হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা জেনে নিন
আসসালাম আলাইকুম/আদাব, আজকের আলোচ্য বিষয় হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং
হারাম খাবার সম্পর্কে হাদিস ইত্যাদি সম্পর্কে। এছাড়াও হালাল ও হারাম খাবার গুলো
নিয়ে আমি বিভিন্ন ধরনের তথ্য নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং হারাম খাবার
সম্পর্কে হাদিস ছাড়াও হালাল ও হারাম খাবার গুলো জেনে আপনার সন্তানের সঠিক ও
সুন্দর নামটি রাখতে পারবেন যা অবশ্যই ইসলামিক ভিত্তিক হবে।
হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা জেনে নিন
এখন আমি আপনাদের সাথে হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা গুলো শেয়ার করতে যাচ্ছি।
ইসলামে, হালাল (অনুমোদিত) এবং হারাম (নিষিদ্ধ) খাবারের মধ্যে একটি স্পষ্ট
পার্থক্য রয়েছে, যা মুসলিমদের জন্য তাদের খাদ্য নির্বাচন করার সময় গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুনঃ ইসলামে মেয়েদের হারাম নাম জেনে নিন
খাবারের হালাল বা হারাম হওয়ার বিষয়টি মূলত ইসলামের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী
নির্ধারিত হয়। হালাল খাবারের মধ্যে সব ধরনের পবিত্র এবং ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী
প্রস্তুত খাবার আসে। হালাল খাবারের তালিকায় কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হলোঃ
- মাংসঃ মুরগি, গরু, মহিষ, খাসিঃ যদি এগুলো হালাল পদ্ধতিতে জবেহ করা হয়, তবে তা হালাল।
- মাছঃ সমস্ত ধরনের মাছ হালাল, তাদের মধ্যে কোনো নিষিদ্ধ উপাদান না থাকে।
- শাক-সবজি এবং ফলমূলঃ সব ধরনের শাক-সবজি এবং ফলমূল হালাল। তবে, এগুলো যদি কোনো হারাম উপাদান দ্বারা প্রভাবিত না হয়, যেমন কোনো হারাম রাসায়নিক দ্বারা প্রক্রিয়াজাত না হয়, তাহলে এগুলো খাওয়া যাবে।
- দুধ এবং দুধজাত পণ্যঃ খাঁটি দুধ, দই, মাখন, চিজ প্রভৃতি সব হালাল, যদি সেগুলো হারাম উপাদান না দিয়ে তৈরি করা হয়।
- তরল খাবারঃ পানীয় হিসেবে পানি, ফলের রস, মিষ্টি পানীয় এবং অ্যালকোহল মুক্ত তরল খাবার হালাল।
- বেকড পণ্যঃ হালাল উপাদান দিয়ে তৈরি করা বেকড পণ্য যেমন হালাল কেক, পিৎজা ইত্যাদি।
হারাম খাবারের তালিকাঃ হারাম খাবারগুলি এমন খাবার যা ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী
নিষিদ্ধ। হারাম খাবারের মধ্যে কিছু উদাহরণঃ
মাংসঃ
- শূকরের মাংসঃ শূকরের মাংস এবং এর কোনো অংশ, যেমন শূকরের তেল, হারাম।
- হারামভাবে জবেহ করা মাংসঃ কোনো প্রাণী যদি ইসলামী পদ্ধতিতে জবেহ না করা হয়, তবে তার মাংস হারাম হবে।
- রক্তঃ কোনো প্রাণী থেকে রক্ত খাওয়া হারাম।
- মদ ও অ্যালকোহলঃ সব ধরনের মদ বা অ্যালকোহল, মদ্যপান ইসলামে নিষিদ্ধ।
- মৌলিক নিষিদ্ধ খাদ্য উপাদানঃ গেলাটিন (যদি শূকরের মাংস বা অন্য কোনো হারাম উপাদান থেকে তৈরি হয়)।
- রাসায়নিক উপাদানঃ কিছু রাসায়নিক বা নিষিদ্ধ উপাদান (যেমন E-numbers) যে কোন খাদ্য বা পানীয়তে ব্যবহার হলে তা হারাম হয়ে যেতে পারে।
- ইনস্ট্যান্ট খাবার এবং ফাস্ট ফুডঃ যদি কোনো ইনস্ট্যান্ট বা ফাস্ট ফুড পণ্য হারাম উপাদান যেমন শূকরের চর্বি বা অ্যালকোহল নিয়ে তৈরি হয়, তবে সেগুলি হারাম।
নিষিদ্ধ পণ্যঃ
- প্রতিবন্ধী প্রাণীঃ প্রাণী যেগুলি মরা বা অত্যাচারের মাধ্যমে মারা গেছে, তাদের মাংস খাওয়া হারাম।
সতর্কতা এবং পরামর্শ
- যে কোনো খাবার বা পানীয় খাওয়ার আগে নিশ্চিত করুন যে তা হালাল পদ্ধতিতে প্রস্তুত হয়েছে এবং এতে কোনো হারাম উপাদান নেই।
- অনেক সময় খাদ্য প্রস্তুতকারক বা রেস্তোরাঁগুলো খাবারে গোপনে হারাম উপাদান ব্যবহার করতে পারে, তাই বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে হালাল খাবার গ্রহণ করা উচিত।
- আশা করি এই তালিকা আপনাকে সাহায্য করবে, তবে মনে রাখবেন, একটি জ্ঞানী আলেমের পরামর্শ নেওয়া সর্বোত্তম, কারণ বিভিন্ন অঞ্চলের কিছু খাদ্য বা উপাদান সম্পর্কে অজানা থাকতে পারে।
হারাম খাবার সম্পর্কে হাদিস
উপরোক্ত আলোচনায় আমি আপনাদের মাঝে হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা গুলো জানিয়েছি
চলুন এখন হারাম খাবার সম্পর্কে হাদিস গুলো জানি। ইসলামে, খাবারের হালাল ও হারাম
হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তা স্পষ্টভাবে আল্লাহর কিতাব (কোরআন) এবং
হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে। হারাম খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য মুসলিমদের সতর্ক
করা হয়েছে, যাতে তারা তাদের ইমান ও আখিরাতের ক্ষতি না করে।
হারাম খাবারের গুরুত্বঃ ইসলামি শরিয়তে খাদ্য গ্রহণের বিষয়টি শুধু শারীরিক প্রয়োজন
মেটানোর জন্য নয়, বরং তা ব্যক্তির আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় জীবনেও প্রভাব ফেলে।
যেমনটি কোরআন এবং হাদিসে বলা হয়েছে যে, হারাম খাদ্য গ্রহণ করলে আত্মা পবিত্র থাকে
না, এবং সে ব্যক্তি আল্লাহর কাছ থেকে দূরে চলে যায়।
কোরআনে হারাম খাবারের বর্ণনাঃ কোরআনে হারাম খাবারের বর্ণনা রয়েছে। যেমনঃ
- শূকরের মাংসঃ "অবশ্যই তিনি তোমাদের জন্য মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস এবং যেসব প্রাণী আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়নি, তা নিষিদ্ধ করেছেন।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৩)
- মদ ও অন্যান্য মাদকঃ "তারা তোমাদের কাছে মদ এবং জুয়া সম্পর্কে জানতে চায়। বলো, এর মধ্যে বড় পাপ এবং মানুষের কিছু উপকারিতা আছে, কিন্তু এর পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অনেক বড়।" (সূরা আল-বাকারাঃ ২১৯)
হাদিসে হারাম খাবারের বর্ণনাঃ
- হাদিসে হারাম খাবার এবং মদ্যপান সম্পর্কিত আরও বিস্তারিত নির্দেশনা পাওয়া যায়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস নিচে দেওয়া হলোঃ
- শূকরের মাংস সম্পর্কিত হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "শূকরের মাংস এবং তার থেকে উৎপন্ন কোনো কিছু খাওয়া হারাম।" (সাহীহ মুসলিম)
- রক্ত খাওয়া সম্পর্কে হাদিসঃ এক হাদিসে এসেছে, "তোমরা কোনো প্রাণীর রক্ত খাবে না, কারণ এটি হারাম।" (সাহীহ মুসলিম)
- মদ্যপান সম্পর্কিত হাদিসঃ রাসূল (সা.) বলেন, "মদ সকল পাপের মূল এবং এটি আল্লাহর রহমত থেকে দূরে ঠেলে দেয়।" (সাহীহ মুসলিম)
- হারামভাবে জবেহ করা প্রাণীঃ এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, "যে প্রাণী ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী জবেহ করা হয়নি, তার মাংস খাওয়া হারাম।" (সুনান আবু দাউদ)
হারাম খাবারের উপকারিতা ও ক্ষতিঃ হারাম খাবারের মধ্যে শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক
ক্ষতি থাকে। শরীরের জন্য যেসব খাবার ক্ষতিকর, সেগুলো শুধু শরীরের ক্ষতিই করে না,
বরং এর প্রভাবে হৃদয়ও কঠিন হয়ে যায়। আল্লাহ বলেন, "তোমরা কি জানো না যে, যারা
হারাম খায়, তাদের অন্তর অন্ধকার হয়ে যায়?" (সূরা আল-বাকারাঃ ১৭৫)
সতর্কতা ও পরামর্শ
- মুসলিমদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে তারা শুধু হালাল খাবার গ্রহণ করেন, যাতে তাদের জীবন পবিত্র থাকে এবং তারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে। হারাম খাবার গ্রহণ করা মানে আল্লাহর শত্রুতা ও অসন্তুষ্টি ডেকে আনা, যা ব্যক্তির আধ্যাত্মিক উন্নতি ও চূড়ান্ত সফলতা ব্যাহত করে।
- মুসলিমদের উচিত সর্বদা হালাল খাবার খাওয়ার চেষ্টা করা এবং যেকোনো সন্দেহজনক খাদ্য থেকে বিরত থাকা। যারা ভুলবশত হারাম খাবার খেয়ে ফেলেন, তারা তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে পারেন।
ইসলামে হারাম খাবারের তালিকা
হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং হারাম খাবার সম্পর্কে হাদিস গুলো জানলাম চলুন
এখন ইসলামে হারাম খাবারের তালিকা গুলো জানি। ইসলাম এমন একটি জীবনবিধি, যা শুধু
ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি দিকেই নিয়ম এবং
নির্দেশনা প্রদান করে।
খাদ্য গ্রহণও ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এবং মুসলিমদের জন্য যেসব খাবার
হারাম, সেগুলোর সম্পর্কে কোরআন এবং হাদিসে বিস্তারিতভাবে নির্দেশনা রয়েছে। হারাম
খাবার মানে এমন খাবার যা ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী নিষিদ্ধ। এখানে কিছু প্রধান হারাম
খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যা মুসলিমদের জন্য পরিহার করা উচিতঃ
- শূকরের মাংসঃ ইসলামে শূকরের মাংস খাওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কোরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, "নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের জন্য মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস এবং যেসব প্রাণী আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়নি, তা নিষিদ্ধ করেছেন।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৩) শূকরের মাংস হারাম হওয়ায়, এর কোনো অংশ বা উপাদান (যেমন শূকরের তেল) খাওয়া যাবে না।
- রক্তঃমৃত প্রাণী থেকে প্রবাহিত রক্ত খাওয়া হারাম। কোরআনে বলা হয়েছে, "এবং রক্ত এবং মৃতপ্রাণীর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৩) এছাড়া, কোনো প্রাণীর শরীরের রক্ত খাওয়াও ইসলামে নিষিদ্ধ।
- মদ ও অ্যালকোহলঃ মদ্যপান বা অ্যালকোহল গ্রহণ ইসলামি শরিয়তে হারাম। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "মদ সকল পাপের মূল এবং এটি আল্লাহর রহমত থেকে দূরে ঠেলে দেয়।" (সাহীহ মুসলিম) মদ বা অ্যালকোহল শরীর ও মনকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে এবং আধ্যাত্মিক ক্ষতিও ঘটায়।
- জবেহ না করা প্রাণীঃ যে প্রাণী ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী যবেহ (বলি) করা হয়নি, তার মাংস খাওয়া হারাম। আল্লাহর নামে যবেহ করা প্রাণীই খাওয়া উচিত। কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, "তোমরা যেসব প্রাণী আল্লাহর নামে যবেহ করতে পারো, তা খাও।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৩)
- মৃতপ্রাণীঃ মৃত প্রাণীর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ। যদি কোনো প্রাণী মরা অবস্থায় পাওয়া যায়, তবে তা খাওয়া যাবে না। কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য মৃতপ্রাণী, রক্ত এবং শূকরের মাংস হারাম করা হয়েছে।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৩)
- ব্যভিচারী প্রাণীঃ যেসব প্রাণী আঘাত বা অত্যাচারের মাধ্যমে মারা যায়, সেগুলোর মাংসও খাওয়া হারাম। আল্লাহ বলেন, "তোমরা যেসব প্রাণীকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করবে, তাদের মাংস খাবে না।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৫)
- শিকার করা প্রাণী (যা ইসলামীভাবে শিকারযোগ্য নয়): যে প্রাণী ইসলামিক শিকার পদ্ধতি (যেমন পশু ধরার জন্য সঠিক যন্ত্র ব্যবহার) অনুযায়ী শিকার করা হয়নি, তার মাংসও হারাম।
- গেলাটিন (যদি শূকরের মাংস বা অন্য কোনো হারাম উপাদান থেকে তৈরি হয়): গেলাটিন বা জেলি, যেগুলো শূকরের মাংস বা অন্য কোনো হারাম উপাদান থেকে তৈরি হয়, তা খাওয়া হারাম।
- ক্যাফিন বা মাদকদ্রব্যঃ যেসব খাবার বা পানীয় শরীর বা মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং মাদকতা সৃষ্টি করে, সেগুলোর গ্রহণও ইসলামি দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ।
- ইনস্ট্যান্ট খাবার ও ফাস্ট ফুডঃ যে ধরনের ইনস্ট্যান্ট বা ফাস্ট ফুড পণ্যতে হারাম উপাদান (যেমন শূকরের তেল, অ্যালকোহল, বা অন্যান্য নিষিদ্ধ উপাদান) রয়েছে, তা খাওয়া হারাম।
সতর্কতা ও পরামর্শঃ
- মুসলিমদের উচিত হালাল খাবার গ্রহণ করা এবং হারাম খাবার থেকে দূরে থাকা। যা খাওয়া ইসলামী বিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তা গ্রহণ থেকে বিরত থাকা উচিত।
- খাবার প্রস্তুতির সময় কিংবা খাদ্য নির্বাচন করার সময় নিশ্চিত হতে হবে যে তা শুদ্ধ ও হালাল উপাদানে তৈরি হয়েছে, যাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ না থাকে।
- যখন কোনো খাবারের বিষয়ে সন্দেহ থাকে, তখন আলেমদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- ইসলামের বিধান অনুসারে, হালাল এবং হারাম খাদ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অপরিহার্য। কারণ, এটি শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, বরং আধ্যাত্মিক ও নৈতিক সুস্থতাও নিশ্চিত করে।
হারাম খাবার খাওয়ার শাস্তি
উপরোক্ত আলোচনায় আমি আপনাদের মাঝে হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং হারাম খাবার
সম্পর্কে হাদিস গুলো জানিয়েছি চলুন এখন হারাম খাবার খাওয়ার শাস্তি গুলো জানি।
ইসলামে, হারাম খাবার খাওয়ার শাস্তি শুধু শারীরিক দণ্ডের মাধ্যমে নির্ধারিত নয়,
বরং এর আধ্যাত্মিক ও নৈতিক প্রভাবও রয়েছে। হারাম খাবার খাওয়া একদিকে শরীরের ক্ষতি
সাধন করে, অন্যদিকে এটি মানুষের আত্মিক অবস্থাকে দুর্বল করে দেয় এবং আল্লাহর
প্রতি তার নিকটতা কমিয়ে দেয়।
- আধ্যাত্মিক ক্ষতিঃ হারাম খাবার খাওয়ার মাধ্যমে একজন মুসলিম তার আত্মার পবিত্রতা হারাতে পারে। কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী, যেসব ব্যক্তির খাদ্য হারাম, তাদের অন্তর কঠিন হয়ে যায় এবং তারা আল্লাহর রহমত থেকে দূরে চলে যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যারা হারাম খায়, তাদের অন্তর অন্ধকার হয়ে যায়।" (সুনান তিরমিজি)
- দুনিয়াতে শাস্তিঃ হারাম খাবার খাওয়ার ফলে মানুষের দুনিয়াতে শারীরিক ও মানসিক অবস্থা অবনতির দিকে চলে যায়। মদ্যপান বা অ্যালকোহল যেমন শারীরিক ক্ষতি করে, তেমনই এটি মানসিক অবসাদও তৈরি করতে পারে। তাছাড়া, হারাম খাবার খাওয়ার ফলে মানুষের উপর আল্লাহর গজবও এসে পড়তে পারে।
- আখিরাতে শাস্তিঃ ইসলামে, যে ব্যক্তি নিয়মিত হারাম খাবার খেয়ে যায়, সে আখিরাতে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, "যারা হারাম খায়, তারা জানে না যে তাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৫) হারাম খাদ্য গ্রহণের কারণে সে ব্যক্তির আমল রদ হয়ে যেতে পারে, এবং তিনি আল্লাহর শাস্তি ভোগ করতে পারেন।
- তওবা এবং ক্ষমাঃ তবে, যদি কোনো ব্যক্তি ভুলবশত হারাম খাবার খেয়ে ফেলে, তবে তাকে তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, "যে তওবা করে এবং সৎকর্ম করে, তার জন্য আমি ক্ষমাশীল।" (সূরা আল-ফুরকান: ৭১)
হারাম খাবার খেলে কি হয়
হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং হারাম খাবার সম্পর্কে হাদিস গুলো জানলাম চলুন
এখন হারাম খাবার খেলে কি হয় গুলো জানি। হারাম খাবার খেলে একদিকে শারীরিক ক্ষতি
হয়, অন্যদিকে আধ্যাত্মিক ক্ষতি ঘটে। শরীরের জন্য ক্ষতিকর খাবার গ্রহণ করলে
মানুষের স্বাস্থ্য হ্রাস পায়, যার ফলে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া,
হারাম খাবার খাওয়ার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি আল্লাহর কাছ থেকে দূরে চলে যায়,
আরো পড়ুনঃ জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি
যার ফলে তার অন্তর কঠিন হয়ে যায় এবং আধ্যাত্মিক শান্তি ও পবিত্রতা হারায়। ইসলামে,
হারাম খাবার খাওয়ার কারণে একজন মুসলিমের আমলও নষ্ট হতে পারে, এবং সে আল্লাহর
শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে। তবে, কেউ যদি ভুলবশত হারাম খাবার খেয়ে ফেলে, তবে তওবা
করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে পারেন। এর ফলে তার আত্মিক উন্নতি ও আল্লাহর
কাছের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার হতে পারে।
হারাম খাবার সম্পর্কে কুরআনের আয়াত
উপরোক্ত আলোচনায় আমি আপনাদের মাঝে হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং হারাম খাবার
সম্পর্কে হাদিস গুলো জানিয়েছি চলুন এখন হারাম খাবার সম্পর্কে কুরআনের আয়াত গুলো
জানি। কুরআনে হারাম খাবারের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা
বলেছেন,
"নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের জন্য মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস এবং যেসব প্রাণী
আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়নি, তা নিষিদ্ধ করেছেন।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৩) এছাড়া,
"তারা তোমাদের কাছে মদ এবং জুয়া সম্পর্কে জানতে চায়। বলো, এর মধ্যে বড় পাপ এবং
মানুষের কিছু উপকারিতা আছে,
কিন্তু এর পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অনেক বড়।" (সূরা আল-বাকারা: ২১৯) কুরআন
অনুযায়ী, শূকরের মাংস, মৃতপ্রাণী, রক্ত, মদ এবং যে কোনো খাবার যা আল্লাহর নামে
যবেহ করা হয়নি, তা হারাম। এসব খাবার গ্রহণ করা মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ এবং
আল্লাহর নির্দেশনা লঙ্ঘন করা।
কোন কোন মাছ খাওয়া হারাম
হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং হারাম খাবার সম্পর্কে হাদিস গুলো জানলাম চলুন
এখন কোন কোন মাছ খাওয়া হারাম গুলো জানি। কুরআনে হারাম খাবারের বিষয়ে স্পষ্ট
নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, "নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের জন্য মৃতপ্রাণী,
রক্ত, শূকরের মাংস এবং যেসব প্রাণী আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়নি, তা নিষিদ্ধ
করেছেন।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৩) এছাড়া,
আরো পড়ুনঃ ফজরের নামাজের শেষ সময় জেনে নিন
"তারা তোমাদের কাছে মদ এবং জুয়া সম্পর্কে জানতে চায়। বলো, এর মধ্যে বড় পাপ এবং
মানুষের কিছু উপকারিতা আছে, কিন্তু এর পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অনেক বড়।" (সূরা
আল-বাকারা: ২১৯) কুরআন অনুযায়ী, শূকরের মাংস, মৃতপ্রাণী, রক্ত, মদ এবং যে কোনো
খাবার যা আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়নি, তা হারাম। এসব খাবার গ্রহণ করা মুসলিমদের
জন্য নিষিদ্ধ এবং আল্লাহর নির্দেশনা লঙ্ঘন করা।
কোন কোন প্রাণী খাওয়া হারাম
উপরোক্ত আলোচনায় আমি আপনাদের মাঝে হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং হারাম খাবার
সম্পর্কে হাদিস গুলো জানিয়েছি চলুন এখন কোন কোন প্রাণী খাওয়া হারাম গুলো জানি।
কুরআনে হারাম খাবারের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
"নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের জন্য মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস এবং যেসব প্রাণী
আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়নি, তা নিষিদ্ধ করেছেন।" (সূরা আল-বাকারা: ১৭৩) এছাড়া,
"তারা তোমাদের কাছে মদ এবং জুয়া সম্পর্কে জানতে চায়। বলো, এর মধ্যে বড় পাপ এবং
মানুষের কিছু উপকারিতা আছে, কিন্তু এর পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অনেক বড়।" (সূরা
আল-বাকারা: ২১৯) কুরআন অনুযায়ী, শূকরের মাংস, মৃতপ্রাণী, রক্ত, মদ এবং যে কোনো
খাবার যা আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়নি, তা হারাম। এসব খাবার গ্রহণ করা মুসলিমদের
জন্য নিষিদ্ধ এবং আল্লাহর নির্দেশনা লঙ্ঘন করা।
লেখকের মন্তব্য- হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা জেনে নিন
রাইট বাটন আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা এবং
হারাম খাবার সম্পর্কে হাদিস গুলো ছাড়াও হালাল ও হারাম খাবার সম্পর্কে জানা-অজানা
বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি
আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য
শেয়ার করবেন।
এমন আরো তথ্য ও রেসিপি জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়ম ভিজিট করুন,
সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, ফলো করুন, বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং কোন বিষয়ে
বিস্তারিত তথ্য বা রেসিপি জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন ও পোস্টটি কেমন
লাগলো কমেন্ট জানাবেন আশা করি, আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url