- ভালো রিভিউ এবং রেটিং সংগ্রহ করুনঃ গিগের কাজের মান বাড়াতে চেষ্টা করুন এবং ক্লায়েন্টদের ভালো রিভিউ পাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। যখন গ্রাহকরা আপনার সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট হন, তখন তারা আপনাকে ভালো রেটিং এবং রিভিউ দিবেন, যা ভবিষ্যতে আপনার আরও কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াবে।
- পরিষ্কার কমিউনিকেশন রাখুনঃ গিগ তৈরি করার পর যখন ক্লায়েন্টদের থেকে কোনো বার্তা বা প্রশ্ন আসে, তখন দ্রুত এবং পরিষ্কারভাবে উত্তর দিন। এক্ষেত্রে, প্রফেশনাল এবং নম্র ভাষা ব্যবহার করা উচিত। দ্রুত উত্তর দেওয়া গ্রাহকদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করবে।
- গিগ আপডেট করুনঃ গিগের বিবরণ বা সেবা সময়ের সাথে আপডেট করুন। এটি আপনাকে আরও আধুনিক ও বাজারের চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে সাহায্য করবে। গিগের বিবরণ পরিবর্তন বা নতুন প্যাকেজ যোগ করার মাধ্যমে আপনি আরও গ্রাহক আকর্ষণ করতে পারবেন।
- গিগের মূল্য উপযুক্তভাবে নির্ধারণ করুনঃ গিগের মূল্য বাজারের সাথে সমন্বয় করা উচিত। প্রথমে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করার জন্য বাজার বিশ্লেষণ করুন। পরে আপনি আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে মূল্য বাড়াতে পারেন।
- ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড তৈরি করুনঃ ফাইভারে সফল হতে হলে আপনার একটি শক্তিশালী ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার গিগের উপস্থিতি এবং সেবার মান বৃদ্ধি করবে।
- কাস্টম অফার দিনঃ কাস্টম অফার তৈরি করুন যেগুলি গ্রাহকদের নির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যক্তিগতকৃত। কাস্টম অফার গ্রাহকদের জন্য একটি এক্সক্লুসিভ অনুভূতি তৈরি করবে এবং তারা আপনার সেবা নিতে আগ্রহী হবে।
ফাইভারে সর্বনিম্ন কত ডলারের কাজ পাওয়া যায়
উপরোক্ত আলোচনায় ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট
খোলার নিয়ম জানিয়েছি চলুন এখন ফাইভারে সর্বনিম্ন কত ডলারের কাজ পাওয়া যায়
সম্পর্কে জানি। ফাইভারে সর্বনিম্ন কাজের মূল্য সাধারণত ৫ ডলার থেকে শুরু হয়। এটি
ফাইভারের মূল ধারণার সাথে সম্পর্কিত, যেখানে বিভিন্ন সেবা এবং কাজের জন্য একটি
নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
ফাইভারের প্ল্যাটফর্মে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের সেবাগুলি বিভিন্ন প্যাকেজে প্রস্তাব
করতে পারেন, এবং তাদের প্রাথমিক প্যাকেজের মূল্য সাধারণত ৫ ডলার। তবে, কিছু
ক্ষেত্রে কাজের ধরণ এবং জটিলতা অনুযায়ী এই মূল্য বাড়ানো হতে পারে। ফাইভারে কাজ
পাওয়ার জন্য ফ্রিল্যান্সাররা স্বতন্ত্রভাবে তাদের মূল্য নির্ধারণ করেন,
তবে ৫ ডলার একটি সাধারণ এবং সর্বনিম্ন ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি নতুন
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি ভালো সুযোগ হতে পারে, কারণ কম মূল্যে শুরু করলে দ্রুত
ক্লায়েন্ট পাওয়া সহজ হয় এবং অভিজ্ঞতা লাভ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে, এক্সপার্ট
লেভেলে পৌঁছালে আপনি আপনার সেবার মূল্য বাড়িয়ে দিতে পারবেন।
নতুনদের জন্য fiverr চাকরি
ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
জানলাম চলুন এখন জানি নতুনদের জন্য fiverr চাকরি সম্পর্কে। ফাইভার (Fiverr)
নতুনদের জন্য একটি দুর্দান্ত প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি সহজেই ফ্রিল্যান্স কাজ
শুরু করতে পারেন। এখানে, আপনি যদি নতুন হন, তবে প্রথমে কিছু মৌলিক পদক্ষেপ অনুসরণ
করতে হবে, যা আপনার ফ্রিল্যান্স ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য সহায়ক হতে পারে।
- প্রথমত, ফাইভারে কাজ করার জন্য আপনাকে একটি আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। আপনার প্রোফাইল পিকচার, নাম, বায়ো এবং দক্ষতা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা উচিত। আপনার কাজের ক্ষেত্র এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করলে গ্রাহকরা আপনাকে সহজেই বিশ্বাস করতে পারবেন।
- এরপর, আপনি ফাইভারে একটি গিগ তৈরি করবেন। গিগ হলো সেবা যা আপনি প্রদান করবেন। নতুনদের জন্য, প্রথমে ছোট এবং সহজ কাজ শুরু করা উচিত, যাতে আপনি দ্রুত অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন এবং প্রাথমিক ক্লায়েন্ট পেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি টেক্সট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, বা সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মতো জনপ্রিয় সেবাগুলি অফার করতে পারেন।
- এছাড়াও, প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। নতুন ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত কম মূল্যে কাজ শুরু করেন, যা তাদের প্রথম কিছু কাজ পেতে সাহায্য করে। তবে, একবার আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন, তখন আপনার মূল্য বাড়িয়ে দিতে পারেন।
- আপনার সেবাগুলোর জন্য ভালো রিভিউ সংগ্রহ করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম কাজগুলো ভালোভাবে সম্পন্ন করলে ক্লায়েন্টরা আপনাকে ভালো রিভিউ দেবে, যা ভবিষ্যতে আরও কাজ পেতে সাহায্য করবে।
- অবশেষে, ধৈর্য ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফাইভারে নতুন হিসেবে প্রথমে কাজ পাওয়া কঠিন হতে পারে, তবে সময় এবং পরিশ্রমের সাথে আপনি সফল হতে পারবেন। আপনার গিগের কার্যকারিতা নিয়মিত পর্যালোচনা করুন, সেবার মান উন্নত করুন এবং গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগে পেশাদারী মনোভাব রাখুন।
ফাইভারে চাকরি বা কাজ পাওয়ার জন্য এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে নতুন
ফ্রিল্যান্সাররা দ্রুত সফল হতে পারেন।
ফাইভারে কিভাবে চাকরি খুঁজব?
উপরোক্ত আলোচনায় ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট
খোলার নিয়ম জানিয়েছি চলুন এখন ফাইভারে কিভাবে চাকরি খুঁজব? সম্পর্কে জানি।
ফাইভারে চাকরি খোঁজা একটি সহজ প্রক্রিয়া, তবে কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ অনুসরণ করলে
আপনি দ্রুত সফল হতে পারেন। এখানে,ফাইভারে চাকরি খোঁজার বিস্তারিত প্রক্রিয়া
বর্ণনা করলামঃ
ফাইভারে একাউন্ট তৈরি করুনঃ ফাইভারে চাকরি খুঁজতে প্রথমে আপনাকে একটি
একাউন্ট তৈরি করতে হবে। ওয়েবসাইটে গিয়ে "Join" বা "Sign Up" বাটনে ক্লিক করুন।
সেখানে আপনি ইমেইল, গুগল বা ফেসবুক একাউন্ট দিয়ে সাইন আপ করতে পারবেন। একবার
একাউন্ট তৈরি হলে, আপনার প্রোফাইল সম্পূর্ণ এবং আকর্ষণীয় হতে হবে যাতে আপনি সহজেই
ক্লায়েন্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।
প্রোফাইল এবং গিগ তৈরি করুনঃ ফাইভারে চাকরি খুঁজতে আপনাকে একটি শক্তিশালী
প্রোফাইল এবং গিগ তৈরি করতে হবে। প্রোফাইলের মাধ্যমে আপনি আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা
এবং আগ্রহের ক্ষেত্রগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে পারেন। গিগ হলো সেই সেবা বা কাজ
যা আপনি ক্লায়েন্টদের কাছে বিক্রি করবেন। আপনার গিগের শিরোনাম,
বিবরণ এবং মূল্য যথাযথভাবে উল্লেখ করুন, যাতে গ্রাহকরা সহজেই বুঝতে পারেন আপনি কী
ধরনের সেবা প্রদান করছেন। এছাড়াও, গিগের জন্য আকর্ষণীয় থাম্বনেইল এবং ভিডিও তৈরি
করলে এটি আরো কার্যকর হতে পারে।
গিগের ক্যাটেগরি ও কীওয়ার্ড নির্বাচন করুনঃ আপনার গিগের জন্য সঠিক
ক্যাটেগরি নির্বাচন করুন, যাতে আপনার সেবা সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ,
যদি আপনি গ্রাফিক ডিজাইন করেন, তবে সেই অনুযায়ী ক্যাটেগরি নির্বাচন করুন। এছাড়া,
আপনার গিগের বর্ণনায় প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে ভুলবেন না, যাতে ফাইভারের
সার্চ ফিচারে আপনার গিগ সহজে র্যাংক করতে পারে।
প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ করুনঃ প্রথম দিকে আপনার গিগের মূল্য
কিছুটা কম রাখতে পারেন, যাতে নতুন ক্লায়েন্টরা আপনার সেবা নিতে আগ্রহী হন।
পরবর্তীতে অভিজ্ঞতা ও রেটিং বাড়ানোর পর, আপনি আপনার সেবার মূল্য বাড়িয়ে দিতে
পারবেন।
গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রাখুনঃ ফাইভারে চাকরি খুঁজতে হলে, গ্রাহকদের সাথে
দ্রুত এবং পেশাদারী যোগাযোগ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোন গ্রাহক আপনার
গিগে প্রশ্ন করে, তবে দ্রুত উত্তর দিন। গ্রাহকরা সাধারণত সেই ফ্রিল্যান্সারদের
সাথেই কাজ করতে চান, যারা তাদের প্রশ্নের দ্রুত উত্তর দেন।
ভালো রিভিউ সংগ্রহ করুনঃ প্রথম কিছু কাজ করার পর, গ্রাহকদের কাছ থেকে ভালো
রিভিউ সংগ্রহ করতে চেষ্টা করুন। ভালো রিভিউ আপনার প্রোফাইলের বিশ্বাসযোগ্যতা
বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে আরও কাজ পেতে সহায়ক হবে। রিভিউ পাওয়ার জন্য, প্রথমে সঠিক
সময়ে এবং ভালো মানের কাজ প্রদান করা জরুরি।
ধৈর্য ধরুন এবং অবিচল থাকুনঃ ফাইভারে প্রথমে কাজ পাওয়া কঠিন হতে পারে, তবে
ধৈর্য ধরুন। নিয়মিত গিগ আপডেট করুন এবং সময়ের সাথে সাথে আপনার সেবা এবং প্রোফাইল
উন্নত করুন। সফল হতে কিছু সময় এবং পরিশ্রম লাগবে, তবে তা অবশ্যই ফলপ্রসূ হবে।
সোশ্যাল মিডিয়া এবং নেটওয়ার্কিং ব্যবহার করুনঃ আপনার ফাইভার প্রোফাইল এবং
গিগ সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন, যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা লিঙ্কডইন। এটি
আপনার কাজের প্রসার বাড়াবে এবং নতুন ক্লায়েন্ট আকর্ষণ করতে সাহায্য করবে।
মোবাইল দিয়ে ফাইবারে কাজ
ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
জানলাম চলুন এখন জানি মোবাইল দিয়ে ফাইবারে কাজ সম্পর্কে। ফাইভার (Fiverr) একটি
জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, এবং এখন মোবাইল দিয়েও সহজেই ফাইভারে কাজ করা
সম্ভব। আপনি যদি মোবাইল ব্যবহার করে ফাইভারে কাজ করতে চান,
তবে প্রথমে আপনাকে ফাইভারের অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে, যা Google Play Store বা
Apple App Store থেকে পাওয়া যায়। অ্যাপটি ইনস্টল করার পর, আপনাকে একটি ফাইভার
একাউন্ট তৈরি করতে হবে বা আগে থেকেই একাউন্ট থাকলে লগইন করতে হবে। এরপর, প্রোফাইল
সেটআপ করুন, আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা তুলে ধরে একটি আকর্ষণীয় বায়ো লিখুন এবং
গিগ তৈরি করুন।
মোবাইলের মাধ্যমে ফাইভারে কাজ শুরু করতে আপনি প্রথমে গিগের জন্য একটি উপযুক্ত
ক্যাটাগরি নির্বাচন করুন এবং বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে গিগ তৈরি করুন। মোবাইলের ছোট
স্ক্রীনে কাজ করতে হলে আপনি সহজেই গিগের বর্ণনা, শিরোনাম এবং মূল্য নির্ধারণ করতে
পারবেন। মোবাইল দিয়ে কাজের প্রক্রিয়া যেমন- ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ,
রিভিউ চাওয়া বা আপনার গিগের অর্ডার ট্র্যাক করা, সবই সহজে করা যায়। তবে, মোবাইলে
ফাইভার ব্যবহারের জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যেমন, যেহেতু স্ক্রীন ছোট,
তাই টেক্সট টাইপ করার সময় কিছুটা সময়সাপেক্ষ হতে পারে, তবে ভালো মানের কন্টেন্ট
তৈরি করতে ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে।
মোবাইলের মাধ্যমে আপনি নিজের কাজের গুণগত মান বজায় রাখতে পারেন এবং দ্রুতভাবে
গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রাখতে সক্ষম হবেন। ফাইভারে কাজ পাওয়ার জন্য নিয়মিত আপডেট,
নতুন গিগ তৈরি, এবং গ্রাহকদের প্রতি পেশাদার মনোভাব রেখে কাজ করলে মোবাইল দিয়েও
সফল হতে পারবেন।
ফাইবারে কোন কাজের চাহিদা বেশি
উপরোক্ত আলোচনায় ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট
খোলার নিয়ম জানিয়েছি চলুন এখন ফাইবারে কোন কাজের চাহিদা বেশি সম্পর্কে জানি।
ফাইভারে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে, তবে কিছু নির্দিষ্ট কাজ বেশি জনপ্রিয়
এবং চাহিদাপূর্ণ। এখানে ফাইভারে বেশি চাহিদাযুক্ত কাজগুলো পয়েন্ট আকারে দেওয়া
হলোঃ
গ্রাফিক ডিজাইন
- লোগো ডিজাইন
- ওয়েব ডিজাইন
- ইউআই/ইউএক্স ডিজাইন
- সোশ্যাল মিডিয়া গ্রাফিক্স
কনটেন্ট রাইটিং
- ব্লগ লেখা
- আর্টিকেল লেখা
- ওয়েব কন্টেন্ট রাইটিং
- কপিরাইটিং
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
- ওয়েবসাইট তৈরি
- ই-কমার্স সাইট ডেভেলপমেন্ট
- ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট
- ওয়েব অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
ভিডিও এডিটিং এবং অ্যানিমেশন
- ভিডিও এডিটিং
- অ্যানিমেশন ভিডিও তৈরি
- কাস্টম ভিডিও গ্রাফিক্স
- ইউটিউব ভিডিও এডিটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
- এসইও (SEO) সার্ভিস
- পেইড অ্যাড ক্যাম্পেইন (Google Ads, Facebook Ads)
- কনটেন্ট মার্কেটিং
অনুবাদ সেবা
- বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ (ইংরেজি, বাংলা, স্প্যানিশ, ফরাসি, ইত্যাদি)
- ট্রান্সক্রিপশন সেবা
এডুকেশন এবং টিউশনি
- অনলাইন কোর্স তৈরি
- টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরি
- ভাষা শিক্ষা
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
- ইমেইল ম্যানেজমেন্ট
- ডেটা এন্ট্রি
- ক্যালেন্ডার ম্যানেজমেন্ট
- কাস্টমার সার্ভিস
মিউজিক এবং অডিও
- পডকাস্ট এডিটিং
- মিউজিক কম্পোজিশন
- ভয়েসওভার সার্ভিস
- সাউন্ড ডিজাইন
ই-কমার্স সেবা - পণ্য তালিকা তৈরি
- - Shopify/WooCommerce সেটআপ
- - প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি
এই কাজগুলো ফাইভারে সবচেয়ে বেশি চাহিদাপূর্ণ, এবং এগুলোর জন্য প্রতি সপ্তাহে
হাজার হাজার অর্ডার তৈরি হয়। যদি আপনি এই সেবাগুলোর উপর দক্ষতা অর্জন করতে পারেন,
তাহলে ফাইভারে সফল হওয়া আপনার জন্য সহজ হবে।
ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি
ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
জানলাম চলুন এখন জানি ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে। ফাইভারে প্রথম গিগ
পাওয়া কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে কিছু সঠিক পদক্ষেপ অনুসরণ করলে এটি সহজ
হয়ে ওঠে। প্রথমে, আপনাকে একটি শক্তিশালী এবং আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।
আপনার প্রোফাইলে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের ক্ষেত্র ভালোভাবে তুলে ধরুন যাতে
গ্রাহকরা আপনার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে পারে। এরপর, গিগ তৈরি করার সময়,
সেবা বা কাজের শিরোনাম, বিবরণ এবং মূল্য সঠিকভাবে উল্লেখ করুন। একটি পরিষ্কার এবং
প্রাসঙ্গিক গিগ বর্ণনা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সাহায্য করবে।
গিগের জন্য ভালো থাম্বনেইল এবং ভিডিও তৈরি করা গিগের দৃশ্যমানতা বাড়াতে সাহায্য
করতে পারে। আপনার গিগ শুরুতে কিছুটা কম মূল্যে রাখলে প্রথম ক্লায়েন্ট পাওয়া সহজ
হবে, কারণ নতুন ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত কম মূল্য দিয়ে কাজ শুরু করে। একবার কাজ
শুরু হলে, আপনি ভালো মানের কাজ করে গ্রাহকদের কাছ থেকে রিভিউ সংগ্রহ করতে পারেন,
যা ভবিষ্যতে আরও কাজ পেতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, ফাইভারের সার্চ অপশন ব্যবহার করে
আপনার গিগের কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন করুন, যাতে এটি আরও বেশি গ্রাহকদের কাছে
পৌঁছাতে পারে। নিয়মিত আপডেট এবং গিগের কার্যকারিতা পর্যালোচনা করার মাধ্যমে আপনি
দ্রুত প্রথম অর্ডার পেতে সক্ষম হবেন।
লেখক এর মন্তব্য- ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় জেনে রাখুন
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের ফাইভারে দ্রুত কাজ পাওয়ার ২০ টি উপায় এবং ফাইভারে একাউন্ট খোলার নিয়ম ইত্যাদি ছাড়াও ফাইভার সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন, সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url