শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় হলো শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস ইত্যাদি ছাড়াও শাওয়াল মাস সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য। এই পোস্টে থাকছে শাওয়াল মাসের রোজার সময়সূচি ২০২৫ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক।
শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত জেনে নিন
পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো, যাতে আপনি শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। আশা করছি, এতে আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর এবং সঠিক নির্দেশনা পাবেন।

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত/কোরআন ও হাদিসের আলোকে শাওয়াল মাসের ফজিলত

এখন আমি আপনাদের সাথে শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত সম্পর্কে শেয়ার করতে যাচ্ছি। শাওয়াল মাস ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাসের গুরুত্ব কোরআন ও হাদিসে বিশেষভাবে উল্লেখিত হয়েছে, বিশেষ করে রোজা সম্পর্কিত কিছু ফজিলতের কারণে। এখানে শাওয়াল মাসের ফজিলত, তাৎপর্য এবং শাওয়াল মাসে করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

শাওয়াল মাসের ফজিলত

  • ইসলামে শাওয়াল মাসের গুরুত্বঃ শাওয়াল মাস, ইসলামিক ক্যালেন্ডারের দশম মাস, পবিত্র রমজান মাসের পর আসে। রমজান মাসে রোজা রাখার পর, শাওয়াল মাসে ছয়টি সাওয়াল রোজা রাখার প্রচলন রয়েছে, যা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ বলে বিবেচিত। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল এবং তারপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল, তার জন্য যেন সে সারাটি বছর রোজা রেখেছে" (সহীহ মুসলিম)। এর মাধ্যমে একজন মুসলমান শুধু রমজান মাসের রোজার সাওয়াবই অর্জন করে না, বরং শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখলে তাকে এক বছরের রোজা রাখার সওয়াব দেয়া হয়।
  • রমজান ও শাওয়ালঃ পরিপূর্ণ ইবাদতের মাস: রমজান মাসে মানুষের ইবাদত ও তওবার সময় থাকে, আর শাওয়াল মাসে অতিরিক্ত রোজা রাখার মাধ্যমে ইবাদত আরও পূর্ণতা লাভ করে। এটি একটি সুযোগ, যাতে মুমিন তার ইবাদতকে আরও উন্নত করতে পারে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে।
  • ছয়টি সাওয়াল রোজার ফজিলতঃ হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রেখেছে এবং শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রেখেছে, তাকে পূর্ণ রোজার সওয়াব দেয়া হয়, যেমন সে এক বছরের রোজা রেখেছে" (সহীহ মুসলিম)। এই ছয়টি রোজা একটি পূর্ণ বছরের সাওয়াব হিসেবে গণ্য হয়, যা একজন মুসলমানের জন্য এক বিশাল নেয়ামত।
  • এটি তওবার এক মাধ্যমঃ শাওয়াল মাসে একাধিক রোজা রাখার মাধ্যমে মুসলমান তার পূর্ববর্তী পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারে। এটি একটি সুযোগ, যাতে মুমিন নিজেকে শুদ্ধ ও পবিত্র রাখতে পারে এবং আল্লাহর কাছে তওবা করতে পারে।
শাওয়াল মাসে বিশেষ আমল

  • ছয়টি সাওয়াল রোজাঃ শাওয়াল মাসের প্রথম সপ্তাহে ছয়টি রোজা রাখা অত্যন্ত পুণ্যকর কাজ। এটি আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ মর্যাদা অর্জন করার একটি মাধ্যম। ছয়টি রোজা পরপর না রেখে, পুরো মাসে ছয়টি রোজা রাখার সুযোগ রয়েছে।
  • দোয়া ও ইবাদতঃ শাওয়াল মাসে বেশি বেশি দোয়া, তাসবিহ ও ইবাদত করা উচিত। এই মাসে বিশেষ করে রমজান মাসের পর মানুষ আরও বেশি মনোযোগী হতে পারে আল্লাহর ইবাদতে। এর মাধ্যমে একজন মুসলমান তার জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে পরিষ্কার করতে পারে এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জন করতে পারে।
  • তওবা ও ইস্তিগফারঃ শাওয়াল মাস হলো তওবা ও ইস্তিগফারের মাস। রমজান মাসে যেহেতু বহু ইবাদত করা হয়, তারপর এই মাসে পুনরায় তওবা ও ইস্তিগফার করা একজন মুসলমানের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
শাওয়াল মাসে গুনাহ মাফের সুযোগ

এটি মুসলমানদের জন্য একটি বড় সুযোগ, কারণ শাওয়াল মাসে আল্লাহ তায়ালা তাদের গুনাহ মাফ করে দিতে চান, যদি তারা সত্যিকারের তওবা করে। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে, তার গুনাহ মাফ করা হয়, সেগুলো যেন এক বছরের গুনাহের সমান হয়।" শাওয়াল মাস হলো পুণ্য অর্জনের একটি দুর্দান্ত সুযোগ।
রমজান মাসের পর, শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখার মাধ্যমে একজন মুসলমান তার ইবাদত পূর্ণ করতে পারে এবং আল্লাহর কাছ থেকে ব্যাপক সাওয়াব লাভ করতে পারে। তবে শাওয়াল মাসে আল্লাহর দয়া ও মাগফিরাতের জন্য দোয়া ও তওবা করা উচিত। এটি এমন একটি মাস, যখন একজন মুসলমান নিজের আত্মশুদ্ধি করতে পারে এবং তার জীবনে আল্লাহর রহমত ও বরকত আনতে পারে।

শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

উপরোক্ত আলোচনায় শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত জানিয়েছি চলুন এখন শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস সম্পর্কে জানি। শাওয়াল মাসে রোজা রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং এর ফজিলত হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে। বিশেষ করে রমজান মাসের রোজার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি অতিরিক্ত রোজা রাখার ব্যাপারে বিশেষ মর্যাদা আছে। এই রোজাগুলি এক বছরের রোজার সমান সওয়াব প্রদান করে।

শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে, সে যেন সারাটি বছর রোজা রাখল।” (সহীহ মুসলিম)

এই হাদিস থেকে জানা যায় যে, শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা রমজান মাসের রোজার পর অতিরিক্ত একটি পুণ্যের কাজ। এই রোজাগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাকে এক বছর রোজার সওয়াব দান করেন।
শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা এক অনন্য আমল, যা আল্লাহ তায়ালার কাছে ভালোবাসা ও নৈকট্য অর্জনের একটি পথ। রমজান মাসের পূর্ণ রোজা রাখার পর, শাওয়াল মাসে এই ছয়টি রোজা রাখার মাধ্যমে একজন মুসলমান তার ইবাদতকে আরও পূর্ণতা দিতে পারে এবং সারাবছর সওয়াব লাভের সুযোগ পায়।

শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ম

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে জানলাম চলুন এখন জানি শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ম সম্পর্কে। শাওয়াল মাসের রোজা ইসলামে একটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। রমজান মাসে রোজা রাখার পর, শাওয়াল মাসে ছয়টি অতিরিক্ত রোজা রাখার সওয়াব রয়েছে,
যা আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে এক বছরের রোজার সমান সওয়াব লাভ করার একটি বিশেষ সুযোগ। এই রোজাগুলির মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের ইবাদতকে আরও পূর্ণতা দিতে পারে। তবে, শাওয়াল মাসের রোজা রাখার কিছু নিয়ম ও দিকনির্দেশনা রয়েছে যা পালন করা জরুরি।

  • ছয়টি রোজা রাখার নিয়মঃ শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। তবে, এই ছয়টি রোজা একটানা রাখতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। অর্থাৎ, পুরো মাসে যে কোনো সময়ে এই ছয়টি রোজা রাখা যেতে পারে। তবে, শাওয়াল মাসের মধ্যে শেষ হতে হবে।
  • রোজাগুলির সংখ্যাঃ শাওয়াল মাসে মোট ছয়টি রোজা রাখতেই হবে, যদিও এগুলি পরপর রাখতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি শাওয়াল মাসের প্রথম সপ্তাহে ছয়টি রোজা রাখতে পারেন বা মাসের পুরো সময়ে ছয়টি রোজা রেখেও সওয়াব অর্জন করতে পারেন। তবে, মনে রাখতে হবে, যদি কেউ একটানা রোজা রাখে তবে তা আরও বেশি পুণ্যের কাজ হবে।
  • শাওয়াল মাসের মধ্যে রোজা রাখাঃ শাওয়াল মাসের মধ্যে আপনি যে কোনো সময়ে ছয়টি রোজা রাখতে পারেন। তবে শাওয়াল মাসের মধ্যে এগুলি শেষ করতে হবে, কারণ শাওয়াল মাসের পরের মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের ১১তম মাস, যেটি জ্বে-ল-কাদাহ।
  • ইনটেনশন (নিয়ত)ঃ শাওয়াল মাসের রোজা রাখার সময় নিয়ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন মুসলমানের মনে রাখতে হবে যে, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখছে। নিয়ত করলে আল্লাহ তায়ালা ইবাদতের প্রতি সহায়তা প্রদান করেন এবং রোজার সওয়াব নিশ্চিত হয়।
  • মোট সওয়াবঃ হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে, সে যেন সারাটি বছর রোজা রাখল।” (সহীহ মুসলিম) এই হাদিস থেকে জানা যায় যে, শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখলে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে এক বছরের সওয়াব দান করেন। এটি মুসলমানদের জন্য একটি বড় সুযোগ, যা সারা বছর ভালো কাজে মনোনিবেশ করার শক্তি দেয়।
  • প্রত্যেক রোজার উদ্দেশ্যঃ শাওয়াল মাসের রোজা রাখার উদ্দেশ্য হল একদিকে আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে সওয়াব অর্জন করা, অন্যদিকে রমজান মাসের রোজা সংক্রান্ত মিসিং বা কমপ্লিট কাজগুলো পরিপূর্ণ করা। এটি মানুষের আত্মশুদ্ধির জন্য একটি সুযোগ, যাতে তিনি আরও ভালোভাবে তাওবা ও ইবাদত করতে পারেন।

শাওয়াল মাসের রোজার সময়সূচি ২০২৫

উপরোক্ত আলোচনায় শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা জানিয়েছি চলুন এখন শাওয়াল মাসের রোজার সময়সূচি ২০২৫ সম্পর্কে জানি। ২০২৫ সালে শাওয়াল মাস শুরু হবে বৃহস্পতিবার, ১লা মে ২০২৫ এবং শেষ হবে শুক্রবার, ৩০শে মে ২০২৫। এই সময়ের মধ্যে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখার জন্য মুসলমানদের কাছে একটি মহান সুযোগ থাকবে।

শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখার সময়সূচিঃ

  • শাওয়াল মাসের প্রথম দিনঃ ১লা মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • শাওয়াল মাসের দ্বিতীয় দিনঃ ২রা মে ২০২৫, শুক্রবার
  • শাওয়াল মাসের তৃতীয় দিনঃ ৩রা মে ২০২৫, শনিবার
  • শাওয়াল মাসের চতুর্থ দিনঃ ৪ঠা মে ২০২৫, রবিবার
  • শাওয়াল মাসের পঞ্চম দিনঃ ৫ই মে ২০২৫, সোমবার
  • শাওয়াল মাসের ষষ্ঠ দিনঃ ৬ই মে ২০২৫, মঙ্গলবার
এই ছয়টি রোজা শাওয়াল মাসের মধ্যে যেকোনো সময়ে রাখা যেতে পারে, তবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য এগুলিকে শাওয়াল মাসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে চেষ্টা করা উচিত।

শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে জানলাম চলুন এখন জানি শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত সম্পর্কে। শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখার জন্য সঠিক নিয়ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে প্রতিটি ইবাদতের সওয়াব নিয়তের উপর নির্ভর করে। তাই শাওয়াল মাসে রোজা রাখার সময়ও নিয়ত করা জরুরি। নিয়ত করলে আল্লাহর কাছে আমাদের ইবাদত গ্রহণযোগ্য হয় এবং সওয়াব অর্জিত হয়।

শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত (বাংলায়)ঃ

"নিয়ত করি, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখবো।"

এই নিয়ত দিয়ে আপনি প্রতিটি রোজার জন্য আল্লাহর কাছে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রোজা রাখবেন।

শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত (আরবিতে)ঃ

"نَوَيْتُ صَوْمَ شَهْرِ شَوَّالٍ لِلَّهِ تَعَالَى"

অনুবাদঃ "আমি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত করি।"

এটি নিয়ত করার সময় আপনার অন্তরে শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও সওয়াব অর্জন করার ইচ্ছা থাকা উচিত।

নিয়ত করার সঠিক সময়ঃ

  • রোজা শুরুর পূর্ব রাতেঃ আপনি রাতেই নিয়ত করতে পারেন, যাতে পরের দিনের রোজার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারেন।
  • সকালে রোজা শুরু করার আগেঃ আপনি সকালে রোজা শুরু করার আগে নিয়ত করতে পারেন, তবে মুখে কোন বিশেষ উচ্চারণ না করলেও আপনার অন্তরে নিয়ত থাকা জরুরি।
নিয়ত সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকঃ

  • ইনটেনশন (নিয়ত) অন্তর থেকে হওয়া উচিতঃ নিয়ত যদি শুধুমাত্র মুখে বলা হয়, কিন্তু অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস না থাকে, তবে তা গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তাই নিয়ত অন্তর থেকে করা উচিত এবং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করার উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত।
  • ছয়টি রোজা পরপর না রাখলেও চলবেঃ শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা পরপর না রাখলেও চলবে। আপনি পুরো মাসে যেকোনো সময়ে ছয়টি রোজা রাখতে পারেন, তবে পুরো মাসে এগুলো রাখা উত্তম।
সঠিক নিয়ত না করলে কী হবে? ইসলামে সব ইবাদতই নির্ভর করে নিয়তের উপর। নিয়ত সঠিকভাবে না করলে, ইবাদত সঠিকভাবে পূর্ণ হয় না এবং সওয়াবও কম হতে পারে। তাই শাওয়াল মাসে রোজা রাখার সময় সঠিক নিয়ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শাওয়াল মাসে বিয়ে করা কি সুন্নত

উপরোক্ত আলোচনায় শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা জানিয়েছি চলুন এখন শাওয়াল মাসে বিয়ে করা কি সুন্নত সম্পর্কে জানি। শাওয়াল মাসে বিয়ে করা সুন্নত নয়, তবে এটি ইসলামে নিষিদ্ধও নয়। ইসলামি ঐতিহ্য এবং শরীয়ত অনুযায়ী, কোনো মাস বা সময় নির্ধারণ করে বিয়ে করাকে সুন্নত হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। শাওয়াল মাসে বিশেষভাবে বিয়ে করার কোনো প্রস্তাব বা নিষেধাজ্ঞা নেই।
তবে, শাওয়াল মাসের রোজা পালন করা একটি সুন্নত ইবাদত, এবং বিয়ে একটি সামাজিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। অতএব, যদি বিয়ের জন্য শাওয়াল মাসের দিনটি উপযুক্ত সময় হয় এবং দুই পক্ষের মধ্যে সকল শর্ত পূর্ণ হয়, তবে এটি একটি বৈধ কাজ। বিয়ে করতে হলে ইবাদত হিসেবে কোনো মাস বা সময়ের উপর নির্ভরশীল না হয়ে, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে বিয়ে করা উচিত।

শাওয়াল মাসের রোজা না রাখলে কি হয়

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে জানলাম চলুন এখন জানি শাওয়াল মাসের রোজা না রাখলে কি হয় সম্পর্কে। শাওয়াল মাসে রোজা না রাখলে এর জন্য কোনো শাস্তি নেই, তবে এই রোজাগুলোর সওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়া যায়। হাদিসে এসেছে যে, রমজান মাসের রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি অতিরিক্ত রোজা রাখলে এক বছরের রোজার সওয়াব লাভ হয়।

তাই, শাওয়াল মাসে রোজা না রাখলে এই মহান সওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়া যায়। তবে, যে কেউ যদি শাওয়াল মাসে রোজা না রাখে, তার জন্য ইসলামে কোনো শাস্তি নির্ধারিত নয়, তবে এটি একটি মিসড অপোরচুনিটি (missed opportunity) হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ইসলামে সব ইবাদতের সওয়াব নির্ভর করে তার উদ্দেশ্য এবং নিষ্ঠার ওপর, তাই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এই রোজা রাখা উত্তম।

শাওয়াল মাসের ঘটনা ও শাওয়াল মাসের করণীয়

উপরোক্ত আলোচনায় শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা জানিয়েছি চলুন এখন শাওয়াল মাসের ঘটনা ও শাওয়াল মাসের করণীয় সম্পর্কে জানি। শাওয়াল মাস ইসলামিক ক্যালেন্ডারের দশম মাস এবং এটি রমজান মাসের পরবর্তী মাস হিসেবে আসে। শাওয়াল মাসের একটি বিশেষ ঘটনা হলো,

রমজান মাসের রোজা শেষ করার পর মুসলমানরা শাওয়াল মাসে ছয়টি অতিরিক্ত রোজা রাখতে পারেন, যেগুলি এক বছরের রোজার সমান সওয়াব প্রদান করে। এই ছয়টি রোজা একটি সুন্নত আমল এবং এর মাধ্যমে একজন মুসলমান আরও নেকী অর্জন করতে পারেন। শাওয়াল মাসে করণীয় হিসেবে প্রথমত, শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা উত্তম।
তবে, এগুলি একটানা না রেখে পুরো মাসের মধ্যে যেকোনো সময়ে রাখা যেতে পারে। এছাড়া, শাওয়াল মাসে সাধারণভাবে আল্লাহর ইবাদত, তাওবা এবং ভালো কাজ করা উচিত। শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ঈদের দিন হওয়ার কারণে, ঈদের পরে এই রোজাগুলি রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হিসেবে বিবেচিত হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে এবং এক বছরের সওয়াব লাভের জন্য শাওয়াল মাসের রোজা রাখার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

লেখক এর মন্তব্য- শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত জেনে নিন

রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত এবং শাওয়াল মাসের রোজা ইত্যাদি ছাড়াও শাওয়াল মাস সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন, সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url